বইমেলার টয়লেটে জুতা খোলার বিড়ম্বনা
অমর একুশে বইমেলায় এবার উভয় (বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাশেই রয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাবলিক টয়লেট। বিশেষ করে করোনাকালে যথেষ্ঠ সংখ্যক টয়লেট থাকায় এ নিয়ে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের মধ্যে সন্তোষ রয়েছে। কারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভীড়-গাদাগাদি এড়িয়ে প্রাকৃতিক কাজ সারতে পারছেন তারা।
তবে এই টয়লেট ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিরক্তি-বিড়ম্বনারও শেষ নেই।
ব্যাংক কর্মকর্তা লুতফুর রহমান। সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার আগে এসেছেন মেলায়। বেশ কিছু বই কিনেছেন। জুতা খুলতে বলে টয়লেটকর্মীদের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে) কড়াকড়ির পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রতিবেদককে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে বলেন, দেখুন আমার হাতে এতোগুলো ব্যাগ কোথায় রেখে জুতা খুলবো আমি। এখানে একটি টুল আছে। তাতে একজন বসে না হয় জুতা খুলতে বা পরতে পারবে। আর যে এতো মানুষ আমরা জুতা খোলার বা পরার জন্য দাঁড়িয়ে আছি তাদের কী হবে।
ততক্ষণে এগিয়ে এসে বিড়ম্বনার কথা বলতে শুরু করলেন ব্যাবসায়ী আহসান তাওফিক। বললেন, বাড়িয়ে অনেকগুলো টুল দিলেও সমাধান হবে না। কারণ মেলায় ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হওয়া মানুষ এসে এগুলোতে বসে থাকবে, বিশ্রাম নেবে। তিনি বলেন, আমি টয়লেট থেকে মাত্র বের হলাম। এখানে একই জুতা অনেকে পরে। তাই জুতা পরতেও ঘেন্না লাগে। তাছাড়া প্রস্রাবের জন্য উঁচু ইউরিন পট নেই। আবার নিচে ইট দিয়ে বানানো একটু উঁচু পাদানিও নেই। ফলে প্রস্রাব সরাসরি শক্ত টাইলসে পড়ে, আর সেখান থেকে ছিটকে পড়ছে জুতায়। আর এই একই জুতা ঘুরেফিরে দিনভর ব্যাবহার করছেন শতশত মানুষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়াসের আহমেদ বলেন, এখনো কিন্তু শীতশীত ভাব আছে। তাই অনেকের পরনেই মোজা থাকে। অনেকে কিন্তু এই শীতে জুতা-মোজা খোলা-পরার বিড়ম্বনায় রীতিমতো বিরক্তই হচ্ছেন।
তার এক আত্মীয়ের বরাত দিয়ে বলেন, ২-৩ দিন আগে তিনি মেলার টয়লেটে নিজের দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে ঢুকতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনার শিকার হয়েছিলেন। কারণ দুই সন্তান আর তিনি মিলে তিনজন জুতাখুলে দাঁঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু একসাথে তিনজোড়া জুতা তো আর একসাথে খালি পাওয়া যায় না।
ভুক্তভোগীদের মতে, দেশের নামকরা হোটেল বা মার্কেটগুলোতেও কিন্তু টয়লেটে জুতা খুলে ঢুকতে বাধ্য করা হয় না। বইমেলাতে এই বিড়ম্বনা রাখা শুধুই অতিসচেতনতা।
এমএ/এএস