চূড়ামনকাঠির জগাহাটি
যশোরের চূড়ামনকাঠি ইউনিয়ন। তাতে আছে গ্রাম জগাহাটি। এই গ্রামে গেলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইকো-নেটওয়ার্ক টিম’। তারা সবাই বন্ধু, একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। নাম যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। নারী ও শিশুদের নিয়ে তাদের কাজের ভুবনে ঘুরলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং সাংবাদিক মোতালেব হোসেন।
একটি দারুণ ভালো কাজের খবর। যশোরের চূড়ামনকাঠি নামের একটি ইউনিয়ন আছে। সেখানে আছে জগাহাটি নামের এক গ্রাম। থাকেন যারা-তাদের মধ্যে ১শ ৫০ জনকে নানা ধরণের রোগবালাইয়ের আধুনিক ধারণা দিয়েছেন তারা। তারা হলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকো নেটওয়ার্ক টিম। জানিয়েছেন গ্রামবাসীকে-কিভাবে পানিতে নানা ধরণের রোগের জীবাণু মিশে থাকে, সেগুলোর প্রতিরোধে আমাদের করণীয় কি, কি? আবার শিখিয়েছেন খাবারে কীভাবে পানি এবং অন্যান্য জায়গা থেকে, পরিবেশের মাধ্যমে বিষ ঢুকে পড়ে। তার ক্ষতি? জানিয়েছেন এবং প্রশিক্ষণও দিয়েছেন ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য কীভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়, রাখতে হয়।
নিয়মিতভাবেই গ্রামের আর্থিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের স্বাস্থ্য সচেতন করতে, তাদের নিরাপদ পানীয়জলের ব্যবহার শেখাতে এবং স্যানিটেশনের কার্যক্রম জানাতে ও ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যকে কীভাবে সুরক্ষিত রাখতে হয় শেখাতে কাজ করে চলেন-জনিয়েছেন দলপ্রধান সজিবুর রহমান। তিনি তাদের শেষ কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করেছেন গল্পে-‘এই জগাহাটি আমাদের যশোরেরই একটি গ্রাম হলেও সামাজিক ও আর্থিকভাবে অনেক পিছিয়ে আছে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের পেশা হলো পুকুর, খাল, বিল, নদীতে মৎস্য আহরণ। গ্রামটির ভালো দিক হলো, নারীরাও কাজ করেন। তবে তারা গরিব নারীশ্রমিক। লেখাপড়ার অভাবে তাদের শিশুরা পিছিয়ে। আমরা জগাহাটি গ্রামে প্রধানত নারীদের নিয়ে কাজ করেছি। কেননা তাদের ওপরই পরিবারের ভার। এই গ্রামের নারীদের পানিবাহিত রোগগুলো কী, কী, সেগুলো কেন হয়, কীভাবে হয়, কখন বুঝবেন আপনি কোনো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত, বাঁচবেন ও চিকিৎসা করবেন কীভাবে? এভাবে তাদের এবং পুরুষ ও শিশুদের পানীয়জলের নিরাপদ ব্যবহার, স্যানিটেশন ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্পর্কে জানানো হয়েছে। শেখানো হয়েছে সব বেঁচে থাকা ও ভালো থাকার প্রয়োজনে। শিখিয়েছি খাদ্য বিষক্রিয়া এবং প্রতিরোধ ও প্রতিকার। সবাইকে প্রধানত গ্রামের শিশুদের ঠিকভাবে হাত ধোয়া শিখিয়েছি। আমাদেরও অনেক কিছু জানা হয়েছে।’
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইকো নেটওয়ার্ক টিমে আছেন সক্রিয়-মুরাদ হাসান, আবির হাসান রাসেল, জহিরুল ইসলাম মনির, সাফিনা আফরিন আবৃত্তি, তিথি কুণ্ডু, লামিয়া আক্তার তামান্না ও ফারজানা বেগম। সজিব তো আছেনই সবার আগে। এই আটজনের দলের নিয়মিত গ্রামে, গ্রামে অবহেলিত এবং পিছিয়ে পড়া গ্রামের গরীব মানুষদের জীবনের মান উন্নয়নের জন্য কাজ চলছে। তাদের সঙ্গে আছেন ইকো-নেটওয়ার্ক টিম নামের একটি বৈশ্বিক সংগঠন। তারা তরুণ, ছাত্র, ছাত্রীদের। ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য মানুষকে নিয়ে কাজ করেন সবাই, সবখানে।
ওএফএস।