ফটো ফিচার
গাইবান্ধায় ডালের বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত কারিগররা
ঢাকাপ্রকাশ
পৌষের এই তীব্র বাতাস আর কনকনে শীতের মধ্যে ভোরের আলো ফোটার আগেই জেগে ওঠে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার বোয়ালী সাহাপাড়া বড়ি বানানোর গ্রামটি। পরিবারের সদস্যরা মিলে শুরু করে ডালের বড়ি তৈরির কাজে। ব্যস্ত হাতের মুষ্ঠিতে চেপে চেপে বিশেষ কায়দায় বড়ি তৈরি করে রোদে শুকাতে ব্যস্ত হয়ে যায় তারা।
মোঃ রিফাতুন্নবী রিফাতের ফটো ফিচার
সময়ের ব্যবধানে চাল-ডালের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ কমেছে। তারপরেও বাপ-দাদার এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে কাজ করেন কারিগররা।
শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ব্যস্ততা বাড়ে এই সময়। শীতের সকাল সকাল বাড়ির পাশের ফাঁকা জমিতে স্ত্রী, স্কুল পড়ুয়া মেয়ে আর বৃদ্ধা মা’কে নিয়ে ডালের বড়া তৈরি করছিলেন ওই গ্রামের গোবিন্দ চন্দ্র মোহন্ত।
সাহাপাড়ার প্রায় ২০-২২টি পরিবার কয়েক যুগ ধরে এই ডালের বড়ি তৈরির কাজ করে আসছেন। অনেকের বাড়তি আয়ের অন্যতম উৎস এই কাজ, আবার কেউ বংশ পরম্পরায় একমাত্র পেশা হিসেবে নিয়েছেন। অন্যান্য মৌসুমে বড়ি তৈরি হলেও শীতের দু’তিন মাস দম ফেলার উপায় নেই কারিগরদের।
ওই গ্রামের দিপালী রাণী সারা মৌসুমে ব্যস্ত থাকেন বড়ি তৈরির কাজে। তিনি বলেন, বড়ি তৈরি মূলত রোদের ওপর নির্ভর করে। বৃষ্টি-বাদলের দিনে কষ্ট বাড়ে। অনেক সময় তৈরি করা বড়ি রোদের অভাবে নষ্টও হয়ে যায়।
বড়ি তৈরির আরেক কারিগর অখিল চন্দ্র সাহা জানান, প্রতিটি পরিবার দিনে ১০ কেজি পর্যন্ত এই বড়ি তৈরি করতে পারেন। প্রতি কেজি ডালের বড়ি তৈরি করতে খরচ পড়ে ১৫০ টাকা। কিন্তু তারা বিক্রি করেন ২০০-২৫০ টাকা প্রতি কেজি।
ডালের বড়ি তৈরির উপকরণ খুব একটা বেশি নয়। প্রথমে মাসকলাই আর চাল ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হয়। এরপর সেগুলো মিশিয়ে মেশিনে গুড়া করা হয়। আগে মেশিন না থাকায় যাঁতায় করে হাত দিয়ে গুড়া করতে হতো। তবে এখন মেশিন আসায় সহজেই হচ্ছে এই কাজ। চাল-ডাল গুড়া করার পর ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হয়। এরপরই হাতের মুষ্ঠিতে চেপে চেপে বিশেষ কায়দায় পরিস্কার কাপড়ের ওপর বড়ি রাখা হয়।