চমক লাগে
করোনাভাইরাসের আক্রমণে ‘কোভিড ১৯’ রোগে থমকে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। খাঁ, খাঁ করেছে। টিএসসি থেকে নীলক্ষেতের দিকে যাবার বিরাট প্রশস্ত পথে পিচঢালা পথটি অপরূপ হয়ে সেজেছিল তখন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা গাছগুলো কেটেছেন যেগুলোর যে অংশ বাড়তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনের পথটি পিচ ঢালা হয়েছে তখন। কটি কুকুর তখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিল পাহারাদার। ঘেউ ঘেউ করে ছুটেছে তুমুল গতিতে। ভয়ে সরে এসেছেন ভদ্রলোকেরা আমার মতো। এই ক্যাম্পাসে আবার প্রাণ ফিরেছে। বর্ণিল, আধুনিক পোশাকের মেয়েরা হয়েছেন বাড়তি শোভা। তারা চলছেন নির্ভয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ডাকসুর সামনের আধুনিকতার স্বাক্ষ্য খাবারের দোকান ও বসার বিশেষ জায়গাটিতে। এই পথ পেরিয়ে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট। অনেকে আসেন, তারা নানা বিষয়ের অধ্যাপক। শিক্ষা অনুষদের ছাত্র, ছাত্রীদের মধ্যে পুরোনোদের তেমন পা পড়ে না। হঠাৎ একদিন সিফাতের সঙ্গে দেখা। অষ্টম ব্যাচের। সহকারী অধ্যাপক প্রয়াসে। বিশেষায়িত শিশু-কিশোরদের জন্য সেনানিবাসের বিদ্যালয়গুলোর অংশ-আছে ঢাকায় মিরপুরে। তবে এখন আইইআর তার রূপ মেলে দিয়েছে। নতুন ছাত্র, ছাত্রী ভর্তি হয়েছেন আমেরিকানদের প্রতিষ্ঠিত এই অনুষদের সামাজিক বিজ্ঞান, ভাষা শিক্ষা, বিশেষ শিক্ষা ইত্যাদি অনেকগুলো বিভাগে। আইইআরের স্টেজের সামনের বিরাট খোলামেলা ফ্লোরটি তুমুল ব্যস্ত। বামের একেবারে কোণায় ২৬তম ব্যাচের মেয়েরা খুব ব্যস্ত। তারা সবাই মিলে ২৭ তম ব্যাচের নবীণবরণ করবেন। সেজন্য ক্লাসের পর তারা নানা ধরণের ফুলের নকশা আঁকছেন সাদা কাগজে। চারুকলার ছেলেমেয়েদের চেয়েও ভালো হয়েছে, নিশ্চিত জানি। পুরো নীচতলার আলোময়, ভালোবাসার ভুবনকে বদলে দেবেন। তবে তারা ভালোভাবে খেতে পারছেন না। আইইআর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নিশ্চয়ই খাবারের টাকা দেবে। ডেকে আনবে বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্টজয়ী, বাংলা ভাষার-এপার ওপারের প্রথম কিংবদন্তী মুসা ইব্রাহীমকে। থাকবেন তাদের ৩১ মার্চের নবীনবরণে আরো শুভ। প্রথম ‘ডি রক স্টার’। এই ছেলেমেয়েদের কাজের ছবিগুলো আপনাকে নিয়ে যাবে জীবনের সেই বেলাতে, যখন ভালোবাসাই ছিল মুখ্য। বন্ধুত্ব আর সেই বর্ণিল ভুবনের জীবন হাতছানি দেয় সব সময় এই দেওয়ালগুলো, পেছনের বিরাট ক্যান্টিন আর তিনতলা ভবনের সবখানে। চলুন ঘুরে আসি তাদের আনন্দ আয়োজনে...। তারা সব সাবেক ছাত্র, ছাত্রীকে সবান্ধব আমন্ত্রণ জানাতে ভোলেননি।