বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১০ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সহমর্মিতা, সুস্থ পরিবেশ প্রয়োজন

‘শোনা গেল লাশ কাটা ঘরে/নিয়ে গেছে তারে;/ কাল রাতে –ফাল্গুনের রাতের আঁধারে/যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ/মরিবার হল তার সাধ’। (জীববানন্দ দাশ)
আমরা এমন ঘুম চাইনি পারমিতা । তোমার জন্য নয় পৃথিবীর আর কোন মানুষের জন্যও নয়। কোনোদিন না জাগার বেদনা নিয়ে অবিরাম ভার নিয়ে কোন স্বপ্নের অপমৃত্যু আর চাই না । এক সময় এই সমাজ ছিল ‘আমরা’ কেন্দ্রিক ধারণায় লব্ধ। যা কিছু সবটাই আমাদের, কর্মফল ও দ্বায়িত্ব। যাবতীয় কাজ ব্যক্তিবিশেষ, নয় ব্যক্তি নির্বিশেষ। পরবর্তীতে আমরা ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে উঠলাম। ব্যক্তি মানুষের নানা অর্ন্তমুখী চিন্তা তথা-অস্তিত্ববাদ ক্রমশ আমাদের মধ্যে প্রোথিত হতে লাগল আর পরস্পরের কাছ থেকে খুব সূক্ষ্মভাবে বিছিন্ন হতে থাকলাম। নানামুখী সংকটের শুরু তখন। অবসাদ, নৈরাশ্যবাদ যেন আরো এক বিপন্ন বিস্ময় হয়ে আমাদের অন্তর্গত রক্তের মধ্যে খেলা করে তাই বুঝি পারমিতারা সমাজের সাথে যুঝে উঠবার রসদ জোগাতে পারেনা। পারমিতা আমাদের কাছে প্রতিটি জীবন একটি অস্তিত্বের একান্ত গভীর অনুভুতি , বেদনা ও বিচ্ছিন্নতার ক্লান্তিকর ক্ষত, সম্ভাবনার অপমৃত্যু, দিনশেষে কাঁটাতারের প্রজাপতি।
জাঁ পল সার্ত্রের নসিয়া উপন্যাস ব্যক্তি জীবনের নিঃসংঙ্গতাবোধের এক অসাধারণ উপস্থাপন। চিত্রিত হয়েছে অ্যান্টোআইন রোকেন্টিন নামের এক ব্যক্তি কিভাবে জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে তার পরিবেশ, প্রিয়জন এমনকি সবচেয়ে কাছের মানুষ প্রেমিকা অ্যাানির কাছে থেকে ক্রমে বিছিন্ন হয়েছেন। এই যে আমরা ক্রমশ একলা হচ্ছি, কারণ কি? আমাদের অবসাদ, ক্লান্তি, যন্ত্রণাকে ঠেলে কেন বেঁচে থাকার তাগিদগুলো অনুভব করছি না? কেন জীবন বার, বার পরাজিত যাচ্ছে মৃত্যুর কাছে? জীবনের প্রতি এত বিতৃষ্ণা কেন জন্মাচ্ছে?
ঝাঁ চকচকে সুগন্ধে মোড়া, ফাঁপা অন্ত:সারশুন্য যে নাগরিক জীবন বেছে নিয়েছি আমরা, সেখানে কোন আরাম নেই, শান্তি নেই, বিশ্রাম নেই শুধু আছে অবিরাম ছুটে চলা। আমরা একে অপরের থেকে ক্রম দূরবর্তী হচ্ছি। মহানগরের তপ্ত দুপুরের গিজ, গিজ করা মানুষদের মধ্যে যোজন, যোজন ব্যবধান । নাট্যকার লুইজি ব্রায়ান্টের ‌‘দ্য গেম’-এ একটি তরুণী আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। খেলা শুরু করে জীবন–মৃত্যু নামে দুটি চরিত্র। জীবন–মৃত্যুর ঘূর্নায়মানতার নিরন্তন দ্বন্দ্বে জীবনই জয়ী হয় সেখানেও। ফলে যাই ঘটুক, যত আঘাত, দুঃখের তীব্রতা, আসুক হতাশা–জীবন অপার সম্ভাবনাময়। তাই আত্মহত্যা নয়। এমন বার্তাই বহন করেন লুইজি ব্রায়ান্ট। তার নাটকটিতেও জীবনের অপার সম্ভাবনাকে ভালোবাসার আশায় আবার নতুন করে বেঁচে থাকার প্রেরণায় জেগে উঠতে দেখা যায় সবাইকে। বাস্তবে এই স্বপ্ন বা আশা ব্যর্থ হওয়ার কারণ? কেন আত্মহত্যার মতো কাজে মানুষের জীবনবোধ ও বেচেঁ থাকার তীব্র ইচ্ছার পরাজয় ঘটছে?
মানুষ কোন চিরন্তন ধারনায় বদ্ধ নির্দিষ্ট সীমায় বাঁধা নয় । তার অবস্থান, পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে, কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ব্যক্তির মূল্যবোধ, ইচ্ছা,আগ্রহ ও অনুভূতি। মানুষকে প্রতিনিয়ত সময়ের সাথে যুঝে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। তাহলে কী পরিস্থিতি ও পরিবেশের মধ্যে আমরা আছি যেখানে পারমিতারা মানুষ হয়ে ওঠার লড়াইটি লড়তে চায় না। মনোবিজ্ঞানীর ভাষায়- মানুষ হতাশ হলে ঠুনকো কারণেও আবেগ ধরে রাখতে পারে না। তখন নিজেকে একা মনে করে। আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ধীরে, ধীরে খারাপ পরিণতিতে। আপাতদৃষ্টিতে, অন্যদের কাছে মৃত্যু মনে হলেও সেটি জীবনের পরাজয়। ওই মুহূর্তে সেই ব্যক্তির জন্য অনেক বড় কারণ হয়ে সামনে এসেছিল মরণ।
অনেকটা সেই বালকরা আর ব্যাঙদের গল্পের মতো। পুকুরের ঢিল ছোঁড়া তাদের কাছে নিছক আনন্দের কিন্তু ফল হলো অত্যন্ত মারাত্মক। তাদের আনন্দ অন্যের মৃত্যুর কারণ হয়েছে । তাই যে বিষয়টি আপনার আমার জন্য অত্যন্ত তুচ্ছ আপনি বা আমি কোন কারণই খুঁজে পাই না জীবনকে শেষ করে দেওয়ার জন্য সেখানে যিনি আহত, রক্তাক্ত- তার কাছে সেটিই অনেক বড় কারণ । মানুষ কিন্তু কারণের জন্যই আত্মহত্যা করে তা কিন্তু নয় বরং যখন অপমানিত বোধ করে; যখন সে কোনো ব্যক্তি, কারো আচরণ, কোনো পরিবেশ, পরিস্থিতির মাধ্যমে বারংবার সহিংসতার শিকার হয়, সহানুভুতির বদলে যখন একাকী, নি:সঙ্গতায় হতাশার অন্ধকারে জীবনের সুন্দর অর্থ তার কাছে অধরা হয়ে যায় ফলাফল হয় জীবননাশ। জীবনের ইতি ঘটানো ব্যক্তিটির কাছে একটা সমাধান হয়। যাবতীয় যন্ত্রণা ও ব্যর্থতা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে পথটিকে বিবেচনা করেন । মনোবিজ্ঞানীরা বলেন টানেল ভিশন। চিন্তার শূন্যতা । যুক্তি দিয়ে চিন্তা করার ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা লোপ পায় তখন ।
মানুষের চিন্তা ,অবসাদ বিষন্নতা ও ক্ষয়ে যাওয়া, সহ্য, শক্তি, মানিয়ে নেওয়ার অক্ষমতা একদিনে হয় না। সমস্যাটি একদিনের নয়। পারমিতাও হয়ত বিষন্ন ছিল, আহত ছিল, ভীত ছিল ভিতরে, ভিতরে ক্ষয়ে গিয়েছিল। নির্মমতা হলো আমরা কেউ বুঝতে পারলাম না। অনেক ক্ষেত্রে ধার্তব্যের মধ্যেই ধরলাম না। প্লেটো ‘ক্রাইসিস অব ফ্রেন্ডশিপ’তে প্রশ্ন করেছিলেন-মানুষ আত্মহত্যা করে কেন ? উত্তর ছিল সহায়হীন হলে। সহায়ক তবে কে? প্লেটোর উত্তর-বন্ধু, তারাই স্বজন। তিনি বইতে বিশদ আলোচনা করেছেন তার উপযোগিতা ও আনন্দ তত্ত্বের ভিত্তিতে। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো কাছের মানুষের সাহচর্য। কাছের মানুষদের ভুমিকা ও দায়িত্ব আজও সবচেয়ে বেশি। খুব সাধারণ বোধেই মানুষ বিপন্ন হলে তার কাছের মানুষের সান্নিধ্য সবার আগে খোঁজেন। তাই শোনার প্রবণতা রোধ করে সব দুর্ঘটনা। সহমর্মিতা ও মন খুলে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়ে উঠে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমাধান। প্রিয় জীবন সুন্দর করতে প্রেম, আশা, বিশ্বাস, সহানুভুতি ও মানবিকতার প্রয়োজন। প্রিয়জন ছাড়া সম্ভব? হু’র মতে, মানসিক সুস্থতা হলো, কোনো ব্যক্তি যখন নিজের স্বক্ষমতা বুঝতে পারেন, তখন জীবনের স্বাভাবিক চাপগুলো তিনি মানিয়ে নিতে পারেন, উৎপাদনশীলতায় কাজ করে যেতে পারেন। নিজ অবদান রাখতে পারেন এই যোগ্যতাগুলো অর্জন করতে সহমর্মিতা, সুস্থ পরিবেশ প্রয়োজন। র্নিমাণ করার দ্বায়িত্ব কাদের? শৈশব, কৈশোর হবে আনন্দময়। তারুণ্য সাহসী, উদ্যামী। কেন নিরাশার অন্ধকার গহব্বরে হারিয়ে যাবেন? সুন্দর সুনিশ্চিত ভবিষৎ নির্মাণের স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি। সেখানে পৌঁছাতে আমাদের পারমিতাদের মৃত্যু নিয়ে ফল্প্রসূ চিন্তা করার সময় থাকতে হবে। আমরা আত্মহত্যা দিবস পালন করব, আলোচনা করব, সেমিনার করব কিন্তু দিন শেষে বেড়াব, ভালো থাকব, কাজ করব। আর সম্ভাবনাময় জীবনগুলোর মহীরুহ হয়ে উঠতে না পারায় নিজেদের প্রশ্ন করা ছাড়া আর কী কোনো উপায় আছে আমাদের কারো?
(পারমিতা নামটি রূপকার্থে ব্যবহার করা হয়েছে এই বিশেষ রচনায়)

নবনীতা চক্রবর্তী, প্রভাষক, নর্দান ইউনির্ভাসিটি, বাংলাদেশ।

ওএফএস।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানিদের জন্য ‘সার্ক ভিসা ছাড়’ সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত:

সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।

৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।

৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক জনশক্তি ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার বিকালে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ত্রধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ২৬।

পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) মঙ্গলবার বিকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীর’র পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান নিন্দা প্রকাশ করছে। নিহতের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করছে পাকিস্তান।

এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বার্তায় তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এ জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আবারও নিশ্চিত করছি যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় দৃঢ়।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে সরকার পরিবর্তন হলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পর যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাদের জন্য এক বছরের ‘শিক্ষিত বেকার ভাতা’ চালু করার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে সরকার।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত পরিকল্পনা নিয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি পরিকল্পনা করছি—যাতে যারা এখনো চাকরি পাননি, তারা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সহায়তা পান। এই সময়টিতে সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উভয়ের উদ্যোগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক তরুণ নেতাকর্মী, যাঁরা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তারা বয়স পার করে ফেললেও কোনো চাকরি পাননি। “শুধু ছাত্রদল নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষ আছেন যারা সরকারের অনুগত না হওয়ায় চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন তারেক।

বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, “২০ কোটির বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বিশাল বাজেট ও কাঠামোগত পরিকল্পনা দাবি করে। এটা অব্যবস্থাপনার জায়গা নয়, এটা করতে হলে বাস্তবতা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।”

তিস্তা নদী ঘিরে রংপুর অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা শুধু নদী নয়, রংপুর বিভাগের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অতীতে তিস্তাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাস্তব ভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ করবে।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

Header Ad
Header Ad

এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জমিগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চলমান তদন্তে দেখা যায়, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ তারা অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় এসব জমি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

জমিগুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ট্রেড লিংক, ইভেন্ট টাইটান ইন্টারন্যাশনাল, পাইথন ট্রেডিং কর্নার, ইসলাম ট্রেডার্স, ডায়মন্ড বিজনেস হাউস, এএইচ সেন্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সরাসরি আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।

এর আগেও এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দফায় আদালত সম্পদ ও শেয়ার অবরুদ্ধ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা শেয়ার, জমি ও ব্যাংক হিসাব পর্যায়ক্রমে অবরুদ্ধ ও ক্রোক করে আদালত।

এস আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৩০০-এর বেশি ব্যাংক হিসাব, হাজার একরের বেশি জমি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে আরও নতুন সম্পদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

দুদক বলছে, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ না করার অনুরোধ ডিএমপির
টাঙ্গাইলে বেড়েছে গরমের তীব্রতা, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সরকার সরিয়ে না দিলে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
বিরামপুরে ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে 'ভুয়া সেনাসদস্য' আটক
হাসিনাকে যারা খুনি হতে সাহায্য করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে: সারজিস আলম
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুললো আবাসিক হল
কাশ্মীরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, মসজিদে ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু
ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে, ঘরের মাঠে লজ্জার হার বাংলাদেশের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটে প্রথম আব্দুল্লাহ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ হত্যা: প্রধান আসামি মেহরাজ গ্রেপ্তার
তুরস্কের ইস্তানবুলে একের পর এক ভূমিকম্প
এবার সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন পরীমণি
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা
আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই: মির্জা আব্বাস
কাশ্মীরের হামলা ‘সাজানো’ দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
ভাইরাল ভিডিও সমন্বয়ক রুবাইয়ার নয়, দাবি এনসিপি নেতার