শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৬

স্নানের শব্দ

এবার আর সালেহা খাতুন হাসপাতাল থেকে ফিরলেন না। এমন হবে শবনম তা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেনি, ভেবেছিল এবারও আগের মতোই সপ্তাহখানেক হাসপাতাল-বাস শেষে লাজুক ভঙ্গীতে ক্লান্ত চেহারায় বাড়ি ফিরে আসবেন তিনি।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অন্য রোগীদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ভাব জমিয়ে, কোন রোগীর শরীরের কি অবস্থা, কে কিভাবে মারা গেল, কে ভয়াবহ রোগের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে উঠলো, কোন নার্সের চোখ গাভীর চোখের মতো সুন্দর, মোলায়েম ব্যবহার, কোন ডাক্তার মহা বেয়াদ্দপ, রোগীদের শুধু ধমকায়, কোন ডাক্তার হাসিমুখ ছাড়া কথা বলে না, এমনকি কোন আয়া স্বামীর হাতে প্রতিদিন মার খায়-টুকটুক করে সেসব গল্প বলবেন তিনি। পাশের কেবিনের রোগীর চাচাতো বোনের সাথে তার এতটাই খাতির হবে যে, হাসপাতাল ছেড়ে আসার দিন তাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে-কেটে একসার করবেন। অথচ সেসব অনুমান মিথ্যা করে দিয়ে, হাসপাতালে ভর্তি করার পরদিন ভোরবেলা, ‘রাত্রি শেষের শুভ শুক্রবারে ’তিনি চলে গেলেন নিঃশব্দে তার প্রিয় সন্তান, নাতি নাতনি ছেড়ে একেবারে চিরতরের জন্য, অন্য এক অজানা পৃথিবীতে। মৃত্যু-হ্যাঁ, মৃত্যুই হয়তো একমাত্র সত্য এই পৃথিবীতে, বাকি সব মিথ্যা। মৃত্যুই নিশ্চিত। মৃত্যুই চূড়ান্ত ভবিষ্যত। সামনের অ্যাম্বুলেন্সে সালেহা খাতুনের কফিনে শোয়া মৃতদেহ আর পেছনের গাড়িতে নির্বাক তারেক আর শ্রাবণকে নিয়ে ছুটছিল শবনমের টয়োটা। গ্রামের বাড়িতে নিজের স্বামীর কবরের পাশে তাকে দাফন করার অছিয়ত বহুআগেই করে রেখেছিলেন তিনি। সেই মতোই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গ্রামের আত্মীয়স্বজন যারা ছিল, তারা সবাই এসে ভিড় করছে শেষ বারের মতো সালেহা খাতুনের চিরনিদ্রিত মলিনমুখটা দেখতে।

ফর্সা, মায়াবি চেহারার সালেহা খাতুন নিরীহ, মুখ চোরা, সহজ সরল, ভালোমানুষ ধরনের শাশুড়ি ছিলেন। সারা জীবন পুত্রবধূর সাথে দ্বন্দ্ব-সংঘাত সযত্নে এড়িয়ে চলেছেন তিনি। অন্য অর্থে, খানিকটা সমীহ করেই চলেছেন শিক্ষিত, স্মার্ট, চাকরিজীবী পুত্রবধূকে। বুদ্ধিমতি নারীর মতোই পুত্রের ব্যক্তিজীবনে অযথা নাক গলাতে আসেননি, নিজের ভূবনেও থেকেছেন যথাসাধ্য নীরবে, প্রায় মুখ বুজে। শবনম বুঝতে পারতো, তার ব্যস্ত চালচলন, মুখের উপর ফট করে অপ্রিয় সত্যি কথা বলে ফেলা, রাত করে বাড়ি ফেরা এসব হয়তো তিনি ঠিক পছন্দ করতেন না, হয়তো আড়ালে আবডালে ছেলের কাছে নিজের অপছন্দের বিষয়টি পরোক্ষভাবে তিনি জানাতেনও, কিন্তু মুখোমুখি গ্যাঞ্জাম পাকাননি কখনো। পুত্রবধুর উপর জোর করে চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করেননি নিজের মতামত কিংবা হয়তো অবস্থানগত কারণে মতামত চাপানোর সাহসও পাননি তিনি।
ছোট্ট শ্রাবণকে তার জিম্মায় রেখে নিশ্চিন্তে দিব্যি অফিস করেছে শবনম। অফিসের কাজে দেশ বিদেশে ট্যুরও করেছে। সালেহা খাতুন নিবিষ্ট চিত্তে ঘর সামলেছেন, নাতনির দেখাশোনা করেছেন। সারা দুপুর গৃহকর্মীদের সাথে বসে টেলিভিশনে বাংলা ছায়াছবি দেখেছেন।

পুত্রবধূর প্রতি চাপা অভিযোগ, অনুযোগ, রাগ -ক্ষোভ, বিরাগ বিরক্তি যে একেবারেই ছিল না, তা হয়তো নয়। তবে শবনম ইচ্ছা করেই এসবকে ইস্যু করে তোলেনি, দেখে শুনেও উপেক্ষা করে গেছে অনেক কিছু, যেন সে দেখেও দেখেনি, শুনেও শোনেনি।

তারেকও শুরু থেকেই আদর্শ পুরুষের মতো স্ত্রী ও মায়ের সাথে যথাসম্ভব ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ফলে এক সংসারে থেকেও বউ শাশুড়ির মধ্যে টেরম টেরম যুদ্ধ হয়নি বরং এক ধরনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত হয়েছিল। আরেকটা জিনিস ও ইদানিং মনে হয় শবনমের, সাধারণত যেটা হয়, ঘরের কর্তৃত্ব নিয়েই খুটোখুটি বাঁধে বউ শাশুড়ির। কিন্তু শবনম যেহেতু সারাজীবনই বর্হিমুখী স্বভাবের, আর দিনরাত নিজের চাকরি বাকরি নিয়েই বেশি ব্যস্ত থেকেছে, তাই হয়তো ঘরের খুঁটিনাটি নিয়ে তেমন মাথা ঘামানোর সুযোগ পায়নি। বরং এসব ঝামেলা থেকে বরাবরই নিজেকে সযত্নে দূরে সরিয়ে রেখেছে। ফলে শাশুড়ি ঘর সংসারের একচ্ছত্র কর্ত্রী হতে পেরে সন্তুষ্ট থেকেছেন। শবনমের মনে হয়, না ভাল, না মন্দ, না মধুর, না তেতো, দ্বন্দ্বহীন, আবেগহীন, প্রত্যাশাহীন, স্নেহ ও করুণাবিহীন একটা অদ্ভুত সহনীয় কিন্তু জটিল সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এক সংসারে পাশাপাশি দীর্ঘদিন কাটিয়ে গেছে তারা দুই নারী।

কে জানে এমন একটা সময়ে মনে মনে সম্পর্কের এইরকম ব্যবচ্ছেদ করা ঠিক হচ্ছে কিনা। শবনমের মনে হয় যেকোনো মৃত্যুই এক ধরনের কুহক নির্মাণ করে। মৃত্যুর পটভূমিকায় ব্যক্তি মানুষ, আর তার সাথে সম্পর্কের ধরণ সব কিছুই হঠাৎ করে যেন পাল্টে যায়। এই মুহূর্তে সালেহা খাতুনের মৃতদেহ খাটিয়ায় তুলে কবরস্থানের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তারেকের ছোট দুই বোন সালমা আর শামীমা ঘরের মেঝেতে আছড়ে পড়ে মায়ের জন্য মাতম তুলে বাড়াবাড়ি রকম কাঁদছে। শ্রাবণও নিঃশব্দে ঘন ঘন চোখ মুছছে। শোকগ্রস্ত তারেকও ছলছল চোখে বোনদের জড়িয়ে ধরে শান্তনা দিয়ে গ্রামবাসীর সাথে মায়ের খাটিয়া কাঁধে নিয়ে গোরস্থানের দিকে রওনা হয়েছে। শবনম ঘরের এক কোণায় মুখে কাপড় গুজে চুপচাপ একা বসেছিল। তার মাথার মধ্যে সালেহা খাতুস সংক্রান্ত নানা রকমের তিক্ত মধুর স্মৃতি এসে ভিড় করছিল। বাড়িভর্তি চেনা-অচেনা মানুষ। কেউ সুর করে মাথা দুলিয়ে গুণগুণ করে কোরান শরীফ পড়ছে। কেউ কেউ গুজগুজ ফিসফিস করে একে অন্যের সাথে কথা বলছে। বলতে বলতে কেউ হয়তো মুখে কাপড় চাপা দিয়ে একটু হেসেও ফেলছে, তারপর আবার চেহারায় দুঃখ দুঃখ একটা ভাব ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। শোকের বাড়ি জুড়েও কেমন যেন একটা উৎসব উৎসব ভাব। এরই মধ্যে ময়লা ছাপা শাড়ি পরা গ্রামের একজন বয়স্ক মহিলা এসে শবনমকে জিজ্ঞেস করল, ‘শাউড়িরে শেষ দেখা দেখছোনি গো বউ? ’
শবনম মাথা নাড়ে। বয়স্ক মহিলা আবার বলে,
‘তুমার শাউরি গেরামে আইলে খুব সুনাম করতো তুমার, তুমি বলে ঢাকায় অনেক বড় চাকরি করো? অনেক টেকা বেতন পাও? একলা একলা বিদেশেও বলে যাও?’
এসব কথার কোনো উত্তর হয় না, শবনম তাই কিছুই বলে না, চুপ করে থাকে। আরেকজন লম্বা ঘোমটা পরা বয়স্কা দীর্ঘশ্বাস ফেলে স্বগতোক্তি করে—
‘চাকরি করা বউরা কি আর শাউরির সেবা যত্ন করতে পারে? এক বেলা রাইন্ধা খাওয়ানোরও তো সময় পায় না, খালি দৌড় আর দৌড়..’
আরেকজন ঘরের আরেক কোণা থেকে হঠাৎ বলে উঠে,
‘বাড়ি গাড়ি টেকা পয়সা কিচ্ছু সাথে যায় না গো, একলা একলাই মাটির ঘরে যাওন লাগে, আজকা মরলে কালকে দুইদিন, দুইদিনের দুনিয়া,আখেরাতই আসল জায়গা ..’
প্রথম বয়স্কা শবনমের সামনে দাঁড়িয়ে বুক চাপড়ায়,
‘আহা, কি ভালামানুষ আছিলো গো বুবু! গরিবের লাইগ্যা অনেক মায়া আছিলো তার বুকে, যতবার গেরামে আইছে ততবারই গরিব দুঃখিরে দুই হাত ভইরা দান করছে। বিপদ আপদে মানুষরে সাহাইয্য করছে, আল্লা বেহেশত নসিব করুক, দোয়া করি।’
শ্রাবণ এসে এসময় শবনমের গা ঘেঁষে বসে, তারপর চোখ বুজে ক্লান্ত মাথাটা এলিয়ে দেয় মায়ের কাঁধে। শবনম চুপচাপ মেয়ের ভেজা ভেজা দুঃখী নরম হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বসে থাকে। দাদীর আঁচল ধরে, তার সঙ্গে নানারকম খুনসুটি করে শৈশবের বেশিটা সময় কাটিয়েছে মেয়েটা, ফলে তার শোক ও শূন্যতাটুকু অনুভব করতে পারছিল শবনম।
‘ও বউ, তোমার মাইয়া তো মাশাল্লাহ বিয়ার উপযুক্ত হইয়া গেছে। কবে বিয়া দিবা? তুমি তো হুনছি, বাইরে বাইরেই রইছো, এরে তো বুবুই কোলের মইধ্যে পাইল্যা লাইল্যা বড় করছে!’
ঘোমটা ঢাকা বয়স্কা শ্রাবণকে দেখে মন্তব্য করে। শ্রাবণ চট করে মাথা তুলে মন্তব্যকারিণীর দিকে তাকায়, হয়তো কিছু বলতে চায়, শবনম তখন আস্তে করে হাত দিয়ে ধরে মেয়ের মাথাটা আবার শান্তভাবে নিজের কাঁধে রেখে দেয়। অস্ফুট কণ্ঠে বলে, ‘দোয়া কইরেন চাচী।’
‘এ্যাঁ গো ও, দোয়া তো করিই .. এই নাতিনরে কত আদর করছে গো বুবু, বুকে রাইখ্যা পালছে, মাটিত নামায় নাই পিপড়া ধরবো, মাথাত রাখে নাই উকুনে খাইব, সোনার টুকরা, কলিজার টুকরা নাতিন গো.. দোয়া করি, ভালা একখান বিয়া হউক তুমার, এ্যাঁ বুবু যুদি দেইখ্যা যাইতে পারতো গো .. আহ্ হা’।
বয়স্কা টেনে টেনে সুর করে বলে। শবনম এবার মেয়েকে নিয়ে উঠে পড়ে। বলে, ‘চলো মা, একটু বাইরে, পুকুরের পাশে হেঁটে আসি।’
আসলে ঘরের এই গুমোট পরিবেশ আর গ্রাম্য কথার অত্যাচার থেকে মুক্ত করে মেয়েটাকে একটু খোলা বাতাসে নিয়ে আসতে চাইছিল শবনম। শ্রাবণ বেরিয়ে এলে ওর পিছু পিছু তারেকের দুই বোন সালমা আর শামীমাও আসে। প্রাচীন পুকুরের শান্ত নীরবতা বুকে নিয়ে ওরা ধীরে ধীরে হাঁটে। আসন্ন সন্ধ্যার নীল আলো জানান দেয় আরেকটা দিন ফুরিয়ে আবার রাত্র আসছে। শামীমা শ্রাবণের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
‘গ্রামের মানুষের কথায় কিছু মনে কইরো না মামণি, তাদের কথাবার্তা এইরকমই, কোনো রাখঢাক নাই, আসলে বুঝেনাতো.. অশিক্ষিত ..’
‘আমি কিছু মনে করি নাই ফুফুমণি। কারণ আমার দাদুকে ওরা খুব ভালবাসতো। আর তারা যেরকম সরলভাবে জীবন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে তাই বলেছে।’
শ্রাবণ শান্তভাবে বলে।
ওরা পুকুরের পাশে ঘাসে ছাওয়া একটা চত্বরের উপর বসে। সালমা একটু ইতস্তত করে, ‘ভাবি, জানিনা এইসব আলাপ তুলা এখন ঠিক কি-না,আপনে তো ব্যস্ত মানুষ, আবার কখন আপনেরে পাই, আসলে আম্মার গয়না-গাঁটি সব তো ঢাকায়, ওই গুলার ভাগ বাটোয়ারা আম্মা বাঁইচা থাকতেই আমারে বইলা গেছিলেন।’
‘অসুবিধা নাই সালমা। সবই আছে, উনি যেমন রেখে গেছেন। উনার শাড়ি কাপড় গয়নাগাটি, তোমরা ঢাকায় এসে নিয়ে যেও।’ শবনম বলে।
‘আম্মার ঝুমকাগুলি শামীমার মেয়ের জন্য আর মটরদানা হারটা শ্রাবণের, আম্মা বইলা গেছিল..’
‘আমার লাগবে না, ফুপুমণি, আমি তো গোল্ড পরি না, ওটা তোমরা নিয়া নিও।’
শ্রাবণ গম্ভীর ভঙ্গীতে বলে।
‘তোমার লাগবে না কেন? আম্মা বইলা গেছে, এইটা তোমার দাদুর স্মৃতি,পরো বা না পরো, তোমার কাছে রাখবা স্মৃতি হিসাবে।’
‘স্মৃতি তো আমার মনে আছে ফুপু, জিনিস দিয়া কি আর স্মৃতি ধইরা রাখা যায়, মনের মধ্যে না থাকলে?’
শ্রাবণের কথায় শামীমা একটু থমকে যায় হয়তো আহত বোধ করে। শ্রাবণ এবার ফুপুকে জড়িয়ে ধরে, গালে গাল লাগিয়ে আদুরে গলায় বলে,
‘দাদুর ওই সোনার হার তো আমার কাছ থেকে হারায়ে যাইতে পারে ফুপুমণি, চুরিও হইতে পারে, কিন্তু মনের মধ্যে যা আছে তা কোনোদিন হারাবেও না, চুরিও হবে না। এইবার বুঝছো? ওই হার তোমার কাছেই রাখো।’
‘ইশ, এক্কেবারে আমাদের মায়ের মত কথা বলতেছে গো..’
শ্রাবণকে জড়িয়ে ধরে আবার উত্তাল কান্নায় ভেঙে পড়ে তার দুই ফুপু।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু