শিক্ষক গড়ার কারিগর কে?
সাইফুল ইসলাম তালুকদার রনি
আজ ৫ অক্টোবর, বিশ্ব শিক্ষক দিবস। উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের প্রস্তুত করতে ১৯৬৬ এবং ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কোর আয়োজনে দুইটি বড় সম্মেলন হয়েছিল । সেই সম্মেলনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ১৯৯৫ সাল থেকে ইউনেস্কোর নেতৃত্বে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ইউনিসেফ, আন্তর্জাতিক শিক্ষা (আইই)’র সহযোগিতায় সারা বিশ্বের ১শ টি দেশে ‘আন্তজাতিক শিক্ষক দিবস’ উদযাপন হচ্ছে।
শিক্ষকতা সমাজের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পেশা। সমাজের অন্য সব পেশার মানুষদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতেও শিক্ষকতার বিকল্প নেই। ইউনেস্কো মনে করে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস হল, এমন একটি দিবস-যা শিক্ষকরা কীভাবে যুগের সাথে এই পেশার পরিবর্তন হচ্ছে, আগামীর পরিবর্তনের সাথে সহজে তাল মিলিয়ে নিতে ও শিক্ষকদের জন্য চারপাশের যেমন দেশ এবং জনসাধারণের যে সমর্থন প্রয়োজন তা ব্যক্ত করার জন্য উদযাপন। তারা আরও মনে করেন, এই দিবসের মাধ্যমে শিক্ষকদের অধিকার ও দায়িত্ব এবং তাদের প্রাথমিক প্রস্তুতি, পরবর্তী শিক্ষা, নিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং শিক্ষণ ও শেখার শর্তের মানদন্ড নির্ধারণ করার একটি উপলক্ষ্য।
ইউনেস্কো প্রতি বছর দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি শ্লোগান নির্ধারণ করে থাকে। এবারের-‘শিক্ষার পরিবর্তন শুরু হয় শিক্ষকদের মাধ্যমে।’ তার মানে, শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হলে আগে শিক্ষকদের পরিবর্তন করতে হবে। সমাজে একটি প্রচলিত কথা রয়েছে, মানুষ গড়ার কারিগর হলেন শিক্ষকরা। তবে যারা সমাজ ও দেশের আগামীর ভবিষ্যৎ গড়বেন তাদের গড়বেন কে? ফলে শিক্ষক হলেন সমাজের সবচেয়ে বিশ্বস্ত, সকল প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান উৎপাদনকারী, সমাজে যেকোনো সমস্যার পরামর্শকারী ও দেশের যেকোন উন্নয়নের নীতিগত অংশীদার।
কিন্তু দুঃখের বিষয় সাম্প্রতিক কালের দৈনিক পত্রিকা পড়লে শিক্ষকদের ইতিবাচক দিকের চেয়ে নেতিবাচক দিকগুলো বেশি পড়তে হয়। চলতি বছরের জুনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের একটি প্রতিবেদনে আছে, ১ হাজার ১শ ৮ জন শিক্ষক পাওয়া গেছে, যারা জাল সনদে চাকরি করছেন বছরের পর বছর। ১০ বছরে ২৪ হাজার ১শ ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে জাল সনদধারী এই শিক্ষকদের সনাক্ত হয়েছে। দেশে প্রায় দুই লাখের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সবগুলো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সনদ যাছাই করলে জাল সনদধারী শিক্ষকের সংখ্যা কমবে না বরং বাড়বে। তাহলে এই শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কী শিক্ষা দেবেন? সমাজের আগামী প্রজন্ম গড়ার কারিগরদের যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ কীভাবে বিনির্মান করা যাবে? আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারলাম, বাংলাদেশের স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুন নিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কিছু শিক্ষক ঘুষের মাধ্যমে চাকরি নিয়েছেন। এই উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় নিয়ে সব সময় প্রশ্ন ওঠে এবং তাদের সবচেয়ে ভালো ফলাফলের ভিত্তিতে তার সমাধান ঘটে। তবে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা অনেক বেশি রয়েছে। ভেতরে অনেক গলদ। ঢাকার আরেকটি নামকরা বেসরকারী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অবৈধভাবে নিয়ম বহির্ভূত কাজ করেই যাচ্ছেন। আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের র্দুনামের শেষ নেই। আবার সুনামও অশেষ। তবে এমনদের কারণ হলো প্রতিষ্ঠানগুলোকে সৎভাবে চালু রাখতে না পারা।
শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আন্ত:বিভাগীয় মামলার কারণে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে শিক্ষক ও যোগ্যকর্মীর অভাব প্রবল। দেশের অসংখ্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকবিহীন চলছে। অধ্যক্ষ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলছে, তার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন। আর সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে তো দলীয় লোক ছাড়া শিক্ষক বাদে আর কোনো পদে নিয়োগ হয় না এবং তারা কেউ মনোযোগ দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করেন না। ফলে সরকারের ভর্তুকি নয়, তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও সুষ্ঠু কর্মক্ষেত্রের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রত্যেকটি উপজেলায় অন্তত একটি কলেজকে সরকারি করার লক্ষ্যে ২০১৬ সালে জাতীয়করণে সম্মতি প্রদান করেছেন শেখ হাসিনা। এখন পর্যন্ত ৩শ ২৪টি কলেজকে জাতীয়করণ করার গেজেট জারি হয়েছে ও সেগুলো জাতীয়করণ হয়েছে এবং হচ্ছে। তবে গত ৬ বছরে মাত্র ১০টি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হয়েছে। এর কারণও তাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অযোগ্যতা। এক্ষেত্রে ঢাকাসহ সারা দেশের আইইআর এমএডধারীদের প্রাতিষ্ঠানিক পদে চাকরি প্রদান ভালো সমাধান।
পত্রিকার মাধ্যমে আমরা আরো জানতে পারলাম, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যাপক বেশি, প্রভাষক কম! শিক্ষকরা প্রভাষক হয়েই চেষ্টায় থাকেন কখন অধ্যাপক তকমা নেওয়া যায়। কারণ সুযোগ, সুবিধা, আরাম, আয়েশ হাজার গুণ বেশি। সবাই পদোন্নতির পেছনে দৌড়াতে, দৌড়াতে ক্লাসে পড়ানো ও গবেষণা ভুলে গিয়েছেন। অথচ শিক্ষকতা আরাধনা। সময়ের শ্রেষ্ঠ তপস্যাটি অধ্যাপনায় নিযুক্ত হবার দিনটি থেকে তারা ভুলে যেতে থাকেন। এই সত্য যেকোনো নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে চরম বাস্তবতা।
এই ভুলের যাওয়ার কারণগুলো শিক্ষাবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে এবং নিজেও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানে কর্মের সুবাদে এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষকতার ফলে তুলে ধরছি।
শিক্ষায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগ নেই : আমাদের দেশে শিক্ষায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগ নেই। যা আছে তারও সুষম বন্টন হয় না। সুষ্ঠুভাবে ও দুর্নীতিমুক্ত বরাদ্ধ করা অর্থও কাজে লাগালে শিক্ষকতার বেহাল দশা তৈরি কখনো হয় না। ভারতের নোবেলজয়ী শিক্ষাবিদ কৈলাশ সত্যার্থী বলেন, শিক্ষায় ১ ডলার বিনিয়োগ করলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে ১৫ গুণ ফেরত পাওয়া যায়। এছাড়াও যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভালো ছাত্র ও ভালো মানুষ তৈরি করে বলে এই সত্যটি যথার্থ। ফলে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে শিক্ষকতা পেশায় মেধাবীদের আগ্রহ বাড়াতে হবে। আগ্রহী শিক্ষার্থীদের স্বচ্ছ ও যুগোপযোগী মূল্যায়নের মাধ্যমে এই পেশায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হবে।
মানসম্মত নিয়মিত প্রশিক্ষণের অভাবঃ পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে শিক্ষক হওয়ার জন্য ব্যাচেলর ইন এডুকেশন ও মাস্টার্স অব এডুকেশন ডিগ্রি বাধ্যতামূলক। তিনি যে পর্যায়ের, যে বিষয়ের শিক্ষকই হতে চান না কেন, তার নিজস্ব বিষয়ে ডিগ্রির পাশাপাশি ব্যাচেলর ইন এডুকেশন ডিগ্রি থাকতেই হবে। বাংলাদেশে প্রক্রিয়াটি চলমান রয়েছে। আইইআর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। আবার আমাদের দেশে এমন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যাদের এই ডিগ্রি লাগে না। ফলে এই বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ তেমন নেই বললেই চলে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষনের জন্য সারা বাংলাদেশে মাত্র ৬৭টি পিটিআই রয়েছে। এই পিটিআইগুলো চরম শিক্ষক সংকটে রয়েছে। এগুলো তো উন্নত প্রতিষ্ঠান। তাহলে অবহেলা কার? ২০১৯ সালের পর থেকে পিটিআইগুলোতে নতুন করে কোন প্রশিক্ষক নিয়োগই হচ্ছে না মামলা জটিলতায়। শিক্ষক দলাদলি প্রাথমিক শিক্ষাকেও গিলে খাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর)। তাদের কার্যক্রমকে মূল্যায়ন করতে হবে। কোনোভাবেই তারা মূল্যায়িত হন না। এই ইনস্টিটিউটগুলোর মান ও স্বকীয়তা আরও বৃদ্ধি প্রয়োজন। ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের জাতীয় পাঠ্যপুস্তক প্রনয়ণসহ নানান নীতিমালা তৈরিতে যথাযথ ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে।
শিক্ষকতা আকর্ষনীয় পেশা নয় : বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় বাদে এবং নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদে এখনো শিক্ষকতা বাংলাদেশে টিউশনি ও কোচিং নির্ভর। ফলে আকর্ষনীয় পেশা নয়। বেতন যার যা খুশি দেন। কোনো নজরদারি নেই। ঘুষ পিয়ন, দারোয়ান, অফিস স্টাফকে বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিলে ছাত্র মানবিক ও ভালো মানুষ কীভাবে হবে? ফলে এখনো নিরুপায় হয়ে বা পিছনে থেকে শিক্ষকতায় আসতে হয়। সবাই বিসিএস অ্যাডমিন বা পুলিশ ক্যাডার হতে চায়। ছোট বেলায় সবাই শিক্ষক হতে চাইলে অন্যরকম দেশ হতো। স্বেচ্ছায় ও লক্ষ্য সামনে রেখে আসার সুযোগ নেই।
শিক্ষকদের পর্যাপ্ত স্বীকৃতি নেই : সরকারীভাবে শিক্ষকদের কাজের স্বীকৃতি পর্যাপ্ত নয়। বেসরকারীভাবে নেই। দেশে প্রথম আলো সীমিত পর্যায়ে ‘সেরা শিক্ষক সম্মাননা’ চালু করেছে। আলোকিত টিচার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের ‘আইডিয়া চ্যালেঞ্জ’ নামে প্রতি বছর স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করে। সরকারী স্বীকৃতি উপজেলা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু আছে। তবে যেহেতু রাজনীতির চাষাবাদ হয় প্রতিটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে এবং সরকার তরফে ফলে এই ধরনের বেসরকারি উদ্যোগ আরও বাড়াতে হবে।
এই দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষকদের জন্য কিছু দাবি : প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত সংখ্যার যোগ্য ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক থাকা উচিত। বাংলাদেশে এই অভাব খুব। যারা সত্যিকারের শিক্ষক হতে চায় তাদের সুযোগ দেওয়া হোক। ছাত্র শিক্ষকের ক্লাসরুমের অনুপাত কোথাও ঠিক নেই। যারা ভালো তাদের বেশি, যারা খারাপ তাদের ছাত্র, ছাত্রী নেই। অথচ খারাপ ছাত্রকে ভালো করে তোলাই শিক্ষকের কাজ। কোন উপায় না পেয়ে আমাদের দেশের চাকরিপ্রার্থীরা এই পেশায় আসেন। ফলে কাংখিত ফল লাভে ব্যর্থ হন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আরো পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে হবে। সমাজে নেতৃত্ব দানেও শিক্ষকদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে দুইজন মন্ত্রীই অশিক্ষক! প্রাথমিক ও গণ-শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও তাই। ধর্ম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের মত এই মন্ত্রনালয়গুলোর মন্ত্রীরা শিক্ষক হলে দেশ আরো অনেক বেশি উপকৃত হয় বলে দৃঢ় বিশ্বাস। ফলে সমাজের প্রতিটি স্তরে শিক্ষকদের নেতৃত্ব দানের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। তাদেরকে রাজনীতি এগিয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশে আলাদা রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে। সামাজিক ও নীতি-সংলাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে হবে। সমাজের সৃষ্ট সমস্যা সমাধানেও শিক্ষকদের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। সামাজিক ও নীতি-সংলাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে হবে। সমাজের সৃষ্ট সমস্যা সমাধানেও শিক্ষকদের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। সমাজের সৃষ্ট সমস্যা সমাধানেও শিক্ষকদের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। শিক্ষকদের জন্য আলাদা বৃত্তি ও কাজের স্বীকৃতস্বিরূপ তাদের বই প্রকাশ করে দিতে হবে সরকারী ও বেসরকারীভাবে। তাদের বিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার তৈরি করে দিতে হবে। তাদেরকে নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বিদ্যালয় উন্নত করে দেওয়াও পুরষ্কার হতে পারে।
বাংলাদেশে হাতেগোনা যেকটি প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে তাদের মধ্যে ‘আলোকিত টিচার্স’ নামের একটি অত্যাধুনিক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। ২১ শতকের আধুনিক ও যুগোপযুগী শিক্ষক গঠনে প্রতিষ্ঠানটি নিরন্তর সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এই পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজারের মত সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে প্রায় ২২টির মতো কোর্স, যেগুলো সামাজিক, দক্ষ ও আধুনিক শিক্ষক তৈরিতে ভূমিকা পালন করে চলছে। একজন শিক্ষক হলে অথবা শিক্ষকতা যদি স্বপ্ন হয় তাহলে সেই প্ল্যাটর্ফমে যেতে পারেন এক ক্লিকে। ইন্টারনেটে ইংরেজিতে আলোকিত টিচার্স সার্চ দিলেই হাতের মুঠোয় পেয়ে যাবেন শিক্ষক প্রশিক্ষিত হওয়ার পথ।
পরিশেষে নোবেল জয়ী মালালা ইউসুফজাইয়ের চমৎকার উক্তি দিয়ে শেষ করছি। মালালা বলেছিলেন, একটি বই, একটি কলম, একটি শিশু ও একজন শিক্ষক বিশ্বকে পরিবর্তন করে দেয়। সত্যিই একজন শিক্ষক চাইলেই গোটা বিশ্বকে পরিবর্তন করে দিতে পারেন। তবে বিশ্ব পরিবর্তন করতে চাইলে, শিক্ষকেই পিরিবর্তিত হতে হবে যুগ, সময় এবং বিশ্বের একধাপ আগে। বাংলাদেশে এই চর্চা তিন চারজন শিক্ষক ছাড়া আর কারো নেই। একজন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, আরেকজন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অন্যদের খুঁজে বের করতে হবে।
লেখক : জনসংযোগ কর্মকর্তা, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), সাবেক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মকর্তা, আলোকিত টিচার্স।