বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

শিশুদের বিকাশে পথ দেখাবে ‘শৈশব’

‘শৈশব’ মানেই দুরন্তপনা। এই পাড়া, ওই পাড়া ঘুরে বেড়ানো। এই মহল্লা থেকে ওই মহল্লায় ছুটে চলা। বাড়ির পাশে খালি জমিনে বসে ঘুড়ি উড়ানো কিংবা হাতের কাছে যা পাই তা নিয়েই খেলাধুলা করা। কাদা-পানিতে মাখামাখি করা। নানা খেলায় মেতে উঠা। গ্রামাঞ্চলে এমন শৈশব এখনো দেখা যায়। কিন্তু শহরে ‘শৈশব’ বন্দি চার দেয়ালের মধ্যে।

খেলার মাঠ থাকলেও পরিবেশ নেই। খেলার সঙ্গী পাওয়া বেশ মুশকিল। বিদ্যালয়গুলোতেও মাঠের অভাব। পিতা-মাতারা ব্যস্ত চাকরি-সংসারসহ নিজস্ব কাজে। শিশু তখন একাকিত্বে ভুগে। তার উপর গত দুই বছরে কোভিড-১৯ নামের মহামারি এসে এই পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর মত বাংলদেশেও আঘাত করেছে সব শ্রেণির মানুষের উপর। শিশুরাও বাদ যায়নি। এমনিতেই চার দেয়ালে বন্দি শিশুদের শৈশব তখন আরও সংকীর্ণ হয়ে আসে। তাদের মধ্যেও বিষণ্নতা চলে আসে।

কিন্তু ব্যস্ত এই শহরে শিশুদের কথা কয়জনই বা ভাবেন, শিশুর মনোজগত নিয়ে কাজ করেন। শিশু কি চায়? কি করলে শিশুর মন চাঙ্গা থাকবে? শিশুদের শৈশব হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।

শিশুদের কথা মাথায় নিয়েই কাজ করছেন একজন ফারহানা মান্নান। নিজের দুই শিশু কন্যা চিনি আর মধুর সঙ্গে খেলাধুলা করতে করতেই তাদের নানা প্রশ্ন আর কৌতুহল তার ভাবনায় ঢুকিয়ে দেয় শিশুদের মনোজগত। তাদের শৈশবকে কীভাবে আরও সুন্দর ও বর্ণিল করে তোলায় যায় তা নিয়ে নিজেই গবেষণা শুরু করেন। এরই এক পর্যায়ে তার মাথায় যায় শিশুদের শৈশব নিয়ে কাজ করার বিষয়টি। তখনই গড়ে তুলেন ‘শৈশব’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

প্রায় তিন বছর আগে একেবারেই ব্যক্তি উদ্যোগে ‘শৈশব’ গড়ে তুললেও এগুচ্ছিলেন একটু একটু করে। কিন্তু কোভিড এসে সেই উদ্যোগে একটা ধাক্কা দেয়। তাতে থেমে থাকেননি পেশায় শিশু বিষয়ক গবেষক ও লেখক উদ্যোক্তা ফারহানা। শুরু করেন ভার্চুয়ালি কার্যক্রম। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শৈশবকে তুলে ধরেছেন বিভিন্ন সময়ে। অতি সম্প্রতি তিনি তার সেই উদ্যোগকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডের ই-ব্লকের একটি বাসায় শুরু করেছেন ‘শৈশব’ এর কার্যক্রম।

চলুন আমরা এখন ‘শৈশব’ এর কার্যক্রমের সঙ্গে একটু পরিচিত হয়ে আসি। জেনে আসি কীভাবে শিশুদের মনোজগত তৈরিতে ভূমিকা রাখবে শৈশব।

জাকির হোসেন রোডের যে ভবনটিতে ‘শৈশব’ এর কার্যক্রম চলছে সেই বাড়ির প্রথম তলা থেকে সিড়ি ধরে উঠতেই চোখে পড়বে শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণে অনেকগুলো চিত্র। কোনোটাতে খেলাধুলার সামগ্রি, কোনোটাতে বিজ্ঞান বিষয়ক নানা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আছে রিকশার চেইন, বিয়ারিংয়ের ছবিও। দোতলায় শৈশবের রিসিপশন কক্ষে ঢুকলেই চোখ আটকে যাবে ঘুড়ি উড়ানো একটি স্থিরচিত্রে। আছে দোলনায় চড়ার চিত্রও। লাল-সবুজের পতাকাকে শিশুদের সামনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চমৎকারভাবে।

রিসিপশন থেকে হাতের বামের কক্ষের ভিতরে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে সব ধরনের খেলার সামগ্রির। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ক সামগ্রিই বেশি। এটিকে মূলত বলা হচ্ছে স্ট্রিম রুম। একটি সুউচ্চ ভবন কীভাবে তৈরি হয়, তার ভিত্তিটা কীভাবে করতে হয়? এ সব শিশুরা শিখবে খেলতে খেলতে। বিজ্ঞানের আরও নানা বিষয় শিখতে পারবে শিশুরা। কম্পিউটার সম্পর্কে পাবে ধারণা।

এই কক্ষ থেকে বের হয়ে হাতের ডান দিকের কক্ষটিতে গেলে শিশুরা দেখতে পাবে অনেকগুলো বাঁধাই করা ছবি। যেগুলোতে তুলে আনা হয়েছে গ্রামবাংলার শৈশবের চিত্র। এই কক্ষে প্রাণভরে খেলাধুলাও করতে পারবে।

পাশের কক্ষে ঢুকার আগেই করিডোরের দেওয়ালে চোখে পড়বে বাঙালির সাত বীরশ্রেষ্ঠকে। ছবিতে বাঁধাই করে তাদেরকে আগামীর প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। আর সড়কের পাশের বারান্দা সাজানো হয়েছে শিশুদের খেলাধুলার জন্য।

শৈশব সম্পর্কে জানতে চাইলে এর উদ্যোক্তা ফারহানা মান্নান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, স্ট্রেম সম্পর্কে অনেকেই জানেন, যারা শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করেন বা ভাবেন। আমি এটাকে স্ট্রিম বলছি। সায়েন্স, টেকনোলজি, আর্ট, ম্যাথমেটিকস। আমরা শিশুদের নিয়ে কাজ করি যাদের বয়স দুই থেকে আট বছর তাদের জন্য আর্টসটা খুব দরকার। আমরা স্ট্রিম অ্যাপ্রোচ নিয়ে কাজ করি। এটার মাধ্যমে বাচ্চারা খেলবে এবং শিখবে। এটাই হচ্ছে আমার মূল বিষয়।

আমরা স্কুলে স্কুলে গিয়েছি। স্কুলে দুই ঘণ্টার ওয়ার্কশপ করেছি। শিক্ষক, অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করে আমরা ওয়ার্কশপ করেছি। আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি।

ফারহানা মান্নান বলেন, শৈশবের পুরো পরিবেশটা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সাজানো। শিশুদের চাইল্ড এরিয়াগুলোকে ডেভলপ করার চেষ্টা করেছি। শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে মনোযোগ দিতে হয়। যেমন ল্যাঙ্গুয়েজ, ইমোশনাল, স্যোশাল এবং ফিজিক্যাল ডেভলপমেন্ট নিয়ে। আমরা সেন্টারটা সাজানোর ক্ষেত্রে এগুলো নিয়েও ভেবেছি।

আমরা দুটি প্রোগ্রাম করছি। একটি হচ্ছে শিশুদের ছয় মাসের একটা প্রোগ্রাম। তারা ভর্তি হবে ছয় মাসের জন্য। সপ্তাহে দুদিন দুই ঘণ্টা আমাদের সঙ্গে কাটাবে। ছয় মাসে মোট ৪৮টি ক্লাস পাবে। সেখানে আমরা তাদের গাইড করে খেলতে শিখাব। একদম সিলেবাস ধরে। সেখানে সায়েন্সের ১০টা, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১০টা, আর্টসের আটটা,ম্যাথমেটিকসের ১০টা, টেকনোলজির ১০টা।

আরেকটা হচ্ছে মুক্তভাবে খেলার একটা সময়। অভিভাকরা তাদের সন্তান নিয়ে আসবেন। বাচ্চারা খেলবে, অভিভাকরাও তাদের সঙ্গে খেলবে। তাদের বাড়িতে হয়ত এতো খেলনার উপাদান নাই। আমরা চাই, তারা এখানে আসুক, সব রকমের খেলনা নিয়ে খেলুক। বিশেষ করে কোভিড সময়ে জন্ম নেওয়া শিশুরা বেড়ে উঠছে একাকীত্বে। তারা সহজে মিশতে পারছে না। তাদের বিকাশের জন্য শৈশব ভূমিকা রাখবে।

একটা বিষয় দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। তারা কোনো খেলা শুরু করলে শেষ করতে চায় না। নাড়াছাড়া করে একটা ছেড়ে আরেকটায় চলে যায়। একটা অস্থিরতা দেখা যায়। এই বিষয়গুলোতে আমরা মনোযোগ দেব।

ফারহানা মান্নান জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। এখানে সায়েন্স, আর্টস, টেকনোলজি, কম্পিউটার, ম্যাথমেটিকস, ইঞ্জিনিয়ারিং এ শিশুদের জন্য আলাদা আলাদা খেলনা থাকবে। শিশুদের জন্য বুকস কর্নার, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি রুম, কমিউনিটি জোন, সেন্ট প্লে, ওয়াটার প্লে কর্নার থাকবে, তারা খেলাধুলা করবে। ‘শৈশব’ এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে যে, একটা শিশু ঢুকে দুই ঘণ্টা সময় অনায়াসে খেলতে পারবে।

দুই থেকে আট বছর বয়সের শিশুরা এখানে ভর্তি হতে পারবে। এখানে এই বয়সী শিশুদের জন্যে খেলনা আছে।

ব্যক্তি উদ্যোগে ‘শৈশব’ শিশু সেন্টার করতে গিয়ে নানামুখি প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। একটা বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থ। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে এই সংকট কাটিয়ে শৈশবকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে, যোগ করেন ফারহানা মান্নান।

এনএইচবি/আরএ/

Header Ad
Header Ad

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রচার বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ মহালে অবস্থিত সোনালি টকিজ সিনেমা হলে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে চলমান ‘বরবাদ’ সিনেমার সন্ধ্যার শো দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর দর্শক সমাগম ঘটে। ডিসি, বেলকনি এবং প্রথম শ্রেণির টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু সিনেমার মাঝপথে সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, ফলে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কোনো আশার আলো দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা হলে ভাঙচুর শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই তাণ্ডবে সিনেমা হলের বসার বেঞ্চ, চেয়ার ও টিকিট কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি হলের দেয়ালে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় একদল যুবক বিক্ষুব্ধ দর্শকদের ধাওয়া করলে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

কিছু দর্শক অভিযোগ করেন, যান্ত্রিক ত্রুটির সময় হল কর্তৃপক্ষ কোনো আশ্বস্ত না করে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে চলে যান। এতে দর্শকেরা আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এবং হলের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করেন।

ঘটনার সময় হলে উপস্থিত থাকা একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উত্তেজিত দর্শকেরা তাকে মারধর করতে উদ্যত হন। তবে তিনি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের লাইট বন্ধ করে দরজায় তালা লাগিয়ে ভেতরে বসে থাকায় অল্পের জন্য রক্ষা পান।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস জানান, সিনেমা চলার সময় সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেটি ঠিক করতে না পেরে কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া আনতে যান। কিন্তু দর্শকেরা কলাপসিবল গেটে তালা লাগানো দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে ভাঙচুর চালান।

এদিকে, ঘটনার পর সিনেমা হলের দায়িত্বে থাকা হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তিনি অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে আছেন। হলের অন্যান্য কর্মীরাও ভয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে (সেভেন সিস্টার্স) স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের অভিভাবক হিসেবে বর্ণনা করেন।

ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের কোনো সরাসরি সংযোগ নেই। ফলে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র প্রবেশদ্বার এবং অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক নেতা ও কূটনীতিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে অনেক ভারতীয় রাজনীতিবিদ হতাশাজনক এবং নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মন্তব্য করেছেন, ড. ইউনূসের বক্তব্য ভারতের ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের দুর্বলতা নিয়ে পাকিস্তান ও চীনের দীর্ঘদিনের প্রচারণাকে উসকে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ আরও জোরদার করতে শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।

ত্রিপুরার আদিবাসী দল টিপ্রা মোথার নেতা প্রদ্যোত মানিক্য বলেন, ‘১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হলে আজ এ সমস্যা হতো না। আমাদের বাংলাদেশের পরিবর্তে নিজস্ব সমুদ্রবন্দর প্রয়োজন।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের সমুদ্র প্রবেশাধিকার নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক এবং তিনি এ ধরনের মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না।’

ড. ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পবন খেরা মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাদেশের এ ধরনের অবস্থান উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।’

Header Ad
Header Ad

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু

সাবেক ইমাম সোয়ে নেই ওও। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। বিদায় নিচ্ছে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান। শেষ জুমার নামাজ আদায় করতে মুসলমানদের মধ্যে আগ্রহ ছিল চরমে। কিন্তু কে জানত, এই জুমাই শত শত মুসল্লির জীবনের শেষ জুমা হয়ে উঠবে!

গত ২৮ মার্চ, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাগাইং অঞ্চলের পাঁচটি মসজিদে তখন নামাজ আদায় করছিলেন অসংখ্য মুসল্লি। শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মায়োমা মসজিদ। এই মসজিদে নামাজরত প্রায় সবাই প্রাণ হারান।

মায়োমা মসজিদের সাবেক ইমাম সোয়ে নাই ওও তখন মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়ে সোতে অবস্থান করছিলেন। সেখানেও তিনি ভূমিকম্প অনুভব করেন, তবে বুঝতে পারেননি কী পরিমাণ বিপর্যয় তার অপেক্ষায় রয়েছে।

সোয়ে নাই ওও একসময় মিয়ানমারের ইমাম ছিলেন, তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে একটি মানবাধিকার সংস্থায় কাজ করছেন। ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে একের পর এক শোকসংবাদ পেতে থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি জানতে পেরেছেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়, বন্ধু ও প্রাক্তন মুসল্লি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মসজিদে অবস্থান করছিলেন, অনেকেই মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোয়ে নাই ওও বিবিসিকে বলেন, ‘আমি প্রাণ হারানো সব মানুষের কথা ভাবছি। তাদের শিশুদের কথা ভাবছি... এই শোক সহ্য করা অসম্ভব।’

সাগাইং অঞ্চল মূলত বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য পরিচিত হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। নানা নিপীড়ন ও নির্যাতন সত্ত্বেও তারা এ অঞ্চলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৫০০ মুসলমান মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদ সংলগ্ন মায়োমা স্ট্রিট ও শহরতলি। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে।

এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাগাইং ও মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির জান্তা সরকার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫২১ জন। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এক টেলিভিশন ভাষণে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

মিয়ানমারের ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ৭ মাত্রার। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয় শহর থেকে ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আফটারশক হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকর্মীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা