বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১০ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সেতুবন্ধন উন্নয়নের মালা

আবু নাছের ভূঁইয়া
নদীমাতৃক বাংলাদেশ কথার সহজ অর্থ হচ্ছে, নদী আমাদের জীবনব্যবস্থার মা। নদ-নদীর পলি হতেই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ ব-দ্বীপটির গড়ে উঠা বা জন্ম। দেশকে বাঁচিয়ে রাখতে তাদের কোনো বিকল্প নেই। পদ্মা-মেঘনা-যমুনা যেমন আমাদের অস্তিত্ব তেমনি এই অঞ্চলগুলোকে আলাদাভাবে সমৃদ্ধ করেছে।
নদ-নদীর সমৃদ্ধি যেমন আমাদের কৃষি অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে আবার তাদের বিশালতা আমাদের একটি অঞ্চল থেকে আরেকটির সড়ক ও নৌ-যোগাযোগের দূরত্ব তৈরি করছে। ফলে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও লেনদেন উন্নয়নের যুগে ব্যহত করছে। এই তথ্য-প্রযুক্তির যুগে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির অন্যতম করিডোর হলো যোগাযোগ বা কানেক্টিভিটি। পদ্মা সেতু যেমন পুরো দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকা এবং এক অর্থে পুরো দেশের সাথে যুক্ত করেছে, তেমনি বৃদ্ধি পেয়েছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য।
একসময়ের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন দক্ষিণাঞ্চলের জনগণকে তাদের লালিত স্বপ্ন বা মিথ বাস্তবে ছুঁয়ে দেখার অনুভুতি দিয়েছে। এখন আঞ্চলিক সেতুগুলো অর্থ-বাণিজ্যের সংযোগ হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে এক সুতোয় যুক্ত করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অগ্রযাত্রার নতুন মাইলফলক হয়েছে।
আমাদের এই পদ্মা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা ও সম্ভাবনারও উজ্জ্বল স্বাক্ষর বহন করে যাবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লাইফ লাইন হয়েছে। অবারিত সম্ভাবনার এ সেতু উদ্বোধনের পর একের পর এক নতুন কানেক্টিভিটি ডানা মেলতে শুরু করেছে।
গোপালগঞ্জ-নড়াইলে ‘মধুমতি সেতু’ এবং নারায়ণগঞ্জ বন্দর-জেলা সদরে নির্মিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু (তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু)’ আলোচনায় বলছি। এই বছরের ১০ অক্টোবর সেতু দুটি উদ্বোধন দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে নিঃসন্দেহে। আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনেও।
পদ্মা সেতু হয়ে দেশের বৃহত্তম বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সাথে ও বেনাপোল স্থলবন্দরকে সংযুক্তি আমাদের অর্থনীতিতে নতুন ইতিহাসটি রচনা করেছে।
বাংলাদেশের প্রথম ছয় লেনের দৃষ্টিনন্দন মধুমতি সেতু নড়াইল ও গোপালগঞ্জের সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। মধুমতি পাড়ের সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। স্পষ্টভাবে বোঝা গিয়েছে, নড়াইলবাসীর চোখে, মুখে আবেগ উচ্ছ্বাস এবং আনন্দ দেখে।
বিখ্যাত ‘নদীর নাম মধুমতি’ চলচ্চিত্রে অনেকেই আমরা দেখেছি বা পড়েছিও- সবুজ প্রকৃতির কোল ঘেঁষে বয়ে চলা কোমল ও মিষ্টি মধুমতি নদীর নামটিই সেতু তৈরির সময় নাম দিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। নামকরণ স্বার্থক হয়েছে। মধুমতি সেতু আমাদের জীবনের আরেকটি রূপ। তার সরকারের ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়ন ও বাংলাদেশকে আধুনিক, সমৃদ্ধ, উন্নত দেশে পরিণত করতে বহুকালের যে স্বপ্নযাত্রা তারা গ্রহণ করেছেন, অর্থনৈতিক কানেক্টেভিটিগুলো উদ্যোগটিতে অনন্য ভূমিকা পালন করে যাবে।
মধুমতি সেতু এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হওয়ার ফলে অর্থেনৈতিক গুরুত্ব বেড়ে যাবে। তাই সেতুদ্বয় ছয় লেনের সেতুতে রূপদান করা হয় বাংলাদেশে একমাত্র হিসেবে। আর মধুমতি সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে নড়াইলের দূরত্ব হলো মাত্র ১শ ১৩ কিলোমিটার। সেতুটি চালু হওয়ায় আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলা থেকে বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল ও সাতক্ষীরার ভোমরা সরাসরি সংযুক্ত হলো। কালনা নদীর ওপর মধুমতি সেতু দেশের বণিজ্যিক কার্যক্রমে অত্যন্ত গতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রেখে যাবে। দেশী-তো বটেই বিদেশী বিনিয়োগ আসবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এখানে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। জেলা শহরের অদূরেই হতে যাচ্ছে আরেকটি বিসিক শিল্পনগরী। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তনের হাতছানি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০টি জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নও পূরণ হবে। সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জ কাশিয়ানী ও পশ্চিম পাড়ে নড়াইল লোহাগড়া উপজেলা। নান্দনিক নির্মাণশৈলী ও অনন্য স্থাপত্য কৌশলটি সেতুকে আকর্ষণীয় করেছে। মাঝখানে বসানো ভিয়েতনামে তৈরি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ১শ ৫০ মিটার দীর্ঘ নেলসন লস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) স্টিলের স্প্যান পর্যটন আকর্ষণ সবসময় বাড়িয়ে যাবে। জাপানের বিখ্যাত নিপ্পন কোম্পানির স্প্যানটি সেতুকে স্থায়ীত্ব দিয়েছে।
৬শ ৯০ মিটার দীর্ঘ ২৭.১ মিটার চওড়া সেতুটিতে চারটি উচ্চগতির লেন, দুটি সার্ভিস লেনে সমৃদ্ধ। আছে ৪.৩০ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোডও। ফলে যোগাযোগ নিরাপদ হলো। সহজ হলো।
একই সময়ে উদ্ধোধন হওয়া নারায়ণগঞ্জ বন্দর-জেলা সদরে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতুটিও খুলে দেওয়ার পর দেশের তিনটি জাতীয় মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-মাওয়া-খুলনা একে-অপরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হলো।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতুটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে পদ্মা সেতুর দূরত্ব কমাবে অন্তত ৯ কিলোমিটার। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের দূরত্ব অন্তত ২০ কিলোমিটার কমবে। এখন থেকে ওই দুই পথের যাত্রীদের ঢাকা হয়ে আর কোনাদিন চলাচল করতে হবে না। সে কারণে অন্তত দুই ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহনে। দক্ষিণের যাত্রীরা পদ্মা সেতু দিয়ে মুন্সীগঞ্জ হয়ে শীতলক্ষ্যা সেতু দিয়ে মদনপুর হয়ে চট্টগ্রাম এবং সিলেট যেতে পারবেন। এই সেতু চালুর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর সাথে সংযোগ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের। যারা খুলনা, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়ার মানুষ, তারা পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা শহরে প্রবেশ না করেই সরাসরি চট্টগ্রাম যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বড় দূরত্ব কমে যাবে। তৈরি হলো অর্থনৈতিক অপার সম্ভাবনা। বৃদ্ধি পেল অর্থ ও বাণিজ্য গুরুত্ব।
১.২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২২. ১৫ মিটার প্রশস্ত মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু। বহু শতাব্দী আগে থেকে রাজধানী ঢাকা এবং ঢাকার পাশের বিখ্যাত বন্দরনগরী ও অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্র নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে অন্য জেলাগুলোর বাণিজ্যিক সংযোগ ঘটালো সেতু পথে। সেতুটিতে ধীরগতির গাড়ি (রিকশা-সাইকেল) চলাচলের জন্যও আলাদা দুটি লেন রাখা হয়েছে। আছে পায়ে হেঁটে পারাপারের জন্য ফুটপাত। ফলে স্থানীয় জনগণের যোগাযোগ আরো সহজ হলো।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু নারায়ণগঞ্জবাসীর নিত্য যোগাযোগ সহজ করলো। ঢাকা শহরের যানজট নিরসনেও ভূমিকা রাখতে শুরু করলো। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই সেতুটি লক্ষাধিক মানুষ নৌকা ও ট্রলারে খেয়া পারাপারের ভোগান্তির অবসান ঘটালো। সেতুর সঙ্গে নতুন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠলো। ফলে আরো কাজ করলে মুন্সীগঞ্জসহ আশেপাশের মানুষ পদ্মা সেতু থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা লাভ করবেন। শেখ হাসিনা সরকারের দূরদর্শীতার অনন্য প্রমাণ বাংলাদেশের এই রূপান্তরগুলো। তার নেতৃত্বের স্বারক সেতুবন্ধন। আগামী প্রজন্মের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন প্রাণসঞ্চার।
লেখক : শিক্ষক ও গবেষক।

ছবি : বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু, মধুমতি ও পদ্মা সেতু।

ওএফএস।

 

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানিদের জন্য ‘সার্ক ভিসা ছাড়’ সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত:

সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।

৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।

৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক জনশক্তি ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার বিকালে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ত্রধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ২৬।

পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) মঙ্গলবার বিকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীর’র পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান নিন্দা প্রকাশ করছে। নিহতের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করছে পাকিস্তান।

এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বার্তায় তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এ জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আবারও নিশ্চিত করছি যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় দৃঢ়।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে সরকার পরিবর্তন হলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পর যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাদের জন্য এক বছরের ‘শিক্ষিত বেকার ভাতা’ চালু করার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে সরকার।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত পরিকল্পনা নিয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি পরিকল্পনা করছি—যাতে যারা এখনো চাকরি পাননি, তারা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সহায়তা পান। এই সময়টিতে সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উভয়ের উদ্যোগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক তরুণ নেতাকর্মী, যাঁরা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তারা বয়স পার করে ফেললেও কোনো চাকরি পাননি। “শুধু ছাত্রদল নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষ আছেন যারা সরকারের অনুগত না হওয়ায় চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন তারেক।

বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, “২০ কোটির বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বিশাল বাজেট ও কাঠামোগত পরিকল্পনা দাবি করে। এটা অব্যবস্থাপনার জায়গা নয়, এটা করতে হলে বাস্তবতা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।”

তিস্তা নদী ঘিরে রংপুর অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা শুধু নদী নয়, রংপুর বিভাগের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অতীতে তিস্তাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাস্তব ভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ করবে।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

Header Ad
Header Ad

এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জমিগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চলমান তদন্তে দেখা যায়, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ তারা অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় এসব জমি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

জমিগুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ট্রেড লিংক, ইভেন্ট টাইটান ইন্টারন্যাশনাল, পাইথন ট্রেডিং কর্নার, ইসলাম ট্রেডার্স, ডায়মন্ড বিজনেস হাউস, এএইচ সেন্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সরাসরি আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।

এর আগেও এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দফায় আদালত সম্পদ ও শেয়ার অবরুদ্ধ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা শেয়ার, জমি ও ব্যাংক হিসাব পর্যায়ক্রমে অবরুদ্ধ ও ক্রোক করে আদালত।

এস আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৩০০-এর বেশি ব্যাংক হিসাব, হাজার একরের বেশি জমি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে আরও নতুন সম্পদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

দুদক বলছে, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ না করার অনুরোধ ডিএমপির
টাঙ্গাইলে বেড়েছে গরমের তীব্রতা, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সরকার সরিয়ে না দিলে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
বিরামপুরে ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে 'ভুয়া সেনাসদস্য' আটক
হাসিনাকে যারা খুনি হতে সাহায্য করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে: সারজিস আলম
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুললো আবাসিক হল
কাশ্মীরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, মসজিদে ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু
ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে, ঘরের মাঠে লজ্জার হার বাংলাদেশের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটে প্রথম আব্দুল্লাহ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ হত্যা: প্রধান আসামি মেহরাজ গ্রেপ্তার
তুরস্কের ইস্তানবুলে একের পর এক ভূমিকম্প
এবার সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন পরীমণি
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা
আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই: মির্জা আব্বাস
কাশ্মীরের হামলা ‘সাজানো’ দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
ভাইরাল ভিডিও সমন্বয়ক রুবাইয়ার নয়, দাবি এনসিপি নেতার