বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১১ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সুর্বণার সব অভাব মিটিয়ে দিয়েছে ‘বিদ্যা’

দুই চোখে আলো নেই। পড়েন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। বাবা সুবাস দাস মারা গিয়েছেন দুই মাস বয়সে। মা কল্পনা তাকে আজকে পর্যন্ত এনেছেন। সুবর্ণা রাণী দাসের স্বপ্ন নারী দিবসে লিখে ও ছবি তুলে পাঠিয়েছেন তানভীর তুষার

আমি সুবর্ণা রাণী দাস। সবাই ডাকেন সুবর্ণা। গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ি। ওখানেই থাকি। আমার যখন দুই মাস, তখন বাবা সুবাস দাস মারা গেলেন। ফলে মায়ের কোলে মানুষ। আমরা গরিব। জন্মান্ধও ছিলাম না আমি। তবে দুই চোখে সমস্যা ছিলো খুব ছোটবেলা থেকে। যখন কথাও বলতে শিখিনি, সেই ছোট্ট মেয়েটিকে ঢাকার বিখ্যাত ফামগেটের ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো। রোগাক্রান্ত বাম চোখে অপারেশন করা হলো। হাসপাতালের চোখের ডাক্তার বলেছিলেন, ‘ওর বাম চোখটি ভালো হয়ে যাবে’ কিন্তু সেটি গ্রামে ফিরে আসার পর আস্তে, আস্তে আরো খারাপ হয়ে গেল। যখন একটু বড় হলাম তখন তারা রোগাক্রান্ত ডান চোখেও অপারেশন করতে বললেন। প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হলো। তবে আমার বাধায় পারেননি। তবে এখন ডান চোখটিও প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাতের গাঢ় অন্ধকার আর দিনের উজ্জ্বল আলো টের পাই আমি। একেবারে চোখের সামনে কোনোকিছু ধরলে সেটি সামান্য বুঝতে পারি। ফলে আমার এই নারী জীবনে বর্ণিল বিশ্বের রূপরস, গ্রাম শহরের পার্থক্য, মানুষের বিচিত্র ভুবন কোনোকিছুই দেখা হলো না। তবে আমার জীবনে সব অভাব মিটিয়ে দিয়েছে বিদ্যা। জীবন তো আর কারো থেমে থাকে না, যার ভেতরে আগুন জ্বলে। মা কণিকা রাণী দাস হয়েছেন আমার জীবনের সহায়, আমি তার অবলম্বন। একটি গ্রামের মেয়েকে তিনি স্বামীহারা হিন্দু বিধবা মানুষের বাড়িতে কাজ করে, রাত জেগে কাঁথা সেলাই করে, সামান্য দুই একটি হাস-মুরগি অনেক যত্নে পেলে লেখাপড়ার খরচ দিয়েছেন। মানুষের বাসায়, বাসায় কাজ করে মা আমাকে মানুষ করেছেন। জীবনের এই বহু কষ্টের যুদ্ধের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমি ধীরে, ধীরে আজকের জীবনে এসেছি। নানু আমার দুঃখ, কষ্টগুলো ভোলার সাথী হয়েছেন। কত যে সংগ্রাম করতে হয়েছে আমাদের। বাড়ি থেকে আমাদের বিদ্যালয়টি অনেক, অনেক দূরে। যাতায়াত করতে এক থেকে দেড়শ টাকা লাগে রাজবাড়িতেই। মা আমাকে চলতে, ফিরতে পারি না বলে প্রায় সময়ই বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে স্কুলে নিয়ে গিয়েছেন আবার বাসায় নিয়ে এসেছেন। আমিও মনোযোগ দিয়ে মা, নানু আর বন্ধুবান্ধব, শিক্ষকদের সাহায্যে পড়ালেখা চালিয়ে গিয়েছি। জীবনে একটিই স্বপ্ন-‘আমি মানুষের মতো মানুষ হব, বড় মানুষ হব।’ ফলে কষ্ট সয়েছি অনেক। গাড়িতে যতটুকু না গেলেই নয়, সেটুকু গিয়ে বাকি পথটুকু মাকে নিয়ে; কোনো বান্ধবীর সাহায্যে হেঁটে গিয়েছি, ফিরেছি। এভাবে সংগ্রাম করে কলেজে পড়েছি। ভালোভাবে পাশ করেছি। আমাকে খুব সাহায্য করেছে বন্ধুরা, সিনিয়র, জুনিয়ররা। তারা আমার ব্রেইলের লেখাপড়ার সাথী হয়েছেন। মুখে বলে গিয়েছি, তারা পরীক্ষায় খাতায় লিখেছেন। শ্রুত লেখকের সাহায্য নিয়েই ভর্তি হয়েছি গত বছর বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ও প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহীতে। আমার পড়ার ভুবন আলোয় ভরা, কল্পলোকের হাতছানি। আমি বাংলা বিভাগের ছাত্রী। এখন আর কেউ আমাকে অবহেলা করতে পারে না। কেননা, কজন পড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে? ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, মুস্তাফা নূরউল ইসলামের বিভাগের গল্প এখনো কিংবদন্তী। যেমন হাসান আজিজুল হকের গল্পের ভুবন, সনৎকুমার সাহা, ড. অরুন কুমার বসাকের বিশ্ববিদ্যালয়। তারা এক একজন কিংবদন্তী মানুষ। এখন যেকোনো জুনিয়র, সিনিয়রকে; আমার সঙ্গে জীবনের গল্প জানতে দেখা করা সবাইকে, এই লেখার পাঠকদের বলি-‘যার ইচ্ছাশক্তি আকাশ ছুঁয়েছে, তাকে কোনোকিছুই বাধা দিতে পারে না।’ জীবনের সুকুমার বৃত্তিগুলোকে খুব ভালোবাসি। ফলে ছোট থেকে জীবনের যন্ত্রণা, ভালোবাসা ও আশায় আমি কবিতা পড়ে চলেছি। অনেকগুলো কবিতা মুখস্ত বলতে পারি। গান পারি ভালো। অভিনয়েও পাকা বলেন অনেকে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের বিরাট ভুবনে নিশ্চয় আমি আমার এই প্রতিভাগুলোরও বিকাশ ঘটাতে পারবো। আশা আছে, এগুলো আমার আয়-রোজগারের পাথেয় হবে। আমাকে আরো চিনবে, জানবে আরো কত, শত মানুষ। তাদের হাসি, কান্না, ভালোবাসা হয়ে উঠবে আমার এই গান, অভিনয় আর আবৃত্তি। আমার রোজগার হবে। ভালোভাবে চলতে পারবো। তবে এখানে ভর্তি হয়ে যেমন বিশ্বজয় করে ফেলেছি, তেমনি তারাও চমকে গিয়েছেন। মানুষ এত মেধাবী ও অদম্য হতে পারে! ফলে তারা জানেন না, টেরই পাননি কোনোদিন-অনার্সে বাংলা বিভাগে ব্রেইলে বই থাকতে হয়। আমাদের বাংলার কবিতা, নাটক, লেকচারের ভুবনে ব্রেইলের বইগুলো থাকলে ভালো। ব্রেইলের বই থাকার প্রয়োজনীয়তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন টের পেলে আরো ভালো অন্ধ, নানা সংকটের ছাত্র, ছাত্রী তৈরি করতে পারবেন। আমাদের পাঠ্যবইয়ের প্রতি ভালোবাসা গাঢ় হবে। এখনো মেসে থেকে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা করতে হচ্ছে। প্রতিবন্ধীতায় আক্রান্ত ছাত্র, ছাত্রীদের জন্য আলাদা হল কোঠা চালু করা প্রয়োজন। তাতে সিট দখল ও মানুষের অবহেলা ভুলতে পারবো আমরা। আমি হলে সিট পেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে আরো ভালো করবো, দ্রুত সিটের প্রয়োজন। আমাদের ভিসি স্যারের সহযোগিতা চাই। লেখাপড়া আমাদের করতে হয় দয়া, দাক্ষিণ্যে। কেউ লিখে দেন, স্যারেরা পড়া ভালোভাবে বলে চলেন। সহযোগিতা করেন সবাই নানাভাবে। অনেক কষ্ট করে অভাবী পরিবারগুলো থেকে মেধার লড়াইয়ে জিতে আমরা ভর্তি হয়েছি। আমি তো একেবারেই পথের কাঙাল। ফলে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিগুলো কম হলেও মওকুফ করতে পারলে খুব ভালো হয়। আমাদের লিফটের দরকার। ক্লাসরুমগুলোর জন্য সিঁডি বেয়ে উঠতে কষ্ট হয় নানা ধরণের প্রতিবন্ধীতায় আক্রান্ত ছাত্র, ছাত্রীদের। খুব ভালোভাবে একজন মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পড়ালেখা শেষ করবো। এরপর বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্যারিয়ারের জন্য মেধার লড়াইয়ে নামবো। হতে চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এখন অনেক সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ফলে জীবনকে আরো ভালোভাবে জয় করতে পারব, মেধার স্বাক্ষর রাখতে স্বক্ষম হব। নচেৎ হব একজন ম্যাজিট্রেট। সেজন্য বিসিএস পাশ করতে হবে। এই আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন আর আমার জীবনের গল্প যখন এই লেখক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সাংবাদিক তানভীর তুষার লিখছিলেন, বলেছেন, তিনি কেঁদেছেন। আমি বুঝেছি। ভাইয়া আমাকে বলেছেন, ‘আমার লেখায় ভালোভাবে বিশ্বটিকে তোমার দেখার জন্য উন্নত চিকিৎসার খরচ যোগাতে বিত্তবানদের সাহায্য চাইছো আমি লিখব।’ অসাধারণ সুন্দর রাজশাহী ক্যাম্পাস আর জীবনে ভালো করার জন্য সাহায্য চাই-বিষয়গুলো নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। স্যার বলেছেন, ‘আমাদের অন্যতম মেধাবী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্রী সুবর্ণা রাণী দাস তার চাওয়াগুলো বরাবর লিখিতভাবে পেশ করলে আমার পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা হবে। আমি আশাবাদী, ওর চাওয়াগুলো আমরা পূরণ করে দিতে পারব।’
ওএস।

 

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানিদের জন্য ‘সার্ক ভিসা ছাড়’ সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত:

সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।

৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।

৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক জনশক্তি ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার বিকালে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ত্রধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ২৬।

পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) মঙ্গলবার বিকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীর’র পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান নিন্দা প্রকাশ করছে। নিহতের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করছে পাকিস্তান।

এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বার্তায় তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এ জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আবারও নিশ্চিত করছি যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় দৃঢ়।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে সরকার পরিবর্তন হলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পর যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাদের জন্য এক বছরের ‘শিক্ষিত বেকার ভাতা’ চালু করার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে সরকার।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত পরিকল্পনা নিয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি পরিকল্পনা করছি—যাতে যারা এখনো চাকরি পাননি, তারা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সহায়তা পান। এই সময়টিতে সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উভয়ের উদ্যোগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক তরুণ নেতাকর্মী, যাঁরা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তারা বয়স পার করে ফেললেও কোনো চাকরি পাননি। “শুধু ছাত্রদল নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষ আছেন যারা সরকারের অনুগত না হওয়ায় চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন তারেক।

বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, “২০ কোটির বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বিশাল বাজেট ও কাঠামোগত পরিকল্পনা দাবি করে। এটা অব্যবস্থাপনার জায়গা নয়, এটা করতে হলে বাস্তবতা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।”

তিস্তা নদী ঘিরে রংপুর অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা শুধু নদী নয়, রংপুর বিভাগের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অতীতে তিস্তাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাস্তব ভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ করবে।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

Header Ad
Header Ad

এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জমিগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চলমান তদন্তে দেখা যায়, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ তারা অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় এসব জমি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

জমিগুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ট্রেড লিংক, ইভেন্ট টাইটান ইন্টারন্যাশনাল, পাইথন ট্রেডিং কর্নার, ইসলাম ট্রেডার্স, ডায়মন্ড বিজনেস হাউস, এএইচ সেন্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সরাসরি আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।

এর আগেও এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দফায় আদালত সম্পদ ও শেয়ার অবরুদ্ধ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা শেয়ার, জমি ও ব্যাংক হিসাব পর্যায়ক্রমে অবরুদ্ধ ও ক্রোক করে আদালত।

এস আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৩০০-এর বেশি ব্যাংক হিসাব, হাজার একরের বেশি জমি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে আরও নতুন সম্পদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

দুদক বলছে, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ না করার অনুরোধ ডিএমপির
টাঙ্গাইলে বেড়েছে গরমের তীব্রতা, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সরকার সরিয়ে না দিলে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
বিরামপুরে ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে 'ভুয়া সেনাসদস্য' আটক
হাসিনাকে যারা খুনি হতে সাহায্য করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে: সারজিস আলম
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুললো আবাসিক হল
কাশ্মীরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, মসজিদে ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু
ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে, ঘরের মাঠে লজ্জার হার বাংলাদেশের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটে প্রথম আব্দুল্লাহ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ হত্যা: প্রধান আসামি মেহরাজ গ্রেপ্তার
তুরস্কের ইস্তানবুলে একের পর এক ভূমিকম্প
এবার সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন পরীমণি
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা
আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই: মির্জা আব্বাস
কাশ্মীরের হামলা ‘সাজানো’ দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
ভাইরাল ভিডিও সমন্বয়ক রুবাইয়ার নয়, দাবি এনসিপি নেতার