শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

অঞ্জন দ্রুত পায়ে হেঁটে এগোতে থাকে। চাল জোগাড়ের চিন্তা মাথার ভেতর গমগম শব্দ করে। অনুভবে দিশেহারা লাগে। নিজেকে শক্ত করার জন্য ভাবনার মোড় ঘোরায় চাল পাবে। পাবেই। শরণার্থী শিবিরের বড় জায়গা ধরে নিজের শক্তি বাড়ায় যুদ্ধ ও স্বাধীনতার পটভূমি শরণার্থী শিবির। বেঁচে থাকার সত্যকে ধারণ করে জীবনের জয়গান গায়। এসব ভাবতে ভাবতে যখন চাল দেয়ার ক্যাম্পে আসে দেখতে পায় কেউ নেই। ক্যাম্প বন্ধ। প্রবল মন খারপ নিয়ে ক্যাম্পের পাশের নিম গাছটা জড়িয়ে ধরে মাথা ঠোকে। কিছুক্ষণ পর ফিরে যায়। কেউ একজন জিজ্ঞেস করে, গাছে মাথা ঠুকলেন কেন?


-চাল পেলামনা। মন খারাপ হয়ে গেল।
-না খেয়ে থাকতে হবে আপনাকে?
-আমাকে না। বিভিন্ন তাঁবুতে চাল নাই। ভাত রান্না হয়নি। শিশুরা কাঁদছে।
-আসেন আমার সঙ্গে। আমি তিন কেজি চাল কিনে দিচ্ছি দোকান থেকে।
-কিনে দেবেন?
-দিবইতো। না খেয়ে থাকবে কেন আমার দেশের শরণার্থীরা। যতটুকু পারি অতটুকু সাহায্য তো করবই।
অঞ্জন লোকটির দুহাত জড়িয়ে ধরে। বলে, মানুষকে ভালোবেসে আপনি একজন মহৎ মানুষ। আপনাকে শ্রদ্ধা করি।
লোকটি কথা বলেনা। অঞ্জনের হাত ধরে দোকানে যায়। তিন কেজি চালের তিনটি পোটলা নেয় দোকান থেকে। অঞ্জনকে দিয়ে বলে, যার যার লাগবে তাকে এক কেজি করে দিয়েন।

-হ্যাঁ, তা দেব। আপনাকে অনেক ভালোবাসা জানাই। দেশ স্বাধীন হলে আমি আপনাকে আমাদের দেশে বেড়াতে নিয়ে যাব।

-আপনার কষ্ট করতে হবেনা। আমি নিজেই যাব আপনার দেশে বেড়াতে। আমার জনম সার্থক হবে। আমাদের চেনাজানা পূর্ববঙ্গ একবার পূর্ব পাকিস্তান হলো। এখন স্বাধীন বাংলাদেশ হবে। ভাবলে আমার মাথা তোলপাড় করে ওঠে। বাঙালি জাতির একটা স্বাধীন দেশ। আপনারা জীবন উৎসর্গ করে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছেন। ভাবলে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। আমি কলেজে পড়াই। ছাত্র-ছাত্রীদের দরকার মতো ভাষা আন্দোলনের কথা বলি। এখন ওরা নিজেরাই দেখবে দেশটি স্বাধীন হয়েছে।

-আপনাদের সহযোগিতা না পেলে আমরা দেশ স্বাধীন করতে পারতাম না।

-আমিও আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি যেভাবে সহযোগিতা দিচ্ছেন সেটা একটি অতুলনীয় সিদ্ধান্ত। এটা বাঙালির একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য জরুরি ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার সামনে একজন অসাধারণ মানুষ। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকান্ডে আমি নিজেও খুব অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাঁকে ছাড়াতো বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র হতো না।

অঞ্জন উদ্দীপিত হয়ে বলে, ঠিক বলেছেন, ঠিক বলেছেন। তিনি আমাদের স্বপ্নদ্রষ্টা। আমি ভেবে রেখেছি যে দেশ স্বাধীন হলে আমি তাঁর পায়ে মাথা ঠেকাব।

-পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলেই হবে, না?

-তাও ঠিক। আপনাদের দেয়া চাল নিয়ে যাই। শিশুদের কান্নার শব্দ পাচ্ছি।

-হ্যাঁ, যান, যান।

অঞ্জন দ্রুতপায়ে হাঁটতে শুরু করে। যিনি এত সুন্দর করে কথা বললেন তাকে দেখার জন্য ঘাড় ঘুরায়। দেখতে পায় তিনি ওর দিকে তাকিয়ে আছেন। অঞ্জন মৃদু হেসে হাত নেড়ে টা-টা বলে। লোকটিও হাত নেড়ে টা-টা বলে। গাঢ় হয় স্বপ্নের সেতু। ও আবার দ্রæতপায়ে হাঁটতে শুরু করে। কান্নার শব্দ ধরে সেই তাঁবুতে যায়। চাল দিয়ে চলে আসে। চাল জোগাড় করা গেছে ভেবে স্বস্তি বোধ করে। মানুষের চারপাশে এমনই মানুষই থাকে এটাই বেঁচে থাকার সত্য-সুন্দর। বর্বরতাকে ডিঙিয়ে মানুষের বেঁচে থাকা সত্যের সুন্দরতা। অঞ্জন খুশিতে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। সীমান্তের দিকে তাকালে দেখতে পায় একদল শরণার্থী আসছে। এগিয়ে যায় সেদিকে। দেখতে পায় রঘু রাই দাঁড়িয়ে আছে। মুহূর্তের মধ্যে অমিয়ার চিন্তায় মাথা ভরে যায়। ভাবে, ও কি ঠিক আছে! কোনো পাক সেনার কবলে পড়েনি তো? বুকের ভেতর হাহাকার ধ্বণিত হয়। ও সীমান্তের একপাশে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকে এগিয়ে আসা নারী-পুরুষের দিকে। না, এই দলে অমিয়া বাবা-মায়ের সঙ্গে নাই। বোঝা যাচ্ছে, ওরা ঢাকা ছাড়বে না। অঞ্জন মন খারাপ করে চারদিকে তাকায়। সামনে বিরাট প্রান্তর নিঃশব্দে পড়ে আছে। তারপর ও নিজেকে ধমকায়। মাটি নিঃশব্দে পড়ে থাকবে কেন? এই মাটি বুক পেতে রেখেছে বাঙালির স্বাধীনতার জন্য। একদিন এই মাটির উপর উড়বে বাঙালির স্বাধীনতার পতাকা। তখন ও গুনগুন করে গাইতে থাকে ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা’। শরণার্থীরা ঢুকে যাচ্ছে সীমান্ত পেরিয়ে। ও তাকিয়ে থাকে, তারপর কাছে এসে দাঁড়ায়। একজনকে জিজ্ঞেস করে, দেশের অবস্থা কি?

-পাকিস্তানি শয়তানরা যতই মারুক আমাদেরকে, ওরা টিকতে পারবেনা এই দেশে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা ওদেরকে মেরে ভাগাবে।

-হ্যাঁ, তা ঠিক। যান, আপনারা এগিয়ে যান।

-তাতো যাবই। নইলে আসলাম কেন?

অঞ্জন কথা বাড়ায়না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে একপাশে। সারিবদ্ধ লোকেরা বউ-ছেলেমেয়ে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে। মাথায় পোটলা-পুটলি। ক্লান্ত দেখাচ্ছে ওদের। অঞ্জন পরক্ষণে নিজেকে ধমকায়, কতদূর পথ হেঁটে এসেছে। ক্লান্ততো হবেই। কোথায় ঠাঁই পাবে ওরা? এতকিছু ভাবনার মাঝে সীমান্ত অতিক্রম করে লোকেরা। কেউ কেউ বউ-ছেলেমেয়ে নিয়ে গাছের নিচে বসে পড়ে। সীমান্ত রক্ষীরা জানাচ্ছে, আপনাদের যশোর রোডে জায়গা হবেনা। আপনারা কলকাতার দিকে এগিয়ে যান। অঞ্জন তাকিয়ে থাকে। দেখে যশোর রোড ধরে এগিয়ে যাচ্ছে শরণার্থীরা। ওরা কোথায় ঠিকানা পাবে ভাবতে ওর কষ্ট হয়। পরমুহুর্তে আশ^স্ত হয় এই ভেবে যে কোথাও না কোথাও ব্যবস্থা হবে। শরণার্থীদের জন্য ভারতের অনেক মায়া আছে। অঞ্জন হঁটতে হাঁটতে কিছুদূর এসে দাঁড়িয়ে থাকে। একসময় দেখে দুটো নয়-দশ বছরের ছেলে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় রাস্তার ওপর। ওরা ওঠে না। পড়েই থাকে। অঞ্জন দ্রুত গিয়ে ওদের ওঠানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ওঠাতে পারেনা। ওরা নিজেরাও ওঠার চেষ্টা করেনা। অঞ্জন বুঝতে পারে ওরা জ্ঞান হারিয়েছে। ও ওদেরকে রাস্তার পাশে টেনে আনে। কিছুক্ষণের মধ্যে ওদের বাবা-মা এসে হাজির হয়।

- কি হয়েছে আমাদের ছেলে দুটোর? ওরা পড়ে গেল কেন?

মা কাঁদতে কাঁদতে বলে, পড়বেনা কেন? কাল দুপুরে আর রাতে ভাত খেতে পায়নি। ডাক্তার সাহেব আপনি দেখেন ওদের।

অঞ্জন বুঝতে পারে, ওরা জ্ঞান হারিয়েছে। ওদেরকে তাঁবুতে নিয়ে যেতে হবে। হাত ঈশারায় ওদের বাবাকে ডেকে বলে, ওরা জ্ঞান হারিয়েছে। আপনি একজনকে কোলে নিন, আমি একজনকে নিব। ওদেরকে তাঁবুর ভেতর নিয়ে বিছানায় শোয়াতে হবে। ওরা জ্ঞান হারিয়েছে।

ওদের বাবা দুহাতে চোখ মুছে একজনকে কোলে তোলে। অঞ্জন আর একজনকে। হাঁটতে শুরু করে দুজনে। ওদের মা কাঁদতে কাঁদতে হাঁটে। কান্নার শব্দ শুনে চারদিক থেকে লোকজন বেরিয়ে আসে। আকরাম জিজ্ঞেস করে, কি হয়েছে?

অঞ্জন বলে, ছেলেদুটো জ্ঞান হারিয়েছে। পড়ে গিয়েছিল রাস্তায়। পেটে খিদা। ভাত খেতে পায়নি।

-আমার ঘরে অল্প ভাত আছে। আনব?
-আনেন, আনেন।

আকরাম ভাত আনার জন্য তাঁবুতে ঢোকে। অঞ্জন ওদের নিয়ে গাছতলায় বসে। ওরা জ্ঞান ফিরে পেয়েছে। ওদের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে। একজন বলে, ভাত খাব। ভাত খাব। অন্যজন বলে, মা কোথায় ভাত পাবে?
কাঁদতে শুরু করে চিৎকার করে দুজনেই। অঞ্জন চুপচাপ থাকে। ভাবে, কাঁদুক, কেঁদে শান্ত হোক। ওদের বাবা ওর কোলে শুয়ে থাকা ছেলেটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে। তারপরও ওর কান্না থামে না। তখন ওরা দেখতে পায় থালায় করে ভাত নিয়ে আসছে আকরাম। ওদের কান্না শুনে দ্রæত এগোয়। কাছে এসে ওদের মাকে থালা দিয়ে বলে, আপনি ওদেরকে খাইয়ে দেন। এই যে পানিও আনছি। আমি শুধু ভাতের মধ্যে ডাল দিয়েছি। কারণ আমাদের তরকারিতে খুব ঝাল থাকে। ওরা খেতে পারবেনা।

-আচ্ছা দেন।

ওদের মা থালাভরা ভাত ডাল দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে ওদের মুখে দেয়। ছেলেরা দ্রæত চাবিয়ে গিলে ফেলে। আবার হাঁ করে। দুজনকে ভাত খাওয়াতে পেরে পরিতৃপ্ত হয়ে যায় সবাই। আকরামও ওদের সঙ্গে বসে থাকে। অঞ্জনের মনে হয় শরণার্থী শিবিরে এ একটা অন্যরকম দৃশ্য। ও যে কয় মাস থাকল এতদিনে এখানে এমন দৃশ্য দেখেনি। এই দেখাটা আজকে ওর সামনে স্বাধীনতার স্বপ্নের ফুল হয়ে ফোটে। মানুষের সঙ্গে মানুষের এমন সম্পর্কইতো বেঁচে থাকার সত্য। ও আকরামের ঘাড়ে হাত রেখে বলে, আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই ভাই। আপনি বাচ্চাদুটোর পেট ভরে দিয়েছেন।

 

চলবে...

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে—লিওনেল মেসি কি খেলবেন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে? বারবারই আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এবারও তার কথায় সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।

সম্প্রতি ‘সিম্পিলিমেন্টে ফুটবল’ নামক এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন এবং দলে থাকতে চান। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস বিবেচনা করে।

“নিজের প্রতি সৎ থাকতে হবে আমাকে। আমি যদি দেখি যে বিশ্বকাপে খেলার মতো ফিট আছি, দলকে সাহায্য করতে পারব—তবেই সিদ্ধান্ত নেব। আমি কোনোভাবেই দলের বোঝা হতে চাই না।” — বললেন মেসি।

আগামী জুনে ৩৮ বছরে পা রাখবেন তিনি, আর ২০২৬ বিশ্বকাপে বয়স হবে ৩৯। এমন বয়সে বিশ্বকাপ খেলাটা সহজ নয়। তাই মেসি বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে যাচাই করে এগোচ্ছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরেছেন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের কথায়ও, যেখানে আর্জেন্টিনা হেরে গিয়েছিল জার্মানির কাছে। এ প্রসঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নিজের একটি তুলনা টেনেছেন তিনি।

“এমবাপ্পে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল করেও জিততে পারেনি। এটা অনেকটা আমার ২০১৪ সালের অনুভূতির মতো। যদিও তার কাছে ২০১৮ সালের একটি বিশ্বকাপ শিরোপা আছে, সেটা একটা সান্ত্বনা। কিন্তু ওই হার আমার জন্য মানসিকভাবে খুবই কষ্টদায়ক ছিল। এখনো ভাবলে মনে হয়, আমারও দুটি বিশ্বকাপ থাকতে পারত।”

তবে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করছেন। তিনি বলেন, “আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। ফুটবলে যা কিছু অর্জন করা সম্ভব, আমি তা পেয়েছি। বিশ্বকাপটাই শুধু ছিল না, সেটাও এখন আছে। ঈশ্বরের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ—তিনি আমাকে সব দিয়েছেন।”

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট