রবিবার, ১২ মে ২০২৪ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন, সাংবিধানিক কাঠামো ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র

প্রতিদ্বন্দিতাতামূলক নির্বাচন: নির্বাচন মানেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, প্রতিদ্বন্দিতা বা প্রতিযোগিতামূলক তথা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। একজন ভোটারও যদি তার ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হন তবে সেই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিখুঁত বলা যাবে না। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারা এবং স্বচ্ছভাবে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করাই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, প্রতিযোগিতামূলক তথা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ মাহমুদুল ইসলামের মতে, ‘আমাদের সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বাইরে অন্য কিছু ভাবার কোনো অবকাশ নেই এবং যে আইন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কমিশনের হাত বেঁধে দেয়, তা সাংবিধানিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হবে’ (কনস্টিটিউশনাল ল অব বাংলাদেশ, তৃতীয় সংস্করণ, পৃ. ৯৭৩)। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধনপ্রাপ্ত সবগুলো দল অংশগ্রহণ করেছিল। সব দলের অংশগ্রহণের ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সবার মধ্যে একটি আশার সৃষ্টি হয়। কিন্তু তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনাপঞ্জি সে আশায় গুড়েবালি ঢেলে দেয়। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার ও জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনসমূহের একটিতেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশগ্রহণ করেনি।

নির্বাচনগুলোতে ভোটার অনুপস্থিতিও ছিল উল্লে খ করার মতো। নির্বাচন একদিনের বিষয় নয়, এটি একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া। দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে, নির্বাচনী প্রচারণা, এজেন্ট নিয়োগ, ভোটারদের ভোট প্রদান, নির্বাচনী বিরোধ নিরসন পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের সমান সুযোগ না থাকলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ার জন্য সব দলের অংশগ্রহণ প্রাথমিক শর্ত হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, অংশগ্রহণমূলক হলে অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয় না। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং কোনো প্রার্থী বা দল বিশেষ সুবিধা লাভ করে না।

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে ফলাফল যে কারও পক্ষেই যেতে পারে, যা পুরোপুরি প্রার্থীদের ভোটারদের সমর্থন আদায়ের উপর নির্ভর করে। যেসব নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয় সেগুলোতে ভোট পড়ার হারও বেশি হয়। পক্ষান্তরে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে বা একতরফা হলে ভোটাররাও ভোট প্রদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। একাদশ সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী নির্বাচনগুলো যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হলে ভোটারদের সামনে প্রার্থী বেছে নেওয়ার অর্থপূর্ণ বিকল্প থাকে, ফলে ভোটারদের প্রদত্ত ভোট নির্বাচনের ফলাফলের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পারে।

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কিছু মানদণ্ড রয়েছে। জাতিসংঘের ‘সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ’, ‘ইন্টারন্যাশনাল কোভেনেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস’, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নসহ (আইপিইউ) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ডগুলো হলো: (১) সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমসুযোগ সৃষ্টি করতে পারে এমন একটি আইনী কাঠামো থাকা, (২) ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য তাদের ভোটার হতে পারা; (৩) যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী তাদের প্রার্থী হতে পারা; (৪) ভোটারদের সামনে বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প প্রার্থী থাকা; (৫) নির্বাচনী এলাকার সীমানা কতগুলো মানদণ্ডের ভিত্তিতে সঠিকভাবে নিধারিত হওয়া; (৬) জেনে-শুনে-বুঝে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটারদের সামনে যথাযথ তথ্য থাকা; (৭) ভোটারদের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারা; (৮) অর্থ কিংবা সহিংসতার মাধ্যমে ভোটারদের প্রভাবিত করার অপচেষ্টা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকা; (৯) ভোট গননা সঠিকভাবে হওয়া; (১০) নির্বাচনী বিরোধ দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে মীমাংসিত হওয়া; সর্বোপরি (১১) ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়া।

সাংবিধানিক কাঠামো: ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। শেষ পর্যন্ত একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বভাবতই সদ্য স্বাধীনতা লাভ করা দেশে প্রণীত সংবিধানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে (১১ অনুচ্ছেদ)। পাশাপাশি সংবিধানের সপ্তম ভাগে নির্বাচন নামে একটি পরিচ্ছেদ রাখা হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা, কমিশনের ক্ষমতা, দায়িত্ব ইত্যাদির বিধান রাখা হয় (১১৮-১২৬ অনুচ্ছেদ)।

নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, এজন্য কমিশনকে নির্বাহী বিভাগের অধীনমুক্ত রেখে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি কমিশনাররা কাজ করতে গিয়ে যেন সরকার কর্তৃক অপসারিত হওয়ার ভয়ে না থাকেন, সেজন্য কমিশনারদের অপসারণের বিধান সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ন্যায় একই পদ্ধতিতে রাখা হয়েছে। ২ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে যুক্ত এসব সাংবিধানিক বিধিবিধান সত্তে¡ও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছিল। সব ক্ষমতাসীন সরকারই আপ্রাণ চেষ্টা থাকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে নিজেদের পক্ষে আনার। এমতাবস্থায় নব্বইয়ের গণআন্দোলন পরবর্তী সব দলের ঐকমত্য ও সমঝোতার ভিত্তিতে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা হয়। বস্তুত তত্ত্বািবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছিল নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দলগুলোর মধ্যে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা বা রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।

নির্বাচনকালীন কোনো দলীয় সরকারের প্রভাব না থাকায় সকল রাজনৈতিক দলের জন্য ক্ষমতায় যাওয়ার সমসুযোগ সৃষ্টি হয়। নির্বাচন হয়ে ওঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ফলে সৃষ্ট নতুন সাংবিধানিক কাঠামোর অধীনে অনুষ্ঠিত হয়দ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অল্প কিছু অভিযোগ থাকলেও সব দল নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়। এরপর ২০০৪ সালে বিএনপি সরকার সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে দিয়ে নির্দলীয় সরকারকে নিজেদের করায়ত্ত করার প্রচেষ্টা চালায়।

পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। এর আগে আদালত কর্তৃক পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণার প্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে ২১ জুলাই ২০১০ সাজেদা চৌধুরীকে চেয়ারপারসন এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে কো-চেয়ারপার্সন করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বিশেষ সংশোধনীয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি দীর্ঘদিন আলাপ আলোচনা ও ১০৪ জন বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিসহ সমাজের সকল স্তরের প্রতিনিধির সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে ২৯ মে ২০১১ অর্থাৎ আদালতের ১০ মে ২০১১ তারিখের সংক্ষিপ্ত আদেশের ১৯ দিন পর তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহাল রেখে সংবিধান সংশোধনের একটি সর্বসম্মত সুপারিশ প্রণয়ন করে। পরদিন ৩০ মে ২০১১ তারিখে বিশেষ কমিটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর, ত্তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দিয়ে সংবিধান সংশোধনের ঘোষণা দেয়। এরপর ৩১ মে বিশেষ সংসদীয় কমিটির কো- চেয়ারপার্সন ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবাদ সম্মেলন করে উচ্চ আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষণার কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখা সম্ভব হবে না বলে দাবি করেন, যা ছিল আদালতের রায়ের একটি ভয়াবহ অপব্যাখ্যা। একই দিনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীও আদালতের রায়ের একই অপব্যখ্যা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ৫ জুন ২০১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তির প্রস্তাব করে বিশেষ সংসদীয় কমিটি তার সুপারিশ চূড়ান্ত করে, যার প্রেক্ষিতে ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের ১৬ মাস পর ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে ভবিষ্যতের জন্য অসাংবিধানিক ঘোষণা করে উচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়। পূর্ণাঙ্গ রায়ে সংসদ অনুমোদন করলে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ্তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক ৩ সরকারব্যবস্থার অধীনে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হলে সংসদের সম্মতির প্রয়োজন হবে, যা ছিল ২০১১ সালের ১০ মে তারিখের সংক্ষিপ্ত আদেশের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।

সংক্ষিপ্ত আদেশের প্রথম ও দ্বিতীয় বাক্য দুটি একত্রে পড়লে এটি সুস্পষ্ট হয় যে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়াতে কোনোরূপ বাধা ছিল না; বরং তা-ই ছিল আদালতের আদালতের অভিপ্রায়। বিচার বিভাগকে রেহাই দিবেন কি না? এটি আপনাদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন।’ অর্থাৎ আদালত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়ে কে সরকারের প্রধান হবেন সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার সংসদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত চূড়ান্ত রায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিরা তা থেকে সরে আসেন এবং পরবর্তী দুই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের জন্য, প্রধানমন্ত্রীর ৩১ মে ২০১১ তারিখে প্রদত্ত অপব্যাখ্যার অনুকরণে, সংসদের সম্মতির শর্ত জুড়ে দেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে রায় পরিবর্তন ছিল বিচারকদের পক্ষ থেকে ফ্রড-অন-দ্য-কোর্ট বা আদালতের সঙ্গে জালিয়তি ও পেশাগত অসদাচারণ। পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের প্রক্রিয়া এবং সাংবিধানিক বৈধতা: সংবিধান হলো ‘উইল অব দ্য পিপল’ বা রাষ্ট্রের মালিক জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তির প্রতিফলন (অনুচ্ছেদ ৭(২))। বস্তুত একটি রাষ্ট্রের সংবিধান নাগরিকদের রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রতীক। তাই এতে পরিবর্তনের অর্থাৎ সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও এমন ঐকমত্য থাকা বাঞ্ছনীয়। আর এ ঐকমত্য অর্জিত হয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও জনগণের ‘পার্টিসিপেশন’ বা অংশগ্রহণ এবং এর পাশাপাশি ‘ডেলিভারেশন’ বা সুচিন্তিত আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে। মূলত এ দুটি শর্ত অর্জিত হলেই সংবিধানের সংশোধনী ‘লেজিটিমেসি’ বা গ্রহণযোগ্যতা পায়।

বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)

 

Header Ad

ঈদুল আজহায় সরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি মিলবে যে কয়দিন

ছবি: সংগৃহীত

আসছে ঈদুল আজহা। ঈদ কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে চাকরিজীবীদের প্রায় সবাই ছুটি কবে থেকে শুরু, সেই হিসাব-নিকাশও করতে থাকেন। চলতি বছরের ঈদুল আজহায় টানা পাঁচ দিনের ছুটি মিলবে সরকারি চাকরিজীবীদের। এর মধ্যে ২ দিন সাপ্তাহিক ছুটি আর ৩ দিন ঈদের ছুটি।

চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগামী ১৭ জুন (সোমবার) দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে। এ হিসাব করে সরকারি ছুটির তালিকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, কুরবানির ঈদের ছুটি শুরু হবে ঈদের আগের দিন অর্থাৎ ১৬ জুন (রোববার) থেকে। যা চলবে ১৮ জুন (মঙ্গলবার) পর্যন্ত। এর আগে ১৪ ও ১৫ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। সে হিসাবে মোট পাঁচ দিনের ছুটি মিলছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

প্রসঙ্গত, ঈদুল ফিতরের দুই মাস ১০ দিন পর মুসলমানরা ঈদুল আজহা পালন করে থাকেন। দিনের হিসাবে যা সর্বোচ্চ ৭০ দিন হতে পারে। তবে এর মধ্যে আরবি মাস জিলকদ বা জিলহজের কোনো একটি বা দুটিই যদি ২৯ দিনের হয়, তাহলে ৭০ দিনের কম সময়ের মধ্যেও (৬৯/৬৮ দিন) কুরবানির ঈদ হতে পারে।

সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী, জুন মাসের ১৬ তারিখে দেশটিতে কুরবানির ঈদ উদযাপিত হতে পারে। বাংলাদেশে সাধারণত সৌদি আরব, কাতার, ওমান, আরব আমিরাত এসব দেশের পরের দিন কুরবানির ঈদ পালন করা হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশে কুরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখে। তবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।

স্বর্ণের দাম আরও বাড়ল

ছবি: সংগৃহীত

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরও বেড়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের ভরির দাম সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৩২ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮১ টাকা হয়েছে।

শ‌নিবার (১১ মে) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

রোববার (১২ মে) থেকে এই দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৮৩২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০৫ টাকা বাড়িয়ে ৯৫ হাজার ৯৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২৪৯ টাকা বাড়িয়ে ৭৯ হাজার ৩৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৫ টাকা গুনতে হবে।

এর আগে ৮ মে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৫০২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৫০ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৩০৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১০ হাজার ২০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৬৮৬ টাকা বাড়িয়ে ৯৪ হাজার ৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬০১ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এর আগে গত সোমবার (৬ মে) সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৭৩৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৬৯৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫ হাজার ৮৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫৯৫ টাকা বাড়িয়ে ৯০ হাজার ৭৬৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫০১ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার ৪৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যা, একদিনে দুই শতাধিক মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় একদিনেই দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, শুক্রবার দেশটির বাগলান প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। খবর এএফপির

আফগানিস্তানে কর্মরত জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) জানিয়েছে, শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ভেসে গেছে কয়েক হাজার বাড়িঘর।

আইওএমের জরুরি সাড়াদান বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, বাগলান প্রদেশের জাহিদ জেলায় অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছে এবং এখানে দেড় হাজারের বেশি বাড়িঘর ভেসে গেছে। আইওএম অবশ্য আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকেই সূত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে।

তবে তালেবান সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত তারা জাহিদ জেলায় ৬২ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছে।

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক টুইটে বলেছেন, ‘আমাদের শত শত নাগরিক এই বিপর্যয়কর বন্যায় মারা গেছে।’

সর্বশেষ সংবাদ

ঈদুল আজহায় সরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি মিলবে যে কয়দিন
স্বর্ণের দাম আরও বাড়ল
আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যা, একদিনে দুই শতাধিক মৃত্যু
রংপুর মেডিকেলের আইসিইউ ইউনিটে আগুন
আওয়ামী লীগ নয়, দেশ চালাচ্ছে অদৃশ্য শক্তি: মির্জা ফখরুল
পতঞ্জলি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভারতের যোগগুরু বাবা রামদেব
রাত ১টার মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের ‍পূর্বাভাস, হুঁশিয়ারি সংকেত
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দল ঘোষণা আগামীকাল
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন 'অড সিগনেচার'-এর পিয়াল
অর্থনীতি চাঙা করতে গাঁজা চাষ বৈধ করতে যাচ্ছে পাকিস্তান!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে ‘বিসিএস প্রস্তুতি’ বন্ধ হচ্ছে
বিদেশিদের এনআইডি করতে লাগবে না দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ
চুয়াডাঙ্গায় বজ্রাঘাতে প্রাণ গেল ২ কৃষকের
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি, জাতিসংঘের সনদ ছিঁড়ে ফেললেন ক্ষুব্ধ ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত
স্প্যান বসানো শেষ, ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর উদ্বোধন
পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে শাহবাগে চাকরির বয়স ৩৫ প্রত্যাশীদের অবরোধ
ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু হবে ১০ জুন: রেলমন্ত্রী
২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ এখন বাংলাদেশের জলসীমায়
নিজের মুখেই পিএসজি ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এমবাপ্পে
মা, স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যা