সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

দেশে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার বিস্তার

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি ও প্রসারের সাথে প্রায় সমান্তরালভাবেই অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা করার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সারা বিশ্বে এটি একটি প্রতিষ্ঠিত বিষয়। যে দেশের অর্থনীতির আকার বড় বা যে দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড উচ্চস্তরের, সে দেশে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার ব্যপ্তিও বিশাল। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা এ কারণেই প্রসার ও সেইসাথে গভীরতা লাভ করেছে। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার অর্থনৈতিক সংবাদ, তা সে যে মাধ্যমেই হোক না কেন, পাঠ ও পর্যালোচনা করলে চিত্রটি পরিষ্কার ভাবে ভেসে উঠে। আবার যে দেশের অর্থনীতি আকারে ছোট এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিসর ছোট, সেসব দেশে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতাও স্বল্প পরিসরে সীমাবদ্ধ। সে সব দেশের সংবাদ মাধ্যমের দিকে নজর দিলে তা বোঝা যায়।

আমাদের দেশ যখন পাকিস্তানের একটি প্রদেশ ছিলো তখন এখানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিলো সীমিত পরিসরের। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলতে ছিল পাট শিল্প, চা শিল্প ও অন্যান্য বিভিন্ন ছোট খাটো শিল্প থেকে উৎপাদন ও সেগুলো বিপনন। বস্তুত শিল্প বা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত সকল কিছুই নিয়ন্ত্রিত হতো করাচি বা ইসলামাবাদ থেকে। নীতি বিষয়ক সমস্ত কিছুর সিদ্ধান্ত হতো পশ্চিম পাকিস্তানে। যে কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিলো সীমিত আকারের। একই কারণে এই প্রদেশে অর্থনৈতিক সংবাদ সৃষ্টি হতো খুবই কম। শুধুমাত্র ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় অবস্থিত শিল্প কেন্দ্র ও সিলেটের চা উৎপাদন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড থেকে সৃষ্ট সংবাদ কোনভাবেই অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার বৃদ্ধির জন্য বা তা প্রসারের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলে, তৎকালিন সময়ে যে কয়েকটি সংবাদপত্র এই প্রদেশ থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হতো সেগুলোতে অর্থনৈতিক সংবাদ উল্লেখযোগ্য স্থান পেতো না। নারায়নগঞ্জ, দৌলতপুর এবং চট্টগ্রামে, পাট ও চা সংক্রান্ত যে দৈনন্দিন ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ড হতো সেগুলো খুব সীমিত আকারে ছাপা হতো। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ নিয়মিতভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করলেও তা খুবই সীমিতসংখ্যক বিনিয়োগকারীর উৎসাহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। সংক্ষেপে এই ছিলো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের চিত্র।
কৃষি বর্তমানের মত তখনও প্রধান কর্মকাণ্ড ছিলো অর্থনৈতিক দিক থেকে। তবে তা স্বাভাবিক ভাবে যতখানি গুরুত্ব পাওয়ার প্রয়োজন ছিলো ততখানি গুরুত্ব অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় পায়নি। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য হিসাবে তেল, চিনি, লবন, পেঁয়াজ সংক্রান্ত সংবাদ পত্রিকায় স্থান পেতো। তবে সেই সমস্ত সংবাদ সাধারণ সংবাদ হিসাবে পত্রস্থ হতো এবং সেগুলো দাখিল করতেন সাধারণ বিষয়ক রিপোর্টাররাই। কোন বিশেষায়িত রিপোর্টার বাজার দরদামের উপর রিপোর্ট করতেন না। সরাসরিভাবে বলা যেতে পারে তৎকালীন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সীমানা খুবই ছোট হওয়ার কারণে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিষয়ের উপর বিশেষ রিপোর্ট হতো না। সুযোগও ছিল না। তবে দুই একটি পত্রিকায় অর্থনীতির ছোট- খাটো বিষয়ের উপর কোন কোন রিপোর্টার রিপোর্ট করতেন পত্রিকা কর্তৃপক্ষ দ্বারা আদিষ্ট হয়ে।

স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পরের দশ বছরেও অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা আগের মতই সীমাবদ্ধ ছিলো একই কারণে। সেই সময়টা ছিল প্রধানত পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের। দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ভঙ্গুর ছিল এবং এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পূর্বে, স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যা অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা প্রসারে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারতো, অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা পরিস্ফূট হতে পারেনি এবং প্রসার লাভ করেনি। তবে দেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে শুরু করে আশির দশকের প্রথমার্ধ থেকে। সেই সময় দেশের অর্থনীতিকে খুলে দেয়া হয় অর্থাৎ ওপেন করে দেয়া হয় নীতিগত পরিবর্তন এনে। ফলে ব্যক্তি পুঁজি খাটানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়। আমদানি এবং রপ্তানি দুটোই বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিনিয়োগ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে উদ্দ্যোক্তরা বিনিয়োগ শুরু করেন। সরকারও ক্রমাগতভাবে সহায়তা দিতে থাকে। নতুন কলকারখানা সৃষ্টি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন শুরু হয়। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের চিত্র পাল্টাতে থাকে। সেই সঙ্গে অর্থনীতির প্রতিটি খাত-উপখাতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। একটু ধীরে হলেও ক্রমাগতভাবে অর্থনৈতিক রিপোর্টের পরিসীমা বাড়তে থাকে।

উদ্যোমশীল, মেধাসমৃদ্ধ যুবকেরা অর্থনৈতিক রিপোর্টার হিসাবে তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করেন। দেখতে দেখতে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিষয়ের উপর পত্রিকা প্রকাশ হতে শুরু করে। পূর্ব থেকেই বিদ্যমান পত্রিকাগুলো অর্থনৈতিক বিষয়ের উপর জোর দিতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে যে সমস্ত পত্রিকায় আগে অর্থনীতি সংক্রান্ত রিপোর্ট তেমন গুরুত্ব পেত না, সেই সব পত্রিকায় অর্থনৈতিক রিপোর্ট ভালোভাবে স্থান পেতে থাকে। অর্থনৈতিক রিপোর্ট তৈরিতে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে অধিকতর সংখ্যায় নতুন নতুন রিপোর্টার তৈরি হয়। এই অবস্থার আরো উন্নত হয় পরবর্তি বছরগুলোতে। বর্তমান শতাব্দীর প্রথম দশকের প্রথমার্ধ থেকে নতুন টেলিভিশন চ্যানেল সাংবাদিকতার কর্মক্ষেত্রে বা ডোমেনে আসতে শুরু করে এবং তারাও অর্থনৈতিক সংবাদকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করতে থাকে। যা এখনো অব্যাহত আছে। এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে যে, বর্তমানে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় যে ব্যপ্তি বা প্রসার ঘটেছে তা হয়েছে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারের ফলেই।

বর্তমানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরো দেশ জুড়েই চলছে। অর্থনীতির সকল খাত ও উপখাতে কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার সুযোগ বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে প্রচুর অর্থনৈতিক রিপোর্ট বা প্রতিবেদন প্রিন্ট মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আসছে। বহু দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা এবং অনলাইন মাধ্যম প্রায় সম্পূর্ণ ভাবেই অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় নিজেদেরকে নিবেদিত করেছে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বেশি পরিমানে অর্থনৈতিক রিপোর্ট প্রচার করে। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সংবাদের উপর ভিত্তি করে প্রকাশিত দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক এবং অনলাইন মাধ্যমের সংখ্যা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে তাদের সংখ্যা যে প্রচুর সে বিষয়ে কোন মহলেই দ্বিমত নেই। জানামতে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্চ বা ক্যাপিটাল মার্কেটের কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে কয়েক ডজন অনলাইন নিউজ পোর্টাল চলছে। এ থেকেই ধারণা করা যায় দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার কতদূর বেড়েছে।

বর্তমানে এইসব সংস্থায় যারা অর্থনৈতিক রিপোর্ট করছেন তাদের প্রায় সকলেই উচ্চশিক্ষিত এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। এঁদের সবাই উদ্যোমি ও মেধা সম্পন্ন। রিপোর্টে তাদের মেধার প্রমান পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময়ে রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, এই সমস্ত রিপোর্টারদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব কাজ করছে। তাঁরা অন্যের চাইতে বেশি ভালো রিপোর্ট দাখিল করতে অত্যন্ত পরিশ্রম করছেন এবং কত সুন্দর ও সাবলিলভাবে রিপোর্ট উপস্থাপন করা যায় সে বিষয়ে প্রচুর চিন্তাভাবনা করে রিপোর্ট তৈরি করছেন। প্রয়োজনে সিরিজ রিপোর্ট করছেন এবং দেশী- বিদেশী বিভিন্নসূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা নিজ রিপোর্টে সংযোজন করছেন। ফলে তাদের রিপোর্ট তথ্যবহুল ও আকর্ষনীয় হচ্ছে। তারা অবশ্যই কৃতিত্বের দাবীদার।

তথ্য-উপাত্ত, পটভূমি, ব্যাখ্যা এবং ক্ষেত্র বিশেষে ভবিষ্যবাণী বা ফোরকাস্ট সংযুক্ত করার কারণে রিপোর্টগুলোর মান ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বলা যায় আমাদের দেশে বাংলা ভাষায় দাখিলকৃত রিপোর্ট বর্তমানে উপমহাদেশের বাংলাভাষী অঞ্চলে অতি উচ্চমানের। এটা সম্ভব হয়েছে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার বা প্রতিবেদকের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অনুসন্ধিৎশুমন ও বিষয়ের উপর পরিষ্কার ধারণা থাকার কারণে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে পেশাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য তারা দেশে-বিদেশে যে সমস্ত ট্রেনিং নিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক মানের সেমিনার বা ঘটনা কভার করেছেন তা তাদের জন্য খুবই সহায়ক হয়েছে। দেশে এখন বেশ কিছু রিপোর্টার বা সংবাদ বিশ্লেষক আছেন যারা বিশ্ব অর্থনীতি সম্বন্ধেও ভালোমানের প্রতিবেদন বা বিশ্লেষণ করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন এবং দেশে বিদেশে পুরষ্কার পেয়েছেন।

এ ছাড়া দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নীতিমালা কি রকম হওয়া উচিৎ, কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন এবং কোন কোন আইন যুগোপযোগী করা দরকার সেই সব বিষয়ে মতামত দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। স্বল্প কথায় অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের এবং তাঁদের প্রদত্ত প্রতিবেদন সমুহের মান উচ্চপর্যায়ে পৌঁছেছে।
দেশে অর্থনীতির আকার এবং কর্মকাণ্ড আগামীতে আরো প্রসার লাভ করবে স্বাভাবিক নিয়মেই। ফলে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা প্রসার লাভ করবে। আরো নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে অর্থনীতির বিভিন্ন খাত উপখাতের উপর প্রতিবেদন তৈরি করার। এই পরিস্থিতিতে রিপোর্টের মান ঠিক রেখে প্রতিবেদন দাখিল করার প্রতিযোগিতা অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের ভেতরেও বৃদ্ধি পাবে। উৎকর্ষতা অর্জন একটি অব্যাহত প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া কোন স্থানে যেয়ে থেমে যায় না। বর্তমানে আমাদের দেশে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা উৎকর্ষতার যে স্তরে পৌঁছেছে তা থেকে আত্মসন্তুষ্টি লাভ করে বসে থাকার কারণ নেই।

লেখক: সাংবাদিক

 

 

Header Ad
Header Ad

দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন;

সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি এস আলমের

মোহাম্মদ সাইফুল আলম ওরফে এস আলম। ছবি: সংগৃহীত

সম্পদ জব্দ ও বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত করায় মোহাম্মদ সাইফুল আলম ওরফে এস আলম সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এস আলমের দাবি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার তার সম্পদ জব্দ এবং বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে; এই ক্ষতি আদায়ের জন্য তিনি আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সাইফুল আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে, তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং তারা তাদের কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। এছাড়া কোনো অফিশিয়াল বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই অর্থপাচারের অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন।

দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের কাছে একটি 'বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ' পাঠিয়েছে এস আলম।

নোটিশে সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের মধ্যে বিষয়টির সমাধান না করা হলে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে ২০০৪ সালের দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তির অধীনে আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।

২০০৪ সালে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় এস আলমের আইনজীবীরা এই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছেন।

১৮ ডিসেম্বর পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, এস আলম পরিবার ২০১১ সালে সিঙ্গাপুরের পার্মানেন্ট রেসিডেন্স (স্থায়ী বসবাস) এবং ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশটির নাগরিকত্ব পেয়েছেন। এস আলমের পরিবারের সদস্যরা ২০২০ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয় এতে।

আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল অ্যান্ড সুলিভানের আইনজীবীদের পাঠানো ওই নোটিশের চিঠি দেখেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি)।

ওই নোটিশে অভিযোগ করা হয়েছে, এস আলম পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে, তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং তারা নিজেদের কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। এছাড়া কোনো অফিশিয়াল নোটিশ ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অর্থ পাচারের তদন্ত করছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো।

আরও বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বদলে ফেলা হয়েছে ব্যাংকগুলোর ম্যানেজমেন্ট টিম। তাদের চুক্তিগুলো ‘যথেচ্ছভাবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই’ বাতিল করে দিয়েছে সরকার।

কুইন ইমানুয়েলের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ও তার বিভিন্ন সংস্থার কর্মকাণ্ড ও অবহেলার মাধ্যমে ‘বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা সম্পদমূল্য পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই অব্যাহত কর্মকাণ্ড ও অবহেলা বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় পাওয়া অধিকার এবং বাংলাদেশের আইন লঙ্ঘন করেছে এবং চলমান বিরোধের ভিত গড়ে দিয়েছে।

দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস অনুরোধ করলেও বাংলাদেশ সরকার এই নোটিশের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

Header Ad
Header Ad

রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় ৯৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে ছিনতাই রোধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এই অভিযানের প্রথম দিন রবিবার ৯৩ জন পেশাদার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে লালবাগ বিভাগে সবচেয়ে বেশি ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার হয়েছে।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম।

তিনি জানান, রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার করা হয়।

এর মধ্যে রমনা বিভাগ আটজন, মতিঝিল বিভাগে ১৪ জন, লালবাগ বিভাগে ২৬ জন, ওয়ারী বিভাগে ১০ জন, তেজগাঁও বিভাগে ১৯ জন, মিরপুর বিভাগে ৪ জন, উত্তরা বিভাগ ৮ জন ও গুলশান বিভাগে ৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা ছিনতাইপ্রবণ এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে কারা এসব এলাকায় ছিনতাই করে তাদেরকে চিহ্নিত করছি এবং তাদেরকে আইনের আওতায় আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। ফুট পেট্রোল গাড়িতে পেট্রোল এবং মোটরসাইকেল পেট্রোল অব্যাহত রেখেছি। এখন শীতের রাত, গভীর রাতেও ছিনতাই হচ্ছে। বিশেষ করে দূরপাল্লার যেসব গাড়ি ঢাকায় আসছে সেসব গাড়ির যাত্রীদের থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। মোবাইল পেট্রোলগুলো যেন ঠিকঠাক কাজ করে এজন্য আমাদের প্রত্যেক ডিভিশনের এসি এবং এডিসিকে নজরদারি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক রাতে তারা গাড়ি নিয়ে মুভে থাকছে এবং তদারকি করছি। এছাড়া আমাদের কন্ট্রোল রুম থেকে ওয়ারলেসের পেট্রোলগুলোর লোকেশন নেওয়া হচ্ছে এবং তারা সজাগ আছে কি না তদারকি করা হচ্ছে।

যারা এসব ছিনতাইয়ের কাজে অভ্যস্ত, তাদেরকে কোর্টে চালান করার পর অতি সহজেই তারা জামিন নিয়ে বের হয়ে আসছে এবং আবার ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ছে। ঢাকা মহানগরীতে ২ কোটির মতো মানুষের বসবাস। তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এসব ছিনতাইকারী যেন সহজে জামিন না পায় এজন্য কোর্ট বা সংশ্লিষ্ট বিচারকদের অনুরোধ করেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশে রফতানি বন্ধ: ময়ূখ রঞ্জনের বাড়ি ঘেরাও করলেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা

ময়ূখ রঞ্জনের বাড়ি ঘেরাও করলেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে পেঁয়াজ ও আলু রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। মাত্র আড়াই থেকে তিন টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা, যা উৎপাদন খরচের তুলনায় অত্যন্ত কম।

কৃষকরা অভিযোগ করছেন, রফতানির সুযোগ বন্ধ করে তাদের দুর্দশার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এক কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের কষ্টার্জিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নেই। এখন এই পেঁয়াজ শুভেন্দু অধিকারী আর রিপাবলিক টেলিভিশনের ময়ূখ রঞ্জনকেই কিনতে হবে!

এই সংকটকে কেন্দ্র করে কৃষকরা রিপাবলিক টেলিভিশনের সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জনের বাড়ি ঘেরাও করেন। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে ময়ূখ সংকট আরও জটিল করে তুলেছেন। এক কৃষক বলেন, আমরা শুনছি, বাংলাদেশ আমাদের থেকে পেঁয়াজ নিতে চাইছে না। অথচ ময়ূখ বলছে, তারা নাকি আমাদের পেঁয়াজ অপমান করেছে! এই বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য তিনিই দায়ী।

শুধু তাই নয় রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন কৃষকরা। তাদের হুঁশিয়ারি, এই বিপর্যয়ের সমাধান না হলে রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার হবে।

পেঁয়াজ ও আলুর দাম নিয়ে রাজ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। রাস্তায় ফসল ফেলে কৃষকরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা অভিযোগ করেন, তিন টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে, অথচ বাজারে এই পেঁয়াজই ২০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। আমাদের এই কষ্ট কেউ বুঝতে চায় না।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি এস আলমের
রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় ৯৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
বাংলাদেশে রফতানি বন্ধ: ময়ূখ রঞ্জনের বাড়ি ঘেরাও করলেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা
সাদা পোশাকে সেঞ্চুরিতে জ্যোতির ইতিহাস
টাঙ্গাইলে মোটরসাইকেল ও সিএনজি দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ীসহ ৩ জন নিহত
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে দিল্লিকে কূটনৈতিক চিঠি
বছরখানেক সময় পেলে সংস্কার কাজগুলো করে যাব: আসিফ নজরুল
পপ তারকা ম্যাডোনার সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসের ডিপফেক ছবি ভাইরাল
কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা
দেশে ১৯ লাখ ৪০ হাজার তরুণ বেকার- বিবিএস’র জরিপ
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা, ভিডিও ভাইরাল
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ
বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে প্রাণ গেল ৩ যুবকের
যুক্তরাজ্যে টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ
বিমান বিধ্বস্ত হয়ে একই পরিবারের ১০ জন নিহত
উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
গাজায় হাসপাতাল-স্কুল ও ‘সেফ জোনে’ ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৫০