বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত

ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক সম্পর্কে সম্প্রতি যে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে, তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশ। তবে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে—বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া-র এক প্রতিবেদনে এই বিষয়টি উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যা ভারতের কূটনৈতিক মহলে কিছুটা নেতিবাচক বার্তা হিসেবেই ধরা পড়েছে। অন্যদিকে ভারত দাবি করেছে, তারা ২০২০ সালে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে শুধুমাত্র নিজেদের বন্দর ও বিমানবন্দরের চাপ কমাতে।
ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর নিশ্চিত করেছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ থেকে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানির উপর কোনও প্রভাব পড়বে না।
সম্প্রতি ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মোদী স্পষ্টভাবে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন উস্কানিমূলক বক্তব্য ও কঠোর সিদ্ধান্ত এড়িয়ে চলা হয়—যাতে দুই দেশের সম্পর্কের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
ভারতের অভিযোগ, ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের আগেই বাংলাদেশ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে যা তাদের দৃষ্টিতে সীমাবদ্ধতামূলক। এর মধ্যে রয়েছে—মার্চে ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ এবং জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমসে কড়াকড়ি নজরদারি।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা ইতিমধ্যে সরকারকে সতর্ক করেছেন—ভারত থেকে সুতা আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হতে পারে। কারণ দেশের পোশাকশিল্প এখনও বহুলাংশে ভারতীয় সুতার ওপর নির্ভরশীল।
এই পরিস্থিতিতে যখন বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক কঠোর করছে, তখন একই সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক আবার চালু করেছে ঢাকা। ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের ট্রেডিং কর্পোরেশন থেকে ৫০ হাজার টন চাল কেনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশে বাড়তে থাকা ধর্মীয় উগ্রপন্থার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ইসলামাবাদকে বরাবরই সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দেখে এসেছে নয়াদিল্লি।
জানা গেছে, পাকিস্তান এখন বাংলাদেশে তাদের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে আগ্রহী। এমনকি দুই দেশের মধ্যকার উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার সচল হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ খুব শিগগিরই ঢাকা সফর করবেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশহাক দারও আগামী সপ্তাহে আসছেন।
