বর্ধিত দামেও কাগজ মিলছে না, এটাই চিন্তার বিষয়
প্রতিবছর বইমেলার প্রস্তুতি সেটি নতুন কিছু নয়। প্রতিবছরই ফেব্রুয়ারি আসে। প্রতিবছরই বইমেলা হয়। এখন যেহেতু করোনার তেমন কোনো সংশয় নেই। কাজেই এবারেও বইমেলা ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হবে। এটি নিশ্চিত জেনেই আমরা সেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। আগেও আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম এবারও সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছি। তবে কিছুটা শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে যেটি, সেটি মূলত কাগজের অপর্যাপ্ততার কারণে। কাগজ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। কাগজ যে দামেই বৃদ্ধি পেয়েছে তা নয়। দাম বৃদ্ধি হলেও আমরা বর্ধিত দামে কাগজ কিনি। কিন্তু কাগজটি আসলে ঠিকমত বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। এটি একটি চিন্তার বিষয়।
আমরা জানি, সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে আমাদের একটু চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময়ে কাগজের ব্যবহার বাড়ে। এ সময় স্কুলের বই ছাপা হয়। স্কুলের বাচ্চাদের কার্ড ছাপা হয়। তা ছাড়া বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসগুলো ক্যালেন্ডার ছাপে। ফলে সব ধরনের কাগজের চাহিদা বেড়ে যায়। আমরা মনে করছি, ডিসেম্বর গেলে যখন চাহিদা কমবে, তখন সাপ্লাই ঠিক থাকবে এবং আমরা কাগজটি বাজারে পাব। এটি আমাদের আশা। এর বেশি আসলে জানুয়ারি না এলে বলা যাবে না।
আরেকটি বিষয় হল মূল্য। কাগজের মূল্য এখন যথেষ্ট বাড়বে। এই মূল্যে যদি খরচ হিসাব করে বইয়ের দাম রাখি, তাহলে বইয়ের যে দাম পড়বে সেটি একটু বেশি হবে। যেটি আমরা রাখতে চাই না। এত বেশি দামে আমরা বইয়ের দাম রাখার পক্ষপাতি নই। অর্থাৎ এককথায় বলতে গেলে, বইয়ের দাম বাড়ানোর সুযোগ আমাদের কাছে নেই। সেক্ষেত্রে দামটিও একটি বিষয়। এখন আমি যেটি মনে করছি, কাগজের চাহিদা কমে এলে হয়ত সাপ্লাই বেড়ে যাবে। সাপ্লাই বেড়ে গেলে সবকিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিংবা দাম একটু বৃদ্ধি হতে পারে। সেটি আমাদের অবশ্যই মানিয়ে নিতে হবে।
আমরা আসলে কি করব বা কি করতে পারব অথবা আমরা নির্ধারণ করব আমাদের করণীয়। সেক্ষেত্রে পাঠক যেন বই বিমুখ না হয়ে পড়ে সেদিকটি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। কারণ আমাদের উদ্দেশ্যই পাঠককে বইয়ের সঙ্গে সংযুক্তি। কাজেই পাঠক যেন কোনোভাবেই বই থেকে দূরে সরে না যায়, বই বিমুখ হয়ে না পড়ে, সেদিকটি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েই বইয়ের দাম নির্ধারণ করব। এবারের একুশে বইমেলা গতবছরের থেকে আরও বেশি পাঠককে বইয়ের সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবে— সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
লেখক: প্রকাশক, সময় প্রকাশন
আরএ/