মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাজেট হয়নি
এবারের বাজেট হয়েছে ব্যবসায়ীর বাজেট। এটিকে আমি সোজা কথায় আমলা দ্বারা প্রণীত বাজেটই বলবো। আমাদের অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের ১০ জন শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একজন। এবার বাজেট তৈরি করেছে আমলারা। কোনো অর্থনীতিবিদ বাজেট তৈরি করেনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চেতনার লক্ষ্যে এই বাজেট হয়নি। বাজেট হবার পরেই বাজারে দাম বেড়ে গিয়েছে। আজকে আমি নিজে বাজারে গিয়েছিলাম। দেখেছি সবকিছুর দাম বেড়ে গিয়েছে। আমি চাই বাজেটের মাধ্যমে মানুষের পেটে এবং পকেটে স্বস্তি ফিরে আসুক। তাজউদ্দীনের তিনটি বাজেট এবং ডক্টর মল্লিকের একটি বাজেট, এই ৪টি বাজেট ছিল মানুষের জন্য তৈরি করা বাজেট।
ড. মল্লিক ইতিহাসবিদ ছিলেন, অর্থনীতিবিদ নয়। তবে তিনি বাজেট ভাল বুঝতেন। এরপর থেকে কেউ বাজেট ভাল বোঝেনি। এবারেও আমার মনে হচ্ছে উপর মহল থেকে কেউ বাজেট বুঝে শুনে করেনি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। আয় ব্যয়ের হিসাব এই বাজেট নয়। বাজেটে দর্শন থাকে, সেই দর্শন আমরা দেখিনি। মধ্যবিত্তের পেটে পিঠে সজোরে লাঠি পড়েছে এই বাজেটে। সরকার নিজে থেকে দাম বাড়িয়েছে এবং সব জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। সরকার সবকিছু বাড়িয়ে চলার নীতিতে চলছে। সরকারের এই ধরণের ব্যয় বাহুল্য জনগণের জন্য পীড়াদায়ক।
শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বেড়েছে। তবে আমার কথা শিক্ষাখাতে বরাদ্দ যাই থাকুক না কেন, সেই বরাদ্দকৃত অর্থ যেন সঠিকভাবে ব্যয় হয়। বর্তমান সময়ে শিক্ষাখাত অত্যন্ত দুনীতি পরায়ণ এখন। সরকারের কারণে, রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার কারণে, শিক্ষাখাতের ব্যবস্থাপনায় আছে অসুস্থ মানুষেরা। কাজেই শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কত হচ্ছে না হচ্ছে উন্নয়ন তার উপরে নির্ভরশীল নয়। যা বরাদ্দ আছে, তা সঠিকভাবে ব্যয় হচ্ছে কি না! সঠিক লক্ষ্য অর্জনের দিকে যাচ্ছে কি না! সেটি আগে দেখতে হবে। কোভিড পরবর্তী সময়ে প্রণীত এই বাজেটে দূরদর্শিতার অভাব এবং যথেষ্ট পরিমানে ঘাটতি আছে বলে আমি মনে করি।
লেখক: শিক্ষাবিদ ও ইতিহাসবিদ