সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

জলের তলে মন্ত্রিসভা

১৭ অক্টোবর ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ। ছোট্ট একটি ঘটনা বিশ্ব বিবেকের টনক নাড়িয়ে দিয়েছিল। যদিও ঘটনাটি অনেকেই হাসির ছলে নিয়েছেন। তথাপিও সেই ঘটনাটি বিশ্ব ইতিহাসের অলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে ধরা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। তিনি জলবায়ু মোকাবিলার লক্ষ্যে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এক অভিনব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তার মন্ত্রিসভার ডজন খানেক সদস্য নিয়ে সমুদ্রের ২০ ফুট নিচে জলবায়ু ও পরিবেশ দূষণসংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে মালদ্বীপের একমাত্র নারী সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।

এই সময় প্রত্যেকেই স্কু বা ডাইভিং পোশাকে আবৃত ছিলেন। এর জন্য অবশ্য তারা পূর্বে বিশেষ প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন, অবশ্য প্রেসিডেন্ট নিজে প্রশিক্ষিত ডুবুরি ছিলেন, বিধায় তার জন্য কাজটা কিছুটা সহজ হয়েছে। তথাপিও প্রত্যেকের পাশেই একজন করে প্রশিক্ষিত ডুবুরি ছিলেন। কোনো সমস্যা হলে যেন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারেন। এ সময় তারা ইশারায় তথ্য আদান-প্রদান করেছেন।

টেলিভিশনের পর্দায় দেখা গেছে, সমুদ্রের জলের নিচে প্রবাল রাজ্যে চেয়ার টেবিলে বসে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে, বিশ্বব্যাপী কার্বন নির্গমন শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে, জনমত গড়ার লক্ষ্যে এক প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন তিনি। যাতে ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন-এ জলবায়ু সম্মেলনে বিষয়টি প্রাধান্য পায়। প্রায় আধ ঘণ্টার মতো ‘জলের তলে মন্ত্রিসভা’র বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট উপরে এসে গণমাধ্যমকে জানালেন, ‘বৈঠকে কথা কম হলেও কাজ হয়েছে বেশি।’

মূলত তিনি এক প্রতীকী আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে বার্তা দিয়েছেন যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে শতাব্দীর শেষ নাগাদ মালদ্বীপসহ এশীয় অঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। তখন দ্বীপবাসী তথা ভুক্তভোগী মানুষজনকে টিকে থাকতে হলে সমুদ্রের জলের তলের পরিবেশের সঙ্গে মানানসই হতে হবে। অক্সিজেন সিলিন্ডার কাঁধে নিয়ে সমুদ্রের হিংস্রপ্রাণীদের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার নিম্ন অঞ্চলের মানবজাতিকে বসবাস করতে হবে।

এই বিষয়টি প্রথমে ভালোভাবে নেয়নি অনেকেই; ঠাট্টা বিদ্রুপও করেছেন, পাগলামি বলেও মন্তব্য করেছিলেন কেউ কেউ। দিন, মাস বছর অতিবাহিত হতেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে পর্যালোচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা, ভাবছেন সাধারণ মানুষও। বিশ্ববাসী এখন অনুধাবন করছেন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন যেমন বেড়েছে, তেমনি পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে অতিদ্রুত। অবিরত হিমালয় ও অ্যান্টার্টিকার বরফের চাঁই গলে নিম্ন এলাকাগুলো ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে; সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ বন্যারও। অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ফলে ওজোনস্তর পাতলা হয়ে পৃথিবীকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। যার ফলে প্রবল বেগে ঢুকে পড়ছে সূর্যের অতিবেগুনি তেজস্ক্রিয় রশ্মি। এতে করে বছরান্তেই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার সঙ্গে নয়া রোগব্যাধিরও আবির্ভাব ঘটছে পৃথিবীতে। আবার নয়া পরিবেশে টিকে থাকার মতো কীট-পতঙ্গও জন্ম নিচ্ছে।

অপরদিকে ওই পরিবেশে বা তাপমাত্রায় টিকে থাকার লড়াইয়ে হেরে যাওয়া প্রাণিকুলকে বিদায় নিতে হচ্ছে পৃথিবী থেকে। যাকে বলা হয় বিবর্তন বা প্রকৃতির ধারাবাহিক পরিবর্তন। যার জন্য অনেকেই প্রতিনিয়ত প্রকৃতিকে দোষারোপও করে যাচ্ছেন। আসলে কিন্তু বিষয়টা তা নয়, এর জন্য মোটেও দায়ী নয় প্রকৃতি; দায়ী হচ্ছে মানবজাতি দ্বারা অতিমাত্রার কার্বন নিঃসরণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করণ। বিশেষ করে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্য নায়ক ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলো।

বড় বড় শিল্পকারখানা, পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ, নির্বিচারে বন উজাড়, নদী শাসন ইত্যাদির ফলে দারুণভাবে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে সমগ্র বিশ্বে। শিল্পোন্নত দেশগুলোর খামখেয়ালিপনার কারণে সিএফসি গ্যাস, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের নির্গমন বেড়ে গেছে। যে গ্যাস নিঃসরণের কারণে পৃথিবীর ফিল্টার নামে খ্যাত ওজোনস্তর পাতলা হয়ে ভূপৃষ্ট তপ্ত হচ্ছে ক্রমান্বয়ে। অর্থাৎ সূর্যের প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে ছেঁকে বিশুদ্ধ করে পৃথিবীর উপযোগী তাপমাত্রা পাঠাতে ব্যর্থ হচ্ছে ওজোনস্তর।

উল্লেখ্য, পৃথিবীর জন্য সুষম তাপমাত্রা হচ্ছে ১০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (কমবেশি হতে পারে)। অথচ সেই সুষম তাপমাত্রা এখন আর বিরাজ করছে না, বরং উল্টোটি ঘটছে। ধীরে ধীরে বরফ যুগের সমাপ্তি ঘটিয়ে পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। ৮ জুন, ২০১৯ সালে কুয়েতের তাপমাত্রা বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল পর্যন্ত। কুয়েতেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠেছিল। ওই তাপে গাড়ির চাকার টায়ারও গলে গেছে। অবাককরা বিষয় হচ্ছে, ছায়াযুক্ত স্থানেও ছিল ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। যেই তাপমাত্রায় একজন মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিনতর হয়ে পড়ে।

উদাহরণ হচ্ছে, তাপমাত্রা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে গেলেই ডিম সিদ্ধ হতে থাকে, সেক্ষেত্রে ৬৩-৭০ ডিগ্রি অতি নিকটেই। কাজেই আমরা বলতে পারি, এটি বিশ্বের জন্য অতি ভয়ানক একটি অশনি সংকেত। উন্নতদেশে এই তাপমাত্রায় মানিয়ে নেওয়ার সুব্যবস্থা থাকলেও দরিদ্র দেশের ক্ষেত্রে কেবলই প্রকৃতির উপরে নির্ভর করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। উল্লেখ্য, এর আগে ১৯২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, লিবিয়ার আল-আজিজিয়ায় ৫৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও শৈত্যপ্রবাহের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ধরনের দুর্যোগ সংঘটিত হচ্ছে। সেটি হতে পারে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরা, বন্যা, সাইক্লোন, টর্নেডো, ভূমিকম্প ও নদীভাঙন। তার মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে পৃথিবীকে। যদিও প্রকৃতির প্রতিটি দুর্যোগই ভয়াবহ, তথাপিও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে অন্যসব দুর্যোগ ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আবার এল-নিনো অথবা লা-নিনার বিষয়টিও এর সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। এল-নিনো ও লা-নিনা হচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার সমুদ্রপৃষ্ঠের অত্যাধিক উষ্ণপ্রবাহ, যা সাধারণত একটানা তিন মৌসুম জুড়ে থাকে। যার আগমন ঘটে প্রতি ২-৭ বছর পরপর। এল-নিনোর সঙ্গে একটি বিশেষ ক্রিয়ার যোগ ঘটে বায়ুমণ্ডলীয় ক্রিয়ার ফলে। যাতে ইন্দোনেশিয়া ও পেরু অঞ্চলের কাছে একটি করে দুটি চাপবলয় সৃষ্টি হয়। সেই দুই চাপবলয়ের মধ্যে তীব্রগতিতে তাপ প্রবাহের আদান-প্রদান চলতে থাকে। তাতে ইন্দোনেশিয়া-পেরু পর্যন্ত সমুদ্রভাগে দক্ষিণমুখী উষ্ণতম স্রোতের সৃষ্টি হয়। যার ফলে এই অঞ্চলের বায়ুমণ্ডল ও সমুদ্র উষ্ণতর হয়ে অনাবৃষ্টির সৃষ্টি হয়। যে কারণে মাছ কিংবা ক্ষুদ্র প্রাণিকুলের মৃত্যু ঘটে অস্বাভাবিকভাবে। বিশেষ করে সমুদ্রের এককোষী জীব প্লাঙ্কটনের মৃত্যু ঘটে বেশি। পরিণামে সমুদ্রের পানিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বাড়তে থাকায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সেক্ষেত্রে সামুদ্রিক প্রাণিকুল অস্তিত্ব সংকটে পড়ে।

আর লা-নিনার প্রভাব হচ্ছে এল-নিনোর সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ তাপমাত্রা কমে শীতল হয়ে পড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ। তাতে অতিবৃষ্টির সৃষ্টি হয়ে বন্যায় প্লাবিত হয় উপকূলীয় অঞ্চল, দেখা দেয় তীব্র নদীভাঙন।

উপরোক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বেঁচে থাকার প্রয়োজনে বলতে হয়, আসুন আমরা সতর্ক হই এখনই। যদিও আমাদের হাতে সময় খুব বেশি নেই, তথাপিও চেষ্টা করি বেঁচে থাকার লড়াইয়ে জিততে। আসুন, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করে প্রচুর বনায়ন সৃষ্টি করি। খনিজ ও জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনে জলবায়ুর পরিবর্তন রোধ করি। নিজের অবস্থানে থেকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করি।

কাজটি আমাদের পক্ষে করা সম্ভবও; খুব জটিল কিছু নয়। যে যেখানে যেভাবেই আছি, ইচ্ছে করলে সেই জায়গায় থেকেই সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াসে কাজ করতে পারি। তবে ইচ্ছে শক্তির ঘাটতি হলে তা সম্ভব হবে না। বন্যপ্রাণী নিধন, বৃক্ষ নিধনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এই সার্কেলটির সঙ্গেই জড়িয়ে আছে আমাদের বেঁচে থাকার সম্পর্ক। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে জলবায়ু পরিবর্তন রোধের বিষয়টিও। সুতরাং আমরা সচেষ্ট হই, পরিবেশ আন্দোলনে যোগ দিয়ে পরিবেশ বাঁচাই, দেশ বাঁচাই, বিশ্ব বাঁচাই; সর্বোপরি নিজেরাও বাঁচি। ভবিষ্যত প্রজন্মকে জলের তলে যেন বসবাস করতে না হয় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেই এখনই।

আলম শাইন: কথাসাহিত্যিক ও জলবায়ুবিষয়ক কলামিস্ট

এসএন

 

Header Ad
Header Ad

চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলা

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম কলেজ প্রাঙ্গণে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেরেবাংলা হলের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রদলের অন্তত চারজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে ছাত্রশিবির এ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন ওমর ফারুক সাগর, রেদোয়ান ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ কাইফ ও মোরশেদুল ইসলাম। তারা বর্তমানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ওমর ফারুক সাগর বলেন, “চট্টগ্রাম কলেজে আজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল। আমন্ত্রণ পেয়ে আমরা সেখানে যাই। কিন্তু শেরেবাংলা হলের সামনে পৌঁছানোর পর ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা আচমকা আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘ছাত্রদল নেতা ফারুক চট্টগ্রাম কলেজে থাকতে পারবে না।’ এরপর আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।”

তিনি আরও বলেন, "হামলাকারীরা শিবির নেতা শামীম আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন কর্মী নিয়ে হামলায় অংশ নেয়। তারা আমাদের মারধর করে এবং কলেজে ছাত্রদলের উপস্থিতি নিষিদ্ধ করার হুমকি দেয়। বিষয়টি আমরা চকবাজার থানার ওসি ও বিএনপির সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছি। তারা যে নির্দেশনা দেবেন, আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি তানভীর হোসেন জুয়েল। তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। তাই আমরা কোনো গ্যাদারিং করিনি এবং কলেজের বাইরে সংগঠনের কার্যক্রম চালাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা দেখেছি, ছাত্রদল বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ফরম বিতরণ করছিল। তাদের কোনো কলেজ ড্রেস বা আইডি কার্ড ছিল না। তখন কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী তাদের বাধা দেয় এবং জানায় যে এখানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। তখনই উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু এটি রাজনৈতিক হামলা নয়। যদি ছাত্রশিবির হামলা করত, তাহলে তাদের নাম ও পদ-পদবি প্রকাশ করা হোক।”

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, "ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমার কাছে বিচার দিয়েছে যে, তারা লিফলেট বিতরণ করার সময় কিছু ছেলে এসে তাদের টানাহেঁচড়া করেছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, আমি তাদের ডেকে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা জানিয়েছে, বার্ষিক ক্রীড়ার সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এসে জটলা করছিল এবং তারা বহিরাগত। এরপর আমি উভয়পক্ষকে কিছুক্ষণ কাউন্সেলিং করেছি।”

এই ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে পরবর্তী কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।

Header Ad
Header Ad

সেমিফাইনালের পথে ভারত, কোহলির সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের হার

বিরাট কোহলি। ছবি: সংগৃহীত

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে জয় পেয়েছে ভারত। বিরাট কোহলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ২৪২ রানের লক্ষ্য সহজেই পার করেছে রোহিত শর্মার দল।

টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। ভারতীয় বোলারদের দাপটে ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি বাবর আজমের দল। সৌদ শাকিলের ৬২, মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৪২ এবং খুশদিল শাহের ৩৮ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান ২৪১ রান সংগ্রহ করে। ভারতের পক্ষে কুলদীপ যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া ও মোহাম্মদ শামির বোলিং ছিল প্রশংসনীয়।

২৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল ভালো শুরু করেন। উদ্বোধনী জুটিতে স্কোরবোর্ডে ৩১ রান যোগ করেন তারা। তবে পঞ্চম ওভারে শাহিন আফ্রিদির দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফিরে যান রোহিত শর্মা। এরপর ক্রিজে আসেন বিরাট কোহলি এবং শুবমান গিলের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়েন। ৫২ বলে ৪৬ রান করে গিল আউট হলে কোহলির সঙ্গী হন শ্রেয়াস আইয়ার।

কোহলি ও আইয়ারের ১১৪ রানের জুটি ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ফিফটি তুলে নেন আইয়ার। তবে ৫৬ রানে খুশদিল শাহের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান তিনি। অন্যদিকে কোহলি ছিলেন অবিচল। ৪২.৩ ওভারে চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান। তিনি ১১১ বলে ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে পাকিস্তানের ব্যাটিং ইনিংসে বাবর আজম ও ইমাম-উল-হক ধীরে শুরু করলেও বড় ইনিংস গড়তে পারেননি। বাবর ২৬ বলে ২৩ রান করে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। অন্যদিকে রান আউট হয়ে ২৬ বলে মাত্র ১০ রান করে ফেরেন ইমাম। এরপর রিজওয়ান ও শাকিল ১০৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে শক্ত অবস্থানে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অক্ষর প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে ৭৭ বলে ৪৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন রিজওয়ান।

রিজওয়ান ফিরে গেলে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়ে। ৬২ রান করে শাকিলও বিদায় নেন। এরপর শেষ দিকে খুশদিল শাহ ৩৯ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে দলের সংগ্রহ ২৪১ রানে নিয়ে যান। ভারতের বোলারদের মধ্যে কুলদীপ, শামি ও হার্দিক পান্ডিয়া গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন।

বিরাট কোহলির অসাধারণ ব্যাটিং ও দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে ৬ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে সেমিফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল ভারত।

Header Ad
Header Ad

নাহিদের পদত্যাগ নিয়ে যা জানা গেল

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে, সন্ধ্যায় তার পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, "আমি পদত্যাগ করিনি। যে খবর ছড়িয়েছে, সেটা গুজব।"

এর আগে, গত মঙ্গলবার নাহিদ ইসলাম জানিয়েছিলেন, উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ এবং নতুন রাজনৈতিক দলে যোগদানের বিষয়ে তিনি সপ্তাহের শেষ দিকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলা
সেমিফাইনালের পথে ভারত, কোহলির সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের হার
নাহিদের পদত্যাগ নিয়ে যা জানা গেল
দুর্ঘটনায় আহত ছেলেকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার পথে সড়কে প্রাণ গেল মায়ের
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা দ্রুত মৃত্যু ডেকে আনে!
জীবন থাকতে কোনো স্থানীয় নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না: ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক
২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা, সরকারি ছুটি নিয়ে যা জানা গেল!
ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন, ছাত্রদলের নিন্দা
ভারতে ৫ বছর ধরে নিকটজনদের কাছে ধর্ষণের শিকার কিশোরী
ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফর ও স্টারলিংক চালুর আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার
পাঁচ দফা দাবিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, একাডেমিক শাটডাউন ও লংমার্চের ঘোষণা
নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুটি সময়সীমা নির্ধারণ: সিইসি
নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ অভিনেতা আজাদ, আহত মা ও স্ত্রী
আহতদের চিকিৎসা বন্ধে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিলো
এস আলম পরিবারের ৮,১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের নির্দেশ
প্রথমবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি বাণিজ্য চালু
৪ ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসর, জানা গেল নাম
পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী, কোনো দলের নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ধর্ষণের প্রতিবাদে আসাদ গেটে ছাত্র-জনতার সড়ক অবরোধ
স্ত্রীর সামনে বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২