শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

-আমার হাঁড়িতে ছিল বলে দিতে পেরেছি। নইলেতো পারতাম না।
-যাক, আমাদের বাচ্চা দুটোকে খাওয়াতে পারলাম এটা আমাদের ভাগ্য। ওদেরকে খাওয়াতে পেরে আমাদের মনের কষ্ট কমেছে। আপনাকে সালাম জানাই।
-থাক, এত কথা বলবেন না। বাচ্চা দুটোকে খাওয়ানোর দায়তো আমারও ছিল। কিছুতেই ওদের কান্না শুনতে পারতাম না।
-আমরা সবাই এমন চিন্তায় শরণার্থী শিবিরে থাকব।
-হ্যাঁ, তাই থাকব। থাকতেই হবে। আমরা সবাই স্বাধীনতার জন্য এসেছি।

স্বাধীনতা শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বনি ওঠে চারদিকে স্বাধীনতা-স্বাধীনতা-বঙ্গবন্ধু-বঙ্গবন্ধু।
অঞ্জন নিজেও বলতে থাকে। ওর মন-প্রাণ ভরে যায় স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু শব্দে। বঙ্গবন্ধু ছাড়াতো স্বাধীনতার সূচনা রচিত হতোনা। এক বিপুল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন তিনি। সেই কর্মযজ্ঞে শামিল পুরো দেশবাসী। অনেকে আবার উল্টো কর্মে আছে। ওদের বিবেক নাই। ওদেরকে অবশ্যই মুখ থুবড়ে পড়তে হবে স্বাধীনতাকামী মানুষের পায়ের নিচে।

আকরাম তখন বলে, চলো যে যার তাঁবুতে চলে যাই।
সবাই উঠে পড়ে। বাচ্চা দুটোর হাত ধরে ওদের বাবা। ওরা হাঁটতে শুরু করে।
অঞ্জন আকরামকে বলে, দেখেন ওদের শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন আপনি।
-আহারে, এতটুকু ভাত দেয়া খুব বড় কাজ হয়েছে নাকি?
-হয়েছেতো বটেই। দেখছেন না ওদেরকে। দু’ভাই কেমন লাফালাফি করছে। ওরা প্রাণশক্তি ফিরে পেয়েছে। ওরা বলেনি যে আমরা একটুখানি ভাত খেয়েছি। আমাদের আরও ভাত দাও।

আকরাম হাসতে হাসতে বলে, ওরা বুদ্ধিমান ছেলে। বুঝে গেছে যে ভাত চাইলেই রাস্তায় ভাত পাওয়া যায় না।
অঞ্জন হা-হা করে হেসে ওঠে। হাসতে হাসতে বলে, আপনার ব্যাখ্যা খুব সুন্দর। আপনি ওদেরকে বড় মানুষ বানিয়ে দিলেন।
-এই শরণার্থী জীবনের পরে স্বাধীনতা পেলে ওরা বড় মানুষ হবে।
ছেলেদুটোর বাবা-মা হাততালি দিয়ে বলে, আপনি ওদের জন্য দোয়া করবেন আকরাম ভাই।
-হ্যাঁ, দোয়াতো করবই। আল্লাহর রহমত থাকবে ওদের উপর। আমি যাই।
-আমরাও যাই।

যে যার মতো হাঁটতে শুরু করে। ধুলোমলিন রাস্তায় হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না অঞ্জন। এপাশে ওপাশে পা ফেলে হাঁটতে গিয়ে বিরক্ত হয়। দেখতে পায় অন্যরা একইভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ওদের দিকে তাকিয়ে নিজের বিরক্তি কাটিয়ে নেয়। তারপর এলোমেলো পথে দ্রুতপায়ে হাঁটতে থাকে। ধুলোয় ধুসরিত এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা জীবনের সরলরেখা নয়। জীবনযাত্রার এলোপাতাড়ি নানা সংকটের চিহ্ন তুলে ধরেছে। প্রত্যেককেই এমন পথ বুঝে চলতে হবে। কখনো স্বপ্ন, কখনো কষ্ট, কখনো শান্তি, কখনো জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে হেঁটে যাওয়া বেঁচে থাকার সত্যের মাত্রা। অঞ্জন চারদিকে তাকায়। কত তাঁবু মানুষের দিনযাপনের জন্য। প্রত্যেকের সামনে স্বপ্ন একটাই। স্বাধীনতা। এভাবে ব্যক্তির ঊর্ধ্বে সমষ্টির স্বপ্ন এক হয়। নিজের ভাবনায় আলোড়িত হয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়ায় অঞ্জন। কেউ একজন ডাক্তার সাহেব বলতে বলতে ছুটে আসছে তার দিকে। কাছাকাছি এলে ও নিজেই বলে, কি হয়েছে আশরাফ?
-আমার ছেলেটার খালি পায়খানা হচ্ছে। কলেরা হলো নাকি? আপনি ওকে দেখতে চলেন।
-হ্যাঁ, চলেন।

দুজনে হাঁটতে শুরু করে। নানা তাঁবু থেকে শোনা যায় কান্নার শব্দ। অঞ্জন চারদিকে চারদিকে তাকিয়ে মুষড়ে পড়ে। তাঁবুতে তাঁবুকে কি অসুস্থতা শুরু হয়েছে। বুকের ভেতর টনটনিয়ে উঠে অঞ্জনের। আশরাফের তাঁবুর দিকে দ্রুতপায়ে হেঁটে যায়। তাঁবুতে পৌঁছে বাচ্চাটিকে পরীক্ষা করে বলে, হ্যাঁ, ও কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে। আমি হাসপাতালে গিয়ে ওষুধের ব্যবস্থা করব।

আশরাফ কাঁদতে শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে বলে, ওষুধের জোগাড় করতে তো সময় লাগবে।
অঞ্জন ওর ঘাড়ে হাত রেখে বলে, ধৈর্য ধরেন। আপনাকে কাঁদতে দেখলে ছেলেটার মন খারাপ হবে।
আশরাফ দুহাতে চোখ মুছে চুপ করে যায়। অঞ্জন বলে, যাই, অন্য তাঁবুতে কারা কাঁদছে দেখে আসি।
কয়েকটি তাঁবুতে গিয়ে টের পায় সবাই কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে। ওর শরীর কাঁপে থরথর করে। শরণার্থী শিবিরে কলেরার মহামারি শুরু হয়েছে এটা দেখে ও স্থির থাকতে পারে না। মেঘভরা আকাশ থেকে হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়। যশোর রোডের কাঁচা রাস্তা বৃষ্টির পানিতে কাদামাখা হয়ে যায়। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অঞ্জন কাদামাখা রাস্তায় হাঁটতে শুরু করে। মনে মনে ভাবে, শরণার্থী শিবিরে বাস করার এটা একটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা। এর আগে কখনো এভাবে বৃষ্টিতে হাঁটেনি। বৃষ্টি পড়তে দেখলে ঘরে ঢুকেছে। তারপর বারান্দায় বসে বৃষ্টি পড়া দেখেছে। আজ ও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গুনগুন করে গায়, ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা’..।

হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে আসে অঞ্জন। ভেজার আনন্দ বুকের ভেতর জমে থাকে। কোনোরকম ভয় আসে না মনে। তাঁবুতে ফিরলে বাবা-মা বকবে এমন ধারণা পেয়ে বসে ওকে। ও আর এগোয়না। ফিরে আসে তাঁবুতে। বাবা ওর ভিজে থাকা অবস্থা দেখে চেঁচিয়ে বলে, এত ভিজেছিস কেন? যদি জ্বর আসে মার খাবি।
মা গামছা এগিয়ে দিয়ে বলে, ভেতরে যা। গা মুছে তাড়াতাড়ি কাপড় বদলে ফ্যাল।

অঞ্জন মায়ের হাত থেকে গামছা নিয়ে তাঁবুর ভেতর ঢুকে পড়ে। শরীরজুড়ে গড়িয়ে পড়া বৃষ্টির পানির ছোঁয়া তখনো বুকের ভেতর আনন্দের ঢেউ তুলছে। ও বুকের উপর গামছা চেপে ধরে গুনগুনিয়ে বলে বৃষ্টি আমার স্বাধীনতা। স্বাধীনতার সোনার পানিতে ভিজে ভিজে মৃত্যুর দরজায় যাব। মৃত্যুকে বলব, মৃত্যু তুমি আমাকে বৃষ্টির পানিতে ভিজিয়ে রাখ। আমি স্বাধীনতা বুকে নিয়ে মরে যেতে চাই।
ওর মা মাথা বাড়িয়ে বলে, কি রে তুই কার সঙ্গে কথা বলছিস?
-বৃষ্টির সঙ্গে।

শব্দ করে হেসে উঠে ওর মা। হাসতে হাসতে বলে, ছেলেটাকে ডাক্তার বানিয়েছি। ওর নিজে নিজে কবি হয়েছে। বাড়িতে থাকতে জারুল গাছের ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকত। এখন বৃষ্টি ওর কবিতা হয়েছে। ভালোইতো ফুল আর বৃষ্টি নিয়ে আমার ছেলে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে।

মায়ের কথা শুনে শব্দ করে হাসতে থাকে অঞ্জন। হাসতে হাসতে বলে, মাগো স্বাধীনতার স্বপ্ন এমনই। সবটুকু সৌন্দর্য নিয়ে স্বাধীনতা সবার মনে থাকবে। আমরা কখনোই স্বাধীনতার অমর্যাদা করবনা।
-তাঁবুতে যে চারদিকে কলেরা শুরু হয়েছে এটা কি সৌন্দর্য?
-মাগো এটাও সৌন্দর্যের আর এক দিক। এটা হবে মানবিক সৌন্দর্য। কলেরা রোগীদের আমরা কীভাবে দেখাশোনা করব সেটাই সৌন্দর্য। কাউকে আমরা অবহেলা করব না। এই সৌন্দর্য আমাদের বানাতে হবে।
-বুঝলাম। সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। তবে এটাও জানি মহামারি সাবইকে সাবধান থাকতে দেয়না। সবাধান থাকলেও গায়ে চেপে বসে। রক্ষা পাওয়া যায়না।
-থাক, এসব কথা। আমাদের এখন এত কথা বলার দরকার নাই।
-তুই যে বৃষ্টিতে ভিজলি এটা নিয়ে আমার চিন্তার ঝড় উঠেছে রে ছেলে। কেন তুই বৃষ্টিতে ভিজলি?
-মাগো এটাকে আমার একটা খেলা মনে হয়েছিল। কোনো ভয় ছিলনা মনে।
-সবই বুঝলাম। এখন জ্বর না আসলে আল্লাহর রহমত হবে।
অঞ্জন হাসতে হাসতে বলে, দেখা যাক কি হয়। মায়ের দোয়ায় সুস্থ থাকব।

মা ছেলের মাথায় হাত রেখে বলে, আল্লাহ তোকে সুস্থ রাখবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।
অঞ্জন মায়ের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। দূর থেকে ভেসে আসে কান্নার শব্দ। দুজনে স্তব্ধ হয়ে যায়। কেউ আর কোনো কথা বলেনা। শরণার্থী শিবিরে দিন কাটানোর কষ্ট বুকে নিয়ে বেদনায় ম্রিয়মান হয়ে থাকে।

চলবে…..

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে—লিওনেল মেসি কি খেলবেন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে? বারবারই আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এবারও তার কথায় সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।

সম্প্রতি ‘সিম্পিলিমেন্টে ফুটবল’ নামক এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন এবং দলে থাকতে চান। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস বিবেচনা করে।

“নিজের প্রতি সৎ থাকতে হবে আমাকে। আমি যদি দেখি যে বিশ্বকাপে খেলার মতো ফিট আছি, দলকে সাহায্য করতে পারব—তবেই সিদ্ধান্ত নেব। আমি কোনোভাবেই দলের বোঝা হতে চাই না।” — বললেন মেসি।

আগামী জুনে ৩৮ বছরে পা রাখবেন তিনি, আর ২০২৬ বিশ্বকাপে বয়স হবে ৩৯। এমন বয়সে বিশ্বকাপ খেলাটা সহজ নয়। তাই মেসি বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে যাচাই করে এগোচ্ছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরেছেন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের কথায়ও, যেখানে আর্জেন্টিনা হেরে গিয়েছিল জার্মানির কাছে। এ প্রসঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নিজের একটি তুলনা টেনেছেন তিনি।

“এমবাপ্পে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল করেও জিততে পারেনি। এটা অনেকটা আমার ২০১৪ সালের অনুভূতির মতো। যদিও তার কাছে ২০১৮ সালের একটি বিশ্বকাপ শিরোপা আছে, সেটা একটা সান্ত্বনা। কিন্তু ওই হার আমার জন্য মানসিকভাবে খুবই কষ্টদায়ক ছিল। এখনো ভাবলে মনে হয়, আমারও দুটি বিশ্বকাপ থাকতে পারত।”

তবে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করছেন। তিনি বলেন, “আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। ফুটবলে যা কিছু অর্জন করা সম্ভব, আমি তা পেয়েছি। বিশ্বকাপটাই শুধু ছিল না, সেটাও এখন আছে। ঈশ্বরের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ—তিনি আমাকে সব দিয়েছেন।”

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট