শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

আবেদ খান: এক আদর্শের নাম

মুক্তচিন্তা ও অসাম্প্রদায়িকতার জগতে এক অনন্য নাম আবেদ খান। তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদে প্রতিবাদী, নীতি-নৈতিকতায় আপোসহীন এবং মানবতার কাছে নতজানু। এই চরম সুবিধাবাদী সমাজে মানুষ ছুটছে সুবিধার দিকে, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থে, হয়ে যাচ্ছে আঙুল ফুলে কলাগাছ। কিন্তু এই চরম সুবিধাবাদ আবেদ খানকে স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবার মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর ভক্ত। আওয়ামী লীগ দীর্ঘকাল ধরে ক্ষমতায়। তিনি যদি সুবিধাবাদী হতেন, তাহলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনেক কিছুই লাভ করতে পারতেন। তিনি নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিতে পারেননি বলে তা করতে পারেননি। বরং টাকার অভাবে তিনি তার প্রত্রিকা ‘দৈনিক জাগরণ’ চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতে আবেদ খান পথিকৃত।

তিনি ১৯৬২ সালে ১৭ বছর বয়সে সাংবাদিকতা জগতে হাতেখড়ি নেন এবং দৈনিক জেহাদের সহ-সম্পাদক হন। ১৯৬৩ সালে হন দৈনিক সংবাদের সহ-সম্পাদক। ১৯৬৪ সালে সহ-সম্পাদক হিসেবে দৈনিক ইত্তেফাকে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সন পর্যন্ত প্রধান প্রতিবেদক, কলামিস্ট হিসেবে লেখালেখি করেন, শিফট ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দৈনিক ভোরের কাগজ (২০০৩-২০০৫), দৈনিক যুগান্তর (২০০৫-২০০৬), দৈনিক সমকাল (২০০৬-২০১০) এবং দৈনিক কালের কণ্ঠ (২০১০-২০১১)। তিনি ছিলেন কালের কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং কালের কণ্ঠ নামটি তার নিজের দেওয়া। তিনি ২০১২-২০১৩ সনে এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সন থেকে তিনি দৈনিক জাগরণের সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি ২০২০-২০২১ সনে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এত সব দায়িত্ব পালনে তিনি কখনো আদর্শচ্যুত হননি।

পত্র পত্রিকার সম্পাদকের পদ পাওয়া একজন সাংবাদিকের বড় প্রাপ্তি। আবেদ খান নীতি বিসর্জন দিয়ে পদকে আকড়ে ধরে থাকেননি। পুঁজিবাদের চরম উৎকর্ষতার যুগে প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার মালিক হচ্ছেন শিল্পপতিরা। মিডিয়া হচ্ছে তাদের সেফগার্ড। মালিকরা তাদের অনেক অকাম-কুকাম জায়েজ করেন তাদের মিডিয়া দ্বারা। আবেদ খান তার বিবেক বিসর্জন দিয়ে মালিকদের অপকর্ম জায়েজ করতে অক্ষম ছিলেন। এ জন্য তিনি সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করতে দ্বিধা করতেন না। যেখানে নীতি নৈতিকতা জাদুঘরে চলে গেছে, ভালো মানুষের দুর্ভিক্ষ চলছে, আবেদ খান নিশ্চয়ই সেখানে ব্যতিক্রম।

আবেদ খান একজন মুক্তিযোদ্ধা। বাঙালিরা বুঝে গিয়েছিল, পাকিস্তানিরা বাঙালিদের হস্তে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। তাই এলাকাভিত্তিক স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গড়ে উঠতে থাকে এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব চলতে থাকে। ১ মার্চ, ১৯৭১ পুরান ঢাকার নারিন্দা-ওয়ারি এলাকার স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক হন আবেদ খান, যুগ্ম আহবায়ক হন মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া। ২৫ মার্চ রাত থেকে পাক হানাদার বাহিনী তাদের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, ট্যাংক নিয়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইত্তেফাক অফিস জ্বালিয়ে দেয়। তাদের সাঁড়াশি আক্রমণে টিকতে না পেরে আবেদ খান মাচের্র শেষের দিকে ঢাকা ছাড়েন। বহু কষ্টে সীমান্ত পারি দিয়ে কলকাতা পৌঁছেন মে মাসে। ২৫ মার্চ রাত থেকে বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে নারকীয় হত্যাকা- ঘটিয়ে যাচ্ছে তার সঠিক প্রচার পাচ্ছিল না। কলকাতার আকাশবাণীতে আবেদ খানের সাক্ষাৎকার প্রচারের পর তা ব্যাপক প্রচার পায় এবং বিশ্বের সহানভূতি লাভ করতে থাকে। তারপর তিনি আকাশবাণীতে ‘জবাব দাও’ নামে এক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান শুরু করেন; যার প্রত্যুত্তরে তখন পাকিস্তানের পক্ষ থেকে রেডিও পাকিস্তান ‘জবাব নিন’ অনুষ্ঠান শুরু করে।

আবেদ খান একজন কলম সৈনিক। ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলেও তার যুদ্ধ শেষ হয়নি। তার যুদ্ধ এখনো চলমান। যিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অন্তরে ধারণ করেন তার যুদ্ধ শেষ হতে পারে না। সে যুদ্ধ তিনি এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন লেখনীর মাধ্যমে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দুটি। একটি স্বাধীনতা, অন্যটি মুক্তি। মুক্তির অর্থ ব্যাপক। মুক্তি মানে অজ্ঞতা অন্ধকার থেকে মুক্তি, অসত্য অসুন্দর ও অযৌক্তিকতা থেকে মুক্তি, অন্যায় অবিচার থেকে মুক্তি, অভাব অনটন থেকে মুক্তি, সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্তি, গোড়ামি থেকে মুক্তি, কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্তি, ভবযন্ত্রণা থেকে মুক্তি, বন্ধন থেকে মুক্তি, বৈষম্য ও দুর্নীতি থেকে মুক্তি। মুক্তির যুদ্ধ নিরন্তর। এই জন্য বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতার আগে মুক্তির কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম ম্বাধীনতার সংগ্রাম।’ স্বাধীনতা অর্জন কঠিন, কিন্তু মুক্তি পাওয়া আরও কঠিন। স্বাধীনতার লক্ষ্য মুক্তি। মুক্তি ব্যতীত স্বাধীনতা অর্থহীন। স্বাধীনতার যুদ্ধ শেষ হলেও মুক্তির যুদ্ধ শেষ হওয়ার নয়। জীবন যতদিন আছে, মুক্তির সংগ্রামও ততদিন থাকবে। সেই মুক্তির সংগ্রামের একজন নিরন্তর সৈনিক আবেদ খান।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে সে হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে তিনি তার কলম চালনা করতে পিছপা হননি। কলম চালিয়েছেন জিয়া এরশাদের স্বৈশাসনের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ জঙ্গি গোষ্ঠিীর বিরুদ্ধে। সোচ্চার থেকেছেন ৭১- এর ঘাতক, মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে। সে জন্য তাঁকে কম হয়রানির শিকার হতে হয়নি। ১৯৮৭ সনে সামরিক শাসক এরশাদ তাঁকে বেতার টেলিভিশনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। ২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বর ময়মনসিংহে চারটি সিনেমা হলে জঙ্গিরা এক যোগ গ্রেনেড হামলা করে। তৎকালীন বিএনপি জামায়াত জোট সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মামলা না করে মামলা করে আবেদ খান, মুনতাসির মামুন, শাহরিয়ার কবির প্রমুখের নামে। কারণ তারা মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন। মৌলবাদীদের কাছ থেকে তিনি কম হুমকি পাননি।

আবেদ খান একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ। যখনই দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে, তখনই তিনি সেখানে ছুটে গিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে সংখ্যালঘু ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের ওপর হামলা, ধর্ষণ, নির্যাতন, দখল চরম আকার ধারণ করে। তখনো আবেদ খানরা ধর্ষিতা, নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। জোট সরকারের সময় ঝিনাইদহের স্থানীয় সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হলে তিনি সেখানে ছুটে যান এবং তার প্রতিবাদে অনশন করেন। তাতে তাঁর এবং তার সঙ্গীদের ওপরও হামলা হয়। তাতে তিনি থেমে যাননি। তার বয়স হয়েছে, শরীরও তত ভালো যাচ্ছে না। তারপরেও কেউ বিপদে পড়লে তার পাশে তিনি দাঁড়ান। তার নীতি-আদর্শ, মানবতাবোধ অতি উচ্চ মার্গের। তার এথিকস, মানবতাবোধ যদি আমরা অনুকরণ করতে পারতাম, তাহলে আমাদের সমাজ হতো একটি মানবিক সমাজ।

আবেদ খান একাধারে একজন মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, লেখক, গবেষক, উপস্থাপক, সঞ্চালক, আবৃত্তিকার, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও বুদ্ধিজীবী। তিনি অনেক প্রবন্ধ, গল্প, শিশু সাহিত্য রচনা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের ওপর অনেক গবেষণাধর্মী লেখা লিখেছেন। তিনি বিশটিরও বেশি বই লিখেছেন। তাদের মধ্যে ১. অভাজনের নিবেদন, ২. গৌড়ানন্দ কবি ভনে শুনে পুণ্যবান, ৩. কালের কণ্ঠ, ৪. প্রসঙ্গ রাজনীতি, ৫. হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে (গল্প সংকলন), ৬. আনলো বয়ে কোন বারতা, ৭. বলেই যাবো মনের কথা, ৮. গৌড়ানন্দসমগ্র।, ৯. অনেক কথা বলার আছে, ১০. দেশ কি জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য হবে, ১১. ও রাজকন্যে তোমার জন্য, ১২. স্বপ্ন এলো সোনার দেশে, ১৩. আমাদের টুকুনবাবু, ১৪. ষড়যন্ত্রের জালে বিপন্ন রাজনীতি (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড) অন্যতম। বাংলাদেশের কত উত্তম অধমকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে ফেব্রুয়ারি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়; অথচ আবেদ খানের মতো ব্যক্তিকে তা প্রদান করা হয় না। এটাই পরিতাপের বিষয়। বিষয়টি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদানের মতো। বিশ্বে অহিংস রাজনীতির ধারক বাহক, প্রবর্তক হলেন মহাত্মা গান্ধী। তিনি ছিলেন হিংসা, যুদ্ধ, মারামারি, সহিংসতার বিরুদ্ধে। তিনি ছিলেন বিশ্বের অহিংস ও শান্তিবাদী নেতা। তার ভাগ্যে নোবেল প্রাইজ জুটেনি। জুটেছে যুদ্ধবাজ চার্চিল ও হেনরি কিসিঞ্জারের ভাগ্যে। এটাই ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। যদিও জাতিসংঘ মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস ঘোষণা করে তার প্রতি সম্মান জানিয়েছে। আশা করি, বাংলাদেশ সরকার ও বাংলা একাডেমির বোধোদয় হবে; আবেদ খানের মতো গুণীজনকে তার প্রাপ্য সম্মান দিবে। আজ ১৬ এপ্রিল এই মহান মানুষটির ৭৮তম জন্ম দিনে নিবেদন করছি লাল সালাম। জয় গুরুদেব।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর

Header Ad

আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এ বিষয়ে নিজেরে অবস্থান জানিয়েছেন তিনি।

ফেসবুকে পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, ‘বিচার নিশ্চিতের পূর্বে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া মানে চব্বিশের অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করা।’

এর আগে বৃহস্পতিবার মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনের প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে, সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের যারা হত্যা ও ক্ষমতার অপব্যহারের সঙ্গে জড়িত, যখন তাদের বিচার সম্পন্ন হবে, তখনই দলটিকে নির্বাচনে স্বাগত জানানো হবে। অন্যরা নির্বাচনে অংশ নিতে যতটা স্বাধীন তারাও ততটাই স্বাধীন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অঙ্গনে লড়াই করব।

Header Ad

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি। ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরলেন আরও ৮২ জন বাংলাদেশি। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাত ১১টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরেন তারা। তাদের মধ্যে ৭৬ জন সম্পূর্ণ সরকারি ব্যয়ে ও ছয়জন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার অর্থায়নে দেশে ফিরেন। এ নিয়ে ১১টি ফ্লাইটে এখন পর্যন্ত ৬৯৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত, লেবানন এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশে আসা ৮২ বাংলাদেশির মধ্যে ৭৬ জন লেবাননের বৈরতে বাংলাদেশ দূতাবাসে রেজিষ্ট্রেশন করেন। আর বাকি ছয়জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থায়। এ পর্যন্ত ১১টি ফ্লাইটে ৬৯৭ জন বাংলাদেশিকে লেবানন থেকে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসন করা এসব বাংলাদেশিকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা।

এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলেন ও তাদের খোঁজ-খবর নেন। এ পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি বোমা হামলায় নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, লেবাননে চলমান সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থায় যতজন প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসতে ইচ্ছুক তাদের সবাইকে সরকার রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে ফেরত আনার ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যাত্রীবাহী গাড়িবহরে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একাধিক যাত্রীবাহী গাড়িতে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়, যার ফলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছের কুররম অঞ্চলে এই হামলা ঘটে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মহসিন নকভি নিশ্চিত করেছেন যে, হামলার স্থানটি আফগান সীমান্তের কাছাকাছি। জেলা পুলিশ এবং স্থানীয় হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে নিরাপত্তা কর্মকর্তা, নারী ও শিশুরাও রয়েছে। তাদের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

পুলিশ এখনো আততায়ীদের খুঁজে বের করার জন্য অভিযান শুরু করেছে। কুররম জেলা সম্প্রতি শিয়া এবং সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রদায়গত সহিংসতার জন্য পরিচিত। তবে এই হামলার দায় কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এখনও স্বীকার করেনি।

এই অঞ্চলে সম্প্রতি জমি নিয়ে বিতর্ক এবং সশস্ত্র সংঘর্ষের কারণে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। আগস্ট এবং অক্টোবর মাসে জমি নিয়ে বিতর্কে সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলেছিল এবং এতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। এছাড়া, গত কয়েক সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানি সেনাদের মধ্যে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে পাকিস্তানজুড়ে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় ৬০ জনেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশিরভাগ সহিংসতার দায় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) সংগঠনটি স্বীকার করেছে। এই গোষ্ঠীকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জাতিসংঘ তালিকাভুক্ত করেছে এবং ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে যে, আফগানিস্তানের তালেবান শাসনের অধীনে থাকা ‘অভয়াঞ্চল’ থেকে টিটিপি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ বালোচ বৃহস্পতিবার বলেন, তাদের সরকারের দীর্ঘদিনের অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, আফগান ভূখণ্ডে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আফগান তালেবান কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তালেবান নেতারা দাবি করেছেন, তারা টিটিপি বা অন্য কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেন না এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার জন্য কাউকে সুযোগও দেন না।

এই হামলার ঘটনা পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের তীব্রতার একটি নতুন উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন
তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান