বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

আয়-ব্যয় ভারসাম্যহীন, বাড়ছে দুশ্চিন্তা

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। বাজার বিশ্লেষণ করে দেখো গেছে একটি পরিবারের প্রতি মাসে যেসব পণ্য কেনার প্রয়োজন হয় তার প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই গত তিন মাসে বেড়েছে। ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষদের পড়তে হচ্ছে সংকটে। বাড়তি খরচ মেটাতে অনেকেই লাগাম টানতে হচ্ছে বাজার খরচে। কিন্তু তাতে কি পরিত্রাণ মিলবে?

হাশেম সাহেব মতিঝিলের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মাসিক আয় ৪৫ হাজার টাকা। এক ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে থাকেন মিরপুরের ভাড়া বাসায়। তার কাছে মাসিক বাজার খরচের হিসাব জানতে চাইলে একটি হিসেবের তালিকা ধরিয়ে দেন। এতে দেখা যায় স্বাভাবিকভাবে এতদিন ধরে প্রতি মাসে তিনি যেসব পণ্য কিনতেন, বর্তমান বাজার দর অনুসারে এর পরিমান ২৩ হাজার ৩২৩ টাকা। অথচ ছয় মাস আগে এই খরচ ছিল ১৫ হাজারের মধ্যে।



এ খরচের সঙ্গে আছে বাড়িভাড়া ১৮ হাজার টাকা, ইন্টারনেট বিল, পত্রিকার বিল, ডিস বিল, বুয়ার বেতন। এ ছাড়া ছেলের পড়াশুনা ও অন্যান্য খরচ প্রায় ১০ হাজার টাকা। আছে ডাক্তার, পোশাক পরিচ্ছেদের খরচ ও অফিসের যাতায়াত খরচ তো আছেই। হাশেম সাহেব আক্ষেপ করে বলেন, খরচ যে হারে বেড়েছে আয় তো বাড়েনি। আগে তো কোনো রকম চলে যেত। এখন কোন খরচ কমাব ভেবে পাচ্ছি না।

আবুল বাশার একটি কলেজের সিনিয়র শিক্ষক। তার মাসে আয় ৩০ হাজার টাকা। তিনি জানান, যে হারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে তাতে চলা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। করোনার সময় কলেজ বন্ধ ছিল। তখন ঠিকমতো বেতন হতো না। এখন করোনা নেই, কিন্তু দ্রব্যমূল্যের বাজার যে অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে তো জীবনযাপন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। খরচের লাগাম তো আর টানা যায় না।

 

তিন মাসে বাজার দরের পার্থক্য

 

 

পণ্যের নাম

আগের দর

বর্তমান দর

চাল (কেজি)

৫৬

৭০

ডাল (কেজি)

১১০

১৩০

তেল (লিটার)

১৪০

১৯৮

মুরগি (কেজি)

২৫০

৩১০

গরু (কেজি)

৫৫০

৭০০

মরিচ গুড়া (কেজি)

২৩৫

৪৭০

হলুদ গুড়া (কেজি)

৩৭০

৪০০

আদা (কেজি)

৮০

১১০

রসুন (কেজি)

১৪০

১৮০

১০

পেঁয়াজ (কেজি)

২৫

৪০

১১

আটা (২ কেজি)

৬৫

১১৫

১২

ডিম (ডজন)

৯০

১৩০

১৩

গুড়া দুধ (৫০০ গ্রাম)

২৫০

৩৫০

১৪

গায়ের সাবান

৫০

৬৫

১৫

কাপর কাচার সাবান

২০

২৭

১৬

গুড়া সাবান

১২০

১৫০

১৭

টুথপেস্ট

১১০

১৩০

১৮

টয়লেট পেপার

২৫

৩০

১৯

হারপিক

১২৫

১৩৫

২০

মাজনি

২০

২৫

২১

ভিমবার

৬৪

৭০

২২

ঘড়ির ব্যাটারি

১৫

১৮

 

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার পর থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা বলছে। সরকারের পক্ষ থেকে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রিসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু কার্যত যা হচ্ছে তা হলো খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণেরও চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু একটি পরিবারে প্রতিদিন আরও কিছু ব্যবহার্য্য পণ্য আছে যেগুলোর প্রতিটিরই দাম বেড়েছে গত ছয় মাসে। ফলে শুধু খাদ্যপণ্যই নয় বেড়েছে একটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে যাত্রার সামগ্রিক খরচ।

রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার এক দোকানি লিয়াকত হোসেনের দোকানে গেলে দেখা যায় অনেক ক্রেতার ভিড়। ক্রেতারা বিভিন্ন পণ্য কিনছে আর হাপিত্যেশ করছে। এত দাম বাড়ল। কীভাবে চলবে। এসব। লিয়াকত জানান, কিছু দিন আগেও ১০০ টাকা ডজন ডিম বিক্রি করেছি। এখন ১২০ টাকা। প্যকেট আটা ব্র্যান্ড ভেদে দাম ছিল ৬০-৬৫ টাকা। ঈদের আগে ছিল ৯০ টাকা। এখন ১১০ টাকা। আগামী সপ্তাহে হবে ১১৫ টাকা। লিয়াকত বলেন, সবাই শুধু কাঁচা বাজারের কথা বলে। কাাঁচা বাজার ছাড়াও তো অনেক জিনিস লাগে প্রতিদিন। এগুলোর প্রত্যেকটার দামই বেড়েছে। আমাদের তো কিছু করার নেই। কিন্তু মানুষের অবস্থা কি তা তো বুঝতে পারছি। আমাদেরও তো কিনে খেতে হয়। আমরা কীভাবে চলব।

 

    একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের এক মাসের আনুমানিক বাজার খরচ

 

পণ্যের নাম

পরিমান

দর

চাল (মিনকেট৫০ কেজি)

৩১৫০

৩৪০০

ডাল (২ কেজি)

২০০

২৬০

তেল(৫ লিটার)

৭০০

৯৯০

মাছ

৪০০০

৬০০০

মুরগি

২৪০০

৩০০০

গরু

১৬৫০

২১০০

মরিচ গুড়া (আধা কেজি)

১১৭

২৩৫

হলুদ গুড়া(কেজি)

১১৭

২৩৫

আদা (কেজি)

           ১০০

১৪০

১০

রসুন(কেজি)

১৪০

১৮০

১১

পেঁয়াজ

১২৫

২০০

১২

আটা

১৯৫

৩৩০

১৩

লবন

৩৫

৩৫

১৪

ডিম (ডজন)

৮১০

১০৮৩

১৫

মুড়ি

৭০

৭০

১৬

চানাচুর

৬৫

১২০

১৭

চা

২০০

২০০

১৮

গুড়া দুধ

৫০০

৭০০

১৯

গায়ের সাবান

১৩৫

১৯৫

২০

কাপর কাচার সাবান

১২০

১৬২

২১

গুড়া সাবান

২০০

৩০০

২২

টুথপেষ্ট

১১০

১৫০

২৩

টয়লেট পেপার

২৪০

৩৬০

২৪

হারপিক

১২৫

১৩৫

২৫

মাজনি

৬০

৭৫

২৬

ভিমবার বড়

৩২০

৩৫০

২৭

ঘড়ির ব্যাটারি

৪৫

৫৪

      মোট                                       ১৬, ৪২৯

২০, ৯৫৯

 

লিয়াকত আরও জানান, গত তিন মাসে ডাল বেড়েছে ৩০ টাকা, গুড়া মরিচ কেজিতে ৪০ টাকা, গুড়া হলুদে ৩০ টাকা, জিরায় ৩০ টাকা। আর তেলে তো জানেনই। তেল নিয়ে কতকিছু হয়ে গেল। এগুলো ছাড়া কি একটি পরিবারে রান্না চলে? সকালের ঘুম থেকে জেগে যে টুথপেস্ট ব্যবহার করেন সেটার দামও তো বেড়েছে ৩০ টাকা। টয়লেট পেপার, গায়ে মাখার সাবানে ১৫ টাকা, কাপড় কাচার সাবানে ৭ টাকা, কাপড় কাচার ডিটারজেন্ট পাওডারে ৩০ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া কিচেন ‌ন্যাপকিনে ২৫ টাকা, মাজনি ৫ টাকা, ভিমবার ৭ টাকা বেড়েছে।

হারপিক টয়লেট ক্লিনার এর দামেও ১০ টাকা বেড়েছে। টয়লেট পেপার ছাড়া তো এখন চলে না। সেটার দাও বেড়েছে ৫ টাকা। ফুল ঝাড়ু যেটা প্রতিটি ঘরেই থাকে তার দামও বেড়েছে ২০ টাকা।

জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ধারা থেকে বাদ যায়নি ইউটিলিটি বিলের বাড়তি খরচ। এলপিজি গ্যসের দাম করোনাকালে ছিল এক হাজার টাকার মধ্যে। এরপর বেশ কয়েকদফা দাম বাড়িয়ে কমিয়ে বর্তমানে ১৪৫০ টাকা। এদিকে বিদ্যুতের দাম ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, পানির দাম ২০ শতাংশ বাড়নোর প্রস্তাব, গ্যাসের দাম ১০০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা আছে। প্রস্তাব অনুসারে এই সেবাখাতের দাম বাড়লে জীবনযাত্রার ব্যয় কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা ধারণা করা কঠিন। শিশু খাদ্যের দাম ৪০০ গ্রামের দুধের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ টাকা বেড়েছে যা আগে ছিল ৮৭৫ টাকা।

বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে যে সংকটে আছে তা থেকে মুক্তি দিতে না পারলে আরও সংকট তৈরি হবে। তাই বাজার মনিটরিংয়ে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে৷
জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ইএনডিপি) কান্ট্রি ইকনোমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ঊর্ধ্বগতি ঠেকানো যাবে দুইভাবে। ভর্তূকি দিয়ে ও ভোক্তা পর্যায়ে। ভোক্তা পর্যায়ে টিসিবিসহ বিভিন্নভাবে নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে। দরিদ্র ও অতি দরিদ্রদের জন্য ভোজ্যতেলও খাদ্য সহায়তার অংশ হিসেবে বাড়াতে হবে।

আসন্ন বাজেটে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানার জন্য ভর্তুকি দিতে হবে উল্লেখ করে ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, কৃষি উৎপাদনে জোর নজর দিতে হবে। সেচে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দরিদ্রদের জন্যই এই ভর্তুকি দিতে হবে।

ড. নাজনীন আহমেদ আরও বলেন, সাধারণ মানুষের দৈনিন্দিন ব্যয় বৃদ্ধির তালিকার লাগাম টানার জন্য মজুতদারের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। কোনোক্রমেই যাতে তারা বেশি মুনাফার লোভে এ কাজটা করতে না পারে। তাহলে কিছুটা হলেও সহনীয় থাকতে পারে ব্যয় বৃদ্ধির তালিকা।
বাজার গবেষণা পদ্ধতি কি আমাদের আছে? থাকলে কতটা কার্যকর? না থাকলে এটা দরকার কি না।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস, পরিসংখ্যান ব্যুরো বাজার গবেষণা করে থাকে। কিন্তু তথ্যের বড়ই সংকট। তাই তথ্য সংগ্রহে দক্ষ জনশক্তির দরকার। আরও গবেষণার জোগান দিতে হবে।

অপরদিকে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব এর সভাপতি গোলাম রহমান নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্ভব না হওয়া কারণ সম্পর্কে বলেন, যে সব কারণে বাজারে অস্থিরতা তা অনেক কারণে নিয়ন্ত্রণে নেই সরকারের। কারণ আন্তজাতিক বাজারে কারো পক্ষে নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে সরকারকে। সহনশীল থাকতে হবে ব্যবসায়ীদের। অতি মুনাফার লোভ পরিহার করতে হবে।  

ক্যাব বাজার নিয়ে গবেষণা করে না। তবে বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বছর শেষে কোন কোন পণ্যের দাম বাড়ে ও কমে তা সবাইকে জানানো হয় বলে জানান গোলাম রহমান।

গোলাম রহমান বলেন, আগামী বাজেটে নতুন করে কোনো ধরনের পণ্যে কোনো শুল্ক কর আরোপ করা যাবে না। বাজাটে শুল্কের হার সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। তবে বিলাসী পণ্যের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না, এক্ষেত্রে বাড়াতে হবে।  

 
Header Ad
Header Ad

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র আজ (বুধবার) রাতে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের আহ্বানে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা সেখানে জড়ো হয়ে বাড়িটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং সিটি করপোরেশনের দুটি বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে গত ৪ আগস্ট ‘শেখ বাড়ি’তে প্রথম দফায় আগুন লাগানো হয়। সেদিন বাড়িটি খালি থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর আবারও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। একসময় যেখান থেকে খুলনা অঞ্চলের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো, আজ সেটির অস্তিত্ব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো।

প্রসঙ্গত, ‘শেখ বাড়ি’ ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচার মালিকানাধীন। এ বাড়িতে তাঁর চাচাতো ভাই, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সোহেল উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন পরিবারের সদস্য বসবাস করতেন। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এ বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা ছিল।

বুলডোজার চালানোর সময় ছাত্র-জনতার বিপুল উচ্ছ্বাস লক্ষ করা যায়। তাঁদের দাবি, বৈষম্যমূলক রাজনৈতিক শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল এই বাড়ি, তাই এটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য।

Header Ad
Header Ad

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। আজ বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে, সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। তারা স্লোগান দিতে দিতে জাদুঘরের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ জাদুঘরের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণের বিরোধিতা করে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২' নামে একটি কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে, বুলডোজার ছাড়াই তারা নিজ হাতে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের থামাতে ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, যেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগে বসবাস করতেন।

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা
আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব