বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

অবহেলায় মৌলিকতা হারাচ্ছে বাংলা ভাষা

ভাষা সংস্কৃতির প্রাণ, ধারক, বাহক। ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই নিহিত ছিল স্বাধীনতা, অসাম্প্রাদায়িকতা ও গণতন্ত্রের বীজমন্ত্র। যে ভাষা অর্জনে এত ত্যাগ, এত প্রাণের খরচ, তার চেতনা বাঙালি ধারণ করতে পেরেছে কতটুকু। তথাকথিত শহুরে স্মার্টনেসের ঢেউয়ে নড়বড়ে হয়ে গেছে বাংলা সংস্কৃতির খুঁটি। অবহেলায় মৌলিকতা হারাচ্ছে বাংলা ভাষা। নতুন প্রজন্ম ঝুঁকে পড়েছে ইংরেজি, হিন্দি, আরবিসহ বিদেশি ভাষার দিকে।

বিকৃতির এ অপসংস্কৃতি থেকে বাংলা ভাষাকে রক্ষা করতে হলে শ্রেণিকক্ষ থেকেই প্রকৃত সাংস্কৃতিক শিক্ষা দিতে হবে বলে মত দিয়েছেন সাহিত্যিক, গবেষক ও সংস্কৃতিকর্মীরা। এক্ষেত্রে বহুমুখী শিক্ষা পদ্ধতিও দায়ি বলে মনে করেন তারা।

সর্বস্তরে মাতৃভাষার প্রচলনে রাষ্ট্রীয় গাফিলতি বলেও উল্লেখ করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাতিষ্ঠানিক ও উচ্চ শিক্ষায় বাংলার প্রচলনেরও উপর জোর দেন তারা। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গেও বাংলা ভাষা সম্পৃক্তের দাবি জানান ভাষা গবেষকরা।

এ প্রসঙ্গে সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, মাতৃভাষার প্রতি অবহেলা ও বিদেশি ভাষা মিশিয়ে মনের ভাব প্রকাশ অপসংস্কৃতি ও রুচির বিকৃতি। ভাষার প্রতি যাদের দখল, ভালোবাসা নেই, তারাই শহুরে স্মার্টনেস দেখানোর জন‌্য বাংলার মধ‌্যে টুকরা টুকরা বিদেশি ভাষা ব‌্যবহার করেন।

তিনি বলেন, ‘যতদিন আমাদের শিক্ষা ঠিক পথে না আসবে ততদিন ভাষা বিকৃতির এ ঢেউ বাড়তে থাকবে। এটি তখনই ঠেকানো সম্ভব হবে, যখন আমরা শ্রেণিকক্ষ থেকে প্রকৃত শিক্ষা, সাংস্কৃতিক শিক্ষা দিতে পারব।’

সর্বস্তরে বাংলার প্রচলনের ক্ষেত্রে ব‌্যক্তিগত পর্যায় থেকে সরকারের সদিচ্ছার অভাবের কথাও বলেন এই সাহিত‌্যিক। তিনি বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষায় আমরা বলি বাংলা ভাষার প্রচলনের জন‌্য। কী করে হবে! উচ্চ শিক্ষায় তো বাংলা ভাষার পাঠ‌্যবই পড়ি না। ইংরেজি ভাষা বা অন‌্য কোনো ভাষা থেকে অনুবাদ করতে হবে। কিন্তু সেই সক্ষমতা আমাদের আছে কী? ভুল বা নিম্নমানের অনুবাদ পড়ার চেয়ে না পড়াই ভালো। প্রথম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ‌্যালয় পর্যন্ত উচ্চমানের শিক্ষা দিলে তবেই সম্ভব। আর এ জন‌্য তো কয়েক হাজার অর্থাৎ বিষয়ভিত্তিক অনুবাদক দরকার। যেখানে কাজ করা দরকার সেখানে কাজ করা হচ্ছে না।’

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ‌্য়ালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ‌্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘৮০ শতাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ‌্যালয়গুলোর নাম ইংরেজিতে। গণমাধ‌্যমেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সহজ বাংলা শব্দের পরিবর্তে ইংরেজি শব্দ ব‌্যবহার করে। মাতৃভাষাকে ভালোবাসার অর্থ হলো মাকে ভালোবাসা। যে মাতৃভাষাকে ভালোবাসে না, সে মাকেও ভালোবাসে না, দেশকেও ভালোবাসে না। তাই ভাষাকে ভালো না বাসলে সংস্কৃতিকে ভালোবাসাও সম্ভব নয়।’

উচ্চশিক্ষায় বাংলার প্রচলনের জন‌্য একটি সমৃদ্ধ জাতীয় অনুবাদ সেল গঠনের উপরও জোর দেন তিনি।

বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘৫২’র ভাষা আন্দোলনের দাবি ছিল রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার প্রচলন করা। কিন্তু এর অন্তর্নিহিত বিষয় ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ৫২ সালে যেমন সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের দাবি ছিল, তেমনি এখনো আছে। কিন্তু আমরা সেটি আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এর প্রধান কারণ, আমরা বাংলাকে ভালোবাসি না। বিদেশি ভাষার প্রতি বেশি আকৃষ্ট হই এবং ব‌্যাপক আগ্রহী হই। এ ছাড়া যতক্ষণ পর্যন্ত কর্ম, বৃত্তি, চাকরির সঙ্গে মাতৃভাষাকে সম্পৃক্ত করতে না পারবেন, ততক্ষণ বাংলাকে সর্বস্তরে চালু করা সম্ভব নয়।’

এ ছাড়া বিশ্বায়নের যুগে ভাষাকে তথ‌্যপ্রযুক্তিবান্ধব করে তুলতে না পারলে সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন সম্ভব নয় বলে মনে করেন এ ভাষা গবেষক। তিনি বলেন, ‘সরকারের সদিচ্ছা থাকা দরকার। মূল উদ‌্যোগটা সরকারকেই নিতে হবে।’

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘একটি দেশে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত একমুখী শিক্ষা পদ্ধতি থাকা খুবই দরকার। কিন্তু আমাদের দেশে শুরু থেকেই তিন ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি দেখি। বাংলা, ইংরেজি ও মাদরাসা মাধ‌্যম। স্বাভাবিক ভাবেই বাংলা, আরবি ও ইংরেজি তিন ভিন্ন সংস্কৃতির অনুসারী হবে শিক্ষার্থীরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, প্রতিষ্ঠানের নামকরণের ক্ষেত্রে বাংলা না রাখলেও তো কোনো ব‌্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আদালতের রায় বাংলায় পড়া হচ্ছে না। সংবিধানে বলা আছে রাষ্ট্রভাষা বাংলা। অথচ আদালত রায় পড়ছে ইংরেজিতে, শুনানি করছে ইংরেজিতে। এক্ষেত্রে আমি যদি বলি আদালত সংবিধান লঙ্ঘন করছে, আমার অধিকার খর্ব করছে, তাহলে কী ভুল হবে? এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ভাবেই উদ‌্যোগ নিতে হবে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক স্বরোচিষ সরকার প্রাতিষ্ঠানিক ও উচ্চ শিক্ষায় বাংলার প্রচলনের ক্ষেত্রে অনুবাদের ওপর জোর দেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সবাইকে ব‌্যক্তিগতভাবে সচেতন হতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে বাংলা ভাষা সর্বস্তরে প্রচলনে।’

অমর একুশে উদযাপনে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, আশপাশের রাস্তাজুড়ে চলছে আলপনা আঁকার কাজ।

২১ কেবল শোকের নয়, উদযাপনেরও

কুয়াশা ভেজা মেঠো রাস্তায় খালি পায়ের প্রভাতফেরী আর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ২১ শতাংশ মূল্যছাড়। সময়ের ব্যবধানে বদলে গেছে উৎসব উদযাপন ও চেতনা ধারণের ধরন। সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি ২১ শে ফেব্রুয়ারি। কখনো কখনো ফিকে হয়েছে চেতনার রং। ভোগ্য পণ্যের দোকানে শহিদের রক্তের রং দিয়ে তৈরি হয় কেক। দোকানে দোকানে চলে ২১-এর মূল্যছাড়। প্রভাতফেরী, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া, স্মরণিকা প্রকাশ, দেওয়াল লিখন ছিল ২১ উদযাপনের অন্যতম প্রকাশ।

১৯৫২ সালের এ আন্দোলন শুধু মাতৃভাষা বাংলার দাবিতেই ছিল না, এটি মূলত বাঙালির স্বাধীনতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্রের আন্দোলন- এমনটিই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজমন্ত্র নিহিত ছিল ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই।

অধ‌্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহিদ হয়েছেন অনেকেই, সেজন্য এটি শোকের। ৮০‘র দশকে একুশে ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরীর মিছিল হতো, সংকলন প্রকাশ হতো, একুশের গান হতো। সেগুলো এখন আর তেমন দেখা যায় না।’

একই কথা বললেন সাংস্কৃতিক ব‌্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো ছাত্র সংগঠন ছিল না, যারা সেই সময় একুশে ফেব্রুয়ারিতে স্মরণিকা প্রকাশ করত না। একুশে ফেব্রুয়ারির সেই স্মরণিকা ছিল নতুন লেখকদের আত্মপ্রকাশেরও একটি প্রস্তুতিপর্ব।’

এক সময় ২১ শে ফেব্রুয়ারি বা শহিদ দিবস পালনের মধ‌্যে অনেকটা শোকের আবহ ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির পর তা উদযাপনের ক্ষেত্রে খানিকটা ভিন্নতা এসেছে। ২১ উদযাপন নিয়ে এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা মতবাদও। এক সময় জাতীয় শোক দিবস পালন হলেও এখন একুশ উদযাপন হচ্ছে খানিকটা ভিন্ন আমেজে। ভাষা বিশেষজ্ঞ, সাহিত‌্যিক, লেখক, গবেষকরা বলছেন, একুশ কেবল শোকের নয়, উদযাপনেরও। যে অর্জন আসে বহু প্রাণ খরচের বিনিময়ে, তাতে শুধু শোকই থাকে না। থাকে গর্বের, উদযাপনেরও অনেক কিছু।

বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর অনেকটা পাল্টে গেছে শহিদ দিবস পালনের ধরন। তার আগে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ছিল কেবল আমাদের বিষয়। কিন্তু এখন তা বিশ্বব‌্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এটির একটি আলাদা তাৎপর্য তো রয়েছেই। ভাষা আন্দোলন আমাদের গর্বের বিষয়। আনন্দের বিষয়।’

এ প্রসঙ্গে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘যে মৃত‌্যু জীবনের চেয়ে অনেক বড় কিছু অর্জন করে সে মৃত‌্যু তো উদযাপনেরও। অনেক বড় একটি জীবনের সন্ধান দেয়, তাই শহিদদের মৃত্যু উদযাপনেরও হয়। শহিদদের আত্মত‌্যাগের বিনিময়ে মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাদের মৃত‌্যু তো উদযাপনেরই। তবে উযদাপন মানেই উৎসব নয়।’

তিনি বিজয় দিবস উদযাপনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেটি তো লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়েই পাওয়া, সেটি আমরা উদযাপনই করি।

স্বরোচিষ সরকার বলেন, ‘শুধু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ার কারণেই ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপনের বিষয় নয়। ভাষা আন্দোলনে আমরা শহিদদের হারিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে তো ভাষা আন্দোলনের চেয়ে বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন। তারপরও তো আমারা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছি। ভাষা আন্দোলনের মধ‌্যে দিয়ে আমরা বাংলা ভাষাকে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে পেরেছি, আমাদের নতুন পরিচয় পেয়েছি এবং ভাষার সঙ্গে আত্নমর্যাদা জড়িত। তাই আমি একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের বিষয় মনে করি। এতে কোনো দোষ দেখি না।’

ভাষার কোনো ধর্ম নেই। অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি ও আত্মমর্যাদার অবিচ্ছেদ্য অংশ ভাষা। তাই বাংলা সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হলে মাতৃভাষাকে ভালোবাসতে ও শ্রদ্ধা করতে হবে। তাতেই পূর্ণ বিকাশ সম্ভব সংস্কৃতির।

এসএন/জেডএকে/এসএ/

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না পেয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও ফলের গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। জানা গেছে, উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর (চায়না অফিস) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন— ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন (২৬), মো. শাহ আলম (৩৬), মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (২৯), মো. মোস্তাফিজুর রহমান (২৬) ও মো. রতন রানা (২৫)। গত ৩০ মার্চ যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাদের আটক করা হয়।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, বিরামপুর পৌরশহরের ঘাটপাড় এলাকার অধ্যাপক ডা. মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা সানোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ডা. মোখলেছুর রহমান তার জমির দেখাশোনার জন্য ফারুক হোসেন নামে একজনকে নিয়োগ দেন। ফারুক সেখানে একটি দোকান নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের গাছ লাগান। গাছগুলোতে পর্যাপ্ত ফল ধরার পর আসামিরা জমি দখলের পরিকল্পনা করে এবং চাঁদা দাবি করে।

গত রবিবার (৩০ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাগানে হামলা চালায়। তারা ১৫৭টি বড়ই গাছ, ৮৪টি কমলা গাছ ও ২৩টি আম গাছ কেটে ফেলে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

ফারুক হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। মারধরের একপর্যায়ে লোহার শাবল দিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে গুরুতর জখম করা হয়। ফারুক হোসেন অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা তার বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি করে এবং ব্যবসার নগদ ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে নেয়।

হামলার পর ফারুক হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে প্রশাসন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহায়তায় পাঁচজনকে আটক করা হয়।

বিরামপুর থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, ফারুক হোসেনের দায়ের করা মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

Header Ad
Header Ad

হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই

অভিনেতা ভ্যাল কিলমার। ছবি: সংগৃহীত

হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই। ‘টপ গান’ এবং ‘ব্যাটম্যান ফরএভার’ খ্যাত এই তারকা ১ এপ্রিল (মঙ্গলবার) লস অ্যাঞ্জেলেসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে কণ্ঠনালীতে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এছাড়া শেষ সময়ে নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন, যা তার শারীরিক অবস্থাকে আরও জটিল করে তোলে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভ্যাল কিলমার দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তবে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যায়। অভিনেতার মেয়ে মার্সিডিজ কিলমার জানান, শেষ সময়ে তার বাবা লড়াই চালিয়ে যেতে পারছিলেন না।

আশির ও নব্বই দশকে হলিউডে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন ভ্যাল কিলমার। তার সোনালি চুল, আকর্ষণীয় চেহারা এবং অনবদ্য অভিনয়ের কারণে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দর্শকদের প্রিয় তারকা। ‘টপ গান’, ‘রিয়াল জিনিয়াস’, ‘উইলো’, ‘হিট’ এবং ‘দ্য সেন্ট’-এর মতো ছবিতে তার অসাধারণ অভিনয় এখনো দর্শকদের মনে অমলিন।

বিশেষ করে ১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য ডোর্স’ সিনেমায় কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী জিম মরিসনের চরিত্রে তার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়। ১৯৯৫ সালে ‘ব্যাটম্যান ফরএভার’ ছবিতে তিনি ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন, যা তাকে সুপারহিরো সিনেমার জগতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। যদিও ১৯৯৭ সালের ‘ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন’ সিনেমায় এই চরিত্রে জর্জ ক্লুনি অভিনয় করেন, কিন্তু ভক্তদের মনে ব্যাটম্যান হিসেবে গেঁথে ছিলেন ভ্যাল কিলমারই।

ক্যান্সারের কারণে বহু বছর অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন কিলমার। তবে ২০২১ সালে ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি বড় পর্দায় ফিরে আসেন। যদিও শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারতেন না, তবুও তার প্রত্যাবর্তন দর্শকদের মনে নস্টালজিয়ার ঝড় তোলে।

ভ্যাল কিলমারের মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হলিউডে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Header Ad
Header Ad

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রচার বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ মহালে অবস্থিত সোনালি টকিজ সিনেমা হলে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে চলমান ‘বরবাদ’ সিনেমার সন্ধ্যার শো দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর দর্শক সমাগম ঘটে। ডিসি, বেলকনি এবং প্রথম শ্রেণির টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু সিনেমার মাঝপথে সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, ফলে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কোনো আশার আলো দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা হলে ভাঙচুর শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই তাণ্ডবে সিনেমা হলের বসার বেঞ্চ, চেয়ার ও টিকিট কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি হলের দেয়ালে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় একদল যুবক বিক্ষুব্ধ দর্শকদের ধাওয়া করলে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

কিছু দর্শক অভিযোগ করেন, যান্ত্রিক ত্রুটির সময় হল কর্তৃপক্ষ কোনো আশ্বস্ত না করে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে চলে যান। এতে দর্শকেরা আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এবং হলের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করেন।

ঘটনার সময় হলে উপস্থিত থাকা একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উত্তেজিত দর্শকেরা তাকে মারধর করতে উদ্যত হন। তবে তিনি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের লাইট বন্ধ করে দরজায় তালা লাগিয়ে ভেতরে বসে থাকায় অল্পের জন্য রক্ষা পান।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস জানান, সিনেমা চলার সময় সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেটি ঠিক করতে না পেরে কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া আনতে যান। কিন্তু দর্শকেরা কলাপসিবল গেটে তালা লাগানো দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে ভাঙচুর চালান।

এদিকে, ঘটনার পর সিনেমা হলের দায়িত্বে থাকা হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তিনি অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে আছেন। হলের অন্যান্য কর্মীরাও ভয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ