শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না:প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে কৃষক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে কৃষক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ কোনোদিন পালায় না।
সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের বিরোধী দল, যদিও পার্লামেন্টে নেই, বলে আমরা না কি পালানোর পথ পাব না। হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, যিনি এ বক্তব্য দেন তাকে একটু স্মরণ করাতে চাই শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কোনোদিন পালায় না, পালায়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আমরা সহনশীলতা দেখাচ্ছি। আবার দেখলাম তাদের সেই অগ্নিসন্ত্রাস। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে তারা যেভাবে অগ্নিসন্ত্রাস, খুন, মানুষ পুড়িয়েছে, ২০০১ নির্বাচনের পর যেভাবে আমার নেতাকর্মীদের অত্যাচার করেছে, আমরা যদি তার এক ভাগ প্রতিশোধ নিতাম, তোদের হদিস পাওয়া যেত না। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করিনি।
তিনি বলেন, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার ঘোষণা দিয়ে দেড় মাসও থাকতে পারেনি। ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করেছিলেন। ২০০৬ সালের ১ কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করেন। এই ভোটও বাতিল হয়েছিল। ভোট চুরির কারণে দুইবার যাদের নির্বাচন বাতিল হয়েছে, তাদের মুখে এত লম্বা কথা আসে কীভাবে? একটা প্রবাদ আছে, চোরের মায়ের বড় গলা।
সরকার প্রধান বলেন, কৃষি খাতে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। ’৯৬ সালে আমরা যখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আমাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর আমার সঙ্গে লম্বা একটা তালিকা নিয়ে বসেন। তাদের অনেক প্রস্তাব– এই করতে হবে, ওই করতে হবে। আমি শুধু বলেছিলাম দেশটা আমাদের, কি করতে হবে আমি জানি। দেশের মানুষের জন্য কোথায় কীভাবে কাজ করতে হবে সেটা আমার জানা আছে। তখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন যে, কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। তাহলে আমরা উত্তর দেব না। তাকে বলেছিলাম অর্থ দেওয়া লাগবে না, আমরা নিজের টাকা কৃষকদের দেব। কারণ, এই কৃষকরা সার চাইতে গেলে তাদের গুলি করে হত্যা করে খালেদা জিয়া। আমি নিজে ছুটে গিয়েছিলাম। আমি কৃষক পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম।
শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। বিদ্যুৎ চাইছিল সেচের জন্য, সেটা খালেদা জিয়ার কাছে অপরাধ ছিল। গুলি করে তাদের মারে। আমি ছুটে গিয়েছিলাম সেখানে, প্রতিটি পরিবারকে আমরা সহযোগিতা করেছি। আমরা সবসময় মানুষের পাশে থাকি। মানুষের জন্য কাজ করি। মানুষের পাশে থাকাটাই আমাদের দায়িত্ব।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।