বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সরকারি কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধন ও আমলাতন্ত্র

রংপুরের ডিসি মহোদয় যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ‘স্যার’ সম্বোধন করতেন তাহলে তার মান সম্মান কোনোভাবে কমে যেত না বরং বেড়ে যেত। একইভাবে, উক্ত শিক্ষক যদি ডিসি মহোদয়কে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করতেন তাতে তারও মান সম্মানের একটুও হানি হতো না বরং বেড়ে যেত। দুজনই কিন্তু দুজনের সুপিরিয়রিটি দেখাতে চেয়েছেন। তবে, ডিসি একটু বেশি দেখাতে চেয়েছেন এবং স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, তাদের স্যারই বলতে হয়, কারণ তিনি প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা— যারা নিজেদের সবার চেয়ে আলাদা ভাবেন।

কেন ভাবেন তার সে রকম কোনো উত্তর নেই। তবে, শিক্ষক সঙ্গে সঙ্গে বিরল এক ধরনের প্রতিবাদ করে বিষয়টিকে অনেকের মাঝে পৌঁছে দিতে পেরেছেন— সেটির জন্য তাকে ধন্যবাদ। আমাদের দেশের শিক্ষকরা কিন্তু সেই জায়গাতে নেই যে, সমাজের সবাই তাদের সম্মান জানাবে। ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ সেই জায়গাটি দখল করেছেন কিন্তু সাধারণ অর্থে সবার ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব হয়নি, আর তাই সমাজ সব শিক্ষককে মোটামুটি একই মানদণ্ডে মাপতে চায়। এটিও একেবারেই ঠিক নয়।

সেনাবাহিনীর জেনারেলদের ভেতরেও কেউ কেউ আছেন শিক্ষকদের ‘স্যার’ বলেন, তাতে তাদের সম্মানের কোনো হানি হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সেনাবাহিনী সম্পর্কে আমরা সোচ্চার ছিলাম যে, এত গরিব দেশে সোনবাহিনীর পেছনে এত খরচ, বসে বসে তাদের দেশ পালছে কেন। সেই সেনাবাহিনী কিন্তু এখন বড় ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ বাহিনীতে পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শন করে লাখ লাখ ডলার দেশে নিয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, দেশেও রয়েছে তাদের বিভিন্ন সেক্টরে ব্যবসা। কাজেই সেনাবাহিনী নিয়ে এখন তেমন কথা নেই। কিন্তু আমাদের এ সব প্রশাসকদের নিয়ে কী হবে? সমাজের কী হবে? এখনো সবাই, উচ্চশিক্ষা নেওয়ার পরেও একজন প্রশাসক হওয়ার জন্য অর্জিত সববিদ্যা জলাঞ্জলি দিয়ে কেরানী হওয়ার জন্য পাগলপ্রায়।

দেশের সত্যিকার উন্নয়নের জন্য আমাদের দেশে প্রয়োজন প্রচুর প্রকৃত গবেষক (শুধু ডক্টরেট নামধারী নয়), প্রকৃত বিজ্ঞানী, কৃষিবিদ, শিক্ষাবিদ, আবিষ্কারক, উদ্ভাবক, দরকার ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা যারা অন্যের কর্মসংস্থানে ব্যবস্থা করতে পারেন, ব্যবসায়ী যারা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পারেন, প্রয়োজন দক্ষ জনবল তৈরি যারা দেশে ও বিদেশে দক্ষতার ছাপ রেখে দেশের উন্নয়নে প্রকৃতঅর্থে অবদান রাখতে পারেন।

আমাদের দরকার প্রচুর ‘ভালো ডাক্তার’। আমরা প্রতিবছর হাজার হাজার ডাক্তার বানাচ্ছি কিন্তু লাখ লাখ রোগী চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন ভারত, সিঙ্গাপুর আর থাইল্যান্ডে। ডাক্তারদের তো যন্ত্র বানালে হবে না, তাদের মানবিকতাও শিক্ষা দিতে হবে। মানুষের সঙ্গে কীভাবে, রোগীর সঙ্গে অভয়বানী দিয়ে কথা বলতে হয়— তা আমাদের দেশের অধিকাংশ ডাক্তারই জানেন না। ফলে অসচ্ছল রোগীও জামিজমা বিক্রি করে ভারতে যায় চিকিৎসার জন্য। সেখানকার ডাক্তাররা জানেন রোগীদের সঙ্গে, তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়। চিকিৎসা মানেই শুধু গন্ডায় গন্ডায় টেস্ট করানো নয়, সেটি তারা বুঝেন। কিন্তু এ সব বিশেষজ্ঞ তৈরির কোনো উদ্যোগ নেই বরং পড়াশুনা করে এসে সবাই প্রশাসক হওয়ার জন্য ব্যস্ত, মহাব্যস্ত। তাই, ডাক্তার হচ্ছেন ম্যাজিস্ট্রেট, ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছেন এসিল্যান্ড, কৃষিবিদ হচ্ছেন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ।

জাতীয় জীবনে এটির প্রভাব মারাত্মক নেগেটিভ কিন্তু কে এগুলো নিয়ে চিন্তা করবে? প্রশাসক হয়ে সবাই জনগণের কাছ থেকে ‘স্যার’ শোনার জন্য ব্যস্ত, মহাব্যস্ত। তারা যেন সেই ব্রিটিশ রাজ্যে বাস করছেন। চারদিকে শুধু প্রশাসক। আর আমরা চিকিৎসা করাচ্ছি দেশের বাইরে। প্রকৌশলী নিয়ে আসছি বিদেশ থেকে, আমাদের রাস্তা, ব্রিজ তৈরি করে দিচ্ছেন বিদেশি প্রকৌশলীরা। আর আমাদের প্রকৌশলীরা হচ্ছেন প্রশাসক। কেন? সবাই তাদের ‘স্যার’ বলবেন, শক্ত করেই বলবেন। আত্মীয়-স্বজন বলতে পারবে আমার ভাগ্নে অমুক জেলার ডিসি, ওমুক উপজেলার ইউএনও। সমাজও তাতে বেজায় খুশী। আমার চাচা সচিব।

দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকা দরকার, কর্মসংস্থান বাড়ানো দরকার আর এগুলোর জন্য প্রয়োজন উদ্যেক্তা, ব্যবসায়ী। উদ্যোগী মানুষ যারা প্রকৃতঅর্থে দেশের উপকার করছেন। কিন্তু দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনি ব্যবসা করবেন, উদ্যোক্তা হবেন, এনজিও কর্মী হবেন আপনাকে যেতে হবে ওইসব প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে, যারা আপনার ফাইল আটকে দিয়ে মজা লুটছেন, ক্ষমতা দেখাচ্ছেন। দেশ কেমনে আগাবে? দেশের সাধারণ মানুষ কীভাবে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করবে। পৃথিবীর ধনী গরিব সব দেশেই সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা কাজ করে।

আমাদের দেশের উন্নয়নে বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রভূত অবদান রয়েছে। অনেক সংস্থা বিদেশ থেকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে সাহায্য নিয়ে আসে কিন্তু ‘এনজিওব্যুরো’ নামে যে প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে সেখানে গিয়ে আপনাকে ধরনা দিতে হবে দ্বারে দ্বারে— আপনার সেই অর্থ ছাড়ের জন্য। এখানেও সেই ‘আমলাতন্ত্র’ যার কাছে সবাই জিম্মি। আপনাকে অনেক কৌশলে উৎকোচ দিতে হবে (কাগজের মধ্যে, ফাইলের মধ্যে, যাতে কোনো প্রমাণ না থাকে)। এগুলো দেখার কেউ নেই।

ব্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদ যে প্রতিষ্ঠান দেশে সৃষ্টি করেছেন তাতে লাখ লাখ মানুষ কাজ করছেন। ফজলে হাসান ছাড়াও অনেক ছোট ছোট এনজিও গড়ে তুলেছেন এক একজন সফল ব্যক্তি, যারা দেশকে প্রকৃতঅর্থেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করছেন। কিন্তু তাদের পদে পদে বাঁধা দেওয়ার জন্য রয়েছেন এ সব প্রশাসনিক কর্মকর্তা। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকও কিন্তু তার একটি বিদ্যালয় নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন রংপুরের ডিসি মহোদয়ের কাছে।

আমাদের প্রশাসনে যে ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য কর্মকর্তারা ‘স্যার’ শুনতে চান তার পেছনে রয়েছে ঔপনিবেসিক মানসিকতা।

ব্রিটিশ শাসনামলে ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসের মতো ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস গঠন করে সেখানে ভারতীয়দের নিয়োগ দেওয়ার জন্য ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আইন পাশ করা হয়। কিন্তু ১৮৫৩ সাল পর্যন্ত ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে ভারতীয়দের অংশ নেওয়া বন্ধ করে রাখা হয়েছিল আইসিএসে থাকা ব্রিটিশ অফিসারদের কারসাজিতে। এ সময় ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতীয়দের আইসিএসে নিয়োগদান প্রশ্নে আইনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশ আইন প্রণেতারা ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসের মতো একটি বিশুদ্ধ সার্ভিসে ভারতীয়দের অন্তর্ভুক্তর বিষয়ে আপত্তি তোলেন। তাদের বক্তব্য অনেকটাই এমন ছিল যে, ভারতীয়রা নোংরা ও দুর্নীতিগ্রস্ত, ফলে পুরো ব্যবস্থাটা হুমকির মুখে পড়বে। তখন ভারতীয়দের ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে অন্তর্ভুক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে তৎকালীন ভারত সচিব বলেছিলেন, আমরা ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসের আদলে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে এমন সব ভারতীয়কে নিয়োগ দেব, যারা দেখতে হবে ভারতীয় কিন্তু চিন্তায় হবে ব্রিটিশ। ১৯৫৩ সালেই আইসিএসে ভারতীয়দের অংশগ্রহণের সুযোগ উন্মুক্ত হয়। কিন্তু ১৯৬৩ সালের আগ পর্যন্ত কোনো ভারতীয় আইসিএস অফিসার হতে পারেনি। কারণ আইসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো লন্ডনে। সে সময় বেশিরভাগ মানুষের পক্ষে পয়সা খরচ করে লন্ডনে যাওয়া ছিল কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ১৯৬৩ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে আইসিএস অফিসার হন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এভাবেই স্থানীয়রা ব্রিটিশ কাঠামোর প্রশাসন ব্যবস্থায় ঢুকে পড়ে, যারা এদেশের মানুষ কিন্তু ব্রিটিশ রাজকর্মচারী হয়ে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করবে। ধীরে ধীরে সেই আমলাতন্ত্র সমগ্র ভারতবর্ষের শাসনকাঠামোতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে।

শরীরের রং ভারতীয় কিন্তু চিন্তা চেতনায় ইংরেজ শাসক! পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর ভারত থেকে বেশ কিছু আইসিএস অফিসার পাকিস্তানে চলে আসেন এবং পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থায় জেঁকে বসেন। স্বাধীন দেশে কাজ করতে তারা উপযুক্ত নন। কিন্তু শুরুতে পাকিস্তানের রাজনীতিতে যোগ্য রাজনীতিবিদ না থাকায় তারাই হয়ে পড়েন পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নির্মাতা। কিছু দক্ষ রাজনীতিবিদ ছিলেন তাদের অধিকাংশই ছিলেন বাঙালি। পাকিস্তানের ২৩ বছরের শাসনকালে বাঙালিরা ছিল অনেকটা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। শুরু থেকেই পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ চলে গিয়েছিল ভারত থেকে আসা আমলাতন্ত্রের হাতে। পাকিস্তানে সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের দৌরাত্মে আজ পর্যন্ত কোনো সরকার তার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। ১৯৫৪ সালের ২৪ অক্টোবর পাকিস্তান গণপরিষদ যখন দেশটির সংবিধান রচনায় ব্যস্ত তখনই সামরিক-বেসামরিক আমলাদের প্ররোচনায় দেশটির গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ সেই গণপরিষদ ভেঙে দেন। কারণ আমলাদের শঙ্কা ছিল পাকিস্তানের সংবিধান প্রণীত হলে দেশের শাসনভার রাজনীতিবিদ তথা জনপ্রতিনিধিদের হাতে চলে যাবে। আর তখন তাদের রাজনীতিবিদদের অধীনে কাজ করতে হবে। উল্লেখ্য গোলাম মোহাম্মদও একজন আমলা ছিলেন।

আমাদের নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধন আসলে লিঙ্গসমতার একটি ভালো উপায় বলে কেউ কেউ বলছেন, আবার অন্য একদল বলছেন এটি অত্যন্ত আপত্তিকর। নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধন করা এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল কেন? তাদের স্যার বললে তারা খুব খুশী হন। আমরা দুবার স্বাধীন হয়েছি কিন্তু মন মানসিকতায় আমরা ব্রিটিশ ও পাকিস্তানিই রয়ে গেছি। ব্রিটিশদের কথা না হয় বাদই দিলাম, কারণ তারা তো সারাবিশ্ব দাপিয়ে বেড়িয়েছে।

পাকিস্তানের দিকে যদি তাকাই তাহলে আমরা কি দেখতে পাই? পাকিস্তান দুটি দলে বিভক্ত। সেনাবাহিনী আর তার বিরোধী। স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তানে সরাসরি কিংবা ছদ্মবেশি মার্শাল ল-ই চলছে। সেখানকার সেনাবাহিনী মনে করে তারাই দেশের সবকিছু। সিভিলিয়নরা কিছু বোঝে না, তাদের হাতে দেশ ছেড়ে দেওয়া যাবে না। তাই তারা সেখানে শক্তিশালী কোনো রাজনৈতিক দল বা রাজনীতিবিদ তৈরি হতে দেয়নি। আমাদের দেশের সেনাবাহিনী নিয়েও কেউ কেউ বলতে চান যে, ইন্টারমিডিয়েট পাস, তাদের বুদ্ধি থাকে হাঁটুর তলে। এটিও ঠিক নয়, কারণ শুধু পাস দিয়ে সবকিছু যাচাই করা যায় না। বেশ সুচতুর এবং মোটামুটি অলরাউন্ডার হয় সেনা অফিসাররা। কিন্তু তাই বলে তারা সবকিছু বুঝেন আর সিভিলিয়নরা কিছুই বোঝে না— এই ধরনের মানসিকতা কিছু কিছু কর্মকর্তা পোষণ করেন। কারণ তাদের সুযোগ সুবিধা বেশি, থাকেন আরামে, অর্থের চিন্তা নেই, স্মার্টনেস তো এমনিতেই চলে আসে।

স্রষ্টা পৃথিবীকে সৃষ্টিই করেছেন যেখানে সব ধরনের পেশাজীবীদের দরকার আছে। এখানে কারুর গুরুত্ব কোনোভাবেই কম নয়। স্রষ্টার সৃষ্টির রহস্যকে ধারণ করে সবাই সবাইকে সম্মান প্রদর্শন করতে হবে— আমরা যে যে পেশাতেই থাকি না কেন। এ দেশ তো আমাদের। বিশ্বের দরবারে যদি কোনো সম্মান আমরা অর্জন করতে পারি, তার ভাগিদার তো সবাই। সবাই আমাদের বাঙালি বলেই চিনবে। আইন করে কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বলানো বা না বলানো যায় না। এটি ভেতর থেকে আসে। আমরা সবাই সবাইকে সম্মান করি। তাতে কারুরই কোনো ক্ষতি নেই। আমরা যে অবস্থানেই থাকি না কেন, আমাদের প্রাথমিক শিক্ষকদের তো আমরা এখনো ‘স্যার’ বলি। একটি নাটকে প্রয়াত হুমায়ুন ফরিদীর সচিব চরিত্রে দেখেছিলাম তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। তিনি তার ছাত্রের মতো আচরণ করেননি কিন্তু শিক্ষকের মতোই আচরণ করে যাচ্ছেন। সচিব মহোদয় কোনো কথা বলছেন না। এক পর্যায়ে মুখ খুলে বললেন, ‘আপনার তো দেখছি এত বছরে কিছুই বদলায়নি, যা ছিলেন তাই আছেন।’ একটিবারও ‘স্যার’ বলছেন না। আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের কাছে এ ধরনের আচরণ চাই না। শিক্ষণীয় আচরণ দেখতে চাই।

মাছুম বিল্লাহ: সাবেক শিক্ষক, ক্যাডেট কলেজ ও রাজউক কলেজ

আরএ/

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪