একান্ত সাক্ষাৎকারে সিআইডির পুলিশ সুপার মুক্তাধর
সফলতা-ব্যর্থতা নিয়েই নারীদের দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে
সকল নারীদের নারী দিবসের শুভেচ্ছা। আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯১৪ সাল থেকে বিভিন্ন দেশ দিবসটি পালন করে আসছে। ১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘ দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালন করছে। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়। প্রতি বছর ৮ মার্চ নতুন নতুন প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বব্যাপী নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে নারীদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জনের উৎসব হিসেবে পালন করা হয়। জনসচেতনতার লক্ষে প্রতি বছর রাখা হয় প্রতিপাদ্য বিষয়।
এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’।
নারী দিবসে ঢাকাপ্রকাশ-এর সঙ্গে কথা হয় ব্যক্তিজীবনে সফল এক নারী, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর-এর। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে তিনি বলেছেন, নারীদের সব সময় সফলতার কথা চিন্তা করলে হবে না, কাজ করার সময় ব্যর্থতা আসতেই পারে। ব্যর্থ হলে আরও বেশি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। তাতেই সফলতা আসবে।
তার সাক্ষাতকারের বিশেষ অংশটুকু তুলে ধরা হল:
ঢাকাপ্রকাশ: আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কিছু বলুন
মুক্তা ধর: আন্তর্জাতিক নারী দিবস আমাদের নারীদের জন্য গর্ব। শুধু আন্তর্জাতিক নারী দিবস নয়, প্রতিদিনই নারীদের জন্য একটি দিবস। বিশেষ করে এ দিনটি আমি বলবো প্রত্যেক নারীর জন্য একটা গর্ব এবং অহংকারের জায়গা। এ দিনটাকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করি।
ঢাকাপ্রকাশ: আপনার আজকের সফলতার পেছনে কে বা কারা ছিল তাদের সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?
মুক্তা ধর: আসলে প্রতিটা মানুষের সফলতার পিছনে পরিবারের সবাই কম বেশি ভূমিকা রাখেন। আমি মনে করি কারও জন্য কিছু করা সেটা প্রত্যেকটা মানুষের দায়িত্ব। তবে আমাকে আসলেই ওই ভাবে সফল বলা যাবে না আমি চেষ্টা করছি আমার কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছানোর। আমার বাবা-মা এবং আমার আত্মীয়-স্বজন যারা আছেন এ ক্ষেত্রে সবার ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমার বাবা মারা গেছেন, আমার মা আছেন। সেই স্কুল জীবন থেকে শুরু করে তারা দিক নির্দেশনা, গাইডলাইন যেভাবে করেছেন আমি সেই ভাবেই বড় হয়েছি। আমাকে যে ভাবে পথ চলতে শিখিয়েছেন তারই ধারাবাহিকতায় মানুষের জন্য যতটুকু করতে পারি সেটা বাবা মার আশির্বাদ ছাড়া সম্ভব না। আমি যেখানে আছি পুলিশে এখানে সাত দিনের ২৪ ঘন্টা কাজ করতে হয় এটা আমি করতে পারি সম্পূর্ণ আমার মায়ের জন্য। মা না থাকলে সম্ভব হত না। তাদের অনুপ্রেরনা, ভালোবাসা, ভরসা পেয়েই আজকের আমি।
ঢাকাপ্রকাশ: আপনার জন্মস্থান, বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া, কর্মজীবন সম্পর্কে জানতে চাই?
মুক্তা ধর: আমার জন্ম দিনাজপুর শহরেই। আমার বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। আমার বাবার বাড়িও নেত্রকোনায়। বাবার চাকরির সুবাদে দিনাজপুরে আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আমি লেখাপড়া করেছি দিনাজপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে এসএসসি এবং সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করার পর, বাংলাদেশ ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছি। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স অফ পুলিশ সায়েন্স বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছি এবং কর্ম জীবনে প্রবেশ করার পর এলএলবি-ও করেছি।
ঢাকাপ্রকাশ: সিআইডি তো খুব দায়িত্বশীল জায়গা এখানে আপনার কাজ নিয়ে জানতে চাই?
মুক্তা ধর: আমরা সব সময় মানুষের জন্য কাজ করেছি। আজকে আমি সিআইডিতে আছি এখানেও মানুষের জন্য কাজ করছি। মানুষের জন্য যতটুকু করতে পারি ততটুকু করে যাচ্ছি। আমি মনে করি যে পর্যন্ত এসেছি এর পিছনে আমার বাবা মায়ের উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ছাড়া কোনো কিছু সম্ভব ছিলো না। এখনও পর্যন্ত আমি আমার মায়ের সঙ্গে থাকি কারণ আমার মায়ের পূর্ণ সহযোগিতা ছাড়া বিশেষ করে আমি এমন একটা দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে কাজ করতে পারতাম না। আমাদের পুলিশের যেভাবে কাজ করতে হয় মায়ের সহযোগিতা ছাড়া এটা আসলেই সম্ভব হতো না। তবে আমরা সিআইডির প্রতিটা সদস্য পরিপূর্ণ দায়িত্ব নিয়েই দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
ঢাকাপ্রকাশ: সিআইডির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কাজ করছেন অনেক মামলা নিয়ে কাজ করতে হয়, কিভাবে এসব ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করেন?
মুক্তা ধর: আমরা প্রতিটা মামলা আমলে নিয়ে কাজ করে থাকি। আমাদের অভিভাবক আইজিপি স্যার, অতিরিক্ত আইজিপি স্যার, এবং আমাদের চীফ স্যারের গাইডলাইনে আমরা বিশেষ বিশেষ কাজ করে থাকি। স্যার যেভাবে কাজগুলি করতে বলেন আমরা সেভাবে করে থাকি। এর বাইরে কাজ করার কোন সুযোগ নাই। স্যারদের নির্দেশনা মোতাবেক যে সমস্ত চাঞ্চল্যকর ঘটনা গুলি ঘটে সে গুলি নিয়ে আমরা কাজ করি। সাধারণ মানুষের আমাদের প্রতি আস্থা রয়েছে। এজন্য আমরা সব মামলায় গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করি। তাছাড়া বিভিন্ন মামলার রহস্য উন্মোচনের জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে সরেজমিনে ঘটনা স্থলে গিয়ে তথ্যগুলো সংগ্রহ করি। পরে একপর্যায়ে সেগুলিকে তদন্ত করে যদি কোন ক্লু পাই সেটা নিয়ে কাজ শুরু করি। এরপর কেন এই ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে? কেন এই হত্যাকান্ড হয়েছে? বা কেউ জড়িত কি না? এটা কি ধরণের হত্যাকাণ্ড হতে পারে, অথবা কি ধরণের ডাকাত হতে পারে? যে কোনো ধরনের ঘটনা হতে পারে সেই সব ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করে এটা কেন হয়েছে এর পিছনে কি আছে বা কেউ আছে কি না? মানে প্রত্যেকটা বিষয়ের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করি। একটা ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য আমরা একটা টিম হয়ে কাজ করি। আমাদের প্রত্যেকটা টিমের সদস্যরা দিনরাত অনেক কাজ করেন। এ ধরনের মামলার রহস্য উন্মোচন করতে পারলে আমাদের কাজে অহংকারের জায়গা তৈরি হয়।
ঢাকাপ্রকাশ: নারী ভিকটিমদের কিভাবে সাপোর্ট দেন?
মুক্তা ধর: আমরা নারী ভিকটিমদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সিআইডিতে যারা নারী সদস্য আছেন তাদের কাছে নারী ভিমটিমরা যাতে সহজেই তার সমস্যার কথা গুলি বলতে পারেন সেরকম একটা পরিবেশের ব্যবস্থা করি। তাদেরকে অভয় দেই তারা অনেক ইজি হয়। আমাদের তদন্তও সহজ হয়। আমি মনে করি কিছুটা হলেও মামলার ভিকটিম নারীর ভরসার জায়গা তৈরি করি। এবং দ্রুত সময়ে সেই মামলার রহস্য উন্মোচন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করি।
ঢাকাপ্রকাশ: কোন ধরনের মামলার সংখ্যা বেশি এবং সিআইডি কোন ধরনের মামলায় বেশি গুরুত্ব দেয়?
মুক্তা ধর: আমরা সব মামলায় গুরুত্ব দিয়ে দেখি কিছু কিছু আলোচিত মামলা আছে যে মামলাগুলো নিয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন অফিসাররা বিভিন্ন নির্দেশনা দেযন। সে নির্দেশনা নিয়ে আমরা কাজ করি। তবে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে আমি বলব ক্রাইমের বিশেষ করে সম্পত্তি ভাগাভাগি, ডাকাতি, হত্যা মামলা, ধর্ষণ, প্রতারণা, এসব মামলাগুলি আসলেই বেশি হয়। এদিকে চুরি এবং ডাকাতি তো আছেই। সকল মামলা আমরা আন্তরিক ভাবে তদন্ত করি।
ঢাকাপ্রকাশ: এখন অনেক সাধারণ মানুষ নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছেন এ বিষয়ে আপনার কাজের জায়গা থেকে কিছু জানতে চাই?
মুক্তা ধর: এটা ঠিক বর্তমানে সাধারণ মানুষ অনেক বেশি প্রতারিত হচ্ছেন। তারা বিভিন্ন অভিযোগ আমাদের কাছে আনছেন। তাদের কাছ থেকে আমরা ও বিভিন্ন তথ্য নিয়ে কাজ করছি। তবে আমাদের দেশের সহজ সরল নাগরিক যারা সরল বিশ্বাসী, যারা সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করে তারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বেশি। সুযোগ-সন্ধানী ব্যক্তিরা মূলত সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করছে। তবে সবাই সচেতন হলে এর সংখ্যা কমে আসবে।
ঢাকাপ্রকাশ: একজন নারীর সফলতার মূলে কোন বিষয়গুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করে? সেক্ষেত্রে পরিবারের সহযোগিতা কতখানি দরকার বলে আপনি মনে করেন?
মুক্তা ধর: নারীদের সফলতায় আসতে হলে অনেক দূর কাজ করতে হয়। একজন নারীকে মা হতে হয়, তিনি কখনও সন্তান, আবার কারও স্ত্রী, অনেকগুলি পার্ট তার জীবনের মধ্যে থাকে। সে যদি সবগুলি বিষয়কে সমন্বয় করতে না পারে সেই ক্ষেত্রে নারীরা ব্যর্থ হতে পারে। আমি আমার কথা বলি ধরুন আমি আমার কর্ম ক্ষেত্রে সময় দিতে গিয়ে আমার সন্তানকে সময় দিতে পারি না। যতটুকু সময় দেওয়ার দরকার ছিল কর্মক্ষেত্রে এসে আসলে সেটা দিতে পারি না। তাছাড়া পরিবারের সহযোগিতা একজন কর্মজীবী নারীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এসব ক্ষেত্রে পরিবারের সাপোর্ট ছাড়া আসলেই সম্ভব না। যেমন আমি রাত দশটা এগারটার সময় বাসায় যাই। কোনো সময় অনেক কাজ এক সঙ্গে করতে পারি। সেটা আমার ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে শুধুমাত্র আমার মায়ের জন্য। আমার ছোট ছোট দুটো বাচ্চাকে আমার মা দেখাশোনা করেন। যদি আমার মা না থাকতো তাহলে হয়তো আমি এভাবে চিন্তাই করতাম না বা এগিয়ে যেতে পারতাম না। আমি যতই কাজ করি না কেন আমাকে পিছনে কোন কিছু টেনে ধরতো হয়তো। সেই ক্ষেত্রে আমি বলবো আমার মায়ের জন্য আজ এখানে আসতে পেরেছি। অন্য নারী যারা আছে তাদের এই সাপোর্ট পাচ্ছে না বা অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাদের জন্য আমি বলব এভাবে সমন্বয় সাধন করে কাজ করাটা খুব চ্যালেঞ্জিং এ ক্ষেত্রে পরিবার অবশ্যই বড় একটি সাপোর্ট। তবে শুধু পরিবার নয়, আমরা যে ভাবেই কাজ করি না কেন, সেখানে সেই বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ আমি যাদের সাথে কাজ করব তারা আমাকে কতটুকু মূল্যায়ন বা সহযোগিতা করছে সেটাও একটি বিষয়। আমার যে প্রবলেম আছে সেই প্রবলেমগুলো উত্তোলনের জন্য সমাধানের পথ নির্দিষ্ট করে সহকর্মীদের সাপোর্ট পাওয়া এটাও বড় একটা ভূমিকা পালন করে। মোট কথা পরিবার, সহকর্মী ও চৌকস হয়ে কাজ করলেই নারীরা সফলতার দ্বারে পৌঁছাতে পারে।
ঢাকা প্রকাশ: আপনার অবসর সময় কিভাবে কাটে?
মুক্তা ধর: আসলে আমরা যারা সিআইডি বা পুলিশে কাজ করি তারা অনেক ক্ষেত্রে পরিবারকে সময় দিতে ব্যর্থ হই। অবসর সময় বলতে যতটুকু সময় পাই আমার বেশির ভাগ সময় বাসায় পরিবারের সঙ্গে, আমার বাচ্চাদের সঙ্গে, আমার মায়ের সঙ্গে কাটানো হয়। এভাবেই আমার অবসর সময় চলে যায়।
ঢাকাপ্রকাশ: ১৯২০ সালের ৮ মার্চ সমান অধিকারের জন্য নারীরা আন্দোলন করেছিল আসলেই কি এ যুগে এসেও সমান অধিকার সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?
মুক্তা ধর: আমাদের দেশের সংবিধানে নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা রয়েছে। সেই সংবিধানে নারীর অধিকার সম্পর্কে বলা আছে। এটা হতে পারে কিছুটা অথবা কিছু জায়গায় কেউ অবহেলার শিকার হচ্ছেন। আমরা হয়তো অল্প কিছু জায়গায় বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে হয়তো চিন্তা করি যে, নারীরা অবহেলিত হচ্ছেন। কিন্তু আমি মনে করি, আজকে নারীরা শুরু থেকেই প্রত্যেকটা পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। দেখা গেছে বর্তমানে নারীরা বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে এবং বড় বড় জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে এবং তারা সফল হচ্ছে। আর পরিবারের উদ্দ্যেশে আমি বলব আমি বাইরে এসে কাজ করছি এবং বাসায় গিয়ে আমাকে সবকিছু দেখতে হচ্ছে। কিন্তু একজন মা তার সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছেন, ঘরটাকে সুন্দরভাবে পরিপাটি করে রাখছেন, সংসারের সমস্ত কাজ করছেন। অনেক মানুষ মনে করেন সংসারের কাজ কম কিন্তু একটা সংসারে অনেক কাজ থাকে। সে গুলোকে হয়তো পুরুষেরা কিছু মনে করে না। নারীরা যেভাবে তার সন্তান, স্বামী, ঘরবাড়ি সাজিয়ে রাখছেন দেখা যায় এতকিছুর পরেও পরিবারে অনেক ক্ষেত্রে মূল্যায়ন পাচ্ছেন না। কোনো কোনো সময় আমরা দেখি নারীরা তাদের সন্তানকে স্কুলে দিয়ে বাইরে পেপার বিছিয়ে বসে আছেন। তারা তাদের সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব পালন করছেন যেটা হয়তো পুরুষের করার কথা ছিল। আমি বলব নারীরা আমাদের সমাজে প্রতিটা ক্ষেত্রে ঘরে-বাইরে সমানভাবে দক্ষতা ও সততার সাথে মায়া-মমতায় সবকিছু আগলে রেখে দায়িত্ত্ব পালন করছেন। এবং তার মূল্যায়নও সেভাবেই হওয়া উচিত।
ঢাকাপ্রকাশ: একজন সফল নারী হিসেবে নারীদের প্রতি আপনার পরামর্শ কি? এবং কিভাবে একজন নারী সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে?
মুক্তা ধর: আসলে প্রতিষ্ঠিত নারী বলতে এটা নির্ভর করে তার স্ব-স্ব অবস্থানে । আমি কতটুকু চাচ্ছি যেমন আমি যদি আমার কথা বলি সে ক্ষেত্রে আমি বিভিন্ন কাজ করি। কাজ করতে গেলে ছোটখাটো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকবে। সফলতা তখন আসবে যখন কেউ বলবে কাজটা ভালো হয়েছে। সেটাতে সে আরো উৎসাহ পাবে এবং আরো ভালো করতে সে চেষ্টা চালাবে। ধরুণ যে সমস্ত মামলা নিয়ে কাজ করি হয়তো একটি বড় মামলার রহস্য উন্মোচন হলো সঠিক তথ্য বের হল, আমি মনে করি এটাই আমার সফলতা। তবে আমি বলতে চাই সব কাজে যে পজিটিভ রেজাল্ট আসবে সেটা না। নারীদের সব সময় সফলতার কথা চিন্তা করলে হবে না, হয়তো অনেক কাজ করার সময় ব্যর্থতা আসতেই পারে তবে ব্যর্থতার ভয়ে যে কাজ করা যাবে না সেটা না। কর্মক্ষেত্রের পাশাপাশি পরিবারের প্রতি তার যতটুকু দায়িত্ব ততটুকু করলে একজন নারী সফল হতে পারেন বলে আমি আশা করি। সবাইকে নারী দিবসের শভেচ্ছা।
ঢাকাপ্রকাশ-কে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মুক্তা ধর: আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ।
কেএম/এএস