সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১৯ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

দেশে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার বিস্তার

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি ও প্রসারের সাথে প্রায় সমান্তরালভাবেই অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা করার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সারা বিশ্বে এটি একটি প্রতিষ্ঠিত বিষয়। যে দেশের অর্থনীতির আকার বড় বা যে দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড উচ্চস্তরের, সে দেশে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার ব্যপ্তিও বিশাল। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা এ কারণেই প্রসার ও সেইসাথে গভীরতা লাভ করেছে। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার অর্থনৈতিক সংবাদ, তা সে যে মাধ্যমেই হোক না কেন, পাঠ ও পর্যালোচনা করলে চিত্রটি পরিষ্কার ভাবে ভেসে উঠে। আবার যে দেশের অর্থনীতি আকারে ছোট এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিসর ছোট, সেসব দেশে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতাও স্বল্প পরিসরে সীমাবদ্ধ। সে সব দেশের সংবাদ মাধ্যমের দিকে নজর দিলে তা বোঝা যায়।

আমাদের দেশ যখন পাকিস্তানের একটি প্রদেশ ছিলো তখন এখানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিলো সীমিত পরিসরের। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলতে ছিল পাট শিল্প, চা শিল্প ও অন্যান্য বিভিন্ন ছোট খাটো শিল্প থেকে উৎপাদন ও সেগুলো বিপনন। বস্তুত শিল্প বা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত সকল কিছুই নিয়ন্ত্রিত হতো করাচি বা ইসলামাবাদ থেকে। নীতি বিষয়ক সমস্ত কিছুর সিদ্ধান্ত হতো পশ্চিম পাকিস্তানে। যে কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিলো সীমিত আকারের। একই কারণে এই প্রদেশে অর্থনৈতিক সংবাদ সৃষ্টি হতো খুবই কম। শুধুমাত্র ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় অবস্থিত শিল্প কেন্দ্র ও সিলেটের চা উৎপাদন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড থেকে সৃষ্ট সংবাদ কোনভাবেই অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার বৃদ্ধির জন্য বা তা প্রসারের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলে, তৎকালিন সময়ে যে কয়েকটি সংবাদপত্র এই প্রদেশ থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হতো সেগুলোতে অর্থনৈতিক সংবাদ উল্লেখযোগ্য স্থান পেতো না। নারায়নগঞ্জ, দৌলতপুর এবং চট্টগ্রামে, পাট ও চা সংক্রান্ত যে দৈনন্দিন ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ড হতো সেগুলো খুব সীমিত আকারে ছাপা হতো। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ নিয়মিতভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করলেও তা খুবই সীমিতসংখ্যক বিনিয়োগকারীর উৎসাহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। সংক্ষেপে এই ছিলো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের চিত্র।
কৃষি বর্তমানের মত তখনও প্রধান কর্মকাণ্ড ছিলো অর্থনৈতিক দিক থেকে। তবে তা স্বাভাবিক ভাবে যতখানি গুরুত্ব পাওয়ার প্রয়োজন ছিলো ততখানি গুরুত্ব অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় পায়নি। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য হিসাবে তেল, চিনি, লবন, পেঁয়াজ সংক্রান্ত সংবাদ পত্রিকায় স্থান পেতো। তবে সেই সমস্ত সংবাদ সাধারণ সংবাদ হিসাবে পত্রস্থ হতো এবং সেগুলো দাখিল করতেন সাধারণ বিষয়ক রিপোর্টাররাই। কোন বিশেষায়িত রিপোর্টার বাজার দরদামের উপর রিপোর্ট করতেন না। সরাসরিভাবে বলা যেতে পারে তৎকালীন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সীমানা খুবই ছোট হওয়ার কারণে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিষয়ের উপর বিশেষ রিপোর্ট হতো না। সুযোগও ছিল না। তবে দুই একটি পত্রিকায় অর্থনীতির ছোট- খাটো বিষয়ের উপর কোন কোন রিপোর্টার রিপোর্ট করতেন পত্রিকা কর্তৃপক্ষ দ্বারা আদিষ্ট হয়ে।

স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পরের দশ বছরেও অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা আগের মতই সীমাবদ্ধ ছিলো একই কারণে। সেই সময়টা ছিল প্রধানত পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের। দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ভঙ্গুর ছিল এবং এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পূর্বে, স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যা অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা প্রসারে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারতো, অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা পরিস্ফূট হতে পারেনি এবং প্রসার লাভ করেনি। তবে দেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে শুরু করে আশির দশকের প্রথমার্ধ থেকে। সেই সময় দেশের অর্থনীতিকে খুলে দেয়া হয় অর্থাৎ ওপেন করে দেয়া হয় নীতিগত পরিবর্তন এনে। ফলে ব্যক্তি পুঁজি খাটানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়। আমদানি এবং রপ্তানি দুটোই বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিনিয়োগ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে উদ্দ্যোক্তরা বিনিয়োগ শুরু করেন। সরকারও ক্রমাগতভাবে সহায়তা দিতে থাকে। নতুন কলকারখানা সৃষ্টি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন শুরু হয়। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের চিত্র পাল্টাতে থাকে। সেই সঙ্গে অর্থনীতির প্রতিটি খাত-উপখাতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। একটু ধীরে হলেও ক্রমাগতভাবে অর্থনৈতিক রিপোর্টের পরিসীমা বাড়তে থাকে।

উদ্যোমশীল, মেধাসমৃদ্ধ যুবকেরা অর্থনৈতিক রিপোর্টার হিসাবে তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করেন। দেখতে দেখতে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিষয়ের উপর পত্রিকা প্রকাশ হতে শুরু করে। পূর্ব থেকেই বিদ্যমান পত্রিকাগুলো অর্থনৈতিক বিষয়ের উপর জোর দিতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে যে সমস্ত পত্রিকায় আগে অর্থনীতি সংক্রান্ত রিপোর্ট তেমন গুরুত্ব পেত না, সেই সব পত্রিকায় অর্থনৈতিক রিপোর্ট ভালোভাবে স্থান পেতে থাকে। অর্থনৈতিক রিপোর্ট তৈরিতে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে অধিকতর সংখ্যায় নতুন নতুন রিপোর্টার তৈরি হয়। এই অবস্থার আরো উন্নত হয় পরবর্তি বছরগুলোতে। বর্তমান শতাব্দীর প্রথম দশকের প্রথমার্ধ থেকে নতুন টেলিভিশন চ্যানেল সাংবাদিকতার কর্মক্ষেত্রে বা ডোমেনে আসতে শুরু করে এবং তারাও অর্থনৈতিক সংবাদকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করতে থাকে। যা এখনো অব্যাহত আছে। এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে যে, বর্তমানে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় যে ব্যপ্তি বা প্রসার ঘটেছে তা হয়েছে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারের ফলেই।

বর্তমানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরো দেশ জুড়েই চলছে। অর্থনীতির সকল খাত ও উপখাতে কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার সুযোগ বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে প্রচুর অর্থনৈতিক রিপোর্ট বা প্রতিবেদন প্রিন্ট মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আসছে। বহু দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা এবং অনলাইন মাধ্যম প্রায় সম্পূর্ণ ভাবেই অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় নিজেদেরকে নিবেদিত করেছে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বেশি পরিমানে অর্থনৈতিক রিপোর্ট প্রচার করে। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সংবাদের উপর ভিত্তি করে প্রকাশিত দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক এবং অনলাইন মাধ্যমের সংখ্যা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে তাদের সংখ্যা যে প্রচুর সে বিষয়ে কোন মহলেই দ্বিমত নেই। জানামতে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্চ বা ক্যাপিটাল মার্কেটের কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে কয়েক ডজন অনলাইন নিউজ পোর্টাল চলছে। এ থেকেই ধারণা করা যায় দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার কতদূর বেড়েছে।

বর্তমানে এইসব সংস্থায় যারা অর্থনৈতিক রিপোর্ট করছেন তাদের প্রায় সকলেই উচ্চশিক্ষিত এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। এঁদের সবাই উদ্যোমি ও মেধা সম্পন্ন। রিপোর্টে তাদের মেধার প্রমান পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময়ে রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, এই সমস্ত রিপোর্টারদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব কাজ করছে। তাঁরা অন্যের চাইতে বেশি ভালো রিপোর্ট দাখিল করতে অত্যন্ত পরিশ্রম করছেন এবং কত সুন্দর ও সাবলিলভাবে রিপোর্ট উপস্থাপন করা যায় সে বিষয়ে প্রচুর চিন্তাভাবনা করে রিপোর্ট তৈরি করছেন। প্রয়োজনে সিরিজ রিপোর্ট করছেন এবং দেশী- বিদেশী বিভিন্নসূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা নিজ রিপোর্টে সংযোজন করছেন। ফলে তাদের রিপোর্ট তথ্যবহুল ও আকর্ষনীয় হচ্ছে। তারা অবশ্যই কৃতিত্বের দাবীদার।

তথ্য-উপাত্ত, পটভূমি, ব্যাখ্যা এবং ক্ষেত্র বিশেষে ভবিষ্যবাণী বা ফোরকাস্ট সংযুক্ত করার কারণে রিপোর্টগুলোর মান ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বলা যায় আমাদের দেশে বাংলা ভাষায় দাখিলকৃত রিপোর্ট বর্তমানে উপমহাদেশের বাংলাভাষী অঞ্চলে অতি উচ্চমানের। এটা সম্ভব হয়েছে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার বা প্রতিবেদকের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অনুসন্ধিৎশুমন ও বিষয়ের উপর পরিষ্কার ধারণা থাকার কারণে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে পেশাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য তারা দেশে-বিদেশে যে সমস্ত ট্রেনিং নিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক মানের সেমিনার বা ঘটনা কভার করেছেন তা তাদের জন্য খুবই সহায়ক হয়েছে। দেশে এখন বেশ কিছু রিপোর্টার বা সংবাদ বিশ্লেষক আছেন যারা বিশ্ব অর্থনীতি সম্বন্ধেও ভালোমানের প্রতিবেদন বা বিশ্লেষণ করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন এবং দেশে বিদেশে পুরষ্কার পেয়েছেন।

এ ছাড়া দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নীতিমালা কি রকম হওয়া উচিৎ, কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন এবং কোন কোন আইন যুগোপযোগী করা দরকার সেই সব বিষয়ে মতামত দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। স্বল্প কথায় অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের এবং তাঁদের প্রদত্ত প্রতিবেদন সমুহের মান উচ্চপর্যায়ে পৌঁছেছে।
দেশে অর্থনীতির আকার এবং কর্মকাণ্ড আগামীতে আরো প্রসার লাভ করবে স্বাভাবিক নিয়মেই। ফলে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা প্রসার লাভ করবে। আরো নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে অর্থনীতির বিভিন্ন খাত উপখাতের উপর প্রতিবেদন তৈরি করার। এই পরিস্থিতিতে রিপোর্টের মান ঠিক রেখে প্রতিবেদন দাখিল করার প্রতিযোগিতা অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের ভেতরেও বৃদ্ধি পাবে। উৎকর্ষতা অর্জন একটি অব্যাহত প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া কোন স্থানে যেয়ে থেমে যায় না। বর্তমানে আমাদের দেশে অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা উৎকর্ষতার যে স্তরে পৌঁছেছে তা থেকে আত্মসন্তুষ্টি লাভ করে বসে থাকার কারণ নেই।

লেখক: সাংবাদিক

 

 

Header Ad

বদলগাছিতে মাইক্রোবাস থেকে ককটেল নিক্ষেপ, ৬টি উদ্ধার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর বদলগাছীতে মাইক্রোবাস থেকে দুটো ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া অবিস্ফোরিত ৬টি ককটেল উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার (৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গোবরচাঁপা হাট নামক স্থানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মুল ফটকের সামনে এই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর ফলে পুরো বাজারে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ‍

এদিকে ঘটনার পর এদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাদের বিচার দাবি করে।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা জানান, সোমবার রাতে উপজেলার মিঠাপুরের দিক থেকে একটি মাইক্রোবাস আসছিল। ওই মাইক্রোবাসটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে আসা মাত্রই হঠাৎ করে ককটেল বিস্ফোরণে শব্দ শোনা যায়। ধারণা করা হচ্ছে ওই মাইক্রোবাস থেকে ককটেলগুলো নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে কারো কোনো ক্ষতি না হলেও বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মাইক্রোবাসটি গোবরচাঁপা হয়ে বদলগাছীর দিকে চলে যায়।

রাত সাড়ে নয় টার দিকে জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা বিএনপির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু রায়হান গিটার মুঠোফোনে বলেন, আমি শব্দ শুনতে পেয়ে সেখানে যাই। গিয়ে শুনতে পাই দুটো ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। মাইক্রোবাস থেকে ককটেল গুলো নিক্ষেপ করা হয়েছে। আর জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। তিনি আরও বলেন, দেশ ও সমাজকে অস্থিতিশীল করা কারো কাম্য নয়। আমরা সমাজকে ভালো করে গড়তে চাই। তবে জয় বাংলার স্লোগান দেওয়াতে আমরা মনে করছি আওয়ামীলীগের দোসরার এখনও আছে এবং জানান দিচ্ছে তারা মাঠে আছে। তাই যারা এধরণের অন্যায় কাজ করবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

রাত দশটার দিকে বিষয়টি ঢাকাপ্রকাশকে নিশ্চিত করেছেন বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ্জাহান আলী। তিনি বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমরা ঘটনাস্থলের দিকে রওয়ানা হই। এসময় দুটো সাদা মাইক্রোবাস বদলগাছীর দিকে চলে যেতে দেখা যায়। এরপর আমরা ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত তাজা ৬টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেখানে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

তিনি আরও বলেন, এঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে তারা কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছে সেটা আমার জানা নেই। মামলার প্রস্তুতি চলছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad

বিএনপির সঙ্গে ঐক্যে আগ্রহী আওয়ামী লীগ: ড. হাছান মাহমুদ

সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলা স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল এস’-এর মতামতভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘অভিমত’-এ গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রয়োজন হলে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে।

আওয়ামী লীগের সংকট মোকাবিলা ও ঐক্যের বার্তা: অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বুলবুল হাসানের প্রশ্নের উত্তরে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতেও সংকট মোকাবিলা করেছে এবং সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশের প্রতি বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং টানা চারবার ক্ষমতায় এসেছে। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের বিপর্যয় ইতোপূর্বেও ঘটেছে, কিন্তু আমরা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি।”

জাতীয় সংকটে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা: ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জাতীয় রাজনৈতিক সংকট নিরসনে বিএনপির অনেক বক্তব্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগ একমত। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১/১১-এর সময় বিএনপির সঙ্গে মিলে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে শরিক হয়েছিল। বর্তমানেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর অনেক বক্তব্য, যেমন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি, আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে গেলে দেশের গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে একযোগে কাজ করার সুযোগ তৈরি হতে পারে।

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের বিরোধিতা ও রাজনৈতিক সংকট: বিএনপি কর্তৃক ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দলকে কাগজে কলমে নিষিদ্ধ করলে তার কার্যকারিতা নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা অলীক কল্পনা।” তিনি আরও বলেন, “যে দলের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সৃষ্টি, সেই দলকে নিষিদ্ধ করার চিন্তা কেবল বিভ্রান্তিকর।”

দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার: ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জাতীয় নেতাদের হত্যা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল। ৫ আগস্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতিও এ ধরনের ষড়যন্ত্রের ফসল।” পুলিশি নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আত্মরক্ষার অধিকার পুলিশের রয়েছে, এবং সেক্ষেত্রে সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করা হবে।”

রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাই আওয়ামী লীগের প্রাণ এবং দলীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। বিদেশে আওয়ামী লীগ কোনো প্রবাসী সরকার গঠনের চিন্তা করছে না বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য বার্তা: দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আওয়ামী লীগ পরপর চারবার ক্ষমতায় এসেছে এবং কঠিন সময়ও অতিক্রম করেছে। নেতাকর্মীদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই; শেখ হাসিনা দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল এবং তার মনোবল চাঙ্গা রয়েছে।” তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “এই সংকটময় সময়ও কেটে যাবে, এবং সহসা দেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসবে।”

রাষ্ট্র পরিচালনা ও ভুলের স্বীকারোক্তি: সরকারের ব্যর্থতার প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “দায়িত্বে থাকলে ভুল হবেই, এটিই স্বাভাবিক। আমরাও বিভিন্ন সময়ে ভুল করেছি। কিন্তু ভুল থেকেই শিক্ষা নেওয়া উচিত, এবং সেখান থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি।”

এই আলোচনার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের অবস্থান পরিষ্কার হলো যে, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে প্রয়োজন হলে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করতেও দলটি প্রস্তুত।

Header Ad

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ বন্ধ, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ৪০ হাজার কোটি ঋণ পরিশোধ

ছবি: সংগৃহীত

মূল্যস্ফীতি এখন দেশের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যে নাগরিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে। সরকার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া বন্ধ করেছে সরকার, যা মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে কার্যকরী পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস-জুলাই থেকে অক্টোবর-সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১৬ হাজার ৪০১ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে সরকারের মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা।

বিগত সরকারের সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ঋণ নেওয়ার ফলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়। এতে মানুষের জীবনযাত্রার খরচ বাড়তে থাকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দায়িত্বে আসা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে মনোযোগী হচ্ছে।

একজন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে বাজারে মুদ্রার প্রবাহ বেড়ে যায়, যা মূল্যস্ফীতি বাড়ায়। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ায় মুদ্রাস্ফীতি কমবে এবং এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো।” তিনি আরও বলেন, “এখন লেনদেনের মাধ্যমে এক পকেট থেকে অন্য পকেটে টাকা যাচ্ছে, ফলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা হচ্ছে।”

সরকারের সামগ্রিক ঋণের পরিমাণ চার লাখ ৯০ হাজার ৮৯১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ এক লাখ ১৬ হাজার ২১৫ কোটি টাকা এবং বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ প্রায় তিন লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা।

সরকারের এই উদ্যোগকে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বদলগাছিতে মাইক্রোবাস থেকে ককটেল নিক্ষেপ, ৬টি উদ্ধার
বিএনপির সঙ্গে ঐক্যে আগ্রহী আওয়ামী লীগ: ড. হাছান মাহমুদ
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ বন্ধ, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ৪০ হাজার কোটি ঋণ পরিশোধ
টাঙ্গাইলে ৩৫০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিলসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
গণপিটুনিতে সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে নিহত
মেগা চুরির জন্য আওয়ামী লীগকে আরেকবার দরকার: নির্মাতা ফারুকী
বিরামপুরে ট্রাকের ধাক্কায় দুই যুবক নিহত
পদে পুনর্বহালের দাবিতে ১০ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের একক কণ্ঠে আন্দোলন
ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনায় হামলার নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল, সদস্য সচিব মোস্তফা জামান
এস আলমের সম্পত্তি নিলামে তুললো জনতা ব্যাংক, ১৮৫০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ
১০ জেলা ও মহানগরে বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা
ভারতে পবিত্র মনে করে মন্দিরের এসির পানি পানের হিড়িক, সতর্কতা জানালেন বিশেষজ্ঞরা
যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন স্বর্ণযুগে নেওয়ার অঙ্গীকার ট্রাম্পের
থেমে থাকা ট্রাকে অপর ট্রাকের ধাক্কায় হেলপার নিহত, আটক ২
বিএনসিসি অধিদপ্তরে চাকরির বিশাল সুযোগ
পর্নোগ্রাফি ও জুয়ার ওয়েবসাইট-লিংক বন্ধের দাবি
এবারের জন্মদিনে ধূমপান ছেড়ে দিলেন শাহরুখ খান
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস
সোহেল তাজকে প্রধান উপদেষ্টার ফোন