শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫ | ১৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

শুভকাজের নামে পরিবেশ ধ্বংসের আয়োজন

আমাদের দেশে প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠনের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। নদী, পাহাড়, বন, খাল, বিল, হাওর-সবকিছুই আমাদের ভোগ করা দরকার। ফলে ধ্বংসের শেষপ্রান্তে এসে ঠেকেছে বন। দখল-দূষণ আর ভরাট হয়ে নদীও চরম বিপন্ন। এসব ক্ষেত্রে যা-কিছু অনিয়ম তার সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের বড় ধরনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমাজ ও সরকারের প্রভাবশালীদের অনৈতিক প্রভাব। এটি যে একটি আত্মঘাতি কাজ তা কারো উপলব্ধিতেই আসছে না। পরিবেশ দূষণের ফলাফল যেহেতু তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান নয়, সেহেতু বিষয়টি অনেকেই অনুভব করতে পারছে না। মূলত একারণেই প্রকৃতি ও পরিবেশবিষয়ক শিক্ষা প্রয়োজন। সর্বস্তরের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে কিছুটা হলেও শেষ রক্ষা হতে পারে।

সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে গ্রহণকরা কতিপয় পরিবেশ বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত আমাদের হতবাক করেছে। সরকার সবসময় বন ও পরিবেশ সংরক্ষণের কথা বললেও বাস্তবে এধরনের পদক্ষেপ চরম হঠকারী ও হতাশাজনক। একটি প্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়-মৌলভীবাজার জেলার সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ বনভূমি লাঠিটিলায় ৫ হাজার ৬৩১ একরজুড়ে সাফারি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে বন বিভাগ। জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের ওই বনভূমি সেখানকার একমাত্র সংরক্ষিত বন হিসেবে চিহ্নিত। এই বনে অসংখ্য প্রজাতির গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাস। আমরা জানি মৌলভীবাজারে এর আগে বর্শিঝোড়া ইকোপার্ক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক, মাধবকুণ্ড লেক, বাইক্কার বিলসহ বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। বছরে প্রায় পাঁচ লাখ পর্যটক সেখানে যান। পর্যটকদের জন্য হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ, রাস্তাসহ নানা অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলেই ওই বনভূমি ও জলাভূমিগুলোর জীববৈচিত্র্য হুমকিতে আছে বলে নানা গবেষণায় উঠে এসেছে। তার ওপর আবার কেন সাফারি পার্কের নামে এই পর্যটন কেন্দ্র? ৫৫ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট এই দেশে কয়টি সাফারি পার্ক প্রয়োজন?

সরকারের এমন অনাকাক্সিক্ষত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল লাঠিটিলা পরিদর্শন শেষে বলেছেন, সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক হলে বনের পরিবেশ বদলে যাবে। মানুষকে পুনর্বাসন করা সম্ভব। কিন্তু বনের পরিবেশ, জীবজন্তুকে পুনর্বাসন করা সম্ভব নয়। সাফারি পার্ক করতে হলে বিকল্প জায়গায় করা যেতে পারে। সাফারি পার্ক হোক। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ুক, বিনোদনের জায়গা বাড়ুক। কিন্তু তা সংরক্ষিত বনে নয়।

দেশে বিদ্যমান পরিবেশ আইন অনুযায়ী এ ধরনের বনে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। অথচ ৯৮০ কোটি টাকার সম্ভাব্য ব্যয় ধরে ওই সাফারি পার্ক নির্মিত হলে সেখান পর্যটকদের জন্য নানা অবকাঠামো, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, উপকেন্দ্রসহ ভারী অবকাঠামো নির্মিত হবে। আর সেখানে বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ দর্শনার্থী আসবেন বলে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তাহলে এটি কি আর বন হিসেবে গন্য হবে? লাঠিটিলার বুনো আবহ কি টিকে থাকবে?

সর্বশেষ একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, পরিবেশবাদীদের মতামত উপেক্ষা করে প্রকল্প এলাকার মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ শুরু করেছে একটি নকশা প্রস্তুতকারী সংস্থা!

এবার দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল থেকে সর্বদক্ষিণে চোখ ফেরানো যাক। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আরেকটি প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ করতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন ঝিলংজা ‘রক্ষিত বনভূমির’ ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ এটি প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন একটি বনভূমি। জানা যায় যে, বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ দিয়েছে। ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার একে রক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করে। বন বিভাগ এত বছর ধরে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। বিপন্ন এশীয় বন্য হাতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণীর নিরাপদ বসতি এই ঝিলংজা বনভূমি। বন আইন অনুযায়ী, পাহাড় ও ছড়াসমৃদ্ধ এই বনভূমি কোনো সংস্থার জন্য ইজারা বা বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম নেই। অপকর্মটি জায়েজ করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দপত্রে দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এই বনভূমিকে অকৃষি খাসজমি হিসেবে দেখানো হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় বলেছে, বরাদ্দ দেওয়া জমির ৪০০ একর পাহাড় ও ৩০০ একর ছড়া বা ঝরনা। তারা জমির মূল্য ধরেছে ৪ হাজার ৮০৩ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু একাডেমির জন্য প্রতীকী মূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা। সরকার কর্তৃক জোর-জবরদস্তি ও অনৈতিক প্রক্রিয়ায় দেশের প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংসের ক্ষেত্রে এর চেয়ে বড় উদাহারণ আর কি হতে পারে!

আমরা এখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছি। কিন্তু গত ৫০ বছরে এক্ষেত্রে আমাদের অর্জনের চেয়ে বিসর্জন বেশি। আমরা হারিয়েছি আমাদের সবগুলো নিবিড় বন, প্রাকৃতিক জলাধার। সবই এখন নিয়ন্ত্রিত, বিবর্ণ, হতশ্রী। বেদখল আর অপরিকল্পিত কর্মযজ্ঞের চাপে বিলীন হয়েছে আমাদের প্রতিবেশগত ঐতিহ্য। তবে এসবের অনেক কুফলও আমরা পেতে শুরু করেছি। আন্তর্জাতিকভাবে তো বটেই জাতীয়ভাবেও আমরা কঠিন পরিবেশ সঙ্কটের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছি। এবছর আমাদের প্রকৃতিতে অস্থিতিশীল শীতের প্রভাব তারই একটি বড় নজির।
দ্বিমেরু প্রভাবে এবার শীতের মধ্যেও বঙ্গোপসাগর হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা মূল ভূখণ্ডের চেয়ে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে, হিমালয় থেকে এবার অপেক্ষাকৃত শীতল বাতাস উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করে সারা দেশে ছড়িয়ে হাড়কাঁপানো শীত আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে বাড়তি তাপের কারণে ফুটন্ত পানির ধোঁয়ার মতো ঘন মেঘ তৈরি হচ্ছে। উপকূল দিয়ে আসা উষ্ণ মেঘ আর উত্তরাঞ্চল দিয়ে আসা হিমেল বাতাসের মধ্যে রীতিমতো লড়াই শুরু হয়েছে। এ কারণে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে না হতেই মেঘের দল এসে তাতে উত্তাপ ঢেলে দিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বঙ্গোপসাগর নিয়ে নতুন কিছুতথ্য দিয়েছে। তারা বলছে, বঙ্গোপসাগরে ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপল বা ভারত মহাসাগর দ্বিমেরু পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটা অনেকটা প্রশান্ত মহাসাগরের ‘এল নিনো’ ও ‘লা নিনার’ মতো একটা বিষয়। এর প্রভাবে ভারত মহাসাগর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে একদিকে সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম হয়ে ওঠে, অন্যদিকে পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠণ্ডা হয়ে যায়। ভারত মহাসাগরের তাপমাত্রার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের তাপমাত্রা বর্তমানে ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকছে, যা এই সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। নিঃসন্দেহে এটা কোনো ভালো লক্ষণ নয়। গত এক দশকে আমাদের ঋতুবৈচিত্র্যে কোনো স্থিতিশিলতা লক্ষ্য করা যায়নি। শীতের সময়ে শীত না থাকা, বর্ষায় বৃষ্টি না হওয়া এবং গরমে অসহনীয় তাপমাত্রা-এসবই এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী।

 

কিন্তু এই বিবর্ণ, রিক্ত, হতশ্রী জন্মভূমি আমার নয়। এই বঙ্গভূমি সহস্র বছরের এক শ্যামল প্রকৃতির অনুপম উপাখ্যান। কিন্তু এর যা কিছু ভালো তার অধিকাংশই আমরা হারিয়ে ফেলেছি। যেমন হারিয়েছি আমাদের উদ্ভিদঐতিহ্যকেও। অথচ মানুষের জীবনের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বৃক্ষের জীবনও আমাদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। আমাদের জীবনে উদ্ভিদের অবদান ও বন্ধুত্বের ভূমিকা নানাভাবে আলো ফেলতে পারে। বৃক্ষদের এমন আদর্শ জীবন আমাদের বদলেও দিতে পারে। বদলে দিতে পারে সমাজের চিত্রও। ফরাসী লেখক জাঁ গিওনোর ‘দি ম্যান হু প্লান্টেড ট্রিস’ গল্পটির কথা মনে পড়ে? এই অমর গল্পের মূল নায়ক একজন মেষ পালক, নাম অ্যালজার্ড বুফিয়ের। যিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে ফ্রান্সের এক বিজন ও রুক্ষ উপত্যকায় গাছ লাগিয়েছিলেন। তিনি প্রতিদিন শত শত ওক ও বার্চের বীজ বুনতেন পাহাড়ের ঢালু উপত্যকায়। এভাবেই ধীরে ধীরে একদিন সেই মরুময় উপত্যকা সহস্র বৃক্ষে সুশোভিত হয়ে ওঠে। বুফিয়ের একা একাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এমন অসাধ্য সাধন করেছিলেন। যে কোনো পরিবর্তনের জন্য মাত্র একজন নিষ্ঠাবান মানুষের উদ্যোগই বেশ বড়সড় ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের দেশে এখনো বুফিয়ের-এর মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে এমন অনেকেই আছেন যারা ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও নিভৃতে বৃক্ষায়নের কাজটি করে চলেছেন। তারা যেমন সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখছেন আবার দেখাচ্ছেনও। এঁরাই আমাদের বুফিয়ের।
ইচ্ছে করলেই আমরা এই দেশটাকে আবারো সবুজে মুড়িয়ে দিতে পারি। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে আমাদের এই ভূ-ভাগ তুলনামূলকভাবে অনেক নবীন। সে কারণে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় এ অঞ্চল এখনো ততটা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠেনি। এটা আমাদের জন্য একটা বড় সুযোগ। এই সুযোটাই যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। তবে একথা সত্যি যে মানুষ কখনো বন তৈরি করতে পারে না। বন তৈরি হয় প্রাকৃতির আপন নিয়মে। প্রকৃতির শত শত বছরের পৃষ্ঠপোষকতায় কেবল বনভূমি গড়ে উঠতে পারে, অন্য কোনোভাবে নয়। এ কারণেই মানুষ শুধু বৃক্ষায়নের কাজটিই করতে পারে। এ প্রেক্ষিতে বনায়ন শব্দটি আক্ষরিক অর্থে ভিত্তিহীন ও ভুয়া। বর্তমানে দেশে আশঙ্কাজনকহারে গাছপালার ঘনত্ব কমে যাবার প্রেক্ষাপটে আমরা ব্যাপকহারে বৃক্ষায়নের কাজটি করতে পারি। আমাদের মাটি এতই উর্বর যে কোথাও দুটি গাছ রোপণ করলে কয়েক বছর পর দেখা যায়, সেখানে আরো অসংখ্য গাছ আপনাআপনিই জন্মেছে। এটা আমাদের মাটির গুণ। সবচেয়ে বড় কথা সংরক্ষিত উপকুল দেখতে চাইলে গাছপালা লাগানোর ক্ষেত্রে সমগ্র উপকুলকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। উপকুলীয় অঞ্চলগুলো সংরক্ষিত থাকলে আমরা অনেকটাই নিরাপদে থাকব।

একটু ভালোভাবে খেয়াল করলেই দেখা যাবে, স্বল্প পরিসরের কোনো একটি পতিত স্থান হরেকরকম তৃণ-গুল্মে আচ্ছাদিত। এত স্বল্প পরিসরে এমন উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সত্যিই দুর্লভ। দেশজুড়ে একই চিত্র চোখে পড়বে। মৃত্তিকার আপন গুণই এখানে গাছপালার অফুরাণ প্রাণশক্তি। পুরনো দালান কোঠার ফাঁকফোকরে জন্ম নেয় অনেক পরজীবী; বট, অশ্বত্থ, ফার্ণ। একটি পুরনো টালির ছাদে দুএকটি স্থানে অনেকদিনের ধুলোবালি জমে খানিকটা পুরু হয়ে উঠেছে। সেখানেই দেখা গেল অনেকগুলো চারাগাছ জন্মেছে। উষ্ণমণ্ডলের বীজগুলো অপেক্ষাকৃত কষ্টসহিষ্ণু। এরা বংশবিস্তারের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে পারে। আমাদের দক্ষিণে নোনা জলের বন এবং বিল-হাওরের উদ্ভিদরাজিরও প্রজনন প্রক্রিয়া একই। বর্ষার উপচেপড়া পানিতে আশপাশের তৃণ-গুল্ম আপাত দৃষ্টিতে একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ে। কিন্তু পানি শুকিয়ে যেতে না যেতেই আবারো নবজন্মে উদ্বেলিত হয় নতুন প্রাণ। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে সবুজায়নের জন্য খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না। অথচ একবার শীতপ্রধান দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন। তাদের গ্রীষ্ম মাত্র তিন-চারমাস। আবার কোনো কোনো বছর গ্রীষ্ম উপভোগ করার সুযোগও হয় না। সেখানে যখন গ্রীষ্ম উঁকিঝুকি দিতে শুরু করে তখন থেকেই শুরু হয় বাগান সজ্জার কাজ। গোটা শীতকাল বাগানটা যখন বরফের নিচে চাপা থাকে তখন কি আর সেখানে কোনো প্রাণের স্পন্দন থাকে। ফলে গ্রীষ্মে ওদেরকে অনেকটা শূন্য থেকেই শুরু করতে হয়। ওরা দশটা গাছের পরিচর্যার জন্য যে অর্থ ব্যয় করে আমাদের একটি বাগানের জন্যও তা ব্যয় হয় না বা করা যায় না। প্রকৃতির এই অফুরাণ প্রাণসম্পদকে আমরা খুব সহজেই কাজে লাগাতে পারি।

 

লেখক: প্রকৃতি ও পরিবেশবিষয়ক লেখক, সাধারণ সম্পাদক তরুপল্লব

tarupallab@gmail.com

Header Ad
Header Ad

চাঁদ দেখা গেছে, সৌদি আরবে শনিবার থেকে রোজা শুরু

ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে হিজরি ১৪৪৬ সালের রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল শনিবার (১ মার্চ) থেকে দেশটিতে রোজা শুরু হবে।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা ৫৭ মিনিটের দিকে সৌদি আরবের মসজিদভিত্তিক ওয়েবসাইট “ইনসাইড দ্য হারামাইন” চাঁদ দেখতে পাওয়ার খবর নিশ্চিত করে। সৌদিতে চাঁদ দেখার জন্য কয়েকটি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। রাজধানী রিয়াদের কাছের সুদাইর ও তুমাইর পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে চাঁদ দেখার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে তুমাইরের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সেখানে খালি চোখে চাঁদ দেখা সম্ভব হয়নি। তবে সুদাইর কেন্দ্রের আকাশ তুলনামূলক পরিষ্কার থাকায় স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁদের অনুসন্ধান শুরু হয় এবং ৫টা ৫৭ মিনিটের দিকে চাঁদ দেখার খবর পাওয়া যায়।

এর আগে, সৌদি আরবের সাধারণ মানুষকে খালি চোখে বা দূরবীন দিয়ে চাঁদ দেখার আহ্বান জানানো হয় এবং কেউ চাঁদ দেখতে পেলে নিকটস্থ কোর্টে জানাতে বলা হয়।

এদিকে, বিশ্বে প্রথম রমজান শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ইন্দোনেশিয়াও একই ঘোষণা দেয়, যদিও প্রতিবেশী ব্রুনাই ও মালয়েশিয়ায় চাঁদ দেখা না যাওয়ায় সেখানে রমজান শুরু হবে ২ মার্চ। এছাড়া ফিলিপাইনও জানিয়েছে, তাদের দেশে আজ চাঁদ দেখা যায়নি।

অন্যদিকে, আফ্রিকার তানজানিয়া ও ইথিওপিয়ায় চাঁদ দেখা গেছে এবং ফ্রান্সও শনিবার থেকে রমজান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

রমজানে দিনে হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধসহ ‘অশ্লীলতা’ বন্ধের আহ্বান জামায়াত আমিরের

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

রমজান মাসে দিনের বেলা হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখা ও সব ধরনের "অশ্লীলতা" বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রমজান মুসলমানদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের মাস। এই মাসে সমাজকে কোরআনের শিক্ষার আলোকে গড়ে তুলতে হবে।

জামায়াত আমির আরও বলেন, পবিত্র মাহে রমজান রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আসে। এ মাসের শেষ ১০ দিনের মধ্যে রয়েছে পবিত্র লাইলাতুল কদর, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। রমজান তাকওয়া, সহনশীলতা ও পারস্পরিক সহানুভূতির মাস। তাই এ মাসে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীলতা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

Header Ad
Header Ad

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতায় ইংল্যান্ডের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন বাটলার

জস বাটলার। ছবি: সংগৃহীত

সাদা বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন জস বাটলার। চলমান আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলের ব্যর্থতার পর শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান।

বাটলার বলেন, "ইংল্যান্ড অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছাড়ছি। আমার মতে, এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত এবং দলের জন্যও ভালো সিদ্ধান্ত। আশা করি, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের অধীনে নতুন নেতৃত্ব দলকে সামনে এগিয়ে নেবে।"

টুর্নামেন্টে পরপর দুই ম্যাচ হেরে ইংল্যান্ডের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়। বিশেষ করে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ রানের পরাজয়ের পর বাটলারের নেতৃত্ব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এর আগে, ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়েছিল ইংল্যান্ড, যা তার অধিনায়কত্বে দলের দ্বিতীয় বড় ব্যর্থতা।

 

জস বাটলার। ছবি: সংগৃহীত

৩৪ বছর বয়সী উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান বাটলার ২০২২ সালে ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতান। তবে সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স বিবেচনায় তিনি অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) নতুন অধিনায়ক খুঁজতে কাজ শুরু করবে। সম্ভাব্য নেতৃত্বের তালিকায় রয়েছেন হ্যারি ব্রুক, যিনি এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাটলারের ডেপুটি ছিলেন। তবে ইসিবি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চাঁদ দেখা গেছে, সৌদি আরবে শনিবার থেকে রোজা শুরু
রমজানে দিনে হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধসহ ‘অশ্লীলতা’ বন্ধের আহ্বান জামায়াত আমিরের
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতায় ইংল্যান্ডের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন বাটলার
স্বামীকে হত্যার পর বুকে ‘সরি জান, আই লাভ ইউ’ লিখে আত্মহত্যা
শিল্পকলার মহাপরিচালক পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা জামিল আহমেদের
অবৈধ বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ অমিত শাহর
ক্ষমতায় কে যাবে, তা ভারত নয়, নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ: হাসনাত
নতুন দলের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা থাকবে: জামায়াতের সেক্রেটারি
ভারত-পাকিস্তানপন্থীর কোনো ঠাঁই বাংলাদেশে হবে না: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নির্বাচনের গুরুত্ব অন্তর্বর্তী সরকার বুঝতে পারছে না : দুদু
খালেদা জিয়ার মতো সাজলেন কিশোরী, ছবি তুলতে উৎসুক জনতার ভিড়!
ম্যানসিটিতে যোগ দিলেন নতুন মেসি
একটি দল বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে বলে সতর্ক করেছেন তারেক রহমান
অমর একুশে বইমেলার পর্দা নামছে আজ
নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিএনপির দুই নেতা
সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার পাবেন জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যরা
টাঙ্গাইলে প্রথমবার ‘বই বিনিময়’ সংগ্রহ করা যাচ্ছে প্রিয় লেখকের পছন্দের বই
বর্তমান সংবিধান ফেলে দিয়ে নতুন সংবিধান গ্রহণযোগ্য নয়: ড. কামাল হোসেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ ১০টি পদ চূড়ান্ত, থাকছেন যারা
দলে দলে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আসছেন ছাত্র-জনতা