বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১১ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

শিশুদের বিকাশে পথ দেখাবে ‘শৈশব’

‘শৈশব’ মানেই দুরন্তপনা। এই পাড়া, ওই পাড়া ঘুরে বেড়ানো। এই মহল্লা থেকে ওই মহল্লায় ছুটে চলা। বাড়ির পাশে খালি জমিনে বসে ঘুড়ি উড়ানো কিংবা হাতের কাছে যা পাই তা নিয়েই খেলাধুলা করা। কাদা-পানিতে মাখামাখি করা। নানা খেলায় মেতে উঠা। গ্রামাঞ্চলে এমন শৈশব এখনো দেখা যায়। কিন্তু শহরে ‘শৈশব’ বন্দি চার দেয়ালের মধ্যে।

খেলার মাঠ থাকলেও পরিবেশ নেই। খেলার সঙ্গী পাওয়া বেশ মুশকিল। বিদ্যালয়গুলোতেও মাঠের অভাব। পিতা-মাতারা ব্যস্ত চাকরি-সংসারসহ নিজস্ব কাজে। শিশু তখন একাকিত্বে ভুগে। তার উপর গত দুই বছরে কোভিড-১৯ নামের মহামারি এসে এই পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর মত বাংলদেশেও আঘাত করেছে সব শ্রেণির মানুষের উপর। শিশুরাও বাদ যায়নি। এমনিতেই চার দেয়ালে বন্দি শিশুদের শৈশব তখন আরও সংকীর্ণ হয়ে আসে। তাদের মধ্যেও বিষণ্নতা চলে আসে।

কিন্তু ব্যস্ত এই শহরে শিশুদের কথা কয়জনই বা ভাবেন, শিশুর মনোজগত নিয়ে কাজ করেন। শিশু কি চায়? কি করলে শিশুর মন চাঙ্গা থাকবে? শিশুদের শৈশব হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।

শিশুদের কথা মাথায় নিয়েই কাজ করছেন একজন ফারহানা মান্নান। নিজের দুই শিশু কন্যা চিনি আর মধুর সঙ্গে খেলাধুলা করতে করতেই তাদের নানা প্রশ্ন আর কৌতুহল তার ভাবনায় ঢুকিয়ে দেয় শিশুদের মনোজগত। তাদের শৈশবকে কীভাবে আরও সুন্দর ও বর্ণিল করে তোলায় যায় তা নিয়ে নিজেই গবেষণা শুরু করেন। এরই এক পর্যায়ে তার মাথায় যায় শিশুদের শৈশব নিয়ে কাজ করার বিষয়টি। তখনই গড়ে তুলেন ‘শৈশব’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

প্রায় তিন বছর আগে একেবারেই ব্যক্তি উদ্যোগে ‘শৈশব’ গড়ে তুললেও এগুচ্ছিলেন একটু একটু করে। কিন্তু কোভিড এসে সেই উদ্যোগে একটা ধাক্কা দেয়। তাতে থেমে থাকেননি পেশায় শিশু বিষয়ক গবেষক ও লেখক উদ্যোক্তা ফারহানা। শুরু করেন ভার্চুয়ালি কার্যক্রম। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শৈশবকে তুলে ধরেছেন বিভিন্ন সময়ে। অতি সম্প্রতি তিনি তার সেই উদ্যোগকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডের ই-ব্লকের একটি বাসায় শুরু করেছেন ‘শৈশব’ এর কার্যক্রম।

চলুন আমরা এখন ‘শৈশব’ এর কার্যক্রমের সঙ্গে একটু পরিচিত হয়ে আসি। জেনে আসি কীভাবে শিশুদের মনোজগত তৈরিতে ভূমিকা রাখবে শৈশব।

জাকির হোসেন রোডের যে ভবনটিতে ‘শৈশব’ এর কার্যক্রম চলছে সেই বাড়ির প্রথম তলা থেকে সিড়ি ধরে উঠতেই চোখে পড়বে শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণে অনেকগুলো চিত্র। কোনোটাতে খেলাধুলার সামগ্রি, কোনোটাতে বিজ্ঞান বিষয়ক নানা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আছে রিকশার চেইন, বিয়ারিংয়ের ছবিও। দোতলায় শৈশবের রিসিপশন কক্ষে ঢুকলেই চোখ আটকে যাবে ঘুড়ি উড়ানো একটি স্থিরচিত্রে। আছে দোলনায় চড়ার চিত্রও। লাল-সবুজের পতাকাকে শিশুদের সামনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চমৎকারভাবে।

রিসিপশন থেকে হাতের বামের কক্ষের ভিতরে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে সব ধরনের খেলার সামগ্রির। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ক সামগ্রিই বেশি। এটিকে মূলত বলা হচ্ছে স্ট্রিম রুম। একটি সুউচ্চ ভবন কীভাবে তৈরি হয়, তার ভিত্তিটা কীভাবে করতে হয়? এ সব শিশুরা শিখবে খেলতে খেলতে। বিজ্ঞানের আরও নানা বিষয় শিখতে পারবে শিশুরা। কম্পিউটার সম্পর্কে পাবে ধারণা।

এই কক্ষ থেকে বের হয়ে হাতের ডান দিকের কক্ষটিতে গেলে শিশুরা দেখতে পাবে অনেকগুলো বাঁধাই করা ছবি। যেগুলোতে তুলে আনা হয়েছে গ্রামবাংলার শৈশবের চিত্র। এই কক্ষে প্রাণভরে খেলাধুলাও করতে পারবে।

পাশের কক্ষে ঢুকার আগেই করিডোরের দেওয়ালে চোখে পড়বে বাঙালির সাত বীরশ্রেষ্ঠকে। ছবিতে বাঁধাই করে তাদেরকে আগামীর প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। আর সড়কের পাশের বারান্দা সাজানো হয়েছে শিশুদের খেলাধুলার জন্য।

শৈশব সম্পর্কে জানতে চাইলে এর উদ্যোক্তা ফারহানা মান্নান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, স্ট্রেম সম্পর্কে অনেকেই জানেন, যারা শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করেন বা ভাবেন। আমি এটাকে স্ট্রিম বলছি। সায়েন্স, টেকনোলজি, আর্ট, ম্যাথমেটিকস। আমরা শিশুদের নিয়ে কাজ করি যাদের বয়স দুই থেকে আট বছর তাদের জন্য আর্টসটা খুব দরকার। আমরা স্ট্রিম অ্যাপ্রোচ নিয়ে কাজ করি। এটার মাধ্যমে বাচ্চারা খেলবে এবং শিখবে। এটাই হচ্ছে আমার মূল বিষয়।

আমরা স্কুলে স্কুলে গিয়েছি। স্কুলে দুই ঘণ্টার ওয়ার্কশপ করেছি। শিক্ষক, অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করে আমরা ওয়ার্কশপ করেছি। আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি।

ফারহানা মান্নান বলেন, শৈশবের পুরো পরিবেশটা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সাজানো। শিশুদের চাইল্ড এরিয়াগুলোকে ডেভলপ করার চেষ্টা করেছি। শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে মনোযোগ দিতে হয়। যেমন ল্যাঙ্গুয়েজ, ইমোশনাল, স্যোশাল এবং ফিজিক্যাল ডেভলপমেন্ট নিয়ে। আমরা সেন্টারটা সাজানোর ক্ষেত্রে এগুলো নিয়েও ভেবেছি।

আমরা দুটি প্রোগ্রাম করছি। একটি হচ্ছে শিশুদের ছয় মাসের একটা প্রোগ্রাম। তারা ভর্তি হবে ছয় মাসের জন্য। সপ্তাহে দুদিন দুই ঘণ্টা আমাদের সঙ্গে কাটাবে। ছয় মাসে মোট ৪৮টি ক্লাস পাবে। সেখানে আমরা তাদের গাইড করে খেলতে শিখাব। একদম সিলেবাস ধরে। সেখানে সায়েন্সের ১০টা, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১০টা, আর্টসের আটটা,ম্যাথমেটিকসের ১০টা, টেকনোলজির ১০টা।

আরেকটা হচ্ছে মুক্তভাবে খেলার একটা সময়। অভিভাকরা তাদের সন্তান নিয়ে আসবেন। বাচ্চারা খেলবে, অভিভাকরাও তাদের সঙ্গে খেলবে। তাদের বাড়িতে হয়ত এতো খেলনার উপাদান নাই। আমরা চাই, তারা এখানে আসুক, সব রকমের খেলনা নিয়ে খেলুক। বিশেষ করে কোভিড সময়ে জন্ম নেওয়া শিশুরা বেড়ে উঠছে একাকীত্বে। তারা সহজে মিশতে পারছে না। তাদের বিকাশের জন্য শৈশব ভূমিকা রাখবে।

একটা বিষয় দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। তারা কোনো খেলা শুরু করলে শেষ করতে চায় না। নাড়াছাড়া করে একটা ছেড়ে আরেকটায় চলে যায়। একটা অস্থিরতা দেখা যায়। এই বিষয়গুলোতে আমরা মনোযোগ দেব।

ফারহানা মান্নান জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। এখানে সায়েন্স, আর্টস, টেকনোলজি, কম্পিউটার, ম্যাথমেটিকস, ইঞ্জিনিয়ারিং এ শিশুদের জন্য আলাদা আলাদা খেলনা থাকবে। শিশুদের জন্য বুকস কর্নার, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি রুম, কমিউনিটি জোন, সেন্ট প্লে, ওয়াটার প্লে কর্নার থাকবে, তারা খেলাধুলা করবে। ‘শৈশব’ এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে যে, একটা শিশু ঢুকে দুই ঘণ্টা সময় অনায়াসে খেলতে পারবে।

দুই থেকে আট বছর বয়সের শিশুরা এখানে ভর্তি হতে পারবে। এখানে এই বয়সী শিশুদের জন্যে খেলনা আছে।

ব্যক্তি উদ্যোগে ‘শৈশব’ শিশু সেন্টার করতে গিয়ে নানামুখি প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। একটা বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থ। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে এই সংকট কাটিয়ে শৈশবকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে, যোগ করেন ফারহানা মান্নান।

এনএইচবি/আরএ/

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানিদের জন্য ‘সার্ক ভিসা ছাড়’ সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত:

সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।

৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।

৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক জনশক্তি ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার বিকালে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ত্রধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ২৬।

পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) মঙ্গলবার বিকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীর’র পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান নিন্দা প্রকাশ করছে। নিহতের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করছে পাকিস্তান।

এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বার্তায় তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এ জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আবারও নিশ্চিত করছি যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় দৃঢ়।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে সরকার পরিবর্তন হলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পর যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাদের জন্য এক বছরের ‘শিক্ষিত বেকার ভাতা’ চালু করার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে সরকার।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত পরিকল্পনা নিয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি পরিকল্পনা করছি—যাতে যারা এখনো চাকরি পাননি, তারা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সহায়তা পান। এই সময়টিতে সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উভয়ের উদ্যোগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক তরুণ নেতাকর্মী, যাঁরা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তারা বয়স পার করে ফেললেও কোনো চাকরি পাননি। “শুধু ছাত্রদল নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষ আছেন যারা সরকারের অনুগত না হওয়ায় চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন তারেক।

বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, “২০ কোটির বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বিশাল বাজেট ও কাঠামোগত পরিকল্পনা দাবি করে। এটা অব্যবস্থাপনার জায়গা নয়, এটা করতে হলে বাস্তবতা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।”

তিস্তা নদী ঘিরে রংপুর অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা শুধু নদী নয়, রংপুর বিভাগের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অতীতে তিস্তাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাস্তব ভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ করবে।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

Header Ad
Header Ad

এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জমিগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চলমান তদন্তে দেখা যায়, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ তারা অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় এসব জমি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

জমিগুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ট্রেড লিংক, ইভেন্ট টাইটান ইন্টারন্যাশনাল, পাইথন ট্রেডিং কর্নার, ইসলাম ট্রেডার্স, ডায়মন্ড বিজনেস হাউস, এএইচ সেন্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সরাসরি আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।

এর আগেও এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দফায় আদালত সম্পদ ও শেয়ার অবরুদ্ধ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা শেয়ার, জমি ও ব্যাংক হিসাব পর্যায়ক্রমে অবরুদ্ধ ও ক্রোক করে আদালত।

এস আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৩০০-এর বেশি ব্যাংক হিসাব, হাজার একরের বেশি জমি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে আরও নতুন সম্পদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

দুদক বলছে, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ না করার অনুরোধ ডিএমপির
টাঙ্গাইলে বেড়েছে গরমের তীব্রতা, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সরকার সরিয়ে না দিলে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
বিরামপুরে ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে 'ভুয়া সেনাসদস্য' আটক
হাসিনাকে যারা খুনি হতে সাহায্য করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে: সারজিস আলম
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুললো আবাসিক হল
কাশ্মীরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, মসজিদে ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু
ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে, ঘরের মাঠে লজ্জার হার বাংলাদেশের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটে প্রথম আব্দুল্লাহ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ হত্যা: প্রধান আসামি মেহরাজ গ্রেপ্তার
তুরস্কের ইস্তানবুলে একের পর এক ভূমিকম্প
এবার সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন পরীমণি
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা
আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই: মির্জা আব্বাস
কাশ্মীরের হামলা ‘সাজানো’ দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
ভাইরাল ভিডিও সমন্বয়ক রুবাইয়ার নয়, দাবি এনসিপি নেতার