দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ‘না’, রাতেই সাবেক এমপির বাড়িতে ছাত্রদের ‘অভিযান’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (ইনসটে সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব)। ছবি: সংগৃহীত
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বৃহস্পতিবার দুপুরে এক বক্তব্যে বলেছেন, "আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কোনো অভিযান চালানোর কারও এখতিয়ার নেই।" তবে তার এই বক্তব্যের কিছু সময় পরেই, রাতে রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় এক গ্রুপ ছাত্রের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেবকে খুঁজে বের করা।
বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে শেখ তারেক জামিল তাজের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন যুবক মিরপুর ডিওএইচএস-এর একটি বাসায় প্রবেশ করেন। তাজ নিজেকে 'পল্লবী থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক' হিসেবে পরিচয় দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অভিযানের সময় শিক্ষার্থীরা বাসার মালিক ও স্থানীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করেন। তারা বাসার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং সাবেক এমপি মোতালেবকে খুঁজতে থাকেন। বাসার লোকজন তাদের জানান, মোতালেব বর্তমানে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এসময় বাসার ভেতরে বহিরাগতদের উপস্থিতি দেখে কেউ জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে ৯৯৯ ফোন করেন, যার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন আহমেদ জানান, “আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ছাত্ররা বাসায় ঢুকে পড়েছিল। বাসার মালিক বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানালে, আমি সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই এবং ওসি স্যারের নির্দেশে ছাত্রদের ফিরে যেতে বলি।”
এদিকে, অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া শেখ তারেক জামিল তাজ গণমাধ্যমে দাবি করেন, "এটি কোনো অভিযান ছিল না, তারা পুলিশকে জানিয়ে গিয়েছিলেন, তবে পুলিশ পরে ঘটনাস্থলে আসে।"
শিক্ষার্থীরা জানান, সাবেক এমপি মোতালেবকে তারা বাসায় খুঁজে পাননি। এরপর তারা হাসপাতালে গিয়েও তাকে পাননি। তাদের ধারণা, তারা পৌঁছানোর আগেই মোতালেব হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুপুরের বক্তব্যের পর এই ধরনের অভিযান পরিচালিত হওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আইনের যথাযথ প্রতিপালন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতি ছাড়া কীভাবে এমন অভিযান সম্ভব হলো, তা নিয়ে জনমনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে এই ঘটনার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো তদন্ত শুরু হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।
