শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

শুভকাজের নামে পরিবেশ ধ্বংসের আয়োজন

আমাদের দেশে প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠনের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। নদী, পাহাড়, বন, খাল, বিল, হাওর-সবকিছুই আমাদের ভোগ করা দরকার। ফলে ধ্বংসের শেষপ্রান্তে এসে ঠেকেছে বন। দখল-দূষণ আর ভরাট হয়ে নদীও চরম বিপন্ন। এসব ক্ষেত্রে যা-কিছু অনিয়ম তার সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের বড় ধরনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমাজ ও সরকারের প্রভাবশালীদের অনৈতিক প্রভাব। এটি যে একটি আত্মঘাতি কাজ তা কারো উপলব্ধিতেই আসছে না। পরিবেশ দূষণের ফলাফল যেহেতু তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান নয়, সেহেতু বিষয়টি অনেকেই অনুভব করতে পারছে না। মূলত একারণেই প্রকৃতি ও পরিবেশবিষয়ক শিক্ষা প্রয়োজন। সর্বস্তরের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে কিছুটা হলেও শেষ রক্ষা হতে পারে।

সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে গ্রহণকরা কতিপয় পরিবেশ বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত আমাদের হতবাক করেছে। সরকার সবসময় বন ও পরিবেশ সংরক্ষণের কথা বললেও বাস্তবে এধরনের পদক্ষেপ চরম হঠকারী ও হতাশাজনক। একটি প্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়-মৌলভীবাজার জেলার সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ বনভূমি লাঠিটিলায় ৫ হাজার ৬৩১ একরজুড়ে সাফারি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে বন বিভাগ। জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের ওই বনভূমি সেখানকার একমাত্র সংরক্ষিত বন হিসেবে চিহ্নিত। এই বনে অসংখ্য প্রজাতির গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাস। আমরা জানি মৌলভীবাজারে এর আগে বর্শিঝোড়া ইকোপার্ক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক, মাধবকুণ্ড লেক, বাইক্কার বিলসহ বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। বছরে প্রায় পাঁচ লাখ পর্যটক সেখানে যান। পর্যটকদের জন্য হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ, রাস্তাসহ নানা অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলেই ওই বনভূমি ও জলাভূমিগুলোর জীববৈচিত্র্য হুমকিতে আছে বলে নানা গবেষণায় উঠে এসেছে। তার ওপর আবার কেন সাফারি পার্কের নামে এই পর্যটন কেন্দ্র? ৫৫ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট এই দেশে কয়টি সাফারি পার্ক প্রয়োজন?

সরকারের এমন অনাকাক্সিক্ষত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল লাঠিটিলা পরিদর্শন শেষে বলেছেন, সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক হলে বনের পরিবেশ বদলে যাবে। মানুষকে পুনর্বাসন করা সম্ভব। কিন্তু বনের পরিবেশ, জীবজন্তুকে পুনর্বাসন করা সম্ভব নয়। সাফারি পার্ক করতে হলে বিকল্প জায়গায় করা যেতে পারে। সাফারি পার্ক হোক। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ুক, বিনোদনের জায়গা বাড়ুক। কিন্তু তা সংরক্ষিত বনে নয়।

দেশে বিদ্যমান পরিবেশ আইন অনুযায়ী এ ধরনের বনে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। অথচ ৯৮০ কোটি টাকার সম্ভাব্য ব্যয় ধরে ওই সাফারি পার্ক নির্মিত হলে সেখান পর্যটকদের জন্য নানা অবকাঠামো, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, উপকেন্দ্রসহ ভারী অবকাঠামো নির্মিত হবে। আর সেখানে বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ দর্শনার্থী আসবেন বলে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তাহলে এটি কি আর বন হিসেবে গন্য হবে? লাঠিটিলার বুনো আবহ কি টিকে থাকবে?

সর্বশেষ একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, পরিবেশবাদীদের মতামত উপেক্ষা করে প্রকল্প এলাকার মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ শুরু করেছে একটি নকশা প্রস্তুতকারী সংস্থা!

এবার দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল থেকে সর্বদক্ষিণে চোখ ফেরানো যাক। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আরেকটি প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ করতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন ঝিলংজা ‘রক্ষিত বনভূমির’ ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ এটি প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন একটি বনভূমি। জানা যায় যে, বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ দিয়েছে। ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার একে রক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করে। বন বিভাগ এত বছর ধরে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। বিপন্ন এশীয় বন্য হাতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণীর নিরাপদ বসতি এই ঝিলংজা বনভূমি। বন আইন অনুযায়ী, পাহাড় ও ছড়াসমৃদ্ধ এই বনভূমি কোনো সংস্থার জন্য ইজারা বা বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম নেই। অপকর্মটি জায়েজ করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দপত্রে দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এই বনভূমিকে অকৃষি খাসজমি হিসেবে দেখানো হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় বলেছে, বরাদ্দ দেওয়া জমির ৪০০ একর পাহাড় ও ৩০০ একর ছড়া বা ঝরনা। তারা জমির মূল্য ধরেছে ৪ হাজার ৮০৩ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু একাডেমির জন্য প্রতীকী মূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা। সরকার কর্তৃক জোর-জবরদস্তি ও অনৈতিক প্রক্রিয়ায় দেশের প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংসের ক্ষেত্রে এর চেয়ে বড় উদাহারণ আর কি হতে পারে!

আমরা এখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছি। কিন্তু গত ৫০ বছরে এক্ষেত্রে আমাদের অর্জনের চেয়ে বিসর্জন বেশি। আমরা হারিয়েছি আমাদের সবগুলো নিবিড় বন, প্রাকৃতিক জলাধার। সবই এখন নিয়ন্ত্রিত, বিবর্ণ, হতশ্রী। বেদখল আর অপরিকল্পিত কর্মযজ্ঞের চাপে বিলীন হয়েছে আমাদের প্রতিবেশগত ঐতিহ্য। তবে এসবের অনেক কুফলও আমরা পেতে শুরু করেছি। আন্তর্জাতিকভাবে তো বটেই জাতীয়ভাবেও আমরা কঠিন পরিবেশ সঙ্কটের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছি। এবছর আমাদের প্রকৃতিতে অস্থিতিশীল শীতের প্রভাব তারই একটি বড় নজির।
দ্বিমেরু প্রভাবে এবার শীতের মধ্যেও বঙ্গোপসাগর হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা মূল ভূখণ্ডের চেয়ে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে, হিমালয় থেকে এবার অপেক্ষাকৃত শীতল বাতাস উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করে সারা দেশে ছড়িয়ে হাড়কাঁপানো শীত আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে বাড়তি তাপের কারণে ফুটন্ত পানির ধোঁয়ার মতো ঘন মেঘ তৈরি হচ্ছে। উপকূল দিয়ে আসা উষ্ণ মেঘ আর উত্তরাঞ্চল দিয়ে আসা হিমেল বাতাসের মধ্যে রীতিমতো লড়াই শুরু হয়েছে। এ কারণে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে না হতেই মেঘের দল এসে তাতে উত্তাপ ঢেলে দিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বঙ্গোপসাগর নিয়ে নতুন কিছুতথ্য দিয়েছে। তারা বলছে, বঙ্গোপসাগরে ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপল বা ভারত মহাসাগর দ্বিমেরু পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটা অনেকটা প্রশান্ত মহাসাগরের ‘এল নিনো’ ও ‘লা নিনার’ মতো একটা বিষয়। এর প্রভাবে ভারত মহাসাগর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে একদিকে সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম হয়ে ওঠে, অন্যদিকে পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠণ্ডা হয়ে যায়। ভারত মহাসাগরের তাপমাত্রার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের তাপমাত্রা বর্তমানে ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকছে, যা এই সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। নিঃসন্দেহে এটা কোনো ভালো লক্ষণ নয়। গত এক দশকে আমাদের ঋতুবৈচিত্র্যে কোনো স্থিতিশিলতা লক্ষ্য করা যায়নি। শীতের সময়ে শীত না থাকা, বর্ষায় বৃষ্টি না হওয়া এবং গরমে অসহনীয় তাপমাত্রা-এসবই এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী।

 

কিন্তু এই বিবর্ণ, রিক্ত, হতশ্রী জন্মভূমি আমার নয়। এই বঙ্গভূমি সহস্র বছরের এক শ্যামল প্রকৃতির অনুপম উপাখ্যান। কিন্তু এর যা কিছু ভালো তার অধিকাংশই আমরা হারিয়ে ফেলেছি। যেমন হারিয়েছি আমাদের উদ্ভিদঐতিহ্যকেও। অথচ মানুষের জীবনের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বৃক্ষের জীবনও আমাদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। আমাদের জীবনে উদ্ভিদের অবদান ও বন্ধুত্বের ভূমিকা নানাভাবে আলো ফেলতে পারে। বৃক্ষদের এমন আদর্শ জীবন আমাদের বদলেও দিতে পারে। বদলে দিতে পারে সমাজের চিত্রও। ফরাসী লেখক জাঁ গিওনোর ‘দি ম্যান হু প্লান্টেড ট্রিস’ গল্পটির কথা মনে পড়ে? এই অমর গল্পের মূল নায়ক একজন মেষ পালক, নাম অ্যালজার্ড বুফিয়ের। যিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে ফ্রান্সের এক বিজন ও রুক্ষ উপত্যকায় গাছ লাগিয়েছিলেন। তিনি প্রতিদিন শত শত ওক ও বার্চের বীজ বুনতেন পাহাড়ের ঢালু উপত্যকায়। এভাবেই ধীরে ধীরে একদিন সেই মরুময় উপত্যকা সহস্র বৃক্ষে সুশোভিত হয়ে ওঠে। বুফিয়ের একা একাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এমন অসাধ্য সাধন করেছিলেন। যে কোনো পরিবর্তনের জন্য মাত্র একজন নিষ্ঠাবান মানুষের উদ্যোগই বেশ বড়সড় ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের দেশে এখনো বুফিয়ের-এর মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে এমন অনেকেই আছেন যারা ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও নিভৃতে বৃক্ষায়নের কাজটি করে চলেছেন। তারা যেমন সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখছেন আবার দেখাচ্ছেনও। এঁরাই আমাদের বুফিয়ের।
ইচ্ছে করলেই আমরা এই দেশটাকে আবারো সবুজে মুড়িয়ে দিতে পারি। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে আমাদের এই ভূ-ভাগ তুলনামূলকভাবে অনেক নবীন। সে কারণে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় এ অঞ্চল এখনো ততটা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠেনি। এটা আমাদের জন্য একটা বড় সুযোগ। এই সুযোটাই যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। তবে একথা সত্যি যে মানুষ কখনো বন তৈরি করতে পারে না। বন তৈরি হয় প্রাকৃতির আপন নিয়মে। প্রকৃতির শত শত বছরের পৃষ্ঠপোষকতায় কেবল বনভূমি গড়ে উঠতে পারে, অন্য কোনোভাবে নয়। এ কারণেই মানুষ শুধু বৃক্ষায়নের কাজটিই করতে পারে। এ প্রেক্ষিতে বনায়ন শব্দটি আক্ষরিক অর্থে ভিত্তিহীন ও ভুয়া। বর্তমানে দেশে আশঙ্কাজনকহারে গাছপালার ঘনত্ব কমে যাবার প্রেক্ষাপটে আমরা ব্যাপকহারে বৃক্ষায়নের কাজটি করতে পারি। আমাদের মাটি এতই উর্বর যে কোথাও দুটি গাছ রোপণ করলে কয়েক বছর পর দেখা যায়, সেখানে আরো অসংখ্য গাছ আপনাআপনিই জন্মেছে। এটা আমাদের মাটির গুণ। সবচেয়ে বড় কথা সংরক্ষিত উপকুল দেখতে চাইলে গাছপালা লাগানোর ক্ষেত্রে সমগ্র উপকুলকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। উপকুলীয় অঞ্চলগুলো সংরক্ষিত থাকলে আমরা অনেকটাই নিরাপদে থাকব।

একটু ভালোভাবে খেয়াল করলেই দেখা যাবে, স্বল্প পরিসরের কোনো একটি পতিত স্থান হরেকরকম তৃণ-গুল্মে আচ্ছাদিত। এত স্বল্প পরিসরে এমন উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সত্যিই দুর্লভ। দেশজুড়ে একই চিত্র চোখে পড়বে। মৃত্তিকার আপন গুণই এখানে গাছপালার অফুরাণ প্রাণশক্তি। পুরনো দালান কোঠার ফাঁকফোকরে জন্ম নেয় অনেক পরজীবী; বট, অশ্বত্থ, ফার্ণ। একটি পুরনো টালির ছাদে দুএকটি স্থানে অনেকদিনের ধুলোবালি জমে খানিকটা পুরু হয়ে উঠেছে। সেখানেই দেখা গেল অনেকগুলো চারাগাছ জন্মেছে। উষ্ণমণ্ডলের বীজগুলো অপেক্ষাকৃত কষ্টসহিষ্ণু। এরা বংশবিস্তারের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে পারে। আমাদের দক্ষিণে নোনা জলের বন এবং বিল-হাওরের উদ্ভিদরাজিরও প্রজনন প্রক্রিয়া একই। বর্ষার উপচেপড়া পানিতে আশপাশের তৃণ-গুল্ম আপাত দৃষ্টিতে একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ে। কিন্তু পানি শুকিয়ে যেতে না যেতেই আবারো নবজন্মে উদ্বেলিত হয় নতুন প্রাণ। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে সবুজায়নের জন্য খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না। অথচ একবার শীতপ্রধান দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন। তাদের গ্রীষ্ম মাত্র তিন-চারমাস। আবার কোনো কোনো বছর গ্রীষ্ম উপভোগ করার সুযোগও হয় না। সেখানে যখন গ্রীষ্ম উঁকিঝুকি দিতে শুরু করে তখন থেকেই শুরু হয় বাগান সজ্জার কাজ। গোটা শীতকাল বাগানটা যখন বরফের নিচে চাপা থাকে তখন কি আর সেখানে কোনো প্রাণের স্পন্দন থাকে। ফলে গ্রীষ্মে ওদেরকে অনেকটা শূন্য থেকেই শুরু করতে হয়। ওরা দশটা গাছের পরিচর্যার জন্য যে অর্থ ব্যয় করে আমাদের একটি বাগানের জন্যও তা ব্যয় হয় না বা করা যায় না। প্রকৃতির এই অফুরাণ প্রাণসম্পদকে আমরা খুব সহজেই কাজে লাগাতে পারি।

 

লেখক: প্রকৃতি ও পরিবেশবিষয়ক লেখক, সাধারণ সম্পাদক তরুপল্লব

tarupallab@gmail.com

Header Ad

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে এবার জুটি বাধলেন বাংলাদেশের তারকা অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর জীবনকাহিনি নিয়ে এই সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মানসমুকুল পাল।

জানা গেছে, হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানাবেন নির্মাতা মানসমুকুল পাল। আগামীতে সেই সিনেমাতেই দেখা যাবে মিঠুনকে। শোনা যাচ্ছে, অভিনেতার বিপরীতে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশি অভিনেত্রী আফসানা মিমিকে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি নির্মাতা। তবে ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই পরিচালক চিত্রনাট্য লেখার আগে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন।

মূলত সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার আগে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসে থাকা জায়গাগুলো নিজে ঘুরে দেখতে চান মানসমুকুল। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করছি তাতে বাংলাদেশের একাধিক জায়গার উল্লেখ রয়েছে।

তাই ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার কথা আছে। সেই জায়গাগুলো নিজে দেখলে উপলব্ধি থাকবে, আর তাতে চিত্রনাট্য লেখার কাজও সহজ হবে।

শুধু জায়গা পরিদর্শন নয়, বাংলাদেশে এসে অভিনেত্রী আফসানা মিমির সঙ্গেও দেখা করবেন মানসমুকুল। তিনি এ-ও জানান, সিনেমার অধিকাংশ শুটিং বাংলাদেশে হবে। কিন্তু এখনই নয়। বর্তমানে মানসমুকুলের হাতে ৩টি সিনেমার কাজ রয়েছে। সেসব চলচ্চিত্র শেষ করে তবেই তিনি এই সিনেমার কাজ শুরু করবেন।

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান