বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে নির্মাণ সামগ্রীর দাম

দুই সপ্তাহ আগেও রহিম স্টিল রডের দাম ছিলো ৭৯ হাজার টাকা টন। এখন তা ৯০ হাজার টাকা টন ছাড়িয়েছে। আবার টাকা দিয়েও সময় মতো পাওয়া যাচ্ছে না। একই দশা সিমেন্টের। প্রতি বস্তা নির্দিষ্ট কোম্পানির সিমেন্ট আগে ৪১০ টাকায় পাওয়া যেত। বর্তমানে তা ৫০০ টাকা। ইটের দামও হাজারে বেড়েছে দুই হাজার টাকা। নির্মাণ খাতের প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ রেখেছে বেশিরভাগ আসাবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। আর যারা নিজেরা মাথা গোঁজার ঠায় নির্মাণ করছেন, তারা পড়েছেন বিপাকে।

আবাসন প্রতিষ্ঠান এসডি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জালাল বলেন, ‘আগের রেটে কাজ ধরেছি, কিন্তু ইট, রড, সিমেন্টের দাম বেড়েছে। ফলে জায়গা জমি বিক্রি করতে প্রজেক্ট শেষ করতে হবে।

শুধু তিনিই নন, অনেক নামি-দামি বড় বড় ডেভলপার কোম্পনিও তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। আবাসন ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে নির্মাণ ব্যয়। এভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাইতো স্থবির হয়ে গেছে আবাসন খাত।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলেছেন, করোনার আগে থেকেই কাঁচামাল সংকট চলছে। যে কারণে রডের দাম আকাশছোঁয়া। ইউক্রেন যুদ্ধে আন্তর্জাতিক বাজারে রডের কাঁচামালের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। আর কয়লার দামও লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে। ৭ হাজার টাকা টনের কয়লা ২৫ হাজার টাকা হয়েছে। তাই ইটের দামও হুহু করে বাড়ছে।

জানতে চাইলে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের সেমার্স একতা ব্রিকসের জাহাঙ্গীর আলম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘ ইটের গাড়ি ৩৫ হাজার টাকা মানে প্রায় ১২ হাজার টাকা প্রতি হাজার ইটের দাম। আরও বাড়বে দাম। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু কয়লার দাম কমছে না। তাই ইটের দামও বাড়বে। কোথায় ঠেকবে তা বলা মুশকিল। কারণ গত বছরে এক নম্বর ও পিক ইট ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়েছে।’

শুধু রড, সিমেন্ট ও ইটের দামই নয়, নির্মাণ সামগ্রীর মধ্যে হার্ডওয়ারী থেকে শুরু করে থাই গ্লাস, সিরামিক, টাইসের দামও বাড়ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। মোহাম্মদপুরের মেসার্স আয়েশা হার্ডওয়ারের মালিক শরীফ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘মূল্যছাড় দিয়ে বার্জার পেইন্টের সিলার আগে ৩ হাজার টাকা ড্রাম বিক্রি করেছি। আর ওয়াল পুটিং ১ হাজার ৫০০ টাকা ড্রাম। কিন্তু আজ থেকে কোম্পানির সুর পাল্টে গেছে। ড্রামে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। এভাবে অন্যান্য হার্ডওয়ারের দামও বাড়তি।

এদিকে ফার্মগেটের শাহ আলম ট্রেডার্সের শাহ আলমও বলেন, ‘থাই গ্লাসের খুব খারাপ অবস্থা। সবমিলে আগে ৩২০ টাকা বর্গফুট বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ৫০০ টাকার নিচে পাওয়া কঠিন। এভাবে চলতে থাকলে আরও বাড়বে দাম।’

মোহাম্মদপুরের মদিনা করপোরেশনের মেহেদী হাসান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘মিল থেকে সহজে রড পাওয়া যায় না রড, সিমেন্ট। প্রতিনিয়ত বাড়ছে দাম। প্রায় একমাস ধরে ৬০ গ্রেডের রড ৮০ হাজার টাকা ছিলো। বর্তমানে তা ৯০ হাজার টাকার বেশি। বিএসআরএম ও রহিম স্টিলের রড ৯০ হাজার ৫০০ টাকা এবং একেএস রড টনপ্রতি ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাও আবার অর্ডার দিলে সহজে পাওয়া যায় না। আর ৪১০ টাকার সিমেন্ট বর্তমানে ৫০০ টাকারও বেশি। এক মাস আগে ৪২০ টাকা প্যাকেট বিক্রি করা হলেও বর্তমানে সুপারক্রিট ৫১০ টাকা, স্ক্যান সিমেন্ট ৫২৫ টাকা, ফ্রেশ ৪৮০ টাকা প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে। মেঘনাসহ অন্যান্য সিমেন্টও এভাবে বাড়তি দামে কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

ঢাকা স্টিলের রিয়াদ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আগে সপ্তাহে ২৫ থেকে ৪০ টন রড বিক্রি করা হতো। বিক্রি কমতে কমতে এখন এক টনে নেমে এসেছে।

মোহাম্মদপুরের অপর এক রড সিমেন্টের বিক্রেতা জানান, ক্রেতারা রড না পেয়ে বাড়ি-ঘর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। মিলমালিকরা রড দেয় না। ফলে আমরাও চাহিদা মোতাবেক ক্রেতাদের রড সরবরাহ করতে পারছি না।

মিলমালিকদের মতে, দেশে বার্ষিক রডের চাহিদা ৫৫ থেকে ৬০ লাখ টন। এর মধ্যে সরকারি উন্নয়নকাজে ব্যবহার হয় ৬০শতাংশ। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ বেসরকারি খাতে। সম্প্রতি হুহু করে রডের দাম বাড়তে থাকায় সরকারি বেসরকারি সব খাতই স্থবির হয়ে গেছে।


এদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) থেকেও বলা হয়েছে বর্তমানে ৬০ গ্রেড রডের দাম বেড়েছে।

রডের প্রধান কাঁচামাল পুরোনো লোহালক্কড় বা আমদানি স্ক্র্যাপ। এসব দিয়ে রি-রোলিং মিলে গলিয়ে রড তৈরি করা হয়। ৩০ শতাংশ স্ক্র্যাপ সংগ্রহ করা হয় অভ্যন্তরীণভাবে। ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী ও পুরাতন জাহাজ কেটে তা থেকে স্ক্র্যাপ সংগ্রহ করা হয়। আর বাকি ৭০ শতাংশ স্ক্র্যাপ আমদানি করা হয়।

চট্রগ্রাম থেকে নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএসআরএম, একেএস, রহিম স্টিলসহ রি-রোলিং মিলের সংখ্যা ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১৩০টি। এরমধ্যে বড় আকারের ৫০টি। বাকিগুলো ছোট ও মাঝারি।

উল্লেখ্য, রডের প্রধান কাঁচামাল স্ক্র্যাপ আমদানি করা হয় মূলত ইউরোপ ও রাশিয়া থেকে। ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে স্ক্র্যাপের দাম আরও বেড়ে যায়।

রি-রোলিং মিলের মালিকরা বলেছেন, যুদ্ধের আগে বিশ্ববাজারে প্রতি টন স্ক্র্যাপের দাম ছিল ৫৭০ থেকে ৬০০ ডলার। সেই স্ক্র্যাপের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে এখন ৬৫০ থেকে ৭০০ ডলার। হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধির কারণে স্ক্র্যাপ সরবরাহ ব্যহত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশীয় বাজারে।

সার্বিক ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং মিলস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি ও শাহরিয়ার স্টিল মিলের মালিক মাসাদুল আলম মাসুদ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বর্তমানে যেভাবে দাম বাড়ছে কিছু বলার নেই। কারণ রড তৈরির প্রধান কাঁচামাল পুরোনো লোহা, যা স্ক্র্যাপ নামে পরিচিত। এই স্ক্র্যাপ আমদানি করে আমরা কারখানায় বিলেট তৈরি করে রড উৎপাদন করি। কিন্তু এই কাঁচামাল নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে। বেশির ভাগ ফ্যাক্টরি কাঁচামাল সংকটে ভুগছে, যে কারণে রডের সংকট তৈরি হয়েছে। বর্তমানে মিলমালিকদের কাছে কোনো স্টক নেই। ফলে নিয়মিত এলসি খুলে কাঁচামাল আনতে হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান নগদ অর্থসংকটে ভুগছে। ফলে তারা এলসি খুলতে পারছে না।

কিভাবে কমতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অস্থির রডের বাজার সহনীয় করতে হলে এর কাঁচামাল স্ক্র্যাপ সহজলভ্য করতে হবে। এ জন্য কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক-কর রেয়াত দেয়ার সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারে কাঁচামালের সরবরাহ বাড়াতে হবে। তা না হলে বাড়তে থাকবে রডের দাম। এর প্রভাব পড়বে আবাসন নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজে।

আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সহ-সভাপতি কামাল মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে সাবেক সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘কিছু দিন আগে থেকে বাড়তেই আছে নির্মাণ সামগ্রীর দাম। এরফলে আবাসন খাতে ধস নেমে গেছে। এছাড়া পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ সরকারের উন্নয়ন কাজেও প্রভাব পড়েছে। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচিৎ অতি দ্রুত সভা করে করণীয় নির্ধারণ করা। কারণ এভাবে সব জিনিসের দাম বাড়তে থাকলে সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।’ অনেক কোম্পানি গ্রাহককে ফ্লাট বুঝিয়ে দিচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা এ কাজ করছে ঠিক করছে না। কারো অভিযোগ থাকলে আর্বিটেশন বোর্ড রয়েছে। সেখানে অভিযোগ করলে তা আমলে নেওয়া হবে।’

জেডএ/

 

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান

সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষকে গুম ও খুন করে স্বৈরাচার ভারতে পালিয়ে গেছে। যে কোন মূল্যে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে। এই প্রশ্ন গণতান্ত্রিক সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে 'আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় জুলাই আগস্ট বিপ্লবে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারকে আর্থিক অনুদান এবং ‌র‌্যাবের গুলিতে নিহত যুবদল নেতা মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর উপহার উপলক্ষ্যে সোনাগাজী সরকারি ছাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কথা বলে যে সময়ক্ষেপণ করছে এবং সংস্কার কাজ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করছে, তা কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি-না সে ব্যাপরে সবাই সজাগ থাকতে হবে।

এ সময় তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার বিগত ১৭ বছর মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল । সে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে লড়াই করে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিগত ১৭ বছরের লড়াই এবং ২৪এর জুলাই আগস্টের বিপ্লবের চেতনায় আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে সবাইকে সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। এখন দেশে যে সংস্কারের আলোচনা চলছে সেই সংস্কার প্রস্তাব বিগত আড়াই বছর পূ্র্বে আমরাই দিয়েছিলাম। স্বৈরাচার আমাদের সংস্কার প্রস্তাব আমলে নেয়নি। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাবে। দেশের কল্যাণে কাজ করতে চায়।

দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে এবং শহীদদের স্বপ্নের দেশ বিনির্মাণ হবে।

বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময়ই দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিয়ে ভাবে। এর বড় কারণ হলো- দেশের জনগণ বিএনপির উপর আস্থা রাখতে চায়। কীভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে আসবে নেতাকর্মীদের সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও ফেনী পৌর বিএনপি'র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমটির সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুনের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভেকেট রুহুল কবির রেজভী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক,জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন, সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ, অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার শানু, আবদুল লতিফ জনি, জালাল আহমদ মজুমদার, মামুনুর রশিদ মামুন, মশিউর রহমান বিপ্লব, ফেনী জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার, যুগ্ম আহবায়ক গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জামাল উদ্দিন সেন্টু, সদস্য সচিব সৈয়দ আলম ভূঞা, শহীদ ছাত্রদল নেতা কাওছার উদ্দিনের পিতা ফিরোজ আলম, শহীদ মেহাম্মদ মাসুদের কন্যা মুনতাহা বিনতে মাসুদ ও শহীদ জাফর আহমদের কন্যা জাহানারা বেগম প্রমুখ।

এসময় ২০১৬ সালের ২৫ জুন র‌্যাবের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর এবং ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারসহ আহতদের প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

Header Ad
Header Ad

মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর বদলগাছীতে মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়েছে স্থানীয় আ'লীগের কর্মিরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের কটকবাড়ি এলাকায় তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত সিহাব নওগাঁ নামাজগড় গাউসুল আজম কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য ও একই এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বদলগাছী সদর এলাকার রাসেল ও সাথী নামে দুই যুবক-যুবতী গতকাল বিকালে নওগাঁ থেকে মার্কেট করে ফেরার পথে কটকবাড়ী এলাকায় মোটরসাইকেল থামিয়ে নদীর ধারে ঘোরাঘুরি করছিল। সন্দেহ হলে ঐ এলাকার আওয়ামী লীগের কর্মি প্লাবন,অনিক,আশিক, রাকিব,ইয়াজুলসহ ১০-১৫ জন কর্মি তাদের আটক করে মারধর করে। পরে তাদের নদীর ধারে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে দশ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবি করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রদল কর্মী সিহাব সহ গ্রামবাসি ঐ ছেলে মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মি কয়েকজন অতর্কিতভাবে তাঁর ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে ধারালো কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে সিহাব কে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনেরা সেখানে গিয়ে সিহাব কে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।

বদলগাছি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাহিদ রানা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতা কর্মি। মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় তার ওপরে হামলা করেছে।’

বদলগাছী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সুমন হোসেন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘দলের দুঃসময়ের কর্মী সিহাব। ন্যাক্কারজনক এ হামলার ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।’

তবে অভিযোগ ওঠা যুবকদের সাথে যোগাযোগ করা না গেলেও তাদের মধ্যে রিয়াজুল নামের এক অভিভাবক দায়সারা জবাব দেন। তিনি বলেন, ওই দুই যুবক-যুবতী অনৈতিক কার্যকলাপ করার জন্য এসেছিল। তাদের সন্দেহ হলে এলাকার ছেলেরা ধরে বিচার করতে চেয়েছিল। সিহাব এখানে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে একটু হাতাহাতি হয়েছে বলে শুনেছি।

এ প্রসঙ্গে বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজাহান আলী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন , ‘ছাত্রদল কর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখনো অভিযোগ হাতে আসেনি। তবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  
উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল বিক্রি বন্ধ