সালাম মুর্শেদীর সরকারি সম্পত্তি দখলের বিষয়ে ১৩ কর্মকর্তাকে তলব
খুলনা-৪ আসনের এমপি ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সালাম মুর্শেদী জালিয়াতির মাধ্যমে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিত্যক্ত সম্পত্তি দখল করে বাড়ি নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছে দুদক।
কমিশন অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলে দুই সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে।
দুদকের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৩ জনকে তলব করা হয়। অনুসন্ধান টিমের প্রধান তিনটি পৃথক নোটিশে তাদের আগামী ১৮, ২১ ও ২২ মে দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১০ মে) দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অনুসন্ধান টিমের প্রধান ইয়াসির আরাফাত স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, রাজউক চেয়ারম্যানসহ অন্যদের সহায়তায় আব্দুস সালাম মুর্শেদী রাজধানীর গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর রোডের ২৭/বি নম্বর বাড়িটি দখল করেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাদের আগামী ১৮, ২১ ও ২২ মে দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে আগামী ১৮ মে সাবেক আইন উপদেষ্টা ড. সেলিম, সহকারী আইন উপদেষ্টা মনসুর হাবিব ও সাবেক সদস্য (এস্টেট) (অব.) কর্নেল নুরুল হককে তলব করা হয়েছে।
এ ছাড়া, ২১ মে রাজউকের পরিদর্শক (এস্টেট) শাহ সদরুল আলম, সহকারী টাউন প্ল্যানার মাহফুজুল কাদের, ডেপুটি টাউন প্ল্যানার কাজী গোলাম হাফিজ, উপ-পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) অমিত কুমার দেবনাথ ও টাউন প্ল্যানার জাকির হোসেন এবং ২২ মে রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-১) হাবিবুর রহমান, নুরুল ইসলাম, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) খোরশেদ আলম ও সদস্য ভূঁইয়া রফিউদ্দিন।
দুদকের তথ্যমতে, নথি জালিয়াতির মাধ্যমে সালাম মুর্শেদীকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কে সিইএন (ডি)-২৭ নম্বর বাড়িটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২২ সালের ১১ আগস্ট দুদকে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
দুদক আবেদন আমলে না নেওয়ায় একই বছরের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ব্যারিস্টার সুমন।
রিটে বলা হয়েছে, ২৭/বি নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন। রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও চলতি বছরের ৪ জুলাই রাজউক চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন, রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেওয়ায় ৪ জুলাই আবারও চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেওয়া হলো, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়।
কেএম/এমএমএ/