বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সমাজের অধ:পতনের জন্য আমরা সবাই কমবেশি দায়ী

ময়মনসিংহের একজন শিক্ষক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‌‘ক্লাসরুম কন্ট্রোল করা যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করার মতো অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লাসের সামনের সারির অল্প কয়েকজন কিছু শিক্ষকদের কথা শুনলেও পেছনের দিকের সবাই নিজেদের ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় ব্যস্ত থাকে। বারবার অনুরোধ করার পরেও এক দুই মিনিটের জন্য শান্ত হলেও শিক্ষক যখন আবার পড়াতে শুরু করেন, তারাও আবার পূর্বের মতো নিজেদের আলাপচারিতায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।’ তিনি আরও লিখেছেন ‘আমরাও তো একদিন ছাত্র ছিলাম। শিক্ষকরা ক্লাসে আসলে সবাই শান্ত হয়ে যেতাম। স্যার যা ক্লাসে বলতেন তাই করতাম। আজকের এই উল্টো চিত্রের জন্য দায়ী কে? শিক্ষার্থীরা নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে চায় না, এলেও ক্লাসরুমে যেতে চায় না, ক্লাসরুমে যারা যায় তারাও ক্লাস লেকচার শোনার প্রতি মনেযোগী হয় না। লেকচার শোনার পরিবর্তে স্মার্টফোন ও ফেসবুকে চ্যাটংয়ে অনেক বেশি মনোযোগী।’ সমাজের অসংগতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার প্রভাব সবই উঠে এসেছে জনাব শিক্ষকের লেখায়। শিক্ষার্থীরা বর্তমানে পড়লেও পাস করে, না পড়লেও পাস করে উচ্চতর গ্রেডসহ। সেখানে তারা পড়বে কেন? আর শ্রেণিকক্ষে লেকচারের চেয়ে ফেসবুক ইউটিউবের আকর্ষণ অনেক বেশি ---ঐ বয়সের এবং বর্তমান সমাজের বাসিন্দা হয়ে তারা কেন ক্লাস লেকচার শুনবে। তারা যদি জানে বা বুঝে যে, তাদের শ্রেণিকক্ষের পড়া না পড়লে, শিক্ষকের ক্লাস না করলে কোনভাবেই পাস করতে পারবে না। আবার পরীক্ষায় কোন ধরনের অসদুপায় অবলম্বন করা যাবে না। এগুলোর কোনটিই নেই। তাই তারা ক্লাস করেনা, পড়েনা।

পরীক্ষার জন্য মোটেই চিন্তিত নয়। এগুলোর সব সমাধান করা আলাদাভাবে একজন শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই উক্ত শিক্ষক এসব কথা লিখেছেন যা আজ প্রায় সকল শিক্ষকেরই কথা।
প্রকৃতঅর্থে যদি শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয় তাহলে ফলাফল যা হয় বা হবে তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দেখানো হয়েছে। ঢাবির ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ৯০শতাংশ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। পাসের হার ১০দশমিক ৩৯শতাংশ। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১লাখ ১০ হাজার ৩৭৪জন শিক্ষার্থী আর উত্তীর্ণ হয়েছে ১১হাজার ৪৬৬জন। ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষায় কৃতকার্যের হার ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ আর অকৃতকার্য ৯১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এটিই প্রকৃত চিত্র। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সঠিকভাবে নেওয়া হলে ফল এরকমই দাঁড়াবে। কিন্তু এ নিয়ে কারুর কোন রা নেই।

জুন মাসের ২৭ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরা কয়কটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিল। অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হলো তা এরকমই। দশম শ্রেণির ৮৮জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনও যখন কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিল না, প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলাম এসএসসিতে তার বিদ্যালয়ের গতবারের ফল কী? তিনি বললেন শতভাগ পাস। কিছু না পারলেও, না পড়লেও যখন শতভাগ পাস তখন শিক্ষার্থীরা পড়বে কেন?

অন্য একজন শিক্ষক লিখেছেন, ‘জীবনে অসংখ্যবার শিক্ষকের ধমক ও বকা খেয়েছি, জোড়াবেতের ঘা খেয়েছি, সকলের সামনে কান ধরে বেঞ্চের ওপর দাঁড়াতে হয়েছে, দুই আঙুলের মধ্যে পেন্সিল ঢুকিয়ে চেপে হাতের আঙুল শিক্ষক ব্যাথা করে দিয়েছেন, কান টেনে লাল করে দিয়েছেন, চুলের কলি ও পরের দিকে টেনে ধরে পুরো কান ও মাথা ব্যাথা করে দিয়েছেন। তারপরও শিক্ষকের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করিনি কখনো। এমনকি বাড়িতে যেয়ে বাবা-মাকেও শাস্তির কথা ভয়ে ও লজ্জায় বলতে পারিনি কখনো। কিন্তু আজ আমরা শিক্ষার্থীদের ধমকের সুরে কথা বলতে পারি না। অনুরোধ করে বললেও তারা আমাদের পাত্তা দেয় না ‘

সম্প্রতি যশোর , সাতক্ষীরা ও খুলনার কিছু বিদ্যালয় ঘুরে দেখেছি, শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি, শ্রেণিকক্ষে গিয়েছি। শিক্ষকদের কথা ‘আমাদের হাত থেকে বেত নিয়ে গেছে তাই শিক্ষার্থীরা এতটা বেয়াদপ হয়েছে।’ ওপরের কোন কথাই কিন্তু আদর্শিক নয়। যেমন পূর্বের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের অনেক শাস্তি দিতেন, তারপর লেখা পড়া শেখাতেন। ঐ সময়কার শিক্ষকদের নৈতিকতা ছিল অনেক উন্নত তাই তারা শিক্ষার্থীদের শাররীরিক শাস্তি প্রদান করলেও সমাজের কেউ কিছু তাদের বলতেন না। আর শিক্ষার্থীরাও এতটা স্মার্ট কিংবা নিজেদের অধিকার নিয়ে এতটা সচেতন ছিল না। তাই মনে করা হতো পড়াশুনা শাস্তির মাধ্যমেই করাতে হয়। বিষয়টি ঠিক নয়। ছোট একজন শিক্ষার্থীরও আত্মসম্মান আছে যা ঐ যুগের শিক্ষকরা বুঝতেন না। তারা মনে করতেন শাস্তি না দিয়ে শিক্ষা হয় না। তারা পেশার প্রতি অত্যন্ত ডেডিকেটেড ছিলেন কিন্তু শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ে আধুনিককালের মতো এত স্মার্ট ছিলেন না। আর বর্তমানে শিক্ষার্থীদের যে অবস্থা হয়েছে সেটিও কোনভাবে কাম্য নয়।

একজন শিক্ষক লিখেছেন, ‘আমি শিক্ষক, শিক্ষাদানের জন্য আমি উপযুক্ত পরিবেশ চাই। আমাকে শিক্ষাদানের উপযুক্ত পরিবেশ দিন, শ্রেণিকক্ষে আমি আমার জ্ঞানের সবটুকু বিতরণে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকব।’ এখানেই প্রশ্ন। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষকও সমাজের অংশ, শিক্ষার্থীরাও সমাজের অংশ। কে আমাদের পরিবেশ তৈরি করে দিবে? আমাদের রাজনীতিবেদরা? এ সমাজ, এ দেশের রাজনীতি, শিক্ষা, শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবই আমাদের জানা। তারপরেও আশার কথা হচেছ আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের অন্তত সালাম দেয়, এখনও অনেক জায়গায় পা ছুয়ে সালাম দেয়। শিক্ষকের সামনে কখনও সিগারেট ধরায় না। আমার মনে আছে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজে শিক্ষকতা করে এসেছি বেশ ক’ বছর আগে। একদিন রাতের বেলা ফার্মগেটে প্রাক্তন এক শিক্ষার্থীর সাথে হঠাৎ দেখা। ছেলেটি সিগারেট ফুঁকছিল। আমাকের দেখার সাথে সাথে সিগারেট পায়ের নিচে দ্রুত পিসে ফেলল এবং দ্রুতই সালাম দিল। সে এখন আর আমার শিক্ষার্থী নয়, আমিও তার শিক্ষক নই কিন্তু এই আচরণ তো এখনও করে। আবার নকল ধরার অপরাধে শিক্ষককে ছুরিকাঘাত করেছে এমন ছাত্র ঐ যুগেও ছিল, এ যুগে তো আছেই।

আমরা দেখলাম নড়াইলের মির্জাপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা গলায় দিয়ে ঘোরানো হয়েছে। কাজটি যিনি সংগঠিত করতে ভূমিকা রেখেছেন তিন স্বপন কুমার বিশ্বাসের এক সময়ের ছাত্র। নড়াইলে মির্জাপুরে ওই কলেজের অধ্যক্ষের পদটি নিয়ে লড়াই চলছিল অনেক দিন। এ দুই স্থানে ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে। রাজনীতিকে ব্যবহার করা হয়েছে। সাভারের আশুলিায়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তারই স্কুলের ছাত্র বখাটে জিতু। সে ছাত্রীদের উত্যক্ত করত। তাকে শাসন করার অপরাধে প্রাণ হারিয়েছেন শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার। তিনি তো একজন আদর্শ শিক্ষকের দায়িত্বই পালন করেছেন কিন্তু তার ফল হচ্ছে এই। উৎপল স্যার তার কলেজে একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে খ্যাত ছিলেন। তিনি সেখানে প্রতিষ্ঠানের শৃংখলা নিয়ন্ত্রণের কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকায় সব ছাত্রছাত্রীর নিরাপত্তা, শিষ্টাচার, নৈতিকতা ও আদর্শ শিক্ষা নিশ্চিত করাতেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে তার শিক্ষণ কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা ছিল অনেক আন্তরিক। শিক্ষার্থীদের মাঝে তার গ্রহণযোগ্যতা তুঙ্গে। কিন্তু এই সমাজ তাকে কি দিলো?বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, কলেজের অধ্যক্ষ জানেন তার চেয়েও বেশি শক্তিশালী তারই শিক্ষাঙ্গনের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্র-সংগঠনের সভাপতি। ইচ্ছা করলে ওই সভাপতি তাকে বিপদে ফেলতে পারেন। কাজেই ভিসি ও অধ্যক্ষদের ইদানিংকালে প্রধানশিক্ষকদেরকেও সেভাবেই প্রশাসন চালাতে হয়। তারপরেও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানপ্রধান অনেক কষ্টে, অনেক ত্যাগ স্বীকার করে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এভাবে সবাইকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। অন্যায়কারীদের রক্তচক্ষু দেখে ভীত হলে, হাল ছেড়ে দিলে কিংবা আশাহত হলে চলবে না। তাই বলছি যে শিক্ষক লিখেছেন যে, শিক্ষার্থীরা তাদের লেকচার শোনেনা। এখন কিন্তু সেই লেকচারের দিন আর নেই। এখন শিক্ষার্থীদের কিভাবে, কতভাবে শ্রেণিকার্যক্রমে অংশগ্রহণ করানো যায় সেটি করাতে হবে, সেটি নিয়ে ভাবতে হবে।

নড়াইলে দুঃক্ষজনক ঘটনাটার পর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কোনভাবেই মুঠাফোন আনতে পারবে না বলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এভাবেই অথরিটি নিয়ে কাজ করতে হয়। তব, ঘটনা ঘটে যাবার পর তাদের টনক নড়ে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা --অনেককেই দেখেছি তাদের উৎসাহ শিক্ষক নিয়োগ, কমিটি গঠন ইত্যাদি বিষয়ে অর্থাৎ বৈষয়িক বিষয় যেখানে জড়িত ওনারাও সেখানে বেশি জড়িত। একাডেমিক বিষয় গোল্লায় যাচ্ছে, শিক্ষাদান কেমন হচ্ছে ইত্যাদি বিষয়ে তাদের আগ্রহ নেই বললেই চলে। আর এগুলো করতে হলে তো নিজেদের পড়াশুনা করতে হবে, সেই সময় তাদের কই। আর পড়াশুনা করলে তো আর প্রশাসক বনে যায়না, তাই তারাও প্রশাসক হতে চান, একাডেমিক নয়। আর তাই সমাজও চলছে সেভাবে।

শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক লাঞ্জনার ঘটনাবলি সমাজ ও রাষ্ট্রে গভীর ক্ষতের বহি:প্রকাশ। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে আমাদের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে ছাত্র রাজনীতি হয়ে ওঠে সহিংস। এখন ছাত্ররজানীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে শিক্ষক রাজনীতি এবং লাল, নীল, গোলাপি, সাদা-নানা বর্ণে বিভক্ত হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জাতীয় রাজনীতির রাজনৈতিক দলে অঙ্গ সংগঠন হিসেবে নিজেদের পরিচিত করছেন। কাজেই সমাজকে দোষ দিয়ে লাভ কী? পুরো শিক্ষাব্যবস্থায় শিকড় গেড়েছে অনৈতিকতা, সেটি প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কি হচ্ছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র অঙ্গনে যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে , যে পেশিশক্তির মহড়া ও চড় দখলের খেলা চলছে সেগুলো কি কেউ কোনভাবে মেনে নিতে পারে? তবে, এসব বিষয়ে শিক্ষকদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি বাদ দিয়ে। কখনও রাজনীতিবিদ কিংবা প্রভাবশালীদের দিকে তাকিয়ে শিক্ষাঙ্গনে প্রকৃত শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা কতটা কাজে দিবে সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। কাজেই শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে শুরু করতে হবে নীতি নৈতিকতার শিক্ষা, আধুনিক শিক্ষা, আকর্ষণীয় শিক্ষাদান ও উন্নত ব্যক্তিত্ব।

আমাদের দেশের পিতামাতারা সন্তানকে মেধাবী হিসেবে দেখতে চান, সেটি তো সব বাবা-মাই চান এবং চাবেন কিন্তু সাথে সাথে তাদের সন্তান একজন আদর্শ শিক্ষার্থী, আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠছে কিনা সেটি দেখাও একান্ত কর্তব্য। কারণ সমাজের যে পচন ধরেছে এটি শুধুমাত্র রাজনীতি, শুধুমাত্র সমাজ কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা পুলিশকে দোষারোপ করলে হবে না। সমাজের এখন যা অবস্থা হয়েছে তা কিন্তু কারুরই নিয়ন্ত্রণে নেই। কাজেই যার যার অবস্থান থেকে, প্রতিটি পরিবার থেকে নৈতিকতার শিক্ষা, ধৈর্য্যে ধরার শিক্ষা, মানবিকতা শেখাতে হবে। দোষ শুধু কারুর একার ঘাড়ে চাপালে আমরা মুক্তি পাব না।

 



লেখক: কান্ট্রি ডিরেক্টর- ভলান্টিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ ( ভাব)
সাবেক শিক্ষক- ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ক্যাডেট কলেজ, রাজউক কলেজ, বাউবি এবং শিক্ষা বিশেষজ্ঞ-ব্র্যাক শিক্ষা

 

 

 

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত