বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস আজ

উপেক্ষিতই থাকল ভোক্তার অধিকার

বাজারে সব ধরনের পণ্যের দামই চড়া। চাল, তেল, ডালসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের এবং ব্যবহার্য্য অন্যান্য সামগ্রীর দামও কোনো কারণ ছাড়াই বেড়েছে। এতে হাঁসফাঁস করছে দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু এর প্রতিকার কী? সাধারণ মানুষের কি জানেতে পারবে নিত্যপণ্যের বাজার কেন ঊর্ধ্বমুখী?

ভোক্তা অধিকার আইন হয়েছে প্রায় এক যুগ আগে। এই আইনের বাস্তব প্রতিফলন খুবই নগন্য। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, পণ্যে ভেজাল দেওয়া হচ্ছে, পণ্য মজুত করা হচ্ছে, মিথ্যা তথ্যে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে না।

বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস আজ। বিশ্ববাসীর মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় বেশ গুরুত্বের সঙ্গে। এবারের ভোক্তা অধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায় ন্যায্যতা’। ভোক্তার অধিকার সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে এ দিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস কী

১৫ মার্চ, ১৯৬২ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডি কংগ্রেসে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে বক্তৃতা দেন। নিরাপত্তার অধিকার, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার, পছন্দের অধিকার এবং অভিযোগ প্রদানের অধিকার-ভোক্তাদের এ চারটি মৌলিক অধিকার সম্পর্কে তিনি আলোকপাত করেন যা পরবর্তীতে ভোক্তা অধিকার আইন নামে পরিচিতি পায়।

১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের মাধ্যমে জাতিসংঘ ভোক্তা অধিকার রক্ষার নীতিমালায় কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে আরো বিস্তৃত করে অতিরিক্ত আরো আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করা হয়। এরপর থেকেই কনজুমার্স ইন্টারন্যাশনাল এ সকল অধিকারকে সনদে অন্তর্ভুক্ত করে। কেনেডি'র ভাষণের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৫ মার্চকে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস হিসেবে বৈশ্বিকভাবে উদ্যাপন করে আসছে।

বাংলাদেশে ভোক্তা অধিকার দিবসের আইন

২০০৯ সালের ৬ এপ্রিল ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ, ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিরোধ ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে বিধান করার লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করা হয়।

কী আছে ভোক্তা অধিকার আইনে

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী, কোনো বিক্রেতার পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করা, সেবার তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করা, অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয় করা, পণ্য মজুত করা, ভেজাল পণ্য বিক্রয়, খাদ্যপণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা প্রতারণা, প্রতিশ্রুত পণ্য সরবরাহ না করা, ওজনে ও পরিমাপে কারচুপি, দৈর্ঘ্য পরিমাপের ক্ষেত্রে গজফিতায় কারচুপি, নকল পণ্য প্রস্তুত, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয়, অবহেলা করলে ক্রেতা আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।

সমস্যা হলো দেশের বেশির ভাগ ক্রেতাই জানেন না প্রতিকার কোথায় ও কীভাবে চাইতে হবে। আর চাইলেই যে প্রতিকার পাওয়া যাবে, তার নিশ্চয়তা আছে কি-না।

রজমান মাস আসছে। সাধারণত এ মাসে নিত্যপণ্যের দামে উর্ধ্বমুখী হতে দেখা যায়। কিন্তু এবছর আগেভোগেই সয়াবিন তেলসহ সব জিনিসের দাম লাগামহীন। সিন্ডিকেট করেই সব জিনিসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। ফলে ভোক্তাদের স্বার্থে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গঠন করার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও পুরোপুরি তো দূরের কথা ৫০ শতাংশও কার্যকর হয়নি।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রাজেশ সরকার ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘মাঝে মধ্যে টিভিতে অভিযান দেখি। ওই সময়ে হয়ত দাম কিছুটা কমে। তারপর আবার বাড়তে শুরু করে। নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং করা হলে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফা করতে পারত না।’

এদিকে অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষেণে সরকারের নির্দেশেই ২০০৯ সালে ভোক্তা আইন করা হয়েছে। এরপর থেকে সারা দেশে এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। বর্তমানে এমন কোনো দিন নেই যে, বাজার মনিটরিং করা হয় না।

একই সঙ্গে নিয়ম ভঙ্গের কারণে রাজধানীসহ সারা দেশে মনিটরিং করা হচ্ছে। একই সঙ্গে কেউ অভিযোগ করলে বিক্রেতা দোষি সাবান্ত হলে ক্রেতাকে ২৫ শতাংশও প্রণোদনা দেওয়া হয়।

রবিবারও (১৩ মার্চ) ঢাকা মহানগরের তেজগাঁও এবং শান্তিনগরসহ দেশব্যাপী ভোক্তা-স্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন অপরাধে ৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৭৫ হাজার পাঁচশত টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ভোক্তা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের এপ্রিলে ভোক্তা অধিদপ্তর গঠনের পর গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্তে এক যুগের বেশি সময়ে ৫০ হাজারটি বাজার অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর। তাতে বিভিন্ন অভিযোগে ৩৭ থেকে ৫৫ নং ধারায় এক লাখ ২০ হাজার ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে ৮২ কোটি ৪৫ লাখ ৬৭ হাজার ৪২ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া ভোক্তাদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে ৫৬ হাজার ১২৪টি। এই সব অভিযোগের ভিত্তিতে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ হাজার ২৮১টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ কোটি ৯ লাখ ৪৩ হাজার ২০৮ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি অভিযোগকারিকে (ভোক্তা) প্রণোদনা হিসেবে এক কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৭ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

ভোক্তা অধিকারের জন্য ২০০৯ সালের ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করার পর এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে সারাদেশে।

আইনের ধারায় দণ্ড

মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করলে অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। পণ্যে ভেজাল পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়ের দণ্ড কোনো ব্যক্তি জ্ঞাতসারে ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় করলে বা করতে প্রস্তাব করিলে অনূর্ধ্ব তিন বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

মানুষের জীবন বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক কোনো দ্রব্য, কোন খাদ্য পণ্যের সাথে মিশ্রিত করলে অনূর্ধ্ব তিন বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ড দণ্ডিত হইবেন।

এ ছাড়া পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য বা অপরাধের জন্য এক বছর জরিমানা থেকে ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ডের কথা বলা হয়েছে। এভাবে বিভিন্নভাবে শান্তির বিধান করা হয়েছে আইনে। এছাড়া কেউ অভিযোগ করলে ৯০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হবে ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে।

এক যুগ পর ভোক্তারা বলছেন, পুরোপুরি নয়, আংশিক বলা যায় ভোক্তাদের স্বার্থ পূরণ করতে পেরেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। ধানমন্ডির অর্চাড পয়েন্টের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী বলেন, ‘লোক দেখানো অভিযানে লাভ নেই। টিভিতে দেখা যায় অভিযান করছে তখন পণ্যের দাম কমে যায়। তারপর আবার বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ‘বাজার মনিটরিং আরও বাড়াতে হবে।’

এদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোক্তা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া কমবে না দ্রব্যমূল্য। পুরণ হবে না ভোক্তাদের স্বার্থ।

শুধু এই কয়জন ভোক্তাই নয়, রবিরার কারওয়ান বাজারে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ভোক্তাদের সঙ্গে কথা হয়। তাদের একই দাবি, বাজারে মনিটরিং বাড়ালে ভোক্তাদের স্বার্থ পূরণ করতে পারবে ভোক্তা অধিদপ্তর।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর কাজ করছে, ভোক্তাদের স্বার্থ দেখেছে বলেই তারা প্রতিকার পাচ্ছেন। আস্থার সঞ্চার হয়েছে। তবে প্রত্যাশিত আশা পুরণ করতে পারেনি এ প্রতিষ্ঠানটি।

কীভাবে সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলায় জেলায় শুধু একজন লোক দিয়ে এটা সম্ভব নয়। অবকাঠামোগত সীমাবন্ধতা রয়েছে। এটা বাড়াতে হবে। আবার ব্যবসায়ীদেরও সতর্ক থাকতে হবে। তবেই সম্ভব। কারণ এমনও শুনা গেছে, একই ব্যবসায়ীকে একাধিকবার জরিমানা করা হয়েছে। তারপরও ভোক্তাদের স্বার্থ বিরোধী কাজ করছে। এটা ভোক্তাবান্ধব দপ্তর। এর কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে।’

 

জেডএ/

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান

সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষকে গুম ও খুন করে স্বৈরাচার ভারতে পালিয়ে গেছে। যে কোন মূল্যে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে। এই প্রশ্ন গণতান্ত্রিক সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে 'আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় জুলাই আগস্ট বিপ্লবে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারকে আর্থিক অনুদান এবং ‌র‌্যাবের গুলিতে নিহত যুবদল নেতা মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর উপহার উপলক্ষ্যে সোনাগাজী সরকারি ছাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কথা বলে যে সময়ক্ষেপণ করছে এবং সংস্কার কাজ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করছে, তা কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি-না সে ব্যাপরে সবাই সজাগ থাকতে হবে।

এ সময় তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার বিগত ১৭ বছর মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল । সে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে লড়াই করে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিগত ১৭ বছরের লড়াই এবং ২৪এর জুলাই আগস্টের বিপ্লবের চেতনায় আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে সবাইকে সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। এখন দেশে যে সংস্কারের আলোচনা চলছে সেই সংস্কার প্রস্তাব বিগত আড়াই বছর পূ্র্বে আমরাই দিয়েছিলাম। স্বৈরাচার আমাদের সংস্কার প্রস্তাব আমলে নেয়নি। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাবে। দেশের কল্যাণে কাজ করতে চায়।

দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে এবং শহীদদের স্বপ্নের দেশ বিনির্মাণ হবে।

বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময়ই দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিয়ে ভাবে। এর বড় কারণ হলো- দেশের জনগণ বিএনপির উপর আস্থা রাখতে চায়। কীভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে আসবে নেতাকর্মীদের সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও ফেনী পৌর বিএনপি'র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমটির সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুনের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভেকেট রুহুল কবির রেজভী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক,জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন, সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ, অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার শানু, আবদুল লতিফ জনি, জালাল আহমদ মজুমদার, মামুনুর রশিদ মামুন, মশিউর রহমান বিপ্লব, ফেনী জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার, যুগ্ম আহবায়ক গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জামাল উদ্দিন সেন্টু, সদস্য সচিব সৈয়দ আলম ভূঞা, শহীদ ছাত্রদল নেতা কাওছার উদ্দিনের পিতা ফিরোজ আলম, শহীদ মেহাম্মদ মাসুদের কন্যা মুনতাহা বিনতে মাসুদ ও শহীদ জাফর আহমদের কন্যা জাহানারা বেগম প্রমুখ।

এসময় ২০১৬ সালের ২৫ জুন র‌্যাবের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর এবং ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারসহ আহতদের প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

Header Ad
Header Ad

মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর বদলগাছীতে মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়েছে স্থানীয় আ'লীগের কর্মিরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের কটকবাড়ি এলাকায় তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত সিহাব নওগাঁ নামাজগড় গাউসুল আজম কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য ও একই এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বদলগাছী সদর এলাকার রাসেল ও সাথী নামে দুই যুবক-যুবতী গতকাল বিকালে নওগাঁ থেকে মার্কেট করে ফেরার পথে কটকবাড়ী এলাকায় মোটরসাইকেল থামিয়ে নদীর ধারে ঘোরাঘুরি করছিল। সন্দেহ হলে ঐ এলাকার আওয়ামী লীগের কর্মি প্লাবন,অনিক,আশিক, রাকিব,ইয়াজুলসহ ১০-১৫ জন কর্মি তাদের আটক করে মারধর করে। পরে তাদের নদীর ধারে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে দশ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবি করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রদল কর্মী সিহাব সহ গ্রামবাসি ঐ ছেলে মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মি কয়েকজন অতর্কিতভাবে তাঁর ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে ধারালো কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে সিহাব কে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনেরা সেখানে গিয়ে সিহাব কে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।

বদলগাছি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাহিদ রানা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতা কর্মি। মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় তার ওপরে হামলা করেছে।’

বদলগাছী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সুমন হোসেন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘দলের দুঃসময়ের কর্মী সিহাব। ন্যাক্কারজনক এ হামলার ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।’

তবে অভিযোগ ওঠা যুবকদের সাথে যোগাযোগ করা না গেলেও তাদের মধ্যে রিয়াজুল নামের এক অভিভাবক দায়সারা জবাব দেন। তিনি বলেন, ওই দুই যুবক-যুবতী অনৈতিক কার্যকলাপ করার জন্য এসেছিল। তাদের সন্দেহ হলে এলাকার ছেলেরা ধরে বিচার করতে চেয়েছিল। সিহাব এখানে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে একটু হাতাহাতি হয়েছে বলে শুনেছি।

এ প্রসঙ্গে বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজাহান আলী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন , ‘ছাত্রদল কর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখনো অভিযোগ হাতে আসেনি। তবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  
উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল বিক্রি বন্ধ