শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫ | ২২ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (শেষ পর্ব)

নীতিনির্ধারণ করছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি বা বিভিন্ন থিংকট্যাঙ্ক

 

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন দেশের শিক্ষানীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং করোনাকালের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহেরীন আরাফাত। আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাৎকারটির চতুর্থ পর্ব

ঢাকাপ্রকাশ: আমরা দেখছি যে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এক ধরনের শিক্ষাপদ্ধতি আছে। আমরা এটাও জানি, শিক্ষার সঙ্গে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ বিষয়টা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আপনি কী রকম দেখছেন? এ বিষয়টা একটু বিশ্লেষণ করে বললে ভালো হয়।

আনু মুহাম্মদ: অর্থনীতি মানে কী? শিক্ষার সঙ্গে তো সবকিছুই সম্পর্কিত। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যদি এ রকম হয়–বিশাল সংখ্যক মানুষের কাজের, আশ্রয়ের কোনো নিশ্চয়তা নাই, তাহলে তাদের সন্তানরা শিক্ষার মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না। যতটুকু প্রবেশ করার চেষ্টা করে, সেখানেও ঝরে পড়ার হার খুব বেশি থাকে। শ্রমজীবী মানুষের অনেক পরিবারে আমরা দেখি, তাদের খুব ইচ্ছা থাকে সন্তান লেখাপড়া করবে; কিন্তু একটা পর্যায়ের পর আর পারে না। প্রধান কারণ হচ্ছে–বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা যে রাষ্ট্রের দায়িত্ব, রাষ্ট্র তা থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছে। তার ফলে একটা বিরাট অংশ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বঞ্চিত হওয়ার ফলাফল কী? ফলাফল হচ্ছে–তাদের মধ্যে যে সক্ষমতা ছিল, তাদের মধ্যে যে সম্ভাবনা ছিল, সেটা আর বাস্তবায়ন হয় না। তার ফলে আমরা যদি উৎপাদনশীল খাতের কথা চিন্তা করি, শিল্পের কথা চিন্তা করি, কিংবা অবকাঠামোর কথা চিন্তা করি–কৃষি, শিল্প, অবকাঠামো, নদী ব্যবস্থাপনা, বন ব্যবস্থাপনা–এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তরুণ নাগরিকরা যে ভূমিকা রাখতে পারত, তা তারা পালন করতে পারছে না। সরকারের মুখে শুনি–আমরা তো সমুদ্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করতে পারব না, তাই বিদেশি কোম্পানি নিয়ে আসতে হবে। এই বিদেশি কোম্পানি আনার ফলে প্রকল্প অনেক বেশি ব্যয়বহুল হয়ে যায়, অনেক বেশি অনিশ্চিত হয়ে যায় এবং এখন আমরা ক্রাইসিসটা দেখতে পাচ্ছি। এটা কেন হলো–বাংলাদেশের তরুণদের কি জেনেটিক্যালি কোনো সমস্যা আছে যে, তারা লেখাপড়া শিখতে পারবে না। তাদের সেই সুযোগটাই দেওয়া হয় না। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত চিন্তা থাকত যে, এসব বিষয় যে যেদিকে দরকার সেদিকে শিক্ষাগ্রহণ করবে, তাহলে অবস্থা ভিন্ন হতে পারত।

আমরা শুনি যে, বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিয়ে বাংলাদেশ অনেক পেছনে, গবেষণার র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ অনেক পেছনে। এসব ঘটনার প্রধান কারণ হলো–ওই পরিবেশটাই নাই। অর্থনীতি যেভাবে চলছে, তাদের দিক থেকে ওই চাহিদাই নাই। অর্থনীতি যদি চলে চোরাই টাকার উপরে, অর্থনীতির মধ্যে যারা ক্ষমতাবান তারা যদি বন দখল, নদী দখল, ব্যাংক দখল তারপর বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি, অনিয়ম সেগুলোর উপর ভর করেই চলতে থাকে এবং যদি দেখা যায় যারা ক্ষমতাবান তারা এ দেশের কোনোকিছু নিয়েই চিন্তা করে না, তারা মনে করে যে তারা বিদেশে থাকবে। এবং তাদের সন্তানেরা বিদেশে পড়াশোনা করবে। কী রকম একটা ভয়ংকর অসঙ্গতি যে, যারা দেশ পরিচালনা করছে, তারা দেশকে নিজের দেশ মনে করে না। নিজের বাসভূমি মনে করে না। আর যারা নিজেদের বাসভূমি মনে করে তাদের হাতে কোনো ক্ষমতা নাই। সরকারি প্রাথমিক স্কুল যেগুলো আছে, সেখানে যদি সরকারি কর্মকর্তা, মন্ত্রী, এমপির ছেলে-মেয়েরা পড়ত; তাহলে তো প্রাথমিক স্কুলের এ অবস্থা হতো না। যদি তাদের সন্তানরা মাধ্যমিক স্কুলে পড়ত, এখানকার সরকারি কলেজে পড়ত, বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত; তাহলে তো এগুলোর এমন অবস্থা থাকত না। কিন্তু তারাই নীতিনির্ধারণ করছে। যারা নীতিনির্ধারণ করে, তাদের যদি নিজেদের একটা ওনারশিপ বা নিজেদের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত না হয়; তাহলে তো ফল আসবে না। অথচ তাদের স্বার্থটা থাকে, সে কীভাবে আরও দ্রুত টাকা বানাবে কিংবা ক্ষমতার মধ্যে টিকে থাকবে, ব্যাংক থেকে টাকা আনবে এবং তাড়াতাড়ি কীভাবে বিদেশে সবাইকে সেটেল করবে–এই চিন্তাই তাদের থাকে; কিন্তু তারা তো নীতিনির্ধারণ করছে সব। তার ফলে অর্থনীতির যে প্রবণতা বা উন্নয়নের যে ধরন, সেই ধরনটার কারণে শিক্ষার যে প্রয়োজনীয় বিকাশের সম্ভাবনা, সেটা আর হয় না। কারণ নীতিনির্ধারক এবং সর্বজন–এ দুইয়ের মধ্যে একটা বড় ধরনের পার্থক্য তৈরি হয়। স্বাস্থ্যখাতেও তা-ই দেখা যায়। আজ বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে যদি মন্ত্রী, এমপি, তাদের সন্তানরা চিকিৎসা করত, তাহলে তো পাবলিক হাসপাতালের এ দশা হয় না। তার মানে হচ্ছে–রাষ্ট্রের দায়িত্বে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সে প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈরি হচ্ছে রাষ্ট্রের কর্ণধাররা।

অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করছে যেসব জায়গা, সেগুলোর সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পর্ক নাই। যেমন–আমি অর্থনীতিতে, অর্থশাস্ত্রে আছি। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্থনীতি বিভাগগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণের কোনো সম্পর্ক নাই। অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের নীতিনির্ধারক আছে, সেগুলোর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কথা। তাদের ইনভলভ করার কথা, সেগুলোর কোনো সম্পর্ক নাই। সেখানে নীতিনির্ধারণ কে করছে–নীতিনির্ধারণ করছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি বা বিভিন্ন থিংকট্যাঙ্ক। সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত যেসব থিংকট্যাঙ্ক, কিংবা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত থিংকট্যাঙ্ক–তারা নীতিনির্ধারণ করছে। তাহলে শিক্ষার সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক কীভাবে হয়!

করোনার সময় ভ্যাকসিন–এগুলো তো কোনো ব্যাপারই ছিল না। বাংলাদেশে এতগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়–সেখানে ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা হবে, করোনা নিয়ে গবেষণা হবে–এসব নিয়ে গবেষণা করাই তো কাজ। সেগুলো নিয়ে কোনো কাজ হয়নি। বন একের পর এক উজাড় করা হচ্ছে। বন কতটা দরকার–এগুলো তো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন পাঠ্যসূচির মধ্যে থাকা দরকার।

আমি বলতে চাচ্ছি যে, বাংলাদেশের যে উন্নয়ন যাত্রা বা রাজনৈতিক ক্ষমতা–এ দুয়ের সম্মিলনে এমন একটা বিষবৃক্ষ তৈরি হয়েছে যে, সেখানে জ্ঞানের কোনো জায়গা নেই। জ্ঞানের কোনো প্রয়োজনই মনে করে না। তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নেয়, নিজেদের স্বার্থে কী দরকার। জনস্বার্থে কী দরকার, তার থেকে যোজন যোজন দূরে তো বটেই, তার বিপরীতে অবস্থান নিয়েই অর্থনীতি এবং উন্নয়ন নির্ধারিত হয়। তার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি তাদের চরম উদাসীন না শুধু, বিরোধী একটা অবস্থান আমরা দেখতে পাচ্ছি।

ঢাকাপ্রকাশ: আমরা বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে দেখেছি যে, সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে এমন না, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার দরকারও নেই। একটা স্তর পার করার পর সে হয়তো নির্দিষ্ট একটা কাজে চলে যাচ্ছে, ওই কাজটা রাষ্ট্র বা সরকার তাকে দিচ্ছে। আমাদের দেশে ধারণাটা এ রকম হয়ে উঠেছে কি না যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেই হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়লে চাকরি পাওয়া, বা এ রকম সুযোগ-সুবিধা সে পাবে না। আমরা দেখছি যে, পিয়নের চাকরির জন্য মাস্টার্স পাস ছেলে-মেয়েরা এপ্লাই করছে। শিক্ষার সঙ্গে কাজের যে সম্পর্ক, সে জায়গাগুলো আমাদের এখানে কীভাবে দেখা হচ্ছে?

আনু মুহাম্মদ: কর্মসংস্থানের বিষয়ে রাষ্ট্র এবং সরকারের অবস্থান হলো–কর্মসংস্থানের কোনো দায়িত্ব আমরা নিতে পারব না। এটা হলো সরকারের পজিশন–তোমরা নিজেরা কাজ খুঁজে নাও বা নিজেরা উদ্যোক্তা হও, ব্যবসায়ী হও। সুতরাং এটার সঙ্গে তো পড়াশোনার কোনো সম্পর্ক নাই। বরং দেখা যাচ্ছে–যাদের লেখাপড়ার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নাই, তারাই দেখা যাচ্ছে যে, সরকারের বেশি কাছের। আসলেই যদি অর্থনীতির বিকাশের কথা আমরা চিন্তা করি বা জনস্বার্থের কথা চিন্তা করি তাহলে একটা পরিকল্পনার দরকার হয়। যেমন–এই খাতে কত ধরনের লোক দরকার, সেগুলো কীভাবে তৈরি হবে, সেটার জন্য একটা টাকা খরচ করতে হবে, সেটার জন্য দরকার মতো প্রশিক্ষণ দিতে হবে, দরকার মতো বিদেশ থেকে লোক আনতে হবে, বিভিন্ন দেশে লোক পাঠাতে হবে। এটা নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনা থাকা দরকার। সে রকম কোনো সামগ্রিক পরিকল্পনা নাই, যে আমরা কোন খাতে, কী দরকার, সে অনুযায়ী কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার।

আমাদের দেশে কম্পিউটার, মোবাইল, গাড়ি যারা ঠিকঠাক করে; এরা সবাই দেখা যাবে যে, অনেক উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন–এদের কোনো ট্রেনিং নাই, নিজেরা নিজেরাই শিখে নিচ্ছে, বা আরেকজন ওস্তাদের কাছ থেকে শিখে নিচ্ছে। একটা যে প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া থাকবে, তা নেই। তার মানে বোঝা যায়–এরা যদি সুযোগ পেত, তাহলে অনেক ভালো টেকনিক্যাল কাজ করতে পারত। কিংবা তারা ইনোভেশন বা উদ্ভাবনের মধ্যে যেতে পারত। সেই সুযোগটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং অর্থনীতির ব্যবস্থার মধ্যে নেই। যেমন–বাংলাদেশের সব গ্রামে প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং কলেজ পর্যন্ত যদি রাষ্ট্রের দায়িত্বটা প্রধান থাকে, তাহলে সেখানে শিক্ষকের জন্যই তো অনেক কর্মসংস্থানের দরকার। এখন কোচিং সেন্টার যারা চালাচ্ছে, কিংবা টিউটোরিয়াল হোম চালাচ্ছে; তাদের তো কোচিং সেন্টার, টিউটোরিয়াল হোম চালানোর দরকার নাই। তারা আরও সম্মানজনকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যেই শিক্ষকতা করতে পারত। প্রাইভেট, টিউশনি করে তার জীবিকা অর্জন করতে হতো না। এরাই তো এখন উদ্বৃত্ত জনসংখ্যা। এখন মাস্টার্স ডিগ্রি পাস করেও ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিংবা প্রাইভেট-টিউশনি করছে; নানারকম ধান্দা করতে হচ্ছে। কোথায় মামা, খালু আছে। কোথায় দশ লাখ টাকা দিতে হবে–এ সবের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। মেধার চেয়ে তো এখন নিয়োগ বাণিজ্যটা প্রধান তৎপরতা। অর্থাৎ নিয়োগও এখন একটা অর্থনৈতিক তৎপরতা। কে কত টাকা দিতে পারে! মানে পুরো ব্যবস্থাটাই এমন এখানে সবকিছুই একটা কেনা-বেচার সম্পর্ক। যে কোনো জায়গায় টাকা-পয়সা দিলে আমি কাজ পাব–এই যে মানুষের একটা ধারণা, এর মাঝখানেই আবার বেশকিছু মধ্যস্তত্বভোগী তৈরি হয়েছে। তারপর টেকনিক্যাল দিকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে, আমাদের আর্কিটেক্ট, আমাদের সোশ্যাল সাইয়েন্টিস্ট, সাইয়েন্টিস্ট, কম্পিউটার সাইয়েন্টিস্ট, আমাদের আইটি স্পেশ্যালিস্ট কী মাত্রায় দরকার, কী সংখ্যায় দরকার–সামনের ১০ বছরে, ৫০ বছরে, ১০০ বছরে সে অনুযায়ীই তো আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দাঁড় করাতে হবে। সেগুলোর কোনো পরিকল্পনা না থাকার ফলে প্রত্যেকটা একক ব্যক্তি, তার নিজের দায় থেকে কাজের খোঁজ করে। তার যদি কানেকশন থাকে, টাকা থাকে, সে যদি কোনো ধান্দা করে কোনো একটা ব্যবস্থা করতে পারে–এরকম করে সবাইকে একটা অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলা হয়েছে। সেটার পরিকল্পনার মধ্যে গেলে তো রাষ্ট্রের একটা দায়িত্ব নিতে হবে, রাষ্ট্র সে দায়িত্ব নিতে তো রাজি নয়।

এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রধান মনোযোগ হলো সরকারি কর্মকর্তা হওয়া, বিসিএস ক্যাডার হওয়া। তারা দেখতে পাচ্ছে বিসিএস হচ্ছে একমাত্র জায়গা–যেখানে স্থায়ী একটা কর্মসংস্থান, পাশাপাশি একটা ক্ষমতার ব্যাপার। আর এটা হচ্ছে একটা নিশ্চিত জায়গা। অন্য কোথাও নিশ্চয়তা নাই। সেজন্য তাদের মধ্যে একটা উন্মাদনা–সেই উন্মাদনার কারণে তাদের পক্ষে যে বিষয়ে মেধা আছে তাদের, যে যে বিষয়ে তারা ভূমিকা পালন করতে পারে; সেটাও করতে পারছে না। তাদের থার্ড ইয়ার থেকেই বিসিএসের বইপত্র মুখস্ত করতে হয়। বিসিএসে এমন ধরনের প্রশ্ন হয়–মুখস্ত করে সেখানে মেধা যাচাই করা হয়। তার ফলে শিক্ষার যে বিষ সেটা কর্মসংস্থানকেও প্রভাবিত করে। আর অর্থনীতিতে উৎপাদনশীলের চেয়ে একটা লুণ্ঠনমূলক যে পরিস্থিতি এবং দেশের সামগ্রিক যে অর্থনৈতিক নীতিমালা, সেটা প্রণয়নে, বাস্তবায়নে দেশের যে বিদ্যায়তন, সেটার কোনো ভূমিকা না থাকার ফলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এসএ/

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ১)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ২)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ৩)

 

 

 

Header Ad
Header Ad

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত হলেন সেনাপ্রধান

পদক গ্রহণ করছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনালের ওয়াকার-উজ-জামান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট পদে ভূষিত করা হয়েছে। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের জনগণের সার্বিক উন্নয়নে, বিশেষ করে চিকিৎসা খাতে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকৃতি প্রদান করেই তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় আইএসপিআর।

আইএসপিআর জানায়, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সফর শেষে আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনী প্রধান। সফরকালে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি কন্টিনজেন্টসমূহ ও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে সেনাবাহিনী প্রধানকে অবহিত করা হয়। এ সময় তিনি তাঁর মূল্যবান দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। সেনাবাহিনী প্রধান স্পেশাল রিপ্রেজেনটেটিভ অব দ্য সেক্রেটারি জেনারেল ভ্যালেন্টাইন রুগাবিজা এবং ফোর্স কমান্ডার লে. জেনারেল হামফ্রে নায়নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।

ছবি: সংগৃহীত

সেনাবাহিনী প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক্যান ফোর্স (এফএসিএ) এর প্রধান জেনারেল মামাদু জেফিরিনের সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে সেনাবাহিনী প্রধান দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এবং সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক শান্তিরক্ষী মিশনের অধীনে বেসামরিক লোকদের সহায়তার অংশ হিসেবে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এ নির্মিত তোয়াদেরা কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন করেন। এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট ফসটিন আরচেঞ্জ তৌদেরার সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের জনগণের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিশেষ করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রেসিডেন্ট সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাবাহিনী প্রধানকে সম্মানসূচক রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত করেন।

এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের বাংগি এলাকায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কন্টিনজেন্টসমূহ পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের এ সফর সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারের পাশাপাশি সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলে আশা করা যায়।

উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী প্রধান গত ৩ মার্চ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সফরে যান।

Header Ad
Header Ad

তৃতীয় বিয়ে করলেন অভিনেতা মিলন, পাত্রী কে?

অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন ও তার স্ত্রী শিপা। ছবি: সংগৃহীত

আবারও বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ছোট ও বড়পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। প্রায় এক মাস আগেই ভালোবাসার মাস ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে সারেন এ অভিনেতা।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। মিলন ও তার স্ত্রীকে দেখতে অভিনেতার বাড়ি থেকে ৫টি ছবি পোস্ট করেন তিনি।

পোস্ট করা ছবির ক্যাপশনে বিবাহিত জীবনের জন্য শুভকামনাও জানান চয়নিকা। শুধু যে চয়নিকা নব দম্পতিকে দেখতে গিয়েছিলেন এমন নয়। ছোট পর্দার অনেক অভিনয়শিল্পীই আজ মিলনের বাড়ি হাজির হন নতুন বউ দেখতে।

জানা যায়, মিলনের স্ত্রীর নাম শিপা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগামে দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

উল্লেখ্য, অভিনেতার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল লুসি গোমেজ। ১৯৯৯ সালে তাদের বিয়ে হয়। ২০১৩ সালে তাদের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের সমাপ্তি ঘটে। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রী পলির সঙ্গে মিলনের বিয়ে ও চার বছরের সংসার জীবনের গুঞ্জন শোনা গেলেও তা অস্বীকার করে আসছিলেন অভিনেতা।

তবে ২০১৩ সালের অক্টোবরে শ্রীলঙ্কায় স্ত্রী-পুত্র সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছবি প্রকাশ করেন আনিসুর রহমান মিলন। সেই ছবি থেকে জানা যায়, তার স্ত্রীর নাম পলি আহমেদ এবং সন্তানের নাম মিহ্রান।

এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পলি আহমেদকে বিয়ে করেন। যিনি ২০২২ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

Header Ad
Header Ad

ইউপি চেয়ারম্যানের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেন, দুদকের মামলা

ব্রাহ্মন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাক মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ও প্রায় ৫৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাক মিয়া ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে দুদক কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে এদিন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক সোহানুর রহমান বাদি হয়ে লাক মিয়ার নামে মামলা করেন।

মামলার এজহারে বলা হয়, লাক মিয়া চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক ঘুস ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫৫ কোটি ২৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৫১ টাকা মূল্যের সম্পত্তির মালিকানা অর্জনপূর্বক দখলে রাখে।

তার নামে ৪৯টি ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি ১৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৫০১ টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে। যার কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

এদিকে একই অভিযোগে লাক মিয়ার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধেও মামলা করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান।

মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধে করা মামলার এজহারে বলা হয়, স্বামীর সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ ২৩ হাজার ১৯৭ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অসাধু উপায়ে অর্জনপূর্বক দখলে রেখে এবং ১৪টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৪৬১ কোটি ১৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ১৪৬ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রুপান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত হলেন সেনাপ্রধান
তৃতীয় বিয়ে করলেন অভিনেতা মিলন, পাত্রী কে?
ইউপি চেয়ারম্যানের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেন, দুদকের মামলা
লাইফ সাপোর্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক
যশোর সীমান্ত থেকে ৫ কোটি ১২ লাখ টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ
অনেক কো-আর্টিস্ট, ডিরেক্টর তখন আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইতেন না: প্রভা
ভয়াবহ দাবানলের কবলে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া, ২০ স্থানে ছড়িয়েছে আগুন (ভিডিও)
নাগরিক পার্টি ছাড়লেন আবু হানিফ, ফিরে গেলেন গণ অধিকার পরিষদে
প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে চীন যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
রোজায় বেড়েছে আনারসের চাহিদা, দ্রুত পাকাতে রাসায়নিক ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি
সন্তানের জন্য ‘ডন থ্রি’ সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ালেন কিয়ারা
অস্থিরতার কারণে এ বছর নির্বাচন কঠিন হবে: রয়টার্সকে নাহিদ ইসলাম
চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরলেন মির্জা ফখরুল
বিয়ে বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে বরের মৃত্যু
মুশফিক অযু ছাড়া ব্যাট-বল স্পর্শ করতেন না: মুশফিকের স্ত্রী
বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে ভারত, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও ভালো উন্নতি বাংলাদেশের
ছাত্র-জনতা কোথাও অভিযান চালাতে পারে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফ্রান্সে মুসলিম খেলোয়াড়দের রোজায় নিষেধাজ্ঞা
স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন আবরার ফাহাদসহ ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি
রাবিতে সভাপতি নিয়োগ নিয়ে দুই পক্ষের ধস্তাধস্তি