কেটে-ধুয়ে শাক বিক্রি, স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা
নগর জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে শাক কিনে কেটে-বেছে খাওয়ায় অলসতা রয়েছে অধিকাংশ মানুষের। অনেকে শাক কাটা-বাছাকে যেন আপদই মনে করেন। আর এ কারণে পছন্দের হওয়া সত্ত্বেও অনেকের পাতে উঠে না খেসারি, বথুয়া ও কাঁটাখোঁড়া শাক। তবে এবার নগরীর বেশকিছু মোড়ে পছন্দের শাক কেটে-ধুয়ে বিক্রি করছেন নারীরা। যেসব শাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। এ ছাড়া শাক বিক্রি করে স্বাবলম্বীও হচ্ছেন তারা।
নগরীর সিএনবির মোড়, পদ্মা পাড়, পদ্মা গার্ডেন, বাইপাস মোড়ে প্রায়শই বেশকিছু নারীদের সারিবদ্ধ হয়ে শাক কেটে বিক্রি করতে দেখা যায়। যারা পদ্মার জেগে উঠা চরসহ গ্রাম থেকে শাক সংগ্রহ করে শহরে এনে বিক্রি করেন।
তাদেরই একজন চম্বা বেগম। তিনি জানান, খেসারি, বুট, কাঁটাখোঁড়া ও বথুয়ার শাকের চাহিদা অনেক। কিন্তু কাটা-বাছার কারণে অনেকে কিনতে চান না। প্রথমে তিনি শাক তুলে এনেই বিক্রি করছিলেন। কিন্তু ক্রেতারা এসে দেখে চলে যায়। এরপর কয়েকজন শাক কেটে বিক্রির পরামর্শ দেন। এরপর থেকে তিনি কেটেও বিক্রি করেন। এখন ভালো বেচাবিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, তাদের কেউ চর থেকে শাক তুলে আনেন। আবার কেউ জমির মালিকের থেকে কিনে এনে বিক্রি করেন। বুট ও খেসারির শাক কেটে-ধুয়ে ৮০-১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন। আর বথুয়ার দাম কম। ধুয়ে-কেটে ৫০-৬০ টাকায় বথুয়া বিক্রি করেন। সেখান থেকে গড়ে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা লাভ হয় তাদের।
শাক কিনতে আসা রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, শাক রান্নার চেয়ে কাটা-বাছা বেশি কষ্টের। আর মেসে খালাও শাক কেটে রান্না করতে চান না। এ কারণে শাক আর পাতে উঠে না। পছন্দের শাক বাজারে গিয়ে দেখতেই হয়, কেনা হয়ে উঠে না। তবে এখানে অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে টাটকা শাক কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। তাই এক কেজি করে খেসারি ও বুটের শাক কিনলাম। এগুলো এখন শুধু মসলা দিয়ে রান্না করলেই হয়ে যাবে।
রাজশাহীর একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক তিতুমীর হোসেন। তিনিও শাক কেনার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি জানান, এসব শাক পরিবারের সবার পছন্দের। কিন্তু না কেটে এই শাক বাসায় নিয়ে গেলে পচে নষ্ট হবে। খাওয়া হবে না। তাই প্রায়ই এখান থেকে কেটে শাক নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, এই শাকগুলো অত্যন্ত পছন্দের। কিন্তু সব জায়গায় পাওয়া যায় না। সব সময়েও পাওয়া যায় না। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে চরসহ গ্রাম থেকে তাজা শাক কিনে এনে এই নারীরা বিক্রি করেন। আর এই শাকের স্বাদের কোনো তুলনা হয় না।
এসজি