সন্ধ্যা হলেই রাবিতে জমে ওঠে পিঠার আড্ডা
শীত আসতেই পিঠা খাওয়ার আড্ডাতে মেত উঠেন দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা। শীতের আগমনী বার্তায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসেও চলছে পিঠা খাওয়ার আড্ডা। সন্ধ্যা নামতেই শিক্ষার্থীদের ভিড়ে জমে ওঠে রাবির টিএসসি প্রাঙ্গন। পিঠার দাম ও মান নিয়েও সন্তুষ্ট আছেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আগমনে জমে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) সামনের মাঠে বসা পিঠার দোকানগুলো। কেউবা আড্ডা, কেউবা পড়াশোনা আবার কেউবা অ্যাসাইনমেন্টের কাজ নিয়ে আলাপচারিতা করেন পিঠা খাওয়ার ফাঁকে।
দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন আইটেমের পিঠা বানাচ্ছেন তারা। তার মধ্যে চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, তেলের পিঠা, পাটি সাপটা পিঠাসহ নানা ধরনের পিঠার স্বাদ নিতে শিক্ষার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে ক্যাম্পাসের এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে। পিঠার দাম ও মান নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই শিক্ষার্থীদের।
চিতই পিঠা আগে ৮ টাকা বিক্রি হলেও এখন কমিয়ে ৬ টাকা বিক্রি করছেন। ভাপা পিঠা ১৫ টাকা থেকে ৫ টাকা কমিয়ে ১০ টাকা, তেলের পিঠা ২০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পিঠার সঙ্গে ৮ পদের সংমিশ্রণে তৈরি ভর্তার বাটি ১০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা।
বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আখি আক্তার বলেন, সারাদিন ক্লাস-পরীক্ষা শেষে ক্লান্ত মন নিয়ে আমরা এখানে এসে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা জমিয়ে পিঠা খাওয়ার ফলে সেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। বাড়িতে থাকলে হয়তো পিঠা খেতাম কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমিয়ে খাওয়ার সুযোগ হতো না। পিঠার দাম ও মান নিয়েও সন্তুষ্ট এই শিক্ষার্থী।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সজিব আহমেদ বলেন, শীতকাল আসতেই বাড়িতে পিঠা বানানোর কাজ শুরু হতো। ক্যাম্পাস খোলা থাকায় মায়ের হাতে পিঠা খাওয়া হচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব দোকানগুলো আমাদের মায়ের হাতের পিঠার কথা স্বরণ করিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন রকম ভর্তাও পাওয়া যাচ্ছে এখানে।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্তিকুর রহমান বলেন, বিকাল হতে জমে উঠে আমাদের টিএসসি। পাটি বিছিয়ে বন্ধুদের নিয়ে গরম গরম পিঠা খাওয়ার অনুভূতি একটু অন্যরকম। আমাদের ক্যাম্পাসের পিঠার আলাদা একটি সুনাম আছে। সকলকে ক্যাম্পাসের পিঠার স্বাদ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি।
পিঠা বিক্রেতা মানিক মিয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রচুর ভিড় হয়, যার ফলে বানিয়ে শেষ করতে পারি না আমরা। প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মতো পিঠা বিক্রি হয়।
তবে হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, দ্রব্যমূলের উর্ধ্বগতির ফলে আগের মতো লাভ হয় না। লাকড়ি, তেল, আটাসহ সব কিছুর দাম আগের থেক দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তবে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় আশার আলো দেখছেন তারা।
এসআইএইচ