বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

দ্রব্যমূল্য: মধ্যবিত্তের হাঁসফাঁস আর গরীবের নাভিশ্বাস

দাম বাড়ছে সব কিছুর কিন্তু আয় বাড়ছে না সাধারণ মানুষের। দাম বাড়ছে খাদ্যপণ্যের, বাড়বে বলে আশংকা আছে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির। জীবনযাপনের ব্যয়ের নদীতে নৌকা চালাতে আয়ের লগি তল খুঁজে পাচ্ছে না কোনমতেই। ছুটি গল্পের সেই কথাটি পাঠকদের মনে দাগ কেটেছিল নিশ্চয়ই। নৌকার মাঝিরা সুর করে বলছিল, এক বাও মেলেনা, দুই বাও মেলে না। জীবন নৌকা বাইতে গিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ আজ সুর করে নয় বিলাপ করে এই ধরণের কথা বলছেন। রবীন্দ্রনাথ নদীর গভীরতা মাপতে মাঝির মুখের কথা সাহিত্যে তুলে এনেছিলেন আর সাধারণ মানুষ সংসার চালাতে, আয় ব্যয়ের ফারাক মাপতে যেন এই কথা দুঃখের সঙ্গে বলে যাচ্ছেন প্রতিদিন। তাদের মাস শেষের আয় আর সারা মাসের ব্যয়ের হিসাব মিলছে না যেন কোনোভাবেই।

নতুন বছর এসেছে যতটা সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে তার চেয়ে বেশি জীবন যাপনের উপকরনের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা নিয়ে। গ্যাস, বিদ্যুৎসহ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে নাকাল মানুষের জীবনে আবারও আঘাত আসবে এসবের দাম বাড়ানোর কারণে। বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন দুই চুলার গ্যাসের জন্য দাম দিতে হতো ৪০০ টাকা, পাঁচ দফায় দাম বাড়ানোর পর এখন দিতে হচ্ছে ৯৭৫ টাকা। দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে ২১০০ টাকা। বিদ্যুৎপ্রতি ইউনিট দাম দিতে হতো ৩.৭৬ টাকা ১০ বার দাম বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.১৩ টাকা, একটি মাঝারিপরিবারে ৪০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে মাসে বিদ্যুতের জন্য খরচ বেড়েছে প্রায় ১ হাজার ৪০০ টাকা। এখন বলা হচ্ছেএর দাম আরও বাড়বে। ডিজেল প্রতি লিটার ৪৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৮০ টাকা। বাসের ভাড়া বেড়েছে ২৭ শতাংশ। উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা, যাত্রী প্রতি ভাড়া বেড়েছে ১৫০ টাকা, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পণ্য পরিবহণ ব্যয় যারপ্রভাব পড়েছে খাদ্য পণ্যের দামে। ঢাকা নগরে ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকের ঝগড়া ঝাটি লেগেই আছে। পানির দেশ আর চার দিকে পাঁচটি নদী দিয়ে ঘেরা ঢাকা নগরে পানি দুর্মূল্য হয়ে পড়ছে। ২০০৮ সালে প্রতি ইউনিটপানির দাম ছিল ৫.৭৫ টাকা ১৪ বার দাম বাড়ানোর পর এখন তা ১৫.১৮ টাকা। একটি পরিবারে মাসে ১ হাজার ৮০০টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে পানির বিল দিতে। পানির সাথে সমপরিমান বাড়ে সুয়ারেজ বিল। এবার আবারও পানিরদাম বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে ৪০ শতাংশ। চাকরিজীবীদের মাসের শুরুতে বেতন আর মাসের শেষে পকেট মিলছেনা তো কোনভাবেই। শ্রমিক এবং দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের জীবন কেমন চলছে জিজ্ঞেস করলে মলিন হেসে বললেন একজন। কেমন আছি, শুনবেন ? এক গ্লাস পানি খাইতে লাগে ২ টাকা আর সিটি করপোরেশন টয়লেটবানাইছে, সেইখানে প্রস্রাব করতে লাগে ৫ টাকা। বুইঝা লন এবার, আয় আর ব্যায়ের ফারাক কত?

সরকারের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অর্থনীতির অগ্রগতি হচ্ছে, সব সুচকেই ঊর্ধ্বমুখী। সাধারণ মানুষ জীবন দিয়ে বুঝছেন জীবন যাপনের সব ব্যয় ঊর্ধ্বমুখী। সরকারের দায়িত্ব যেন দাম বাড়ানোকে যুক্তিসঙ্গত বলে সাফাই গাওয়া। ওয়াসারএমডি ১৩ বছরে শুধু ১৪ বার পানির দাম বাড়াননি, তার কাজের দক্ষতার কারণে তার বেতন ভাতাও বেড়েছে ৪২১শতাংশ। এখন তিনি সর্বোচ্চ বেতন ভাতা প্রাপ্ত কর্মকর্তা। তার মাসিক বেতন ভাতা ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তিনি একটা দারুণ কথা বলেছেন। ভর্তুকি দিয়ে পানি দেয়া যাবে না। ভিক্ষা নিয়ে কি কোন প্রতিষ্ঠান দাঁড়াতে পারে? কিন্তু এই কথা কি একবারও ভাবলেন না, যে প্রতিষ্ঠান ভিক্ষা নিয়ে চলে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তা আরঅন্যান্য কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা এত বেশি কেন?

আরও পড়ুন: মাথাপিছু আয় বাড়ছে, মানুষ ছুটছে টিসিবি’র ট্রাকের পিছে

শুধু দাম বৃদ্ধি নয় আয় বৃদ্ধির নতুন সুখবর জানানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি নাকি থামছেই না। সর্বশেষ হিসাবে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৫৯১ ডলার অর্থাৎ ৮৭ টাকা ডলারধরলে ২ লাখ ২৫ হাজার ৪১৭ টাকা মাত্র। টাকার পরে মাত্র লিখতে হয়। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মাথাপিছু আয়ছিল ২ হাজার ২২৭ ডলার। তারপর মাথাপিছু আয় বেড়েছে আরও ৩২৭ ডলার, হয়েছিল ২ হাজার ৫৫৪ ডলার। এখনআরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৯১ ডলার এবং আরো বাড়বে। করোনায় মানুষ কাজ হারিয়েছে, বেকারত্ব বেড়েছে কিন্তু মানুষের আয় বেড়ে যাওয়াকে কেউ ঠেকাতে পারে নাই। তবে একটা ব্যাপারও ঘটেছে, মাথাপিছু আয়ের হিসাব শুনেমাথা ঘুরে যাবার উপক্রম হলেও পকেটে হাত দিয়ে মানুষ দেখছে টাকা নেই।

কেমন করে আয় বেড়ে গেলো এতো? এর একটা কারণ সরকার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) হিসাব করার জন্যসম্প্রতি নতুন ভিত্তিবছর চূড়ান্ত করেছে। ২০১৫-২০১৬ ভিত্তিবছর ধরে এখন থেকে জিডিপি, প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ, মাথাপিছু আয় গণনা করা শুরু হয়েছে। এতদিন ২০০৫-২০০৬ ভিত্তিবছর ধরে মাথাপিছু আয় হিসেব করা হতো। ভিত্তি পাল্টানোর ফলে হিসেবে আয় তো বেড়ে গেল কিন্তু বাস্তবে সাধারণ মানুষের আয় কি বেড়েছে? ২০১৫-২০১৬ ভিত্তিবছর ধরে হিসাব করায় আগের কয়েক বছরের মাথাপিছু আয়ও বেড়ে গেছে। যেমন, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৪৬৫ ডলার। নতুন হিসাবে হয়েছে ১ হাজার ৭৩৭ ডলার। এর পরের প্রতি বছরই মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আগের হিসাবে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ২৪ ডলার। এখনতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৯১ ডলারে। এই হিসেব অনুযায়ী ৫ সদস্যের একটি পরিবারে এখন মাসিক আয় ৯৩ হাজার টাকার বেশি। অর্থাৎ গড়ে প্রতি পরিবারের বার্ষিক আয় ১১ লাখ টাকারও বেশি। জিডিপির সাথে রেমিটেন্সযোগ করে দেশের মোট জনসংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে মাথাপিছু আয় পাওয়া যায়। রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন যে ১ কোটি৩৬ লাখ শ্রমজীবী, দেশের অভ্যন্তরে ৬ কোটি ৮২ লাখ শ্রমজীবী, ৩ কোটির উপর কর্মক্ষম বেকার, ১ কোটির উপরবৃদ্ধ, ৪ কোটি ছাত্র ছাত্রী কার কার আয় বেড়েছে তার সাথে দেশের গড় আয় বৃদ্ধি কি মিলবে? কিছু মানুষের আয় এত বেড়েছে যে গড় আয় বেড়ে গেছে। হিসেব করে আমাদের দেশের কর্তা ব্যক্তিরা গর্ব করে বলেন, মাথাপিছু আয়ে বাংলাদেশ এখন নাকি ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি মানুষের মাঝে জাতীয় আয়ের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করছে না। একদিকে শোষণ অন্যদিকে কোভিডসহ নানা কারণে বৈষম্য বেড়েছে।

কিছুদিন আগে করোনার প্রভাব নিয়ে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চসেন্টারের (পিপিআরসি) একটি যৌথ জরিপে জানিয়েছিল, দেশে করোনাকালে তিন কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। করোনা চলমান, কর্মহীনেরা অনেকে কাজ ফিরে পায়নি, করোনার অজুহাতে বেতনকমানো হয়েছে বেসরকারি খাতের কর্মজীবীদের, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের আনার সক্ষমতা বাড়েনি কিন্তুখাবারের জিনিসের দাম বেড়েছে বহুগুণ।

এমন পরিস্থিতিতে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ জনজীবনকে স্থবির করে দেবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি কৃষি, পরিবহন, দ্রব্যমূল্য, শিল্পউৎপাদন থেকে শুরু করে দেশের প্রায় সব সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে উৎপাদন ব্যয় বাড়ে, ক্রয় ক্ষমতা কমে, থমকে যায় অর্থনীতির অগ্রযাত্রা। এরই মধ্যে চাল, ডাল, চিনি, তেল, ওষুধসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার সংকুচিত হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বড় ধরনের দুর্যোগ দেখা দেবে। মূল্যবৃদ্ধির নিচে চাপা পড়ে হাঁসফাঁস করতে থাকা জনগণের জন্য তা চরম আঘাত হিসেবে দেখা দেবে।

লোকসান হচ্ছে বলে লোকসান কমাতে দাম বৃদ্ধির কোন বিকল্প নাই একথা কথা বলা হলেও, তথ্য বলছে গ্যাস ও বিদ্যুতের কোম্পানিগুলোর অধিকাংশই লাভজনক। তারাপ্রতি বছর সরকারি কোষাগারে কয়েক হাজার কোটি টাকা জমা দিচ্ছে। উদ্বৃত্ত অর্থ, ট্যাক্স-ভ্যাট ও বিভিন্ন ফি হিসেবে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাত থেকে আয় করেছে সরকার। লাভ হয়েছে বলে গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশও দিয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-বোনাসও বাড়ছে ফি বছর। তাহলে দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা কেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি এবং নীতিনির্ধারকদের অদূরদর্শী সিদ্ধান্তেরকারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ব্যয় বাড়ছে দিন দিন। চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হওয়ায় বসিয়েবসিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা দিতে হচ্ছে তথাকথিত উদ্যোক্তা নামের বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের। তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নজর না দিয়ে এবং আবিষ্কৃত গ্যাস ক্ষেত্রের গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ না নিয়ে গ্যাস আমদানিরসুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এতেও বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ বাড়ছে। কে দিচ্ছে এই টাকা? টাকা যাচ্ছে জনগণের দেয়া ট্যাক্স থেকে। অদক্ষতা, অনিয়ম আর অব্যস্থাপনা দূর না করে, বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা না নিয়ে প্রতিবছর দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ মূলত সরকারের ব্যর্থতার দায় জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার নামান্তর।

সংকট জিইয়ে রাখলে দাম বাড়ানোর অজুহাত শক্তিশালী হয়। এভাবেই গ্যাস সংকট জিইয়ে রেখে এলএনজি ব্যবসার দ্বার খোলা হয়েছিল এখন তা লুণ্ঠন ও দাম বাড়ানোর মৃগয়াক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। জনগণ হয়েছে সুন্দর এবং অসহায় হরিণের মত। সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরছেন। এটা স্পষ্ট যে, গ্যাস, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, পানি সকল খাতের লোকসান আসলে দুর্নীতির ফল। কিন্তু এর দায় নিচ্ছে না সরকার বরংসকল দায়িত্ব জনগণের চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, জীবন যাপনের কষ্ট বৃদ্ধি, সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিদিন। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে এই করোনা মহামারী সব কিছুকে শ্লথ করে দিলেও নতুন কোটিপতি বৃদ্ধিরগতিকে থামাতে পারছে না। করোনাকালেও নতুন কোটিপতি বেড়েছে ১৭ হাজারের বেশি। ধনীদের ধন বৃদ্ধি আর সাধারণ মানুষের দুর্দশা বৃদ্ধি যেন সমানতালেই বাড়ছে। তাহলে কার চোখে দেখবো মূল্য বৃদ্ধির অভিঘাতকে? ধনীদের চোখে সামান্য মূল্যবৃদ্ধি যে সাধারণ মানুষের জীবনে প্রচণ্ড আঘাত সেটা বুঝার মন আর আঘাত দুর করার উদ্যোগ কি আছে নীতিনির্ধারকদের?

 

লেখক: সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত