শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন, সাংবিধানিক কাঠামো ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র

প্রতিদ্বন্দিতাতামূলক নির্বাচন: নির্বাচন মানেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, প্রতিদ্বন্দিতা বা প্রতিযোগিতামূলক তথা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। একজন ভোটারও যদি তার ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হন তবে সেই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিখুঁত বলা যাবে না। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারা এবং স্বচ্ছভাবে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করাই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, প্রতিযোগিতামূলক তথা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ মাহমুদুল ইসলামের মতে, ‘আমাদের সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বাইরে অন্য কিছু ভাবার কোনো অবকাশ নেই এবং যে আইন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কমিশনের হাত বেঁধে দেয়, তা সাংবিধানিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হবে’ (কনস্টিটিউশনাল ল অব বাংলাদেশ, তৃতীয় সংস্করণ, পৃ. ৯৭৩)। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধনপ্রাপ্ত সবগুলো দল অংশগ্রহণ করেছিল। সব দলের অংশগ্রহণের ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সবার মধ্যে একটি আশার সৃষ্টি হয়। কিন্তু তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনাপঞ্জি সে আশায় গুড়েবালি ঢেলে দেয়। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার ও জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনসমূহের একটিতেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশগ্রহণ করেনি।

নির্বাচনগুলোতে ভোটার অনুপস্থিতিও ছিল উল্লে খ করার মতো। নির্বাচন একদিনের বিষয় নয়, এটি একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া। দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে, নির্বাচনী প্রচারণা, এজেন্ট নিয়োগ, ভোটারদের ভোট প্রদান, নির্বাচনী বিরোধ নিরসন পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের সমান সুযোগ না থাকলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ার জন্য সব দলের অংশগ্রহণ প্রাথমিক শর্ত হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, অংশগ্রহণমূলক হলে অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয় না। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং কোনো প্রার্থী বা দল বিশেষ সুবিধা লাভ করে না।

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে ফলাফল যে কারও পক্ষেই যেতে পারে, যা পুরোপুরি প্রার্থীদের ভোটারদের সমর্থন আদায়ের উপর নির্ভর করে। যেসব নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয় সেগুলোতে ভোট পড়ার হারও বেশি হয়। পক্ষান্তরে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে বা একতরফা হলে ভোটাররাও ভোট প্রদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। একাদশ সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী নির্বাচনগুলো যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হলে ভোটারদের সামনে প্রার্থী বেছে নেওয়ার অর্থপূর্ণ বিকল্প থাকে, ফলে ভোটারদের প্রদত্ত ভোট নির্বাচনের ফলাফলের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পারে।

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কিছু মানদণ্ড রয়েছে। জাতিসংঘের ‘সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ’, ‘ইন্টারন্যাশনাল কোভেনেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস’, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নসহ (আইপিইউ) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ডগুলো হলো: (১) সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমসুযোগ সৃষ্টি করতে পারে এমন একটি আইনী কাঠামো থাকা, (২) ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য তাদের ভোটার হতে পারা; (৩) যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী তাদের প্রার্থী হতে পারা; (৪) ভোটারদের সামনে বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প প্রার্থী থাকা; (৫) নির্বাচনী এলাকার সীমানা কতগুলো মানদণ্ডের ভিত্তিতে সঠিকভাবে নিধারিত হওয়া; (৬) জেনে-শুনে-বুঝে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটারদের সামনে যথাযথ তথ্য থাকা; (৭) ভোটারদের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারা; (৮) অর্থ কিংবা সহিংসতার মাধ্যমে ভোটারদের প্রভাবিত করার অপচেষ্টা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকা; (৯) ভোট গননা সঠিকভাবে হওয়া; (১০) নির্বাচনী বিরোধ দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে মীমাংসিত হওয়া; সর্বোপরি (১১) ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়া।

সাংবিধানিক কাঠামো: ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। শেষ পর্যন্ত একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বভাবতই সদ্য স্বাধীনতা লাভ করা দেশে প্রণীত সংবিধানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে (১১ অনুচ্ছেদ)। পাশাপাশি সংবিধানের সপ্তম ভাগে নির্বাচন নামে একটি পরিচ্ছেদ রাখা হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা, কমিশনের ক্ষমতা, দায়িত্ব ইত্যাদির বিধান রাখা হয় (১১৮-১২৬ অনুচ্ছেদ)।

নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, এজন্য কমিশনকে নির্বাহী বিভাগের অধীনমুক্ত রেখে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি কমিশনাররা কাজ করতে গিয়ে যেন সরকার কর্তৃক অপসারিত হওয়ার ভয়ে না থাকেন, সেজন্য কমিশনারদের অপসারণের বিধান সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ন্যায় একই পদ্ধতিতে রাখা হয়েছে। ২ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে যুক্ত এসব সাংবিধানিক বিধিবিধান সত্তে¡ও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছিল। সব ক্ষমতাসীন সরকারই আপ্রাণ চেষ্টা থাকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে নিজেদের পক্ষে আনার। এমতাবস্থায় নব্বইয়ের গণআন্দোলন পরবর্তী সব দলের ঐকমত্য ও সমঝোতার ভিত্তিতে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা হয়। বস্তুত তত্ত্বািবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছিল নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দলগুলোর মধ্যে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা বা রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।

নির্বাচনকালীন কোনো দলীয় সরকারের প্রভাব না থাকায় সকল রাজনৈতিক দলের জন্য ক্ষমতায় যাওয়ার সমসুযোগ সৃষ্টি হয়। নির্বাচন হয়ে ওঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ফলে সৃষ্ট নতুন সাংবিধানিক কাঠামোর অধীনে অনুষ্ঠিত হয়দ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অল্প কিছু অভিযোগ থাকলেও সব দল নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়। এরপর ২০০৪ সালে বিএনপি সরকার সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে দিয়ে নির্দলীয় সরকারকে নিজেদের করায়ত্ত করার প্রচেষ্টা চালায়।

পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। এর আগে আদালত কর্তৃক পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণার প্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে ২১ জুলাই ২০১০ সাজেদা চৌধুরীকে চেয়ারপারসন এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে কো-চেয়ারপার্সন করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বিশেষ সংশোধনীয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি দীর্ঘদিন আলাপ আলোচনা ও ১০৪ জন বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিসহ সমাজের সকল স্তরের প্রতিনিধির সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে ২৯ মে ২০১১ অর্থাৎ আদালতের ১০ মে ২০১১ তারিখের সংক্ষিপ্ত আদেশের ১৯ দিন পর তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহাল রেখে সংবিধান সংশোধনের একটি সর্বসম্মত সুপারিশ প্রণয়ন করে। পরদিন ৩০ মে ২০১১ তারিখে বিশেষ কমিটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর, ত্তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দিয়ে সংবিধান সংশোধনের ঘোষণা দেয়। এরপর ৩১ মে বিশেষ সংসদীয় কমিটির কো- চেয়ারপার্সন ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবাদ সম্মেলন করে উচ্চ আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষণার কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখা সম্ভব হবে না বলে দাবি করেন, যা ছিল আদালতের রায়ের একটি ভয়াবহ অপব্যাখ্যা। একই দিনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীও আদালতের রায়ের একই অপব্যখ্যা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ৫ জুন ২০১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তির প্রস্তাব করে বিশেষ সংসদীয় কমিটি তার সুপারিশ চূড়ান্ত করে, যার প্রেক্ষিতে ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের ১৬ মাস পর ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে ভবিষ্যতের জন্য অসাংবিধানিক ঘোষণা করে উচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়। পূর্ণাঙ্গ রায়ে সংসদ অনুমোদন করলে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ্তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক ৩ সরকারব্যবস্থার অধীনে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হলে সংসদের সম্মতির প্রয়োজন হবে, যা ছিল ২০১১ সালের ১০ মে তারিখের সংক্ষিপ্ত আদেশের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।

সংক্ষিপ্ত আদেশের প্রথম ও দ্বিতীয় বাক্য দুটি একত্রে পড়লে এটি সুস্পষ্ট হয় যে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়াতে কোনোরূপ বাধা ছিল না; বরং তা-ই ছিল আদালতের আদালতের অভিপ্রায়। বিচার বিভাগকে রেহাই দিবেন কি না? এটি আপনাদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন।’ অর্থাৎ আদালত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়ে কে সরকারের প্রধান হবেন সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার সংসদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত চূড়ান্ত রায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিরা তা থেকে সরে আসেন এবং পরবর্তী দুই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের জন্য, প্রধানমন্ত্রীর ৩১ মে ২০১১ তারিখে প্রদত্ত অপব্যাখ্যার অনুকরণে, সংসদের সম্মতির শর্ত জুড়ে দেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে রায় পরিবর্তন ছিল বিচারকদের পক্ষ থেকে ফ্রড-অন-দ্য-কোর্ট বা আদালতের সঙ্গে জালিয়তি ও পেশাগত অসদাচারণ। পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের প্রক্রিয়া এবং সাংবিধানিক বৈধতা: সংবিধান হলো ‘উইল অব দ্য পিপল’ বা রাষ্ট্রের মালিক জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তির প্রতিফলন (অনুচ্ছেদ ৭(২))। বস্তুত একটি রাষ্ট্রের সংবিধান নাগরিকদের রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রতীক। তাই এতে পরিবর্তনের অর্থাৎ সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও এমন ঐকমত্য থাকা বাঞ্ছনীয়। আর এ ঐকমত্য অর্জিত হয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও জনগণের ‘পার্টিসিপেশন’ বা অংশগ্রহণ এবং এর পাশাপাশি ‘ডেলিভারেশন’ বা সুচিন্তিত আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে। মূলত এ দুটি শর্ত অর্জিত হলেই সংবিধানের সংশোধনী ‘লেজিটিমেসি’ বা গ্রহণযোগ্যতা পায়।

বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)

 

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম আটক

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সল্লা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও মারধরের মামলায় টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে আব্দুল আলীম (৫২) নামে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার ইউনিয়নের সল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটককৃত আব্দুল আলীম উপজেলার সল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

এ ব্যাপারে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভুঁইয়া করে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা এবং মারধর করাসহ বিভিন্ন মামলায় তাকে আটক করা হয়। তিনি থানা হেফাজতে রয়েছে। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হবে।

Header Ad
Header Ad

শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে: গয়েশ্বর

ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘দ্বিতীয়বার হত্যা করেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সালমান ওমর রুবেলের আয়োজনে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, এক ১৫ আগস্টে (১৯৭৫ সাল) শেখ মুজিবুরের জানাজায় লোক পেলাম না, আর এত বছর পরে ১৫ আগস্টে (২০২৪ সাল) কোনো জায়গায় মাহফিলের আওয়াজ পেলাম না। এতে বলা যায়, শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা তার বাবাকে এমন মারা মেরেছে যে মসজিদে তার জন্য দোয়া করবে এমন লোকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ আওয়ামী লীগ তাদের নেতার প্রতি অকৃতজ্ঞ। ওদের কিন্তু বরকত ভালো না। যার কারণে তাদের ঝাঁকে ঝাঁকে দেশ থেকে পালাতে হয়েছে। আমি ভারত সরকারকে বলবো, আপনারা তো এতদিন দেশ চালাইলেন, এইবার ফেরত দেন। হালুয়াঘাট বর্ডার দিয়ে ফেরত দেন আমরা রিসিভ করব। আমরা কথা দিলাম আমরা আপনাদের ওপর ন্যায়বিচার করব।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বন্ধুত্ব কি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে করবেন নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব হয় সেটা হবে প্রকৃত বন্ধুত্ব। সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। শুধু একজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে কোনো লাভ হবে না। ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় দাঁড়িয়ে বলছি স্বার্থ হাসিলের জন্য বন্ধুত্ব নয়, সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে বন্ধুত্ব রাখতে চাই। আমাদের স্বার্থে বিসর্জন দিয়ে নয়, কর্তৃত্বের মাধ্যমেও নয়, বন্ধুত্বের মাধ্যমে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, আর ৫ আগস্ট আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে।

এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন। এরপর তিনি মারা যাওয়ার পর দেশের মানুষ ৭ নভেম্বর একটি বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

বিএনপি নেতা সালমান ওমর রুবেল আয়োজিত এই ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ। এ সময় প্রায় ৩ হাজার চক্ষু রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ছানি পড়া রোগীদের বিনামূল্যে ছানি অপারেশনের জন্য সিলেকশন করা হয়।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় সকল সড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত ভ্যান (পাখিভ্যান) ও  ইজিবাইক চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আগামীকাল রোববারের মধ্যে প্রশাসন তাদের দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সোমবার সকাল থেকে জেলার সকল পথে পরিবহন চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত  এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।  সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈন উদ্দিন লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের আগে জেলায় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক,পাখিভ্যান, থ্রি হুইলার সহ অন্য অবৈধ যানগুলো যেভাবে চলাচল করতো, সেভাবেই তারা চলাচল করুক এই দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। প্রশাসন বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা সেটা রক্ষা করেনি।

কর্মসূচি ঘোষণাকালে বলা হয়, ২৩ ডিসেম্বর সোমবার থেকে টানা দুইদিন পরিবহন চলাচল বন্ধের মধ্যে প্রশাসন যদি বসে সমাধানের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আগামী ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে অভ্যন্তরীণ পথের পাশাপাশি দূরপাল্লার সকল রুটে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান ইমাম বকুল, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম সহ সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম আটক
শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে: গয়েশ্বর
চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা
জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা
গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০
আশ্বস্ত করছি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: প্রধান উপদেষ্টা
সত্যি কি থাপ্পড় মেরেছিলেন শাহরুখ, ৯ বছর পর মুখ খুললেন হানি সিং
মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর, বগুড়ার শ্রাবণী এখন শ্রাবণ
বাড়ি ফেরার পথে সড়কে ঝরে গেল বাবা-ছেলের প্রাণ
ছাত্রলীগ নেতা মুক্তাদির শিক্ষার্থীদের হাতে আটক, থানায় সোপর্দ
এ দেশে মেজরিটি–মাইনরিটি বলে কিছু নেই: জামায়াতের আমির
আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, সবচেয়ে ছোট দিন আগামীকাল
রাজনীতিবিদকে বিয়ে করতে চান ফারজানা সিঁথি
গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ
পাকিস্তানে জঙ্গি হামলায় ১৬ সেনা নিহত
বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইসমাইল বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার
হামজাকে নিয়ে যা বললেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল
বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি, বহু ধর্মের বিকাশে কাজ করতে চায় কমিশন: ফারুকী
অবৈধ অনুপ্রেবেশের অভিযোগে ত্রিপুরায় শিশুসহ ৬ বাংলাদেশি গ্রেফতার