বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন, সাংবিধানিক কাঠামো ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র

প্রতিদ্বন্দিতাতামূলক নির্বাচন: নির্বাচন মানেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, প্রতিদ্বন্দিতা বা প্রতিযোগিতামূলক তথা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। একজন ভোটারও যদি তার ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হন তবে সেই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিখুঁত বলা যাবে না। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারা এবং স্বচ্ছভাবে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করাই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, প্রতিযোগিতামূলক তথা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ মাহমুদুল ইসলামের মতে, ‘আমাদের সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বাইরে অন্য কিছু ভাবার কোনো অবকাশ নেই এবং যে আইন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কমিশনের হাত বেঁধে দেয়, তা সাংবিধানিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হবে’ (কনস্টিটিউশনাল ল অব বাংলাদেশ, তৃতীয় সংস্করণ, পৃ. ৯৭৩)। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধনপ্রাপ্ত সবগুলো দল অংশগ্রহণ করেছিল। সব দলের অংশগ্রহণের ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সবার মধ্যে একটি আশার সৃষ্টি হয়। কিন্তু তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনাপঞ্জি সে আশায় গুড়েবালি ঢেলে দেয়। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার ও জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনসমূহের একটিতেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশগ্রহণ করেনি।

নির্বাচনগুলোতে ভোটার অনুপস্থিতিও ছিল উল্লে খ করার মতো। নির্বাচন একদিনের বিষয় নয়, এটি একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া। দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে, নির্বাচনী প্রচারণা, এজেন্ট নিয়োগ, ভোটারদের ভোট প্রদান, নির্বাচনী বিরোধ নিরসন পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের সমান সুযোগ না থাকলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ার জন্য সব দলের অংশগ্রহণ প্রাথমিক শর্ত হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, অংশগ্রহণমূলক হলে অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয় না। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং কোনো প্রার্থী বা দল বিশেষ সুবিধা লাভ করে না।

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে ফলাফল যে কারও পক্ষেই যেতে পারে, যা পুরোপুরি প্রার্থীদের ভোটারদের সমর্থন আদায়ের উপর নির্ভর করে। যেসব নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয় সেগুলোতে ভোট পড়ার হারও বেশি হয়। পক্ষান্তরে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে বা একতরফা হলে ভোটাররাও ভোট প্রদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। একাদশ সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী নির্বাচনগুলো যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হলে ভোটারদের সামনে প্রার্থী বেছে নেওয়ার অর্থপূর্ণ বিকল্প থাকে, ফলে ভোটারদের প্রদত্ত ভোট নির্বাচনের ফলাফলের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পারে।

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কিছু মানদণ্ড রয়েছে। জাতিসংঘের ‘সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ’, ‘ইন্টারন্যাশনাল কোভেনেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস’, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নসহ (আইপিইউ) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ডগুলো হলো: (১) সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমসুযোগ সৃষ্টি করতে পারে এমন একটি আইনী কাঠামো থাকা, (২) ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য তাদের ভোটার হতে পারা; (৩) যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী তাদের প্রার্থী হতে পারা; (৪) ভোটারদের সামনে বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প প্রার্থী থাকা; (৫) নির্বাচনী এলাকার সীমানা কতগুলো মানদণ্ডের ভিত্তিতে সঠিকভাবে নিধারিত হওয়া; (৬) জেনে-শুনে-বুঝে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটারদের সামনে যথাযথ তথ্য থাকা; (৭) ভোটারদের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারা; (৮) অর্থ কিংবা সহিংসতার মাধ্যমে ভোটারদের প্রভাবিত করার অপচেষ্টা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকা; (৯) ভোট গননা সঠিকভাবে হওয়া; (১০) নির্বাচনী বিরোধ দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে মীমাংসিত হওয়া; সর্বোপরি (১১) ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়া।

সাংবিধানিক কাঠামো: ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। শেষ পর্যন্ত একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বভাবতই সদ্য স্বাধীনতা লাভ করা দেশে প্রণীত সংবিধানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে (১১ অনুচ্ছেদ)। পাশাপাশি সংবিধানের সপ্তম ভাগে নির্বাচন নামে একটি পরিচ্ছেদ রাখা হয়েছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা, কমিশনের ক্ষমতা, দায়িত্ব ইত্যাদির বিধান রাখা হয় (১১৮-১২৬ অনুচ্ছেদ)।

নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, এজন্য কমিশনকে নির্বাহী বিভাগের অধীনমুক্ত রেখে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি কমিশনাররা কাজ করতে গিয়ে যেন সরকার কর্তৃক অপসারিত হওয়ার ভয়ে না থাকেন, সেজন্য কমিশনারদের অপসারণের বিধান সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ন্যায় একই পদ্ধতিতে রাখা হয়েছে। ২ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে যুক্ত এসব সাংবিধানিক বিধিবিধান সত্তে¡ও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছিল। সব ক্ষমতাসীন সরকারই আপ্রাণ চেষ্টা থাকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে নিজেদের পক্ষে আনার। এমতাবস্থায় নব্বইয়ের গণআন্দোলন পরবর্তী সব দলের ঐকমত্য ও সমঝোতার ভিত্তিতে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত করা হয়। বস্তুত তত্ত্বািবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছিল নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দলগুলোর মধ্যে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা বা রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।

নির্বাচনকালীন কোনো দলীয় সরকারের প্রভাব না থাকায় সকল রাজনৈতিক দলের জন্য ক্ষমতায় যাওয়ার সমসুযোগ সৃষ্টি হয়। নির্বাচন হয়ে ওঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ফলে সৃষ্ট নতুন সাংবিধানিক কাঠামোর অধীনে অনুষ্ঠিত হয়দ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অল্প কিছু অভিযোগ থাকলেও সব দল নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়। এরপর ২০০৪ সালে বিএনপি সরকার সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে দিয়ে নির্দলীয় সরকারকে নিজেদের করায়ত্ত করার প্রচেষ্টা চালায়।

পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। এর আগে আদালত কর্তৃক পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণার প্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে ২১ জুলাই ২০১০ সাজেদা চৌধুরীকে চেয়ারপারসন এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে কো-চেয়ারপার্সন করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বিশেষ সংশোধনীয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি দীর্ঘদিন আলাপ আলোচনা ও ১০৪ জন বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিসহ সমাজের সকল স্তরের প্রতিনিধির সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে ২৯ মে ২০১১ অর্থাৎ আদালতের ১০ মে ২০১১ তারিখের সংক্ষিপ্ত আদেশের ১৯ দিন পর তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহাল রেখে সংবিধান সংশোধনের একটি সর্বসম্মত সুপারিশ প্রণয়ন করে। পরদিন ৩০ মে ২০১১ তারিখে বিশেষ কমিটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর, ত্তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দিয়ে সংবিধান সংশোধনের ঘোষণা দেয়। এরপর ৩১ মে বিশেষ সংসদীয় কমিটির কো- চেয়ারপার্সন ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবাদ সম্মেলন করে উচ্চ আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষণার কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখা সম্ভব হবে না বলে দাবি করেন, যা ছিল আদালতের রায়ের একটি ভয়াবহ অপব্যাখ্যা। একই দিনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীও আদালতের রায়ের একই অপব্যখ্যা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ৫ জুন ২০১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তির প্রস্তাব করে বিশেষ সংসদীয় কমিটি তার সুপারিশ চূড়ান্ত করে, যার প্রেক্ষিতে ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়। সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের ১৬ মাস পর ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে ভবিষ্যতের জন্য অসাংবিধানিক ঘোষণা করে উচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়। পূর্ণাঙ্গ রায়ে সংসদ অনুমোদন করলে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ্তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক ৩ সরকারব্যবস্থার অধীনে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হলে সংসদের সম্মতির প্রয়োজন হবে, যা ছিল ২০১১ সালের ১০ মে তারিখের সংক্ষিপ্ত আদেশের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।

সংক্ষিপ্ত আদেশের প্রথম ও দ্বিতীয় বাক্য দুটি একত্রে পড়লে এটি সুস্পষ্ট হয় যে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়াতে কোনোরূপ বাধা ছিল না; বরং তা-ই ছিল আদালতের আদালতের অভিপ্রায়। বিচার বিভাগকে রেহাই দিবেন কি না? এটি আপনাদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন।’ অর্থাৎ আদালত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়ে কে সরকারের প্রধান হবেন সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার সংসদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত চূড়ান্ত রায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিরা তা থেকে সরে আসেন এবং পরবর্তী দুই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের জন্য, প্রধানমন্ত্রীর ৩১ মে ২০১১ তারিখে প্রদত্ত অপব্যাখ্যার অনুকরণে, সংসদের সম্মতির শর্ত জুড়ে দেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে রায় পরিবর্তন ছিল বিচারকদের পক্ষ থেকে ফ্রড-অন-দ্য-কোর্ট বা আদালতের সঙ্গে জালিয়তি ও পেশাগত অসদাচারণ। পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের প্রক্রিয়া এবং সাংবিধানিক বৈধতা: সংবিধান হলো ‘উইল অব দ্য পিপল’ বা রাষ্ট্রের মালিক জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তির প্রতিফলন (অনুচ্ছেদ ৭(২))। বস্তুত একটি রাষ্ট্রের সংবিধান নাগরিকদের রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রতীক। তাই এতে পরিবর্তনের অর্থাৎ সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও এমন ঐকমত্য থাকা বাঞ্ছনীয়। আর এ ঐকমত্য অর্জিত হয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও জনগণের ‘পার্টিসিপেশন’ বা অংশগ্রহণ এবং এর পাশাপাশি ‘ডেলিভারেশন’ বা সুচিন্তিত আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে। মূলত এ দুটি শর্ত অর্জিত হলেই সংবিধানের সংশোধনী ‘লেজিটিমেসি’ বা গ্রহণযোগ্যতা পায়।

বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)

 

Header Ad

ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের

ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ছবি: সংগৃহীত

আজ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে উরুগুয়ের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল। ম্যাচের আগে স্টেডিয়ামের বাইরে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে ঘিরে ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেস ভিনিসিয়ুসের হাতে একটি স্মারক তুলে দেন, আর পাশে ছিলেন তার বাবা ভিনিসিয়ুস সিনিয়র। এই মুহূর্তটি স্টেডিয়ামের বড় পর্দায়ও প্রদর্শিত হয়, যা দর্শকদের মধ্যে আরও কৌতুহল সৃষ্টি করে, বিশেষত স্মারকটি সম্পর্কে।

পরে ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, ভিনিসিয়ুসের ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছিল এবং এতে জানা যায়, রেয়াল মাদ্রিদে খেলা এই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের অধিবাসী।

মূলত কৃষ্ণাঙ্গ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের শেকড় খুঁজে বের করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। খেলোয়াড়দের কার কোন বংশ, কোথায় ছিলেন পূর্বপুরুষরা, সেটা খুঁজে বের করাই ছিল এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য।

ভিনিসিউস ক্যামেরুনের টিকার গোত্রের অন্তর্গত। এই গোত্রের লোকেরা আঁকাআঁকিতে পারদর্শী, গল্পকার হিসেবেও সুপরিচিত। একসময় এরা যাযাবর জীবন যাপন করত, পরে বর্তমান সুদানের নীল নদ উপত্যকায় বসতি স্থাপন করে। যা স্থানান্তরিত হয়েছিল উত্তর নাইজেরিয়া থেকে পশ্চিম ক্যামেরুনের উচ্চভূমি পর্যন্ত।

সনদ নেয়ার সময় ভিনি বলেন, ক্যামেরুনে শেকড়ের সন্ধান পাওয়া আমার ও আমার পরিবারের জন্য বিশেষ মুহূর্ত। এটা মনে করিয়ে দেয় যে আমাদের শেকড় ও ইতিহাসের মূল্য আছে।

ভিনির বাবা বলেন, আমরা কোথায় থেকে এসেছি, এটা জানা প্রয়োজন ছিল। অনেক ব্রাজিলিয়ান তাদের শেকড় কিংবা ঐতিহ্য সম্পর্কে জানে না। ক্যামেরুনে আমাদের শেকড়, আমি অনেক খুশি।

সিবিএফ সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেস বলেছেন, ভিনি জুনিয়রের এই সংবাদকে উদ্‌যাপন করা মানে সব ব্রাজিলিয়ানের অর্জনকে উদ্‌যাপন। ওর পূর্বপুরুষের আদিনিবাসের খোঁজ পাওয়ার মাধ্যমে আমরা আরেকবার সবাইকে নিয়ে সমাজ গড়ার প্রতি আমাদের আগ্রহ এবং আমাদের অস্তিত্বে ও বৈশ্বিক সাফল্যে আফ্রো-ব্রাজিলিয়ান সংস্কৃতির মৌলিক ভূমিকার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জানালাম।

Header Ad

জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান

জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত তার এ জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে এদিন তাকে এই মামলা থেকে খালাস চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় আত্মসমর্পণ করতে আদালতে আসেন শফিক রেহমান। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় শুনানি শুরু হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আদালত আপিলের শর্তে জামিন মঞ্জুর করেছেন। আমরা সাজা মওকুফ চেয়ে আবেদন করলে পরে তারিখ দেবেন বলে জানিয়েছেন আদালত। গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রবীণ এ সাংবাদিক ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করেন আদালত।

এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর শফিক রেহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিতের আদেশ জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এ মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত সাংবাদিক শফিক রেহমান ও আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনকে পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুইয়া।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে কোনো একসময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় একত্রিত হয়ে যোগসাজশ করে শেখ হাসিনার ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।

এ অভিযোগ এনে ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

Header Ad

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার

ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিছুদিন আগে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

নিজ নির্বাচনি এলাকা রাজাপুর থেকে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন।

এর আগে নিজ এলাকায় যাওয়ার পথে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার উত্তর পিংড়ি এলাকায় তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে শাহজাহান ওমর ও তার গাড়ি চালক আহত হন।

শাহজাহান ওমরের সফরসঙ্গী বাবুল মৃধা রিপনসহ একাধিক অনুসারী জানান, ৫ আগস্টের পর তিনি বৃহস্পতিবার নিজ এলাকায় আসার পথে কয়েকজন যুবক তার গাড়িতে হামলা করে। এ সময় গাড়ির গ্লাস ভেঙে শাহজাহান ওমরের হাতে পড়ে রক্তাক্ত হন। এ সময় তার গাড়ির চালকসহ কয়েকজন আহত হন। ঘটনার পর তিনি নিজ বাড়িতে গিয়ে কিছুক্ষণ থেকে থানায় যান। এরপর তিনি থানা হেফাজতে ছিলেন।

এদিকে তিনি থানায় আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ছাত্রদল ও যুবদল থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে।

রাজাপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, কাঠালিয়ায় বিএনপি অফিস ভাঙচুরের মামলায় সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিএনপির সঙ্গে প্রায় ৪০ বছরের রাজনীতিক সম্পর্ক শেষ করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েক দিন আগে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন শাহজাহান ওমর। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হন তিনি। তবে গত ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক ছিলেন তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ, বিশেষ মোনাজাতের মধ্যদিয়ে কর্মসূচি শুরু
সেন্টমার্টিনে যেতে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের
সিটি কলেজ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়াসহ ৯ দাবি ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের
ট্রাইব্যুনাল চাইলে বিচার কাজের অডিও ভিজ্যুয়াল প্রচার করতে পারবে
বিসিবির ঘোষিত পুরস্কারের অর্থ বুঝে পেলেন সাবিনারা
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিশাল নিয়োগ, নেবে ৫৩০ জন