ইসি আইন: পূরণ হলো সব পক্ষের দাবি
গত পঞ্চাশ বছর ধরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, একটি আইনগত ভিত্তি যেন উন্মোচন করা হয়,আমাদের নির্বাচন কমিশন গঠনের নিমিত্তে। অবশেষে শাসক দলের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তারা সংসদে বিলটি তুলেছেন এবং সেটি কন্ঠভোটে পাশও হয়েছে।
নীতি নির্ধারণের বিষয়গুলি যাচাই বাছাই হচ্ছে। নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল বলে একটি কথা আছে। এটি নিয়ে নানারকম সমালোচনা থাকতেই পারে। তবে সকল স্টেক হোল্ডারেরই দাবি ছিল এবং সেই দাবি পূরণ হয়েছে। সেজন্য সরকারি দল অর্থাৎ শাসকদলকে সাধুবাদ জানাই।
সংসদে উত্থাপিত বিলে সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতাসংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছিল, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধা-সরকারি বা বেসরকারি পদে তাঁর অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধারায় কিছুটা সংশোধনী এনে সরকারি, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
এ ছাড়া অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬ (ঘ) ধারায়ও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ ধারায় বলা হয়েছিল, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না। এখানে দুই বছরের কারাদণ্ড উঠিয়ে শুধু ‘কারাদণ্ড’ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থাৎ নৈতিক স্খলঞ্জনিত ফৌজদারি দোষে যে কোন দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
ইনডেমনিটি নিয়ে যে ব্যাপারগুলি,সেগুলি নিয়ে নানারকম প্রশ্ন আছে। কারণ এরকম দুটি কমিশন, তারা কেন তাদের দায়মুক্তি লাভ করতে যাবেন বর্তমানে প্রণীত এই আইনের মাধমে। বিষয়টি একটু খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ কেউই জবাবদিহিতার উর্ধ্বে থাকতে পারেন না এবং সবাইকে একটি পাব্লিক একাউন্টিবিলিটির আওতায় আসা উচিত এবং আসতে হবে।
লেখক: শিক্ষাবিদ ও নির্বাচন বিশ্লেষক