বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১০ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

স্বাধীনতাবিরোধীদের হুংকার ও সমাবেশের সহোদর

তানজিব রহমান

‘স্বাধীনতা-হীনতায় কে বাঁচিতে চায়? দাসত্ব-শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায়?’ কবি রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায়’র এ পঙতিটি স্বাধীনতাকামী মানুষের কাছে স্বাধীনতা সঙ্গীত বা মুক্তির গান বলা চলে। কবির দুটি চরণ থেকেই আমরা স্বাধীনতার গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে পারি। পৃথিবীর কোন জাতি পরাধীন থাকতে চায় না।

স্বাধীনতা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। স্বাধীনতা এবং মুক্তির আকাঙ্খা যুগে যুগে মানুষের মনে ছিল। স্বাধীনতার স্বপ্ন ও মুক্তির চেতনা তাদের মনকে আন্দোলিত করেছিল যুগ, যুগান্তর। কখনো ফরাসি বিপ্লব, কখনো রেঁনেসা, কখনো আবার শিল্পবিপ্লব হয়ে তা আমাদের সামনে উঠে এসেছে। তবে এগুলোর সব কিছুর মূলেই কিন্তু স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাস পরিণতি ও পরিসমাপ্তি আছে।

পৃথিবীর অনেক জাতি আছে যাদের স্বাধীনতার ইতিহাস আমাদের মতো এতোটা গৌরব দীপ্ত নয়। তারা একই সাথে স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য ঝাপিয়ে পড়েনি আমাদের মুক্তির ইতিহাসটা পলাশী থেকে ধানমন্ডি ৩২ পর্যন্ত বিস্তৃত যা এখনও আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের স্বাধীনতার একজন মহানায়ক আছেন-যার তর্জনীর ইশারায়, বজ্রকন্ঠের ডাকে সমগ্র বাঙালি জাতি সেদিন জেগে উঠেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন-‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। আর তাতেই সাড়ে সাত কোটি বাঙালির স্বাধীনতার মুখবন্ধ রচিত হয়ে গেল।

মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়ে গেলাম একটা স্বাধীন ভূ-খন্ড সার্বভৌম দেশ। আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এখনো চলছে। স্বাধীনতাবিরোধীদের উত্তরাধিকার ও রাজাকার দোসরদের বিরুদ্ধে এ সংগ্রাম নিরন্তর করে যেতেই হবে। তবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কিন্তু তখন থেকে এখনও তাদের দোসরদের কাঁধে ভর করে রাজনৈতিক শক্তিতে আবির্ভূত হচ্ছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রামে বিএনপির জনসভায় স্বাধীনতাবিরোধী বিতর্কিত নেতা সা.কা. চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বলে দিতে চাই, ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়িতে যেতে পারবেন না। প্রত্যেকটা শহীদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করব।’

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে হুম্মাম বলেন, ‘যাওয়ার আগে বাবার স্লোগান আপনাদের বলে যেতে চাই। নারায়ে তকবির, নারায়ে তকবির, নারায়ে তকবির। আমরা যখন আবার এই ময়দানে আসব, সরকার গঠন করে আসব।’

একজন যুদ্ধাপরাধী রাজাকার পুত্রের এমন হুংকার, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত অবমাননা, একটা রাজনৈতিক দলের ব্যানারে! কী প্রমাণ করে? স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের অর্জনকে তারা শুধু বৃদ্ধাঙ্গুলিই দেখাননি, বরং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় এলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির লোকদেরকে একা ঘরে না ফেরার হুমকি দিচ্ছেন প্রকাশ্যে।

বাস্তবে কী হবে তা আমরা তো তাদের পেট্রোল বোমা ও আগুন সন্ত্রাসী দিনগুলোর সময় দেখেছি।এই কালকেউটেদের ফনা বাংলাদেশকে আরো গুরুত্বের সাথে আমলে নেয়ার সময় এসেছে। এদের ফুঁস করে উঠতে দেয়া যাবে কি-না তা বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে যেমনটা নিয়েছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে।

অসাম্প্রদায়িক, শান্তি ও সৌহার্দ্যের বাংলাদেশ, মিলে-মিশে বাংলাদেশ, সবার জন্য বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশের জন্য এরা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অতীতেও তার দাদা ছিলেন ফজলুল কাদের চৌধুরী। তিনি বঙ্গবন্ধুর ছয়দফার বিরোধী ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের বিরোধী ছিলেন, ১৯৭১ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রায় দেড় মণ সোনা নিয়ে নৌ-যানে করে দেশ থেকে পালানোর সময় আনোয়ারা উপজেলার গহীরা উপকূলে মুক্তিযুদ্ধাদের হাতে ধরা পরেন।

এসব অপশক্তির মূল কত গভীরে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাদের মূল উৎপাটনে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজাকার সাকা পুত্রের বক্তব্যে কপালে ভাঁজ ফেলার মতো আরো একটি বিষয় হলো-তিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে অবমাননা করে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির সাজা হওয়া সব আসামীদেরকে ‘শহীদ’ বলে জনসম্মুখে বক্তব্য প্রদান করেছেন। তা দেশের সর্বোচ্চ আদালত অবমাননার শামিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন ১৯৭৩’র ক্ষমতা বলে অপরাধীদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত যেখানে তাদের মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন, সেখানে অপরাধীদেরকে জনসম্মুখে শহীদ বলে আখ্যায়িত করে সর্বোচ্চ আদালত অবমাননা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। রাষ্ট্রদ্রোহীতার শামিল।

অথচ হুম্মাম বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, হুম্মামের এই বক্তব্যকে আমীর খসরু মাহমুদ বিএনপি’র নয়, হুম্মামের ব্যক্তিগত বলে উল্লেখ করেছেন। শাক দিয়ে মাছ ঢাকা ছাড়া আর কিছু নয়। ২০১৫ সালে যুদ্ধাপরাধে জড়িত সাকা চৌধুরীর রায় কার্যকর হলে বিএনপি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেনি বরং ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত দলের কংগ্রেসে সাকা চৌধুরীর নামে শোক প্রস্তাব করা হয়। মুক্তিযুদ্ধকে তারা এভাবে লালন করেন!

যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গিতে আমরা কম, বেশী বিচলিত। ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় দলনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ যুদ্ধাপরাধী নয়, রাজবন্দী। আর আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধী। দলের চেয়ারপারসনের এ বক্তব্য আজ ও আগামী দিনের বাংলাদেশ কিভাবে নিবে? সবকিছুকে রাজনীতি আর ক্ষমতার মোড়কে ভাঁজ করে রাখলে দেশটাকে এগিয়ে নেবে কে? শুধু ভোটের রাজনীতির জন্য মাতৃতুল্য স্বদেশ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মর্যাদা বিকিয়ে দিয়ে; জনগণের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারলে জনগণের কাছে কী প্রত্যাশা করা যায়?

ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধের ফলে চলমান বিশ্বসংকট থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে দেশকে আগামীর জন্য স্থিতিশীল রাখা এবং উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ভিশনারি নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। একইভাবে আমাদের ভুলে গেলেও চলবে না লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীন দেশে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকদের উত্তরসূরীরা এখনো প্রতিশোধের উন্মত্ততায় মরণ কামড় দিতে সুযোগ খুঁজছে। করছে রাষ্ট্রবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র। তাদের হাত থেকে দেশকে ও দেশের স্বাধীনতার মর্যাদাকে বাঁচাতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ কিংবা গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবেই। তার কোনো বিকল্প নাই।

মেইল : tanzib1971@gmail.com.

লেখক-গবেষক।

ছবি : পাহাড়পুর মহাবিহার।

ওএফএস।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানিদের জন্য ‘সার্ক ভিসা ছাড়’ সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত:

সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।

৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।

৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক জনশক্তি ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার বিকালে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ত্রধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ২৬।

পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) মঙ্গলবার বিকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীর’র পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান নিন্দা প্রকাশ করছে। নিহতের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করছে পাকিস্তান।

এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বার্তায় তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এ জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আবারও নিশ্চিত করছি যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় দৃঢ়।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে সরকার পরিবর্তন হলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পর যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাদের জন্য এক বছরের ‘শিক্ষিত বেকার ভাতা’ চালু করার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে সরকার।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত পরিকল্পনা নিয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি পরিকল্পনা করছি—যাতে যারা এখনো চাকরি পাননি, তারা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সহায়তা পান। এই সময়টিতে সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উভয়ের উদ্যোগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক তরুণ নেতাকর্মী, যাঁরা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তারা বয়স পার করে ফেললেও কোনো চাকরি পাননি। “শুধু ছাত্রদল নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষ আছেন যারা সরকারের অনুগত না হওয়ায় চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন তারেক।

বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, “২০ কোটির বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বিশাল বাজেট ও কাঠামোগত পরিকল্পনা দাবি করে। এটা অব্যবস্থাপনার জায়গা নয়, এটা করতে হলে বাস্তবতা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।”

তিস্তা নদী ঘিরে রংপুর অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা শুধু নদী নয়, রংপুর বিভাগের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অতীতে তিস্তাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাস্তব ভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ করবে।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

Header Ad
Header Ad

এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জমিগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চলমান তদন্তে দেখা যায়, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ তারা অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় এসব জমি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

জমিগুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ট্রেড লিংক, ইভেন্ট টাইটান ইন্টারন্যাশনাল, পাইথন ট্রেডিং কর্নার, ইসলাম ট্রেডার্স, ডায়মন্ড বিজনেস হাউস, এএইচ সেন্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সরাসরি আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।

এর আগেও এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দফায় আদালত সম্পদ ও শেয়ার অবরুদ্ধ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা শেয়ার, জমি ও ব্যাংক হিসাব পর্যায়ক্রমে অবরুদ্ধ ও ক্রোক করে আদালত।

এস আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৩০০-এর বেশি ব্যাংক হিসাব, হাজার একরের বেশি জমি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে আরও নতুন সম্পদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

দুদক বলছে, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ না করার অনুরোধ ডিএমপির
টাঙ্গাইলে বেড়েছে গরমের তীব্রতা, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সরকার সরিয়ে না দিলে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
বিরামপুরে ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে 'ভুয়া সেনাসদস্য' আটক
হাসিনাকে যারা খুনি হতে সাহায্য করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে: সারজিস আলম
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুললো আবাসিক হল
কাশ্মীরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, মসজিদে ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু
ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে, ঘরের মাঠে লজ্জার হার বাংলাদেশের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটে প্রথম আব্দুল্লাহ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ হত্যা: প্রধান আসামি মেহরাজ গ্রেপ্তার
তুরস্কের ইস্তানবুলে একের পর এক ভূমিকম্প
এবার সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন পরীমণি
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা
আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই: মির্জা আব্বাস
কাশ্মীরের হামলা ‘সাজানো’ দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
ভাইরাল ভিডিও সমন্বয়ক রুবাইয়ার নয়, দাবি এনসিপি নেতার