শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অবহেলায় মৌলিকতা হারাচ্ছে বাংলা ভাষা

ভাষা সংস্কৃতির প্রাণ, ধারক, বাহক। ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই নিহিত ছিল স্বাধীনতা, অসাম্প্রাদায়িকতা ও গণতন্ত্রের বীজমন্ত্র। যে ভাষা অর্জনে এত ত্যাগ, এত প্রাণের খরচ, তার চেতনা বাঙালি ধারণ করতে পেরেছে কতটুকু। তথাকথিত শহুরে স্মার্টনেসের ঢেউয়ে নড়বড়ে হয়ে গেছে বাংলা সংস্কৃতির খুঁটি। অবহেলায় মৌলিকতা হারাচ্ছে বাংলা ভাষা। নতুন প্রজন্ম ঝুঁকে পড়েছে ইংরেজি, হিন্দি, আরবিসহ বিদেশি ভাষার দিকে।

বিকৃতির এ অপসংস্কৃতি থেকে বাংলা ভাষাকে রক্ষা করতে হলে শ্রেণিকক্ষ থেকেই প্রকৃত সাংস্কৃতিক শিক্ষা দিতে হবে বলে মত দিয়েছেন সাহিত্যিক, গবেষক ও সংস্কৃতিকর্মীরা। এক্ষেত্রে বহুমুখী শিক্ষা পদ্ধতিও দায়ি বলে মনে করেন তারা।

সর্বস্তরে মাতৃভাষার প্রচলনে রাষ্ট্রীয় গাফিলতি বলেও উল্লেখ করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাতিষ্ঠানিক ও উচ্চ শিক্ষায় বাংলার প্রচলনেরও উপর জোর দেন তারা। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গেও বাংলা ভাষা সম্পৃক্তের দাবি জানান ভাষা গবেষকরা।

এ প্রসঙ্গে সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, মাতৃভাষার প্রতি অবহেলা ও বিদেশি ভাষা মিশিয়ে মনের ভাব প্রকাশ অপসংস্কৃতি ও রুচির বিকৃতি। ভাষার প্রতি যাদের দখল, ভালোবাসা নেই, তারাই শহুরে স্মার্টনেস দেখানোর জন‌্য বাংলার মধ‌্যে টুকরা টুকরা বিদেশি ভাষা ব‌্যবহার করেন।

তিনি বলেন, ‘যতদিন আমাদের শিক্ষা ঠিক পথে না আসবে ততদিন ভাষা বিকৃতির এ ঢেউ বাড়তে থাকবে। এটি তখনই ঠেকানো সম্ভব হবে, যখন আমরা শ্রেণিকক্ষ থেকে প্রকৃত শিক্ষা, সাংস্কৃতিক শিক্ষা দিতে পারব।’

সর্বস্তরে বাংলার প্রচলনের ক্ষেত্রে ব‌্যক্তিগত পর্যায় থেকে সরকারের সদিচ্ছার অভাবের কথাও বলেন এই সাহিত‌্যিক। তিনি বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষায় আমরা বলি বাংলা ভাষার প্রচলনের জন‌্য। কী করে হবে! উচ্চ শিক্ষায় তো বাংলা ভাষার পাঠ‌্যবই পড়ি না। ইংরেজি ভাষা বা অন‌্য কোনো ভাষা থেকে অনুবাদ করতে হবে। কিন্তু সেই সক্ষমতা আমাদের আছে কী? ভুল বা নিম্নমানের অনুবাদ পড়ার চেয়ে না পড়াই ভালো। প্রথম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ‌্যালয় পর্যন্ত উচ্চমানের শিক্ষা দিলে তবেই সম্ভব। আর এ জন‌্য তো কয়েক হাজার অর্থাৎ বিষয়ভিত্তিক অনুবাদক দরকার। যেখানে কাজ করা দরকার সেখানে কাজ করা হচ্ছে না।’

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ‌্য়ালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ‌্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘৮০ শতাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ‌্যালয়গুলোর নাম ইংরেজিতে। গণমাধ‌্যমেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সহজ বাংলা শব্দের পরিবর্তে ইংরেজি শব্দ ব‌্যবহার করে। মাতৃভাষাকে ভালোবাসার অর্থ হলো মাকে ভালোবাসা। যে মাতৃভাষাকে ভালোবাসে না, সে মাকেও ভালোবাসে না, দেশকেও ভালোবাসে না। তাই ভাষাকে ভালো না বাসলে সংস্কৃতিকে ভালোবাসাও সম্ভব নয়।’

উচ্চশিক্ষায় বাংলার প্রচলনের জন‌্য একটি সমৃদ্ধ জাতীয় অনুবাদ সেল গঠনের উপরও জোর দেন তিনি।

বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘৫২’র ভাষা আন্দোলনের দাবি ছিল রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার প্রচলন করা। কিন্তু এর অন্তর্নিহিত বিষয় ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ৫২ সালে যেমন সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের দাবি ছিল, তেমনি এখনো আছে। কিন্তু আমরা সেটি আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এর প্রধান কারণ, আমরা বাংলাকে ভালোবাসি না। বিদেশি ভাষার প্রতি বেশি আকৃষ্ট হই এবং ব‌্যাপক আগ্রহী হই। এ ছাড়া যতক্ষণ পর্যন্ত কর্ম, বৃত্তি, চাকরির সঙ্গে মাতৃভাষাকে সম্পৃক্ত করতে না পারবেন, ততক্ষণ বাংলাকে সর্বস্তরে চালু করা সম্ভব নয়।’

এ ছাড়া বিশ্বায়নের যুগে ভাষাকে তথ‌্যপ্রযুক্তিবান্ধব করে তুলতে না পারলে সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন সম্ভব নয় বলে মনে করেন এ ভাষা গবেষক। তিনি বলেন, ‘সরকারের সদিচ্ছা থাকা দরকার। মূল উদ‌্যোগটা সরকারকেই নিতে হবে।’

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘একটি দেশে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত একমুখী শিক্ষা পদ্ধতি থাকা খুবই দরকার। কিন্তু আমাদের দেশে শুরু থেকেই তিন ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি দেখি। বাংলা, ইংরেজি ও মাদরাসা মাধ‌্যম। স্বাভাবিক ভাবেই বাংলা, আরবি ও ইংরেজি তিন ভিন্ন সংস্কৃতির অনুসারী হবে শিক্ষার্থীরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, প্রতিষ্ঠানের নামকরণের ক্ষেত্রে বাংলা না রাখলেও তো কোনো ব‌্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আদালতের রায় বাংলায় পড়া হচ্ছে না। সংবিধানে বলা আছে রাষ্ট্রভাষা বাংলা। অথচ আদালত রায় পড়ছে ইংরেজিতে, শুনানি করছে ইংরেজিতে। এক্ষেত্রে আমি যদি বলি আদালত সংবিধান লঙ্ঘন করছে, আমার অধিকার খর্ব করছে, তাহলে কী ভুল হবে? এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ভাবেই উদ‌্যোগ নিতে হবে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক স্বরোচিষ সরকার প্রাতিষ্ঠানিক ও উচ্চ শিক্ষায় বাংলার প্রচলনের ক্ষেত্রে অনুবাদের ওপর জোর দেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সবাইকে ব‌্যক্তিগতভাবে সচেতন হতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে বাংলা ভাষা সর্বস্তরে প্রচলনে।’

অমর একুশে উদযাপনে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, আশপাশের রাস্তাজুড়ে চলছে আলপনা আঁকার কাজ।

২১ কেবল শোকের নয়, উদযাপনেরও

কুয়াশা ভেজা মেঠো রাস্তায় খালি পায়ের প্রভাতফেরী আর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ২১ শতাংশ মূল্যছাড়। সময়ের ব্যবধানে বদলে গেছে উৎসব উদযাপন ও চেতনা ধারণের ধরন। সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি ২১ শে ফেব্রুয়ারি। কখনো কখনো ফিকে হয়েছে চেতনার রং। ভোগ্য পণ্যের দোকানে শহিদের রক্তের রং দিয়ে তৈরি হয় কেক। দোকানে দোকানে চলে ২১-এর মূল্যছাড়। প্রভাতফেরী, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া, স্মরণিকা প্রকাশ, দেওয়াল লিখন ছিল ২১ উদযাপনের অন্যতম প্রকাশ।

১৯৫২ সালের এ আন্দোলন শুধু মাতৃভাষা বাংলার দাবিতেই ছিল না, এটি মূলত বাঙালির স্বাধীনতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্রের আন্দোলন- এমনটিই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজমন্ত্র নিহিত ছিল ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই।

অধ‌্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহিদ হয়েছেন অনেকেই, সেজন্য এটি শোকের। ৮০‘র দশকে একুশে ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরীর মিছিল হতো, সংকলন প্রকাশ হতো, একুশের গান হতো। সেগুলো এখন আর তেমন দেখা যায় না।’

একই কথা বললেন সাংস্কৃতিক ব‌্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো ছাত্র সংগঠন ছিল না, যারা সেই সময় একুশে ফেব্রুয়ারিতে স্মরণিকা প্রকাশ করত না। একুশে ফেব্রুয়ারির সেই স্মরণিকা ছিল নতুন লেখকদের আত্মপ্রকাশেরও একটি প্রস্তুতিপর্ব।’

এক সময় ২১ শে ফেব্রুয়ারি বা শহিদ দিবস পালনের মধ‌্যে অনেকটা শোকের আবহ ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির পর তা উদযাপনের ক্ষেত্রে খানিকটা ভিন্নতা এসেছে। ২১ উদযাপন নিয়ে এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা মতবাদও। এক সময় জাতীয় শোক দিবস পালন হলেও এখন একুশ উদযাপন হচ্ছে খানিকটা ভিন্ন আমেজে। ভাষা বিশেষজ্ঞ, সাহিত‌্যিক, লেখক, গবেষকরা বলছেন, একুশ কেবল শোকের নয়, উদযাপনেরও। যে অর্জন আসে বহু প্রাণ খরচের বিনিময়ে, তাতে শুধু শোকই থাকে না। থাকে গর্বের, উদযাপনেরও অনেক কিছু।

বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর অনেকটা পাল্টে গেছে শহিদ দিবস পালনের ধরন। তার আগে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ছিল কেবল আমাদের বিষয়। কিন্তু এখন তা বিশ্বব‌্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এটির একটি আলাদা তাৎপর্য তো রয়েছেই। ভাষা আন্দোলন আমাদের গর্বের বিষয়। আনন্দের বিষয়।’

এ প্রসঙ্গে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘যে মৃত‌্যু জীবনের চেয়ে অনেক বড় কিছু অর্জন করে সে মৃত‌্যু তো উদযাপনেরও। অনেক বড় একটি জীবনের সন্ধান দেয়, তাই শহিদদের মৃত্যু উদযাপনেরও হয়। শহিদদের আত্মত‌্যাগের বিনিময়ে মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাদের মৃত‌্যু তো উদযাপনেরই। তবে উযদাপন মানেই উৎসব নয়।’

তিনি বিজয় দিবস উদযাপনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেটি তো লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়েই পাওয়া, সেটি আমরা উদযাপনই করি।

স্বরোচিষ সরকার বলেন, ‘শুধু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ার কারণেই ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপনের বিষয় নয়। ভাষা আন্দোলনে আমরা শহিদদের হারিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে তো ভাষা আন্দোলনের চেয়ে বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন। তারপরও তো আমারা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছি। ভাষা আন্দোলনের মধ‌্যে দিয়ে আমরা বাংলা ভাষাকে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে পেরেছি, আমাদের নতুন পরিচয় পেয়েছি এবং ভাষার সঙ্গে আত্নমর্যাদা জড়িত। তাই আমি একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের বিষয় মনে করি। এতে কোনো দোষ দেখি না।’

ভাষার কোনো ধর্ম নেই। অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি ও আত্মমর্যাদার অবিচ্ছেদ্য অংশ ভাষা। তাই বাংলা সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হলে মাতৃভাষাকে ভালোবাসতে ও শ্রদ্ধা করতে হবে। তাতেই পূর্ণ বিকাশ সম্ভব সংস্কৃতির।

এসএন/জেডএকে/এসএ/

Header Ad
Header Ad

ওমরাহ করতে যাওয়ার পথে হঠাৎ অসুস্থ বাবর, দুবাই হাসপাতালে ভর্তি

ওমরাহ করতে যাওয়ার পথে হঠাৎ অসুস্থ লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছিলেন, কিন্তু দুবাই পৌঁছানোর পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন এ খবর নিশ্চিত করেন।

জাকির হোসেন জানান, বাবর বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। ফ্লাইটে চলাকালীন সময়ে তিনি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়, এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বাবরের সাথে ছিলেন তার স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং ছেলে। তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে সৌদি আরবে চলে গেছেন, তবে ছেলে লাবিব এখনো বাবরের পাশে রয়েছেন। বাবর সুস্থ হলে সৌদি আরব যাবেন এবং সেখানে ওমরাহ পালন শেষে সপরিবারে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি কারামুক্তির তিন দিন পর বাবর বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন এবং তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর কারাভোগের পর গত ১৬ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি সে মামলায় বাবর খালাস পান।

Header Ad
Header Ad

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান ৫ দিনের রিমান্ডে

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজার রহমান তার ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক দেবী রানী রায় আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। আজ শুক্রবার রিমান্ড আবেদনের জন্য তাকে আদালতে তোলা হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিস-সংলগ্ন একটি বাসা থেকে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (কালিগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নুরুজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে প্রজ্ঞাপণ জারির দাবিতে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে বসেছেন কলেজটির একদল শিক্ষার্থী। অবশ্য এরই মধ্যে তারা কলেজের সামনের সড়কের অবরোধ তুলে নিয়েছেন। এতে করে মহাখালী থেকে গুলশান লিংক রোডের যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন তারা। আজকের জুমার নামাজ সেখানেই আদায় করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, আমাদের অনশন কর্মসূচি শুরুর ২৪ ঘণ্টা পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একজন প্রতিনিধি এসেছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কারো মুখের কথা আমরা বিশ্বাস করতে চাইনা। যতক্ষণ পর্যন্ত তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। রাতে সড়ক অবরোধ ছাড়লেও ফের অবরোধ করা হবে। রাতে রাজধানীতে কাঁচামালবাহী বিভিন্ন সবজির গাড়ি প্রবেশ করে। তাই তারা সড়ক ছেড়ে দিয়েছিলাম। যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়।

তারা বলেন, অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে তিতুমীর কলেজের ৭ জন শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিতুমীর ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে থেকে অনশন শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চলবে। আমরা ৭ দফা দাবি জানিয়েছি। সেগুলো হচ্ছে —

১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।

২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।

৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় ‘আইন’ এবং ‘জার্নালিজম’ বিষয় সংযোজন করতে হবে।

৫. অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।

৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।

এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ওমরাহ করতে যাওয়ার পথে হঠাৎ অসুস্থ বাবর, দুবাই হাসপাতালে ভর্তি
সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান ৫ দিনের রিমান্ডে
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
টাঙ্গাইলে নিজ বাড়ির পাশে পড়ে ছিল যুবকের গলাকাটা মরদেহ
গাজায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৪২ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার
ছাত্রদল নেতার সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়নে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
ছাত্রদের চাপে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানের হাতে হাতকড়া, ডিম নিক্ষেপ
ওভাল ক্রিকেট টিমের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনল আম্বানি পরিবার
সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফের মৃত্যু নিশ্চিত করল হামাস
প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা