বাজারে আসলো অপ্পো ফাইন্ড এক্স ফাইভ ও ফাইভ প্রো
শিগগিরই বিশ্ব বাজারে আসতে যাচ্ছে অপ্পো ফাইন্ড এক্স সিরিজের ফাইভ ও ফাইভ প্রো স্মার্ট ফোন। ২৪ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ঘোষণা দিল চীনের সর্ববৃহৎ স্মার্টফোন প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান জায়ান্ট বিবিকে ইলেক্ট্রনিক্স এর অংশ প্রতিষ্ঠান অপ্পো। অপ্পো বলছে স্মার্টফোন দুটোর মধ্যে অপ্পো ফাইন্ড এক্স ফাইভ প্রো স্মার্টফোনটিকে ২০২২ সালের ফ্ল্যাগশিপ হিসাবে বাজারে ছাড়া হবে। এবারের বিশেষত্ব হচ্ছে দুটো ফোনের ক্যামেরা গুলোর ইমেজ প্রসেসিংয়ের জন্য মারিসিলিকন এক্স চিপ ব্যবহার করা হয়েছে। এ চিপ ব্যবহারের মাধ্যমে অপ্পো দুর্দান্ত ছবির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশ্বখ্যাত ক্যামেরা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হেসেলব্লেড-এর সহায়তায় মারিসিলিকন এক্স চিপ উদ্ভাবন করেছে অপ্পো। তবে এটি কোনো নতুন ফোন নয়, কারণ ফোনটি অপ্পো রিনো সেভেন এর রিব্র্যান্ডেড ভার্সন হিসেবে এসেছে। এর আগে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ অপ্পো বাজারে ছাড়ে ফাইন্ড এক্স সিরিজের থ্রি ও থ্রি প্রো। ধারণা করা হচ্ছে চলতি বছরের মার্চ মাসেই স্মার্টফোন দুটো আন্তর্জাতিক বাজারে কেনা যাবে।
অপ্পো ফাইন্ড এক্স ফাইভ প্রো স্মার্টফোনটিতে প্রসেসর হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে স্ন্যাপড্রাগনের সর্বশেষ সংস্করণ ও সর্বাধুনিক চার মিলিমিটার প্ল্যাটফরমের 'এইট জেন ওয়ান' চিপসেট। আট কোরের এই প্রসেসরটি ৩ গিগাহার্জ পর্যন্ত স্পিড আপ করতে সক্ষম। সহায়ক হিসাবে থাকছে ১২ জিবি র্যাম। গ্রাফিক্স কার্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাড্রিনো ৭৩০। আরও থাকছে ২৫৬ ও ৫১২ গিগাবাইট স্টোরেজ ফোনটি চলবে অ্যান্ড্রোয়েড টুয়েলভ অপারেটিং সিস্টেমে আর ইউজার ইন্টারফেস বা ইউআই থাকছে অপ্পোর কালার ওএস ১২.১।
অপরদিকে ফাইন্ড এক্স ফাইভ স্মার্টফোনটিতে প্রসেসর হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে স্ন্যাপড্রাগনের অন্যতম শক্তিশালী ও পাঁচ মিলিমিটার প্ল্যাটফরমের '৮৮৮' চিপসেট। আট কোরের এই প্রসেসরটি ২.৮৪ গিগাহার্জ পর্যন্ত স্পিড আপ করতে সক্ষম। সহায়ক হিসাবে থাকছে ৮ গিগাবাইট র্যাম। গ্রাফিক্স কার্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাড্রিনো ৬৬০। আরও থাকছে ২৫৬ গিগাবাইট স্টোরেজ। ফোনটির অপারেটিং সিস্টেম আর ইউজার ইন্টারফেস একই থাকছে।
ফাইন্ড এক্স ফাইভ প্রো-তে ডিসপ্লে হিসাবে দেওয়া হয়েছে ১ বিলিয়ন কালার সাপোর্টেড ৬.৭ ইঞ্চির এলটিপিও অ্যামোলেড মনিটর যা ১২০ হার্জ রিফ্রেশ রেটে অপারেট করা যাবে। এছাড়াও থাকছে এইচডিআর টেন প্লাস ও ১৩০০ নিটের পিক ব্রাইটনেস। ডিসপ্লের রেজুলেশন ১৪৪০বাই৩২১৬ (কোয়াড এইচডি)। ডিসপ্লের সুরক্ষায় স্ক্রিন হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাসের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক সংস্করণ গরিলা গ্লাস ভিক্টাস।
অপরদিকে ফাইন্ড এক্স ফাইভ স্মার্টফোনটিতে ডিসপ্লে হিসাবে দেওয়া হয়েছে ১ বিলিয়ন কালার সাপোর্টেড ৬.৫৫ ইঞ্চির অ্যামোলেড মনিটর। এটিও ১২০ হার্জ রিফ্রেশ রেটে অপারেট করা যাবে। এইচডিআর টেন প্লাসের সাথে থাকছে ১০০০ নিটের পিক ব্রাইটনেস। ডিসপ্লের রেজুলেশন ১০৮০বাই২৪০০ (ফুল এইচডি)। এতেও ডিসপ্লের সুরক্ষায় থাকছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ভিক্টাস।
ফাইন্ড এক্স ফাইভ প্রো-তে পিছনের ক্যামেরা প্যানেলে ৩টি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। প্রাইমারি ক্যামেরা হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে ১.৭ অ্যাপারচারের ৫০ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর যার লেন্স ২৫ মিলিমিটার ওয়াইড। সেকেন্ডারি ক্যামেরা হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে ২.২ অ্যাপারচারের ৫০ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর যার লেন্স ১৫ মিলিমিটার ও ১১০ ডিগ্রি আল্ট্রাওয়াইড। তৃতীয় ক্যামেরা হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে ২.৪ অ্যাপারচারের ১৩ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর যার লেন্স ৫২ মিলিমিটার টেলিফটো। ভিডিও ধারণ করা যাবে ফোর-কে ফরম্যাটে। সেলফি ক্যামেরা হিসাবে থাকছে ২.৪ অ্যাপারচারের ৩২ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর যার লেন্স ২১ মিলিমিটার ওয়াইড। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি লেন্সের সেন্সর নেওয়া হয়েছে সনি থেকে। ব্যবহার করা হয়েছে সনির আইএমএক্স ৭৬৬ চিপ।
এদিকে ফাইন্ড এক্স ফাইভ স্মার্টফোনটির পিছনের ক্যামেরা প্যানেল ও সেলফি প্যানেলেও একই ক্যামেরা সেট আপ ব্যবহার করা হয়েছে।
দুটো ফোনেই সাউন্ড সিস্টেম হিসাবে থাকছে স্টেরিও স্পিকার এবং থাকছেনা কোনো হেডফোন জ্যাক ও আলাদা মেমোরি কার্ড স্লট। দুটো ফোনই অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেমের। ফাইন্ড এক্স ফাইভ প্রো এর ব্যাকশেল সিরামিকের এবং এর ওজন ২১৮ গ্রাম। ফাইন্ড এক্স ফাইভ-এর ব্যাকশেল গ্লাসের এবং এর ওজন ১৯৬ গ্রাম।
ফাইন্ড এক্স ফাইভ প্রো-কে সচল রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলি ব্যাটারি যা ৮০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টেড এবং ফাইন্ড এক্স ফাইভ স্মার্টফোনটি সচল রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে ৪৮০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলি ব্যাটারি এটিও ৮০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টেড।
ফাইন্ড এক্স ফাইভ প্রো-এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০০ ইউরো যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আর ফাইন্ড এক্স ফাইভ-এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০০ ইউরো যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯৬ হাজার টাকা।
যদি মার্চে ফোনটি আন্তর্জাতিক বাজারে চলেও আসে তবে এই ফোনটি বাংলাদেশে কবে আসবে বা আদৌ আসবে কি না তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
/এএস