শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

গল্প

নবীনা নীশিথ

-ও আম্মা, দেখেন কে আইছে।

আসমতের মা এ পুরোনো বাড়ির পঁচিশ বছরের পুরোনো বুয়া। টিনশেড একতলা বিল্ডিং এখন প্রায়ই উঠে গেছে। কিন্তু এটা এখনো আছে। এর বাউন্ডারী দেয়ালের বাইরের রাস্তায় মানুষ ও রিকশা চলাচলের শব্দ এ বাড়ির ভেতর থেকে শোনা যায় তবে সেগুলো দেখতে হলে নীল রংয়ের লোহার গেটের ওপরের ঝাঝড়ির ফাঁক দিয়ে তাকাতে হয়। একটু আগে যখন একটা সিএনজি গেটের বাইরে এসে থামলো আসমতের মার গাছে পানি দেবার জন্য ওখানটায় দাঁড়িয়ে ছিল। কিশোর থেকে বড় হয়ে ওঠা এ বাড়ির একজনকে এই সন্ধ্যার প্রায় অন্ধকারেও চিনতে আসমতের মা’র ভুল হয়নি। আম্মা, মানে মিসেস তাহেরুন্নেছা দ্রুত গেটের কাছে এসে দাঁড়ালেন। একে ঈদের দিন তাতে নিঃসঙ্গ পরিবার, তাই কেউ এলে তার ও তার স্বামীর ভালোই লাগে। আজ নামাজের পর থেকে মানুষ জন বেড়াতে এসেছিলো ভালোই। এখন যখন সিকিউরিটি গার্ড ও ফ্ল্যাট মালিকের অ্যাপায়ন্টমেন্ট ছাড়া প্রায় কোন গৃহেই প্রবেশ করা যায় না সেখানে দরজায় নক করে এ বাড়িতে আশেপাশের অনেকেই ঢুকতে পারে। এ সহজলভ্যতার জন্য তিনি পাড়ার শিশুদের কমন নানী এবং এবং তার স্বামী ইব্রাহীম সাহেব কমন নানা হিসেবে বেশ প্রিয়ভাজন। তাহেরার বয়স ষাট আর ইব্রাহীমের উনসত্তর।


-কে আসমতের মা?
-সাইজা ভাই আর ভাবী।
তাহেরা আশুতুন্নেছা হাই স্কুলে বিজ্ঞান পড়াতেন। অবসর নিয়েছেন সময় হবার আগেই। তাকে আশেপাশের মানুষ সজ্জনশীলা বলে জানে। তবে সেজো পুত্র ও পুত্রবধু তাকে সালাম করার এই সময়টিতে তার মনে হয় আজ অধৈর্য্য হয়ে পড়েছিলাম। তা বিশ্বের কেউ না জানুক আমি জানি। পরপরই মিলা শাশুড়িতে সালাম করে। ও জিজ্ঞেস করে,
‘‘আম্মা কেমন আছেন। ঈদের শাড়ি পরেননি? তাহেরা বলেন ‘‘বিকেল পর্যন্ত পরাই ছিল। আসর নামাজের সময় খুলে রেখেছি।’ এটা ড্রইংরুম। খলিল বলে,
-আম্মা, আব্বা কোথায়?

-উনি তো আসনের একটু আগেই মসজিদে যান। তোমরা ঢুকার দু মিনিট আগেই মসজিদে গেছেন। মাগরিব পড়েই বাসায় ফিরবেন। চল তোমরা ভেতরে চল। নামাজটা পড়ে তোমাদের সাথে কথা বলি। পাঞ্জাবিটা খুলতে খুলতে খলিল বলে, ‘‘আম্মা আমিও নামাজ পড়বো।’ ঈদের দিনে সাধারণত কেউ কোন বাসায় হাতে ব্যাগ নিয়ে আসে না। মিলার হাতে দুটো ব্যাগ আছে। ও ওগুলো নিয়ে শাশুড়ির পেছন পেছন বাড়ির ভেতর ঢুকে। অন্দর মহলে যেতে ডান দিকে উঠান পড়ে। ষেখানে আসমত দাঁড়িয়ে। ও খলিল ও মিলাকে বলে, ‘‘ঈদ মুবারক। মামা-মামী কেমন আছেন? কখন আইলেন?’ ওর বয়স সতের বছর। এ বাড়ির কেয়ারটেকার। এ বাড়ির দেয়ালের বাইরে ছোট আর একটা প্লট আছে। সেখানে দুটো ঘর করে দিয়েছেন ইব্রাহীম। আসমত, ওর মা ও এক ছোট বোন সেখানেই থাকে। অজু করবার আগে তাহেরা আসমতকে আস্তে করে বলেন, ‘‘মসজিদে যা। নানাকে বল গিয়ে----------।’’

নামাজের পর পছন্দ মত কাউকে পেয়ে গেলে বুড়ো হয়তো এক ঘণ্টা গল্প করে তবে ফিরবেন নইলে এশার নামাজও পড়ে আসতে পারেন।

আসমত উঠোনোর পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে যায়। খলিল বারান্দায় অজু করে নামাজে দাঁড়ায়। মীলা ও শাশুড়ি আর এক রুমে। নামাজ শেষ হলে মখমলের সবুজ রংয়ের জায়নামাজটা যত্ন করে ভাঁজ করে কাঠের আলমারীল নীচের র‌্যাকটাতে রেখে দেয়। দু বছর আগে ওদের বিয়ের পর ওরা এই রুমটাতেই কিছু দিন ছিল। পুরোনো সেগুন কাঠের খাট। তাতে নতুন একটা লাল ও বেগুণী চাদর বেড কভার ও একই কাপড়ের তৈরি দুটো বালিশ পাতা। ঈদের দিনে তাহেরা এ বাসার প্রত্যেকের বিছানায় নতুন বেড কভার পাতবেই। নতুন মানে, নতুন কেনা নয়। দশ বছর আগে এগুলো কেনা। দামী। বছরে দু’দিন বের করা হয় বলে চক্চকে ঝক্ঝকে রয়েছে। এবার ও বাবা মা’র বেডরুমে যায়। ওখানে কেউ নেই। একটুখানি পরা একটা নতুন আদা সিল্ক এর শাড়ি খাটের ওপর ঝুলিয়ে রাখা। খলিল বুঝতে পারে, তাহেরা আজ বোধ হয় একবার পড়ে ছিলেন। কে দিলো। আম্মা তো শপে গিয়ে এটা কিনতে পারার কথা নয়। আর আম্মা? তিনি তার এই চোখ দিয়ে এমন একটা শাড়ি কিনতে পারবেন না। বড় আপা ও দুলাভাই দিয়ে গেছে? লজ্জায় খলিল আজ তাদের কথা একবারও মা’কে জিজ্ঞেস করেনি যদিও সকালে তাদের সাথে ওর কথা হয়েছিল। পাশে নতুন সাদা ঝক্ঝকে একটা পাজামাও ঝুলে আছে। বোঝাই যাচ্ছে বাবা সকালে এটা পড়েছিলেন।

তাহের ও আসমতের গলা একসাথে এসময় শোনা যায়। নীলা ও শ্বাশুড়ির সাথে কথা বলছিলো। খলিল ও নীলা দ্রুত ইব্রাহীমের দিকে ছুটে যায়। ওরা তাঁকে সালাম করে। তিনি বলেন, ‘‘তোমরা কখন এলে? কেমন আছ?’’ তার চোখ দেখেও বোঝা যায় তিনি আশা ছেড়ে দিয়ে ছিলেন। সারা দিন গেছে, সন্ধ্যাও পার হয়ে গেছে। আশা হারানোই তো স্বাভাবিক। তাহেরাও এসে বিছানায় বসেন। ব্যাখ্যা দেবার ভঙ্গীতে খলিল ও নীলা বলে সকালে নামাজ শেষে ওদের বস এর বাসায় কলঅন’ এ যেতে হয়েছিলো। তারপর এলো ওদের অফিসের কেউ কেউ। স্কুলের ও ইউনিভারসিটির বন্ধু। নীলা বলে, আপনাদের ছেলে এরপর গেল নারিন্দা গোরস্তানে। এ কথায় তাহেরার মুখে একটু আনন্দ ফুটে ওঠে। ওখানে ওর আম্মা ও আব্বার কবর। নীলার বাবার বাড়ি ওয়ারী। ওখানেও শ্বাশুড়িকে সালাম করে বাসায় ফিরতে ফিরতে দুপুর পার হয়ে গেল। তাই ওরা বিকেলে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। তাছাড়া এখন রাস্তার অবস্থা আগের মত নেই। ঈদের দিনেও বেশ যট। ওদের আজিমপুর কোয়ার্টার থেকে মীরপুর ১০ নম্বরের এই বাসায় আসতে এক ঘণ্টার বেশি লেগে গেছে এই ছুটির দিনেও। তাহেরা বলেন, ‘তো স্নিগ্ধার বাসায় যাস নি?’ স্নিগ্ধা খলিলের বড় বোন। খলিল বলে, আপু তো দাওয়াত দিয়েছে কাল দুপুরে। তোমরাও তো যাবে শুনলাম। তাহেরা আসমতের মা’কে বলেন, ডাইনিং টেবিলে জর্দ্দা, ফিন্নি ও সেমাই দিতে। নীলা বলে, ‘না আম্মা থাক। খাবো না।’ তাহেরার মনে আগের হতাশাটা আবার ফিরে আসতে থাকে। একি, এসেছে সারাদিন শেষে নানা জায়গায় বেড়িয়ে, এখন বলছে খাবে না।’ ইব্রাহীমের কানেও কথাটা ভালো লাগে না। বিয়ের পর এরা এ বাসায় ছিল মাত্র তিন সপ্তাহ। তারপরই চলে গেছিল সরকারি কোয়ার্টারে। কোয়ার্টারটা আবার পুত্রবধুর নামে। ও এগ্রিকালচার এক্সটেনশন ডিপারটমেন্ট এর বীজতত্ববিদ। খলিল বাংলা একাডেমিতে সহকারী পরিচালক। এরা বসে আছে ড্রইং রুমে। নীলা শ্বাশুড়ীর বাহু ধরে বলে, আম্মা আপনারা বসেন। আমি আসছি। ও ভেতরে শ্বশুড় শ্বাশুড়ির বেড রুম এ যায়। সঙ্গে আনা প্যাকেট দুটো নিয়ে ফিরে। হালকা নীল ও সাদা মিশ্রনের টাঙ্গাইল সিল্ক এর শাড়ি আর মিশ্র সিল্ক এর পাঞ্জাবীটা বের করে ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ীর হাতে দেয়। বুড়ো বুড়ির মন থেকে একটু আগের নাবোধক অনুভুতিটা কমে যায়। তা দামী কিছু পাওয়া জনিত নয় ভালবাসা প্রাপ্তি জনিত। তাহেরা কিছু বলেন না। নেড়ে চেড়ে দেখে সোফার ----- টেবিলের ওপর রেখেছেন।

খলিল বলেন, খুব সুন্দর। কতগুলো টাকা খরচ করেছ। এখন কোথায়ই বা যাই এ সব পরে। আসমতের মা মেঝেতে বসে দৃশ্যপট দেখছিলো। এ বাড়ির তিন ছেলে মেয়েরই বিয়েতে সে খুব খেটেছে। এবং তার দুটিই হয়েছিলো এ বাড়ির ভেতরেই শামিয়ানা টাংগিয়ে। ও বলে, এগুলি পইরা আপনারা খলিল ভাইজানের বাসায় বেড়াইতে যাইবেন। যাওনের জায়গার কি অভাব আছে আপনাগো?’ সে এসব কথা বলার অধিকার রাখে। নীলা ওর হাত ব্যাগ থেকে পাচশ টাকার একটা নোট বের করে আসমতের মা’র হাতে দেয়। ও তা হাসিমুখে আপত্তি করে শেষে নেয়। তাহেরা ঠিক বুঝতে পারছেন না এরা এরপর কি করবে। কিছু মেলে না। উপঢৌকন বিনিময়ও শেষ। তাহলে? নীলা এবার হাসি মুখে বলে, আম্মা চলেন তো দেখি রান্নাঘরে। আজ আপনি এই সময়ের মধ্যে কি কি রান্না করলেন? আসমতের মা, তুমিও চল মাংস, পোলাও তো গরম করতে হবে।’ তাহেরা ভালো বোধ করা শুরু করেন।

আসমতের মাকে সঙ্গে নিয়ে নীলা হাড়ি পাতিলের ঢাকনা খুলে খুলে দেখে আর একে একে চুলোয় দেয়। পোলাও, মুরগির সাদা কোমরা, গুরুর রেজালা আর খাসীর ভুনা চুলার তাপে চড় চড় করে শব্দ করতে থাকে। দুজনে দু’চুলোয় সেগুলো খুন্তী দিয়ে নাড়তে থাকে। হাট বাজার, লঞ্চ ঘাট, স্কুলের মাঠ বা এয়ারপোর্টের একটা নিজস্ব কলরব থাকে। ঈদের দিনেরও তেমনি একটা নিজস্ব আমেজ থাকে। ইব্রাহীম এশার নামাজের অজু করছেন। খলিল উঠানে হেঁটে হেঁটে সেই আমেজটা উপবোগ করতে থাকে। সাত কাটা জমির বাড়ির উঠানের বেশ খানিকটা জায়গায় তাহেরা বেগুন, কাচা মরিচ, নারিকেল এবং ফুলের গাছ লাগিয়েছেন। রান্নাঘর থেকে ঘি এর আর বাগান থেকে ফুলের গন্ধে ইব্রাহীমের খুব ভালো লাগে। কিছুদিন হলো রান্নাঘরেও টাইলস লাগানো হয়েছে। প্রাক্তন সরকারি কর্মচারী ইব্রাহীমের অর্থের প্রাচুর্য না থাকলেও বাইরে থেকে তা আসারও প্রয়োজন নেই। তবু তার বড় ছেলে মাল্টা থেকে বছরে একবার অন্ততঃ চার লাখ টাকা পাঠায়। সে ওখানে এনভায়রনমেন্টলিষ্ট। সেই টাকার সামান্য অংশ দিয়ে টাইলস এর কাজটা হয়েছে। সেদিকে তাকিয়ে নীলার মনে হয় সাদা শিফন জর্জেটের ওপর কেউ কালো পাড় এর সূচি কাজ করেছে। খাবার গরম হতে হতে ইব্রাহীমের নামাজ হয়ে গেছে। তাহেরা খেয়াল করেন যে নীলা কাপড় বদলে একটা সুতি ম্যাক্সি পড়ে নিয়েছে এর মধ্যে। ওদিকে গরম পাতিলে গ্লাস প্লেট ধুয়ে টেবিলে দিচ্ছে আসমতের মা। নীলা হাত মুখ ধুয়ে নেয়। ও বলে, আম্মা, আব্বা, ইব্রাহীম সবাই আস, টেবিলে বস। শ্বশুড়কে ও বলে কষ্ট করে ঈদের এতগুলো বাজার করেছেন। তিনি বলেন, না কষ্ট কই, বাজার তো কাছেই। লুঙ্গি পরেই যাই। সঙ্গে আসমত যায়। বের হলে একটু ভালোও লাগে।


-আম্মা, দামী মাংস পোলাও কি করবো? ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে রাখবো না টেবিলে খোলা রেখে দেব? কাল সকালে খেতে যা মজা লাগবে। তাহেরা বলেন, যে গরম, খোলা রাখা বোধ হয় ঠিক হবে না। জুড়াক। আমি ফ্রিজে রাখবো নি।
পিতা পুত্র টেলিভিশনের এক ঈদ প্রোগ্রাম দেখতে মগ্ন। রাত এখন সাড়ে নটা। নীলা আর তাহেরা উঠানে। নীলা শ্বাশুড়িকে আস্তে করে বলে,

-আম্মা, আজ কিন্তু থাকবো আমরা।’
-পাগল মেয়ে কি বলে? এটা কি একটা জানানোর কথা হলো?
আসমতের মা বলে, ‘হ ভাবী থাকেন। ভালো হইব। কতদিন আপনাগো দেখি না।’
ওদিকে লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরা পুত্রর ভাবসাব দেখে ইব্রাহীমও বুঝতে পারছেন না এরা আজ যাবে কি না। এতবড় বাসা থাকার পরও বৌ এর ছোট্ট কোয়ার্টারে গিয়ে ঢুকেছে বিয়ের পর পরই। উনি বা তাহেরা অভিমান করে এ নিয়ে কিছু বলেন নি।

রাত এখন এগারটা। অন্যান্য রাতে বুড়ো বুড়ি এসময়ের আগেই ঘুমিয়ে পড়েন।


তারা বেডরুমের দরজা খোলা রেখেই ঘুমান বাইরের বারান্দার দরজাটি বন্ধ করে। নীলা ও খলিল যে রুমে শুয়েছে তার পাশেই দম্পতির রুম। এ বাড়িতে অনেকদিন পর রাত্রিযাপন তাই পানির জগ গ্লাস আনতে ভুল হয়েছিল। শ্বশুড় শ্বাশুড়ির রুমের খোলা দরজা দিয়ে বারান্দার বাঁ পাশে রান্না ঘরে যেতে যেতে ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ির গল্প শুনতে পায়।
ইব্রাহীম বলছেন, ‘একান্ত গরীব বাবা মা ও সন্তানের কাছ থেকে টাকা পয়সা চায় না। চায় শুধু তাদের সঙ্গটা।
তাহেরা বলেন, ‘ হ্যাঁ ওটা এখন বেশ পাবে।’ কি করে? কতদিন পর মাত্র এক রাত। না, বৌ মা বলেছে ওরা কোয়ার্টার ছেড়ে দিয়ে এবাসায় আমাদের সঙ্গেই থাকবে। আসলে বৌমার তো দোষ নেই। তুমি কখনো কোয়ার্টার নাও নি। আমাদের ছেলেরই খুব শখ ছিল সরকারি বাসায় একটু থাকার। তাছাড়া বৌমার ভালো খবর আছে।’ পুরুষ মানুষ, বুঝতে একটু দেরি হয়। ইব্রাহীম ভাবেন চাকরির কোন বিষয় হবে হয়তো। তারপরই তিনি বুঝতে পারেন, না তা নয়। এটা অনেক গভীর আনন্দের বিষয়। নীলা আর শোনে না। গ্লাস, জগ ও মোবাইলের টর্চ্চ নিয়ে বেডরুমে চলে যায়।
তাহেরা স্বামীকে বলেন, এ বাড়িতে কত ঈদ এসেছে, চলেও গেছে। কিন্তু আজকের ঈদটা রয়ে যাবে।

 

Header Ad
Header Ad

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, দর্শক ভোটে সর্বাধিক পছন্দের ক্রীড়াবিদ হিসেবে ‘পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন নারী সাফ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা।

এ বছর ‘স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জয়ের দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা আর্চার সাগর ইসলামকে। অপরদিকে, ‘পপুলার চয়েজ’ বিভাগে ঋতুপর্ণা এগিয়ে যান মিরাজ ও উদীয়মান পেসার নাহিদ রানাকে ছাড়িয়ে।

 

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের স্বীকৃতি জানিয়ে আসা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এবছর ১৫টি বিভাগে মোট ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে সম্মাননা দেয়। সংগঠনের সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

পুরস্কার গ্রহণ করে মিরাজ বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন আয়োজনের জন্য। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।” ভুটানে লিগ খেলায় ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় ঋতুপর্ণা জানান, “এই সম্মান আমাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা দেবে।”

Header Ad
Header Ad

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি

রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজার ও মধুবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও ময়লার উপস্থিতি নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ট্যাপের পানি দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বচ্ছ হওয়ায় তা রান্না, গোসল ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাসার পানির ট্যাঙ্ক একাধিকবার পরিষ্কার করেও মিলছে না সমাধান। ওয়াসার সাপ্লাই পাইপ থেকেই এই সমস্যার উৎপত্তি বলে মনে করছেন তারা।

মধুবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই পানি দিয়ে রান্না ও গোসল সম্ভব না। আমাদের বাসার শিশুরা পানি খেতেই চায় না। বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে।” আরেকজন জানান, “ট্যাঙ্ক পরিস্কার করলে প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকে, তারপর আবার পোকা দেখা দেয়।”

বিকল্প না থাকায়, অনেকেই ট্যাপের মুখে কাপড় বেঁধে পানি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তারপরও পেটের অসুখ ও চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার তিনজন কর্মকর্তা মধুবাগ এলাকায় পরিদর্শনে যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পোকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে দায় চাপান ট্যাঙ্ক ঠিকমতো পরিষ্কার না করাকে। ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “লাইনের পানি পরিষ্কার। ট্যাঙ্ক যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, তাহলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।”

তবে এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের পরও পানি দূষিত হচ্ছে, যা পাইপলাইনের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় ওয়াসার কর্মকর্তারা পাইপের মান যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসী দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Header Ad
Header Ad

বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে হবে বিদেশি আইনের মাধ্যমে এবং এ উদ্যোগ সম্পূর্ণ নতুন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি দেশের নয়, বরং বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ রেখে করতে হবে। এর জন্য আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করে আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রথমে এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আইন পরামর্শক নিয়োগে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা গেলে এটিই হবে প্রথম সাফল্য।”

এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, “আমার ধারণা, প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। শুধু বেক্সিমকো গ্রুপেরই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো অর্থ পাচার হয়েছে। এগুলো বড় গ্রুপের হিসাব, ছোট গ্রুপগুলো এখনো বিবেচনায় আনা হয়নি। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব সময় আদালতের মাধ্যমে সমাধান না করে, কিছু ক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতেও (আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট) টাকা ফেরত আনার চিন্তা করছি। তবে সেটার আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা জরুরি, না হলে আমরা ঠকে যাব।”

মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অতীতে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে তা ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। তবে এখন সেটি ৮-৯ শতাংশে নেমেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি কমতির দিকেই। আগামী বছরে তা ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমানসহ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু