রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

শিকারিরা দুপুরের খাবারের জন্য পূর্ব-নির্ধারিত জায়গায় আসার সময় এদিক ওদিক ফিরে ফিরে তাকায়– যদি কোনো শিকার চোখে পড়ে। তবে মন আর শিকারে নেই; তারা খুব ক্ষুধার্ত। পা টলতে টলতে, চোখ মুখের ঘাম মুছতে মুছতে তারা ফিরে আসে। দুজন দুজন করে ফিরে আসার সময় দূর থেকে নিজেদের শিকার দেখাতে দেখাতে আসে। কেউ কেউ শিকার রাখার শূন্য ব্যাগ তাচ্ছিল্যের সঙ্গে ছুড়ে ফেলে দেয় আর বর্ণনা করে কীভাবে ওই ব্যাগ সারাক্ষণ শূন্যই ছিল। একই সময় সবাই সমবেত শিকারগুলো গুণে দেখে। প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু বলার থাকেই।

তবে সবচেয়ে আড়ম্বরপূর্ণ বর্ণনা আসে আর্নেস্টের কাছ থেকে। হাত মুখ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যে বর্ণনা সে দেয় সে বর্ণনাকে মুকাভিনয় বলাই উত্তম। অন্যদের তরফে সামান্যতম অবিশ্বাস যেন না থাকে সেজন্য তার সব বর্ণনার জ্যান্ত সাক্ষী রাখে ডানিয়েল এবং জ্যাককে। আর্নেস্ট বর্ণনা করতে থাকে কীভাবে তিতির পাখিটা উড়ে যাচ্ছিল, কীভাবে খরগোশটা বার দুয়েক মাটি ছুঁয়ে ছুটে চলার পর হঠাৎ উল্টে পড়ে গেল রাগবি খোলোয়ারের মতো। ততক্ষণে সৃশৃঙ্খল পিয়েরে সবার কাছ থেকে নেওয়া ধাতব পাত্রে এনিসেট ঢেলে দিয়ে পাত্রগুলো বিশুদ্ধ পানিতে পূর্ণ করার জন্য পাইন ঝোপের শেষ প্রান্তে ক্ষীণ ধারায় বয়ে যাওয়া ঝরনার কাছে চলে যায়। সবাই মিলে একটা ভ্রাম্যমাণ টেবিল পেতে তার ওপরে টেবিলক্লথ বিছিয়ে দেয় এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ ব্যাগ থেকে যা যা এনেছে ঢেলে দেয়। তবে তাদের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবী বাবুর্চি হিসেবে খ্যাতি আর্নেস্টের। গ্রীষ্মকালে তাদের মাছ ধরা অভিযানে খাবারের শুরুতে থাকত দক্ষিণ ফ্রান্সের মসলাযুক্ত স্যুপ। তাৎক্ষণিকভাবে ধরা মাছ এবং হাতের কাছে পাওয়া মসলা দিয়ে আর্নেস্ট সেই স্যুপ তৈরি করত। কোনো কোনো মসলা সে এত বেশি উদারভাবে মেশাত যে, মনে হতো কোনো কচ্ছপের জিহ্বাও পুড়ে যাবে।

যা-ই হোক, সেদিন আর্নেস্ট কয়েকটা কাঠি ভালো করে, একেবারে সুচালো করে চেছে সেগুলোর সঙ্গে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা সোব্রাসাডাগুলো গেঁথে দিল। তারপর কাঠের অল্প আগুনে ঝলসে নিল। আগুনের তাপে ফোঁটায় ফোঁটায় তরল গলে পড়তে লাগল নিচের আগুনে এবং সেখানে হিস হিস আওয়াজ তোলার সঙ্গে আগুনের ফুলকি উঠতে লাগল। দুটুকরো রুটির মধ্যে ফুটন্ত এবং সুগন্ধযুক্ত সস ভরে আর্নেস্ট অন্যদের হাতে দিয়ে দিল। সুগন্ধি মদের মধ্যে চুবিয়ে আনন্দে আত্মহারা হওয়ার মতো শব্দ করতে করতে সবাই গোগ্রাসে গিলতে লাগল সেগুলো। তারপর কিছুক্ষণ চলল হাসি তামাসা, কাজকর্ম সম্পর্কিত গল্পগুজব আর কৌতুক। তবে অপরিষ্কার ক্লান্ত শরীরে জ্যাক তাদের গল্পে খুব বেশি মনোযোগ দিতে পারল না। কারণ তার খুব ঘুম পাচ্ছিল। অবশ্য অন্যদেরও কারো কারো ঘুম পাচ্ছিল। কেউ কেউ আবার নিচে সমতলভূমির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সবুজের দিকে শূন্য চোখে তাকিয়ে রইল। কিংবা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে কেউ কেউ আর্নেস্টের মতো একটা লম্বা ঘুমই দিয়ে দিল। যা হোক, সাড়ে পাঁচটায় যে ট্রেনটা স্টেশনে আসবে সেটা ধরার জন্য তাদের চারটার সময় রওনা দিতে হবে।

ট্রেনে ওঠার পর কম্পার্টমেন্টের মধ্যে ক্লান্তির সঙ্গে সবাই গাদাগাদি করে বসে পড়ল। কুকুরগুলোর কোনোটা সিটের নিচে, কোনোটা মালিকের পায়ের নিচে ঘুমিয়ে। রক্তপিপাসার স্বপ্ন তাদের ঘুমের মধ্যে আসা যাওয়া করছে। দিনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে সমতলভূমির প্রান্তে। এরপর আসে আফ্রিকার আতি সংক্ষিপ্ত গোধূলিবেলা। খোলা প্রান্তরের ওপর উপদ্রবের মতো কোনো রকম ক্রান্তির রেখা না টেনেই নেমে পড়বে রাত। শেষ স্টেশনে গিয়ে বাড়ি পৌঁছনোর তাগিদে তাড়িত হয়ে পড়ে সবাই: বাড়ি গিয়ে তাড়াতাড়ি খেয়েদেয়ে সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়তে হবে, ভোরে উঠেই আবার বের হতে হবে কাজে। সুতরাং তাদের বিদায়পর্ব অন্ধকারেই সাঙ্গ হয়। শুধু বন্ধুত্বের পিঠ চাপড়ানি ছাড়া মুখে কেউ কিছু বলে না।

জ্যাক তাদের চলে যাওয়ার শব্দ এবং উষ্ণ, উত্তাল কণ্ঠ শোনে–তার খুব ভালো লাগে এইসব। তারপর সে আর্নেস্টের চলার গতির সঙ্গে তাল মেলায়। অর্নেস্ট এখনও প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা। কিন্তু জ্যাকের পা যেন আর নড়তে চায় না। বাড়ির কাছাকাছি অন্ধকার রাস্তায় পৌঁছে আর্নেস্ট জ্যাকের দিকে ফিরে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, তুই খুশি হয়েছিস তো? জ্যাক সাড়া দেয় না। আর্নেস্ট উচ্চ শব্দে হেসে কুকুরের উদ্দেশে শিস বাজায়। কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে মামার খসখসে হাতের মধ্যে নিজের হাত আস্তে করে ঢুকিয়ে দেয় জ্যাক। মামা জ্যাকের হাতে খুশি আর আদর মেশানো চাপ দেয়। দুজনই নীরবে বাড়ি পৌঁছে।

আনন্দ যেমন তাড়তাড়ি পেত রাগের সময়ও খুব দ্রুত এবং পুরো মাত্রায় আবেগের শিকারে পরিণত হতো আর্নেস্ট। রাগের সময় তাকে যুক্তি দিয়ে কিছু বোঝানো যেত না। তার সঙ্গে কথাও বলা যেতো না। তার রাগকে একটা প্রাকৃতিক ব্যাপার বলেই ধরে নিত সবাই। আকাশে ঝড়ের মেঘ জড়ো হতে দেখলে ঝড় নেমে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। অন্যসব বধির মানুষের মতোই আর্নেস্টের গন্ধের ইন্দ্রিয় খুব প্রবল ছিল। অবশ্য তার কুকুরের গন্ধের প্রসঙ্গ উঠলে এই কথা প্রযোজ্য নয়।

গন্ধের প্রখর ইন্দ্রিয় আর্নেস্টের জন্য আনন্দ বয়ে নিয়ে আসত: দুভাগ করা মটরের স্যুপ কিংবা সস ওমলেট, নানির হাতের বিশেষ রান্নার পদ গরুর কলিজা আর ফোঁপরার সঙ্গে মিশিয়ে নাড়িভুঁড়ি রান্না– সস্তা হওয়ার কারণে তাদের খাবার টেবিলে প্রায়ই দেখা যেত এই পদ; এটা সহ অন্য যেসব খাবার তার প্রিয় ছিল সেগুলোর সুগন্ধ তার আনন্দের উৎস ছিল। কিংবা রবিবারে মামা যে সস্তা ওডিকলোন মাখত সেটার গন্ধ, কিংবা পম্পেরো নামের লোশন, এটা অবশ্য জ্যাকের মা ও ব্যবহার করতেন, এটার লেবু এবং কমলালেবুর তেলসদৃস সুগন্ধ খাবার ঘরের সবখানে এবং মামার চুলে লেগে থাকত। বোতলের কাছে মুখ নিয়ে মামা শুঁকে দেখত। তবে শুধু আনন্দ নয়, তার প্রখর ইন্দিয়ের কারণে অনেক সময় সমস্যাও হতো।

সাধারণ নাকে ধরা যায় না এমন কিছু গন্ধ তার সহ্যই হতো না। যেমন খাবার শুরু করার আগে সে নিজের প্লেটটা শুঁকে দেখত; প্লেট থেকে যদি তার নাকে ডিমের গন্ধ আসত তাহলে রেগে আগুন হয়ে যেত আর্নেস্ট। সন্দেহযুক্ত প্লেটটা নানি হাতে নিয়ে নিজে শুঁকে দেখতেন এবং বলতেন কোনো গন্ধ পাচ্ছেন না। তারপর তার মেয়ের হাতে দিতেন শুঁকে দেখার জন্য। ক্যাথরিন করমারি প্লেটটা হাতে নিয়ে সেটার ওপর দিয়ে নাক ঘুরিয়ে এমনকি না শুঁকেই বলে দিতেন, না কোনো গন্ধ নেই। তারা অন্য প্লেটগুলো নিয়েও শুঁকে দেখতেন যাতে তাদের পরীক্ষা যথাযথ হয়েছে বলে মতামত প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। অবশ্য বাচ্চাদের প্লেট তারা শুঁকতেন না; তাদেরকে খেতে দেওয়া হতো লোহার গামলায়। এর কারণ অবশ্য জ্যাকের কাছে তখন রহস্যময় ছিল। হতে পারে চীনা মাটির প্লেটের অভাব ছিল বাড়িতে, কিংবা নানি যেমন একদিন বললেন– প্লেট যাতে না ভাঙে। তবে জ্যাক এবং তার ভাই চালচলনে বেখেয়াল ছিল না কখনওই। যে কারণই হোক না কেন, পরিবারের কোনো নিয়মের আসলে কোনো ভিত্তি নেই বলেই মনে হয়েছে জ্যাকের।

তবে এতসব আচার আনুষ্ঠানের পেছনেও নৃতাত্ত্বিকগণ কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন; তাদের অনুসন্ধান প্রয়াস দেখলে হাসি পায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল রহস্য হলো, আসলে কোনো কারণই নেই। যা হোক, নানি এরপর সোজা সাপটা রায় দিয়ে দিতেন: কোনো গন্ধ নেই প্লেটে। আসলে এরকম রায় ছাড়া নানির আর কোনো উপায় থাকত না। কারণ আগের রাতে থালাবাসন হয়তো তিনি নিজেই ধুয়েছেন। গৃহিনী হিসেবে তিনি কাউকে একচুলও ছাড় দিতে রাজী ছিলেন না। আর তাতেই আর্নেস্টের রাগ আরো বেড়ে যেত এবং রাগ বাড়ার অরেকটা কারণ হলো, রাগের সময় তার দৃঢ় বিশ্বাসটাকে সে প্রকাশ করতে পারত না। তখন তার রাগকে স্বাভাবিক গতিতে চলতে দিতে হতো। খাওয়া বাদ দিয়ে গোমড়া মুখে বসে থাকত; নানি তার প্লেট বদলে দিলেও নিজের প্লেটের দিকে ঘৃণাভরা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত, কিংবা টেবিল থেকে উঠে যেতে যেতে রাগ করে বলত সে রেস্তোরাঁয় চলে যাচ্ছে। বলা পর্যন্তই তার ক্ষমতা, জীবনে একবারও ওদিকে পা বাড়ায়নি।

অবশ্য তাদের বাড়ির আর কেউই তেমন কাণ্ড করেনি। খাওয়া নিয়ে কেউ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলে নানি অবশ্য বলতে ছাড়তেন না, রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেয়ে আয়। যখন থেকে নানি ওই কথা বলা শুরু করেছেন তখন থেকেই সবার কাছে রেস্তোরাঁ জায়গাটা পাপের এবং প্রলোভনের একটা জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে পয়সা দিতে পারলে সবকিছু সহজেই পাওয়া যায়। তবে সেখানে গেলে একদিন না একদিন তার পরিণাম ভোগ করতেই হবে: নির্ঘাত পেটের পীড়া শুরু হয়ে যাবে। যে ঘটনাতেই রাগ করুক না কেন নানি তার ছোট ছেলের রাগের প্রতি বিন্দুমাত্র পাত্তা দেননি। তার একটা কারণ হলো, তিনি মনে করতেন, ছেলের রাগের প্রতি বেশি নজর দেওয়ার কোনো মানে নেই।

আরেকটা কারণ হলো, ছেলের প্রতি তার একটা দুর্বলতা ছিল: জ্যাকের অনুমানে সেই কারণটা হলো, মামার আংশিক প্রতিবন্দ্বীত্ব। আমরা যতই আমাদের গৎবাঁধা ধারণা আঁকড়ে থাকি না কেন, আমাদের চোখের সামনে এমন অনেক উদাহরণ আছে; বাবা-মা তাদের প্রতিবন্দ্বী সন্তানের দিক থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। অনেক দিন পরে জ্যাক একদিন মামার প্রতি নানির সদা-কড়া চোখে মায়া মমতার একটা চাহনি দেখেছিল, সাধারণত এমনটা কখনও সে আগে দেখেনি। সেদিন ছিল রবিবার। মামা একটা জ্যাকেট পরেছে। কালো জ্যাকেটে মামাকে আরো একটু হালকা পাতলা লাগছে। এমনিতে মামার শরীরিক গঠন ছিল নরম কোমল এবং বালসুলভ। সেদিন মামা মাত্র শেভ করেছে এবং চুলগুলো চমৎকার করে চিরুনি করেছে। তার ওপরে নতুন কলার আর টাইয়ের কারণে মামাকে দেখাচ্ছে ছুটির দিনের পোশাকে গ্রিক রাখাল বালকের মতো। জ্যাকও সেদিন বুঝতে পারে, তার মামার আসল চেহারাই খুব সুন্দর। সেই চেহারাটাই ফুটে উঠেছে তার সুন্দর পোশাকের সঙ্গে।

সেদিনই জ্যাক বুঝতে পারে, নানির ছেলের প্রতি ভালোবাসা ছিল বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রতি ভালোবাসা; নানির ভালোলাগার কারণ আর্নেস্ট মামার সৌন্দর্য এবং শক্তি। সেদিন জ্যাক বুঝতে পেরেছে, আগে যে তার মনে হয়েছিল মামার প্রতি নানির আলাদা একটা টান বা দুর্বলতা আছে সেটা আসলে ঠিক নয়। তার প্রতি নানির দুর্বলতা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। সৌন্দর্য আমাদের সবাইকেই কমবেশি দুর্বল করে থাকে। তার ফলেই জগৎ সংসার আমাদের কাছে সহনীয় হয়ে থাকে। সৌন্দর্যের প্রতি আমাদের সবার দুর্বলতা আছে।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের আমিনবাজার এলাকায় জাতীয় গ্রিডে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। রাত ৮টার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যুৎ না থাকায় এইসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বিদ্যুৎনির্ভর সব ধরনের কাজকর্মও ব্যাহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালে দেশে বড় ধরনের একটি গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছিল। সেবার ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ সরবরাহ কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ায় সারাদেশ প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল।

Header Ad
Header Ad

আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা

ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন দিবস, উৎসব এবং সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আবারও ছুটি কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। মে মাসে দুই দফায় টানা তিনদিন করে মোট ছয়দিনের ছুটির সুযোগ আসছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন অনুসারে, আগামী ১ মে (বৃহস্পতিবার) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকবে। এরপর ২ ও ৩ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সরকারি কর্মচারীরা টানা তিনদিনের ছুটি উপভোগ করতে পারবেন।

এছাড়া, আগামী ১১ মে (রবিবার) বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি রয়েছে। এর আগে ৯ ও ১০ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আবারও টানা তিনদিন ছুটি মিলবে।

এর আগে গত মার্চ-এপ্রিল মাসে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা নয়দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। সরকার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশে আরও একটি অতিরিক্ত ছুটি যুক্ত করেছিল।

ছুটির বিধিমালা অনুযায়ী, দুই ছুটির মাঝে নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়ার নিয়ম নেই। তবে অর্জিত ছুটি বা পূর্বনির্ধারিত ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী তিনদিনের ঐচ্ছিক ছুটি অনুমোদন নিয়ে ভোগ করার নিয়মও চালু আছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক