শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৮ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ঋণখেলাপি এবং আইএমএফের ঋণ

দেশের অভ্যন্তরে ঋণ দেওয়া আর বাইরে থেকে ঋণ নেওয়া এই দুই সংকট মোকাবিলা করছে বাংলাদেশ। টাকা তো খরচ করার জন্যই। টাকা নাকি চাকার মতো। যত ঘোরে তত পথ অতিক্রম করে। কিন্তু যদি আটকে যায় কোথাও তাহলে সংকট তৈরি হয়। তখন কাগজের হিসেবে থাকে কিন্তু বাস্তবে পকেটে থাকে না। ঋণখেলাপিদের কাছে টাকা থাকলেও তেমনি হয়। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুয়ায়ী খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। যা ব্যাংক খাতে মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ যাবত কালের এটাই সর্বোচ্চ হারে খেলাপি ঋণ।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলামের মতে খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেছেন খেলাপি ঋণকে কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, খেলাপি ঋণের যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে বলতে গেলে এটা কিছুই নয়। প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ হবে। কারণ, একদিকে ঋণ আদায় হচ্ছে না অন্যদিকে ঋণ বিতরণ চলছে।

আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যারা ঋণ পরিশোধ করছেন না তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অ্যাকশনে যেতে হবে। এর সঙ্গে কোনো ব্যাংকার, পরিচালক জড়িত আছেন কি না তা দেখে তাদের বিরুদ্ধে আগে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এই তিন অর্থনীতিবিদের কথায় সংকটের চিত্র এবং করণীয় ফুটে উঠেছে। এখন দেখতে হবে সরকার কী করে? কারণ, আলোচনা যতই হোক না কেন পদক্ষেপ তো নিতে হবে সরকারকেই। এরই মধ্যে খবর হলো, গত জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।

আমদানি রপ্তানির পার্থক্য বেড়েই চলছে ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে প্রতি মাসে ১.৩ বিলিয়ন ডলার করে। চলতি বছরে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ কমেছে ১১ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়ের গতি কমেছে। আর বৈদেশিক মুদ্রা খরচের প্রধান খাত আমদানি ব্যয় বাড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয় কম বলে লেনদেনের ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে ডলার সংকট নিয়ে।

বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার মূল্যমান কৃত্রিমভাবে ধরে রেখে সমস্যা নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছিল। কিন্তু আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমে গেলে অল্প অল্প করে টাকার অবমূল্যায়ন শুরু করতে বাধ্য হয়। এরপর ডলারের দর আর তেমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বাজারে ডলারের দর ১১২ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। বাজারে সরবরাহ ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা শুরু করে। এতে ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের রিজার্ভ এখন কমে হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৩ কোটি ডলারে, যদিও আইএমএফ প্রতিনিধি দলের মতে, হিসাবটি পূর্ণাঙ্গ নয়। কারণ, নানা কারণে ৭২০ কোটি ডলার ব্যবহার করা হয়েছে, সেই হিসাবে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখন ২ হাজার ৭০০ ডলারের কিছু বেশি।

বৈদেশিক মুদ্রার উৎস রপ্তানি, প্রবাসী আয় এবং বিদেশী বিনিয়োগ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সুত্রে জানা যায়, অক্টোবরে রপ্তানি আয় গত বছর একই মাসের তুলনায় কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর মাসে কমেছিল সোয়া ৬ শতাংশ। অথচ এর আগে টানা ১৩ মাস রপ্তানি আয় বেড়েছিল। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ। রপ্তানিকারকদের আশঙ্কা, সামনে এই আয় আরও কমবে। আবার গত অক্টোবরে আসা প্রবাসী আয় গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সব মিলিয়ে গত চার মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি সামান্য, মাত্র ২ শতাংশ। আশার কথা এই যে, চলতি অর্থবছরে ৯ লাখের বেশি শ্রমিক দেশের বাইরে গেছেন। তারা আয় পাঠানো শুরু করলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে এ জন্য বাজারদর মেনে বিনিময় হার ঠিক করাটা জরুরি। নইলে হুন্ডি আরও বাড়বে। অর্থ পাচার ঠেকানোর কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ সরকারের নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আবার ডলারের উচ্চ দর সামলাতে গলদঘর্ম হচ্ছে সরকার। বিদেশি বিনিয়োগ স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তাব দিতে চাইছে।

বিশ্ব অর্থনীতির সংকট সহসাই কি নিরসন হবে? উত্তর হচ্ছে, না। আর বাংলাদেশের সংকট তো বহুমাত্রিক। কারণ, জ্বালানি তেল, কয়লা ও এলএনজি আমদানির উপর নির্ভরশীল দেশে আমদানির জন্য ডলার পাবে কোথায়? এরকম অবস্থায় ঋণ নিয়ে আলোচনার জন্য আইএমএফ প্রতিনিধিদল এসেছিল। তারা ফিরে গিয়ে কী প্রতিবেদন দেবে তার উপরই নির্ভর করছে ঋণের ভবিষ্যৎ। আইএমএফ ঋণ দিলে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা এগিয়ে আসবে এই ভরসা করছে সরকার।

ঋণ শোধ দেওয়ার ক্ষমতা আছে বলে সাত মাসে ৪২ কিস্তিতে ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব আছে আইএমএফ এর। এর পরিমাণ প্রতি কিস্তিতে ৬৪ কোটি ডলার অর্থাৎ মাসে ১১ কোটি ডলারের কম। অন্যদিকে, গড়ে প্রতি মাসে বাংলাদেশের আমদানি খরচ ৭৫০ কোটি ডলার। তারপরও আইএমএফ এর শর্তে সরকার যদি আমদানি শুল্ক কমায় তাহলে দেশীয় শিল্প হুমকির মধ্যে পড়বে।

জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম যদি বাড়ায় তাহলে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে, বেশি সুদের হারে (২ দশমিক ২০ শতাংশ) ঋণ নিলে পরিশোধের দায় বাড়বে। পাশাপাশি স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের কাছে ঋণের আশ্বাস পেয়েছিল ৩৭ বিলিয়ন ডলার আর ঋণ ছাড় হয়েছে ২৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। সুদাসল মিলে বাংলাদেশ শোধ করেছে ৬ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। দুর্নীতি, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বৃদ্ধি, ডলার পাচার বন্ধ না করে, ঋণখেলাপিদের টাকা উদ্ধার না করে এবং কৃষিতে বরাদ্দ না বাড়িয়ে যদি অনৈতিক ও অসম শর্তে ঋণ নেওয়া হয় তাহলে বর্তমান সংকট সামাল দেওয়া গেলেও ভবিষ্যতের ঋণের ফাঁদ আরও কঠিনভাবে চেপে বসবে।

লেখক: সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)

Header Ad
Header Ad

বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ৬৫টি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করছে। এর ফলে বাজেটের আগেই এসব পণ্যের মূল্য বাড়তে পারে।

এ তালিকায় রয়েছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, সিগারেট, টিস্যু পেপার, মিষ্টি, এলপি গ্যাস, বিমান টিকিট এবং হোটেল-রেস্তোরাঁর খাবারের খরচসহ আরও অনেক পণ্য। বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ উদ্যোগ সাধারণ জনগণের ওপর আর্থিক চাপ বাড়াবে এবং মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কর্মকর্তা জানান, বাজেটের সময় ভ্যাট পরিবর্তন করা হয়, তবে এবারের পরিস্থিতি আলাদা। অর্থ মন্ত্রণালয় আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পেতে কর-জিডিপি অনুপাত ০.২ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহ করতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে এ পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। চলমান পরিস্থিতিতে চাল, চিনি, ভোজ্য তেলসহ সাতটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্কছাড় দিলেও মাঝপথে ভ্যাট বৃদ্ধির এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়কে আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা সাধারণ মানুষের জন্য আর্থিক দুশ্চিন্তা বাড়াবে এবং জীবনযাত্রার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত স্থিরচিত্র, ভিডিও ফুটেজ, ডকুমেন্টারি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণে একটি বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল। এসব তথ্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনসাধারণের কাছে থাকা এসব তথ্য গুগল ড্রাইভে (muspecialcell36@gmail.com) আপলোড করার অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে এসব তথ্য পেনড্রাইভে ধারণ করে সরাসরি গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের কার্যালয়ে (২য় তলা, ভবন নং-২, বিএসএল অফিস কমপ্লেক্স, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ১ মিন্টু রোড, ঢাকা-১০০০) হস্তান্তর করারও সুযোগ রয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত এই উদ্যোগের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র সংরক্ষণ করা হবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঐতিহাসিকভাবে মূল্যবান হবে।

Header Ad
Header Ad

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনে গিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত ৮টা ৩০ মিনিটে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনে প্রবেশ করেন তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন সেই দোয়া করেছেন সেনাপ্রধান। এ সময় সেনাপ্রধানের সাথে ছিলেন তার স্ত্রী। খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান ও তার স্ত্রী প্রায় ৪০ মিনিটের মতো ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান
স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান
রংপুরের টানা তৃতীয় জয়, বরিশালের বিপক্ষে সহজ জয়
ভারতে সিগারেট খাওয়া নিষিদ্ধ চান বলিউড কিং
ইসরায়েলি হামলায় গাজার পুলিশ প্রধানসহ নিহত ১১
নওগাঁয় একবছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫
অবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
বাংলাদেশ আমাদের হারানো ভাই: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৪৩তম বিসিএস: বাদ পড়া ২২৭ প্রার্থীদের পুনর্বিবেচনার সুযোগ
জানুয়ারিতে বোতলজাত এলপিজি’র দাম অপরিবর্তিত, অটো গ্যাসের দাম সামান্য কম
বছরের শুরুতেই বিয়ে করলেন গায়ক আরমান মালিক
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেল ঢাকা, রাজশাহীর প্রথম জয়
গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশে ৪৩তম বিসিএসে ২২৭ জন বাদ
ভারতে তুলনামূলক হারে কমেছে বাংলাদেশী পর্যটক
ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা
কেন খাবেন সারা রাত ভেজানো কিশমিশ-পানি
বছরের শুরুতেই উত্তাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারীসহ আহত ১৫!
বিপিএলে এক ম্যাচেই ৭ উইকেট নিয়ে তাসকিনের রেকর্ড
সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক