শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে শরণার্থী শিবির। অঞ্জন স্লোগান দিতে দিতে নিজের তাঁবুর দিকে হাঁটতে শুরু করে। অন্যদিকের লোকজন এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করে, কি হয়েছে? কোনো নতুন খবর আছে?
-নতুন খবরের জন্য আমরা স্লোগান দিচ্ছি। তবে এটাও ঠিক খবর না পেয়ে স্লোগান দিয়ে লাভ কি?
-তবে দিচ্ছেন কেন?
-মনের আনন্দের জন্য দেই। ভবিষ্যতের খুশির খবর নিয়ে আমরা স্বাধীন দেশে যাব। বঙ্গবন্ধুকে দেখব। এজন্য নিজেদের প্রস্তুত করছি। যেন কোনোভাবে কোনো দুঃখের খবর না পাই। আমাদের আনন্দ তোমরাও বুকে তুলে নাও।
সঙ্গে সঙ্গে স্লোগান দেয় কয়েকজন-জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। পেছনে দাঁড়ানো একজন তরুণ মামুন গেয়ে উঠে গানের লাইন- ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি, আকাশে বাতাসে ওঠে রণি।’ এক লাইন গান শুনে সবাই হাততালি দেয়। একজন বলে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে আমরাও এই গান শুনেছি, কিন্তু মুখস্ত করতে পারিনি।
মামুন বলে, আপনারা শিখতে চাইলে আমি গানটা সবাইকে শেখাব।
অঞ্জন উচ্চস্বরে বলে, সবাই শিখবে। আমিও শিখব।
একসঙ্গে উচ্চারিত হয়, আমরাও শিখব। আমরা গান গাইতে পারিনা, কিন্তু এই গানটি গাইলে বঙ্গবন্ধুকে আমাদের বুকের ভেতর দেখতে পাব। তার অপূর্ব সুন্দর চেহারা ভেসে উঠবে চোখের সামনে। আমরা তার পায়ের উপর লুটিয়ে পড়ব।
-সাবাস। ভরে উঠেছে শরণার্থী শিবির। এখানে আমাদের কোনো কষ্ট নেই। আমরা না খেয়ে থাকলেও মরে যাব না। সবার মনের শক্তি এভাবে ধরে রাখতে হবে।
-ঠিক, ঠিক। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বঙ্গবন্ধু।
-চলো, এই স্লোগান দিতে দিতে রাস্তা ধরে এগোই। আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে সবাই। কেউ বসে থাকবে না।
অঞ্জন নিজে শুরু করে, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বঙ্গবন্ধু।
সবাই মিলে স্লোগান দিতে শুরু করলে সরব হয়ে উঠে যশোর রোডের শরণার্থী শিবির। চারদিক থেকে ছুটে আসে অন্যরা। পথজুড়ে বিশাল সমাবেশ স্লোগানে মুখর করে সবাই। সীমান্তের কাছে এসে শেষ হয়ে যায় মিছিল। কিন্তু স্লোগান ফুরোয় না। চলতে থাকে আরও কিছুক্ষণ। চারদিক থেকে শিশুরা দৌড়াতে দৌড়াতে আসে। একসময় বড়দের স্লোগান থেমে গেলে শিশুরা বলতে থাকে, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বঙ্গবন্ধু। ওরা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না। এদিক-ওদিকে দৌড়াতে থাকে। ওদের কণ্ঠস্বরে স্লোগানের বলিষ্ঠতা মায়াবী উচ্চারণে ভরে থাকে। বড়রা তাকিয়ে থাকে ওদের দিকে। কাছে এলে মাথায় হাত দিয়ে আদর করে। ওরা হাসিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলে কণ্ঠস্বরে স্লোগানের ধ্বনি ব্যাপকতা লাভ করে, যেন শরণার্থী শিবিরে বেঁচে থাকার আনন্দের উচ্ছ্বাস প্রবাহিত হয়ে যাচ্ছে বসন্তের বাতাস হয়ে। অঞ্জন বুকভরে শ্বাস টানে। কাছে আসা শিশুদের বুকে টেনে ধরে। কাউকে কাউকে বলে, আয় একসঙ্গে স্লোগান দেই। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বঙ্গবন্ধু। আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুরা সবাই ওর সঙ্গে গলা মেলায়। বসন্তের বাতাস আরও প্রবলভাবে প্রবাহিত হয় উঠে যায় নীল আকাশের তটরেখায়। অঞ্জন প্রবলভাবে আন্দোলিত হয়। ভাবে শরণার্থী শিবিরের সুবর্ণরেখা ওদের মাথায় ছুঁয়ে নীল আকাশে ছড়িয়ে আছে। এভাবে স্বাধীনতার স্বপ্ন গৌরব-দীপ্ত হয় শিবিরে বাস করা সবার কাছে। কয়েকজন বলে, আমাদের কোনো কষ্ট নেই। আমরা আনন্দের জোয়ারে আছি। ভেসে যাচ্ছি হাজার হাজার নৌকা ভরা ফুল নিয়ে। ফুলের গন্ধে ভরে আছে প্রকৃতি। আমাদের স্বাধীনতা আমাদের স্বপ্নের ঘর।
সবাই হাততালি দেয়। হাততালি থামলে অঞ্জন সবাইকে বলে, চলো আমরা সীমান্ত পার হয়ে নিজের দেশের মাটি ছুঁয়ে আসি।
-ঠিক, ঠিক। যাই আমরা। মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে আসব।
-অঞ্জন ভাই আপনি যাবেন না?
-যাব, যাব।
দুপা হেঁটে অঞ্জন উপুড় হয়ে মাটিতে মাথা ঠেকায়। ওর দেখাদেখি অন্যরাও তাই করে। অঞ্জন মাথা উঁচু করে বলে, বাংলার মাটি আমাদের প্রাণের মাটি। জন্ম হয়েছে এখানে, মৃত্যুও হবে এই মাটিতে। বাংলার মাটি আমাদের মাটি। কয়েকবার কথাটি বলে অঞ্জন নিজের দেশের মাটি ছেড়ে ভারতের মাটিতে ঢোকে। বলে, নিজেদের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় এই মাটিও আমাদের প্রিয় মাটি। ঠাঁই দিয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার সামলে নিয়ে। আবার স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করার মহান ব্রতে। সেজন্য আমাদের দায়িত্ব হবে স্বাধীনতার জন্য নিজের শক্তি কাজে লাগাতে। আমরা যেন সময়ের বরখেলাপ না করি।
-অঞ্জন ভাই আপনি আমাদের চেয়ে বেশি বোঝেন। আমরা শুধু বুঝি প্রশিক্ষণ নেওয়া আর যুদ্ধে যাওয়া।
-এটাইতো স্বাধীনতার যুদ্ধের বড় দিক। তোমরা ঠিকই বোঝ।
-আর কতদিন আমাদের যুদ্ধ করতে হবে অঞ্জন ভাই?
-যতদিন আমরা পাকসেনাদের হারাতে না পারি ততদিন। ধৈর্য রাখ সবাই।
সবাই হাততালি দিয়ে বলে, জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু। আমরা করব জয়।
-চলো, কে কেমন আছে জেনে দেখি। সব তাঁবুতে যেতে হবে।
-আপনি তো ডাক্তার, আপনি একা যান।
-কেন একা যাব? আপনারা কি সবার ভালোমন্দ জানতে চান না?
-আমরা জানতে চাই। কিন্তু আমরা চাই না যে একসঙ্গে গিয়ে ভিড় করি। আমরা সবাই সবার খোঁজ রাখব।
-ঠিক আছে, যে যার মতো চলে যান। সবাই এদকি-ওদিক চলে যায়। একটি তাঁবু থেকে শিশুর কান্না শুনতে পেয়ে অঞ্জন সেদিকে যায়। দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, মা আপনি কি ভেতরে আছেন?
-হ্যাঁ আছি। আপনি কে?
-আমি ডাক্তার অঞ্জন। বাচ্চা কাঁদছে কেন তা জানতে এসেছি।
-ওর পায়খানা হচ্ছে, পেট ব্যথা করছে।
-আপনি যত্ন করে রাখেন। আমি ওর জন্য ওষুধ আনতে যাচ্ছি।
অঞ্জন বুঝে যায় বাচ্চাটি কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে। ওর মা সঙ্গে সঙ্গে বলে, ওর বাবা ওষুধ আনতে গেছে আপনাকে যেতে হবে না।
-ও আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে যাই। মাহমুদ ভাইকে বলবেন দরকার হলে আমাকে ডাকতে।
-আচ্ছা। আচ্ছা।
ওর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথা বলে। মায়ের এই কণ্ঠস্বর অঞ্জনের বুকে বাধে। অন্যদিকে শিশুটির চিৎকার করে কান্নাও মেনে নিতে কষ্ট হয়। তারপরও দ্রুতপায়ে হেঁটে সরে আসে তাঁবুর কাছ থেকে। আর একটি তাঁবু থেকে বেরিয়ে আসে শরীফ। অঞ্জনকে দেখে দ্রুতপায়ে কাছে আসে।
-ডাক্তার সাহেব আমার মেয়েটির খুব জ্বর। মুষড়ে পড়ে আছে। কিছু খেতেও চায় না।
-ও কত বড়?
-পনেরো বছর হয়েছে।
-চলেন দেখি।
অঞ্জন পকেট থেকে থার্মোমিটার বের করে হাতে রাখে। দুজন দ্রুত হেঁটে গিয়ে তাঁবুতে ঢোকে। মেয়েটি মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে কঁকাচ্ছে। এক অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে ওর মুখ থেকে। অঞ্জন ওকে দেখে বিব্রত হয়। বুঝে যায় যে মেয়েটির শুধু জ্বর নয়। থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে বিস্মিত হয়। বুঝতে পারে ও টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু সেটা সম্ভব হবে না। তাঁবু থেকে বেরিয়ে শরীফকে বলে, আমি যাই, ওষুধ আনার ব্যবস্থা করি।
শরীফ ঘাড় নেড়ে বলে, আচ্ছা।

চলবে…

আগের পর্বগুলো..

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা। পর্ব- ৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা

আজিনুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ফের উত্তেজনা। সীমান্ত এলাকায় ভুট্টাক্ষেতে কাজ করার সময় ভারতের কয়েকজন নাগরিক এক বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গিয়ে সোপর্দ করেছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে। এ ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের জমগ্রাম ডাঙ্গার পার এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ৮০১-এর ১০/১১ নম্বর সাব-পিলারের কাছে এই ঘটনা ঘটে।

ধৃত যুবকের নাম আজিনুর রহমান (২৬)। তিনি ওই ইউনিয়নের জমগ্রাম ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুর হোসেনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো আজিনুর তার মায়ের সঙ্গে ভুট্টা জমিতে পাতা সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। তখন ভারতের কোচবিহার জেলার ছোট কুচলীবাড়ি এলাকার অন্তত ১০-১২ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে আজিনুরকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়।

এরপর তাকে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবির ঠ্যাংঝাড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, "আমাদের প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, আজিনুরকে ভারতীয় নাগরিকরা ধরে নিয়ে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের চেষ্টা করছি।"

তিনি আরও জানান, ঘটনার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত আজিনুরকে দেশে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে শনিবার (১৯ এপ্রিল) বৈঠকে বসছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মুশফিক উস সালেহীন জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির প্রতিনিধি দল অংশ নেবে।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সদ্য অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের বিষয়ে যৌথ অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটি হয়েছে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক পরিবেশে। আলোচনায় উঠে এসেছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত এবং কৌশলগত সহযোগিতার নানা দিক।

বৈঠকে দুই দেশ বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা এবং পারস্পরিক সংযোগ বৃদ্ধিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও।

পাকিস্তান তাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশ মৎস্য ও সামুদ্রিক খাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে।

দুই দেশ চট্টগ্রাম-করাচি রুটে সরাসরি নৌ চলাচল চালুর ব্যাপারে একমত হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা-ইসলামাবাদ সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালুর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণের ক্ষেত্রেও অগ্রগতির প্রশংসা করে উভয়পক্ষ।

বৈঠকে শিক্ষাখাতে গভীর সহযোগিতা ও পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির প্রস্তাবের জন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যম, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াক্ষেত্রে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব বাড়াতে সম্ভাব্য সমঝোতা স্মারক নিয়েও আলোচনা হয়।

সার্ক বিষয়েও উভয়পক্ষ একমত হয় যে, আঞ্চলিক এই জোটকে পুনরুজ্জীবিত করা দরকার এবং তা যেন রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে থাকে।

বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলের হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানায় দুই দেশ। কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান জাতিসংঘ প্রস্তাব অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দেয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে অবস্থানকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যে পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক ২০২৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার
বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, শিশুসহ একই পরিবারের ১৩ জন নিহত
ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের
১৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর
গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান, ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে বড় সমস্যা আরাকান আর্মি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
টঙ্গীতে ফ্ল্যাট বাসা থেকে দুই শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার
মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ অবৈধ অভিবাসী আটক
ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া
বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল
বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ঢাকায় আবারও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, ড. ইউনূসের পদত্যাগ দাবি
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি