গণমাধ্যমের যে কোনো সমালোচনাকে সরকার স্বাগত জানায়: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি: সংগৃহীত
গণমাধ্যমের যে কোনো সমালোচনাকে সরকার স্বাগত জানায়। যখন পরিকল্পনা করে অপতথ্যের প্রচার করা হয়, তখনই সমস্যা তৈরি হয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্র্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কার্যালয়ে বিশ্বমুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সংস্থাটির আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রামপাল নিয়ে অনেক মিথ্যাচার হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যা হচ্ছে, ভারত নিয়ে মিথ্যাচার। রিপোর্টিংয়ের সততা থাকতে হবে। যেকোনো ধরনের সমালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই, তবে মিথ্যাচারকে নয়। সরকারের কার্যক্রম নিয়ে যেকোনো সমালোচনা যে কেউ করতে পারে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে যখন ধারাবাহিক মিথ্যাচার করা হয়, তখন প্রশ্ন ওঠে।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে যখন এর অপব্যবহার হয়, তখন এটার পরিণাম হয় খুবই ভয়াবহ, এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের প্রসার ও এর স্বাধীনতার জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন। সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে। আমরা প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আমরা স্বাগত জানাই, যারা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে চায়। আমরা শুধু উন্নয়নই করতে চাই না, আমরা টেকসই উন্নয়ন করতে চাই, যেটা আমাদের পরিবেশকে সুরক্ষা দেবে।
আইনের অপব্যবহার প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো আইনের যেন অপব্যবহার না হয় সেটা গুরুত্বপূর্ণ। যে সব আইনের অপব্যবহারকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা রাখা উচিত। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে যেমন আইন দরকার, তেমনি অপব্যবহার নিয়ে কথা বলা উচিত। শুধু গণমাধ্যম নয় যে কোনো আইনের অপব্যবহার নিয়ে গণমাধ্যমের কথা বলা উচিত। সাংবাদিকদের পেশাদারিত্বের বিষয়টি গুরুত্ব থাকা উচিত। কোনটা খবর সেটা আগে বুঝতে হবে। যে তথ্য দেশের বিরুদ্ধে যায়, এমন খবর হতে পারে না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই, আমাদের অবস্থান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যারা যাবে তাদের বিরুদ্ধে। মিডিয়া কি প্রভাবমুক্ত? আমাদের ডাবলস্টান্ডার্ড থেকে বের হতে হবে।
আএসএফ র্যাংকিং নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন আমি এটা কথা বলেছি। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ২০২৩ সালের মে মাসে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে ভুল তথ্য আছে এবং সেখানে বাস্তবতার প্রতিফলন ছিল না।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওয়েবসাইটে ভুল, অর্ধসত্য ও অপর্যাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে ১৬৩তম দেখানো হয়েছে। এটা নিয়ে আমি চিঠি লিখেছি, তারা ভুল তথ্য ডিলিট করেছে। কিন্তু এরপর র্যাংকিং ঠিক করা হয়নি।
বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা শীর্ষক আলোচনা আর্টিকেল নাইনটিনের আঞ্চলিক পরিচালক (বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া) শেখ মনজুর-ই-আলমের সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত হার এক্সেলেন্সি অ্যালেক্সান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি ও অফিস প্রধান সুজান ভাইজ এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।