রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

গল্প/ সেমসাইড

 

ব্রিজের নাম ‘ছাগলা পাগলা’। অদ্ভুত ধরণের নাম। স্থানীয়দের দেওয়া নাম। শুনলেই হাসি পায়। আমাদের একজন সহযোদ্ধা ছাগলাপাগলা নাম শুনে ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলে বাকিরাও হাসতে থাকে। ওর নাম দিলু গোমেজ। হাসতে হাসতে বলে, ‘ছাগলা পাগলা’ এ আবার কেমন ধরণের নাম? দিলু গোমেজ বলে, ‘এ নামের মানে কি?’

দিলু গোমেজ এমন প্রশ্ন করতেই জ্বরে আক্রান্ত কমান্ডার কেশে মুখে ফিরিয়ে দিলু গোমেজের দিকে তাকালেন। মুহূর্তে হাসি থেমে গেল দিলু গোমেজের। আমাদের এই দলে দিলু গোমেজ একমাত্র খ্রিষ্টান যোদ্ধা। ঢাকা মিরপুরের বাসিন্দা। নাদুস-নুদুস গোলগাল চেহারা। খ্রিষ্টান বলে সবাই ওকে আলাদা ভাবে স্নেহ করে। সবাই মজা করে যিশু বলে ডাকে। যিশুর মতো মিষ্টি ভাষি। নম্র স্বভাবের। কিছুটা ভিতু প্রকৃতির। এই ভিতু ছেলেটি কোন সাহসে যুদ্ধে এসেছে-মাঝে মাঝে আমি ভাবি। আমার সঙ্গেই ওর বেশি সখ্য। কিছু হলে ছুটে আমার কাছে আসে।

এবারও আমার কাছে এসে নিচু গলায় জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি চেন ব্রিজটা?’

বললাম, ‘চিনি।’

‘ব্রিজের নাম ছাগলা পাগলা হলো কেন?’

রেল কোম্পানির করা এই ব্রিজের নাম কেন ছাগলা পাগলা হলো সে ইতিহাস আমিও জানি না। ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি এই ব্রিজের নাম, ‘ছাগলা পাগলা’। সিরাজগঞ্জ থেকে ট্রেন ছেড়ে আসলে রায়পুর, কালিয়া হরিপুর তারপর জামতৈল। জামতৈল স্টেশনের মাইল খানেক দক্ষিণে রেলের এই মাঝারি সাইজের ব্রিজটি ব্রিটিশ রেল কোম্পানি তৈরি করেছে। ভীষণ মজবুত। এত বছরেও ব্রিজটির কিছু হয়নি। সেই ব্রিজ আমরা উড়িয়ে দেব। পাকিস্তানি মিলিটারি রেল পথে যাতে মুভ করতে না পারে তার জন্যে এই ধ্বংসযজ্ঞ।

অপারেশনের দায়িত্ব পড়লো ডেপুটি কমান্ডার মমিনের উপর। অপারেশনের পরিকল্পনা করে দিলেন কমান্ডার তৌহিদ ভাই। তাঁর জ্বরের বেগ বাড়ন্ত। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। তারপরও তিনি অপারেশনের ছক করে দিলেন শুয়ে শুয়ে শরীরে কাথাঁ মুড়ে।

শ’খানেক মুক্তিযোদ্ধার একটি দল নিয়ে মাঝরাতে আমরা রওনা হলাম। যিনি দিনের বেলা ব্রিজ রেকি করে এসেছেন, তিনি বলেছেন ২০ জনের মতো রাজাকারের একটি দল পালাক্রমে ব্রিজ পাহারা দেয়। শুরুতে আমরা ওই রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করিয়ে চারদিকে পাহারায় থাকবো। তারপর আমাদের ইঞ্জিনিয়ার গ্রুপ ব্রিজে বিস্ফোরক লাগিয়ে ফিউজে আগুন দিয়ে দৌড়ে আত্মরক্ষা করবে। তারপর আকাশ কাঁপিয়ে বিকট শব্দে উড়ে যাবে ‘ছাগলা পাগলা’। কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্রিজটি নাই হয়ে যাবে।

রাতের আকাশে একফালি চাঁদ। কৃষ্ণ পক্ষ চলছে। চাঁদের ম্লান আলোয় কালচে দেখাচ্ছে সব। আমরা হেঁটে যাচ্ছি আঁল পথ ধরে। চরা ফাঁকা। ফসল কাটা হয়েছে। যতদূর চোখ যায় আবছা আলোতে চারদিক ভূতুরে পরিবেশ। এমনিতে গা ছম-ছম করে। তারউপর অপারেশনের টেনশন। তবে কাধে অস্ত্র থাকলে টেনশন থাকে না। আপনা-আপনি শরীর গরম হয়ে যায়। কি যে মহিমা এই অস্ত্রের। নিরস্ত্র মানুষজন আমাদের কাধে অস্ত্র দেখলে ভয়ে সমীহ করে কথা বলে।

একদিন এক রাজাকারকে ধরে আনলো আমাদের কয়েকজন যোদ্ধা। তাকে জেরা করতে থাকেন কমান্ডার তৌহিদভাই। কিন্তু ব্যাটা রাজাকার ঠিকমতো কথার জবাব দিচ্ছিল না। কমান্ডার তার বুকে স্টেগান তাক করে ধরলে রাজাকার ব্যাটা ভয়ে সঙ্গে সঙ্গে কাপড় নষ্ট করে ফেলে। সে এক তামেশগিরি কান্ড। আমরা হাসতে হাসতে মরি। রাজাকার ব্যাটা ওই অবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। তাকে সরানো যাচ্ছিল না। একজন গ্রামবাসীকে ডেকে বলা হলো রাজাকারের হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসতে। গ্রামের লোকটি প্রথমে কাঁই-কুঁই করছিল। কিন্তু আমাদের ঘাড়ে আগ্নেয়াস্ত্র দেখে আর আপত্তি করেনি। নাকে গামছা পেঁচিয়ে কমাণ্ডারের কথা মতো রাজাকারের হাত-পা বেঁধে কাছেই হুরাসাগর নদীতে ফেলে দিয়ে আসে। আমাদের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা পাহারায় ছিল। রাজাকার ব্যাটা সাতঁরিয়ে পাড়ে উঠে আবার পালিয়ে না যায়।

ব্রিজের কাছাকাছি যে গ্রামটি সেই গ্রামের নাম রসুলপুর। সেই গ্রামের পাশে ফাঁকা মাঠে আমরা শেষবারের মতো প্রস্তুত হই। লুঙ্গিতে কাছা দিয়ে কোমরে গামছা বেঁধে অস্ত্র ঠিকঠাক আছে কিনা পরীক্ষা করে তারপর আমরা আবার যাত্রা শুরু করি।

সামনে কমাণ্ডার মমিনভাই। পেছনে লাইন ধরে আঁল পথে আমরা হেঁটে যাচ্ছি। হঠাৎ আমাদের যাত্রা থেমে গেল। সামনের জন আমাদের বললো, ‘সামনে কি যেন দেখা যাচ্ছে। নড়াচড়া করছে। মানুষের সারি মনে হচ্ছে।’

আমি পেছনের জনকে এই বার্তা দিয়ে গভীর ভাবে তাকালাম। দূরে তাকিয়ে দেখি আঁল পথে সারি বেঁধে কারা যেন আসছে। সংখ্যায় তারা ত্রিশ/চল্লিশ জনের মতো হবে। তারা আমাদের গুলি রেঞ্জের মধ্যে এসে পড়েছে। আমরা পজিশন নিতে নিতে ফিসফাস কথা ওদের কানে গিয়ে থাকবে। প্রথম গুলিটা ওরাই শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাহিনী রাইফেল, এসএলআর, এলএমজি নিয়ে ওদের উপর ঝাপিয়ে পড়ি কমান্ডারের আদেশের অপেক্ষা না করেই। একদফা গোলা-গুলির পর কমান্ডার আমাদের থামতে বললেন। আমি পাশে তাকিয়ে দেখি দিলু গোমেজ কাত হয়ে পড়ে আছে। আমি ক্রোলিং করে ওর কাছে গিয়ে গায়ে হাত দিয়ে বললাম, ‘দিলু, কোন সমস্যা?’

দিলু বললো, ‘কিছু হয়নি। আমি ভাল আছি।’

‘তাহল এভাবে পড়ে আছ কেন?’

‘হয়রান হয়ে গেছি।’

‘তাও ভাল। আমিতো ভেবেছিলাম, তোমার আবার গুলি-টুলি লাগলো কিনা?’ আমি অবাক গলায় প্রশ্ন করলে দিলু বললো, ‘থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে যুদ্ধ করা ভীষণ কষ্ট।’

দিলু মিথ্যে বলেনি। ব্রিটিশ আমলের এই থ্রি নট থ্রি রাইফেল আধুনিক যুদ্ধে একেবারেই অচল। ভীষণ কঠিন এই অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করা। একটি গুলি বেরিয়ে গেলে আবার লোড করতে হয়। বার বার লোড করে যুদ্ধ করা ভীষণ কষ্টকর। যুদ্ধের জন্য রাইফেল বড্ড পুরনো, একদম সেকেলে। শরীরে যথেষ্ট শক্তি না থাকলে রাইফেল চালানো কঠিন। যুদ্ধের এই বিরতিতে কমান্ডার মমিনভাই হঠাৎ জয়বাংলা বলে চেঁচিয়ে উঠলেন। আমরাও সঙ্গে সঙ্গে জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে কমান্ডারকে সমর্থন করলাম।

যারা যুদ্ধ করেননি তারা ব্যাপারটি বুঝতে পারবেন না। যুদ্ধের ময়দানে দুই পক্ষের কথা বিনিময় হয়। গালি বিনিময় হয়। সে সব গালি বড় অশ্রাব্য। কোন পক্ষের মুখে লাগাম থাকে না। 

এইসময় একটি অবাক কান্ড ঘটলো। আমাদের চমকে দিয়ে আমাদের প্রতিপক্ষ তারাও জয়নাংলা ধ্বনি দিয়ে উঠলে আমরা পরস্পর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে থাকি।

‘কি ব্যাপার, ওরা জয়বাংলা বলছে কেন? তবে কি ওরা আমাদের মতো মুক্তিযোদ্ধা?’ মমিনভাই ত্বড়িৎ কয়েকজন সেকশন কমান্ডারকে ডেকে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করতে থাকেন। 

‘ওরা কি মুক্তিযোদ্ধা? নাকি আমাদের সঙ্গে চালাকি করছে?’ কমান্ডারের এমন প্রশ্নে সবাই ভাবতে লাগলো, আসল ঘটনা কি?

ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল্লাহ ভাই বললেন, ‘মনে হয় সেমসাইড হয়ে গেছে। ওরা ভেবেছে আমরা শত্রু। আমরা ভাবছি ওরা শত্রু।’

তখন গোলাগুলি বন্ধ। ওরা থেমে থেমে জয়বাংলা ধ্বনি দিচ্ছে। আমরাও পাল্টা জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে যাচ্ছি। এইসময় আমাদের একজন চেঁচিয়ে বললেন, ‘তোমরা কোত্থেকে এসেছ? তোমাদের কোম্পানির নাম কি? কমান্ডার কে?’ এই প্রশ্নের জবাবের জন্য আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি। কিন্তু কোন জবাব আসে না। কিছুক্ষণ পর কমান্ডার মমিনভাই সিদ্ধান্ত নিলেন, ‘আমাদের একজন যোদ্ধা ওদের পরীক্ষা করার জন্য জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে ওদের কাছে যাবে। সে যদি পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফিরে না আসে তাহলে বুঝবো ওরা আমাদের ধোঁকা দিয়েছে। তারপর আমরা সাড়াষি আক্রমণ করবো। একজনকেও প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে দেব না।’

এখন সবাই আতঙ্কগ্রস্থ। কমান্ডার কাকে এই পরীক্ষায় পাঠান। দিলু আমার গা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে। কমান্ডার ওকেই এই দায়িত্ব দিলেন। বললেন, ‘তুমি যাবে। গিয়ে যদি দেখ ওরা মুক্তিযোদ্ধা সঙ্গে সঙ্গে জয়বাংলা বলে ধ্বনি দিয়ে উঠবে। আমরা তখন এগিয়ে যাব। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তোমার সাড়া না পেলে আমরা বুঝবো ওরা আমাদের সঙ্গে চালাকি করেছে। আমরা তখন পাল্টা জবাব দেব। যাও।’

কঠিন পরীক্ষা। মৃত্যু হাতে নিয়ে যেতে হবে। আমি খেয়াল করলাম, দিলু কাঁপছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। কমান্ডারের নির্দেশ। না মেনে উপায় নেই। আমি একবার বলতে চাইলাম, ‘আমি যাই মমিনভাই।’ কিন্তু কমান্ডার আমাকে সে সুযোগ না দিয়ে দিলুকে চাপা স্বরে ধমকে বললেন, ‘কি হলো, পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছ কেন? যাও।’ 

দিলু আমার হাত ধরে আছে। তারপর আমাকে সালাম করে রাইফেল রেখে শূন্য হাতে জয়বাংলা বলে ছুটে গেল ওইদিকে-যেদিক থেকে ওদের ধ্বনি শোনা যাচ্ছিল।

পাঁচ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো না। দু মিনিট পরেই দিলুর কন্ঠে জোরালো জয়বাংলা ধ্বনি। কমান্ডার মমিনভাই বললেন, ‘মনে হয় আমরা আসলেই সেমসাইডের ফেরে পড়েছি। তবে, পুরোপুরি ওদের উপর আস্থা রাখা ঠিক হবে না। অস্ত্র পজিশন নিয়ে এগুতে থাকো।’

মমিন ভাই আগে আগে, আমার তার পেছনে পেছনে অস্ত্র তাক করে এগুতে থাকি। ওদের আমরা ঘিরে ফেলি। তারপর মমিনভাই চিৎকার ওঠেন, ‘হ্যান্ডসআপ’। ওদের ছোট দলটির সবাই অস্ত্র ফেলে হাত উপরে তুলে ধরে।

মমিন ভাই জিজ্ঞেস করেন, ‘কমান্ডার কে?’

মোটা মতো একজন মুক্তিযোদ্ধা মাথা নামিয়ে সামনে এসে দাঁড়ালেন।

‘কোথায় ট্রেনিং নিয়েছ তোমরা?’

ওই পক্ষের কমান্ডার নিচু স্বরে বলেন, ‘ভারতে।’   

‘অসম্ভব। তোমরা যুদ্ধের কোন কিছুই শেখনি। কোন কিছু না বুঝে আমার বিরাট বাহিনীকে আক্রমণ করলে কোন সাহসে? আর কিছুক্ষণ যুদ্ধ করলে তোমরা তুলার মতো উড়ে যেতে। কোন যুক্তিতে তোমরা আগে ফায়ার করলে?’

‘একজন ভুলে ফায়ার করে ফেলেছে।’ ওই দলের কমান্ডার মিনমিন করে জবাব দিলেন।

 মমিনভাই বললেন, ‘এই বুদ্ধি নিয়ে তোমরা যুদ্ধ করতে এসেছ? যুদ্ধ কি ছেলের হাতের মোয়া?’

কারো মুখে কোন কথা নেই। দিলু গোমেজ এই ফাঁকে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। মমিনভাই জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের কেউ জখম হয়নিতো?’  

ওদের কমান্ডার বললেন, ‘একজনের হাতে গুলি লেগেছে।’

মমিনভাই ঠোঁট কামড়িয়ে বললেন, ‘সেই কথা এতক্ষণে বলছো কেন? আগে ওর চিকিৎসার ব্যবস্থা করো। কই, কোথায় সে?’

আহত যোদ্ধাকে আমাদের সামনে আনা হলো। রক্তে তার কাপড় ভিজে গেছে। গুলিটা লেগেছে কনুইয়ের উপরে। গুলি লেগে চামড়া ছিঁড়ে বেরিয়ে গেছে।

কমান্ডার মমিনভাই টর্চ জ্বালিয়ে ভাল করে দেখলেন। তারপর তাকে কাধে নিতে বললেন। ওদের কমান্ডার নিজেই তাকে কাধে তুলে নিলেন। মমিনভাই বললেন, ‘অপরেশন উইথড্র করা হলো। কারণ গুলির শব্দে রাজাকাররা সজাগ হয়ে গেছে। ফিরে চলো সবাই।’ 

ফিরে যাচ্ছি আমরা। দিলু আমার পেছনে পেছনে হাঁটছিল। হঠাৎ সে আমাকে বললো, ‘ভাই চলেন, আমরা ব্রিজটা দেখে আসি।’

বললাম, ‘তোমাকে ভূতে পেয়েছে? এখন ওই ব্রিজের কাছে যাওয়া মানে নিজের জানটা ওদের হাতে স্বেচ্ছায় উপহার দেওয়া। কমান্ডার একথা শুনলে কি অবস্থা হবে একবার ভেবে দেখেছ?’

‘কমান্ডার জানতে পারবে না। আমরা নিঃশব্দে যাব। আবার নিঃশব্দে ফিরে আসবো।’    

‘তোমার খুব সাহস বেড়ে গেছে মনে হচ্ছে। তোমাকে যখন কমান্ডার ওদের কাছে পাঠাচ্ছিল তখনতো ভয়ে কাঁপছিলে। আর এখন?’

‘ঠিকই বলেছেন মিজান ভাই। আমার ভয় পালিয়ে গেছে। কমান্ডারকে ধন্যবাদ। তার কারণে আমার ভয় চিরতরে সরে গেছে। এখন থকে আমি নিয়মিত যুদ্ধে যাব। আমি এখন সত্যিকারের সাহসী যোদ্ধা।’

কথাটা মিথ্যে বলেনি দিলু। যুদ্ধ না করলে সাহস বাড়ে না। যুদ্ধ এমন এক ভয়ংকর জিনিস, দূর থেকে মনে হয়, না জানি কি? কিন্তু ময়দানে আগ্নেয়াস্ত্রের উত্তাপে কোথ্বেকে আগুনের আঁচ এসে শরীরে জড় হয় তা সহজে অনুমান করা কঠিন। বিন্দু মাত্র ভয়ের লক্ষণ থাকে না। কেবলি এগিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। সব কিছু চুরমার করে ফেলতে ইচ্ছে করে। এর কারণ কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা মুস্কিল। যুদ্ধের অভিজ্ঞতা যার নেই সে এই ব্যাপারটা বুঝবে না।

দিলু গোমেজও আজই প্রথম অপরেশেনে এসেছে। এর আগে আমরা যতবার যুদ্ধে গেছি কোন না কোন অজুহাতে দিলু যুদ্ধে যাওয়া থেকে বিরত থেকেছে। আজ পথম দিনই তাকে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে। সেই পরীক্ষায় সে সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাতেই তার ভেতরে যুদ্ধের উন্মাদনা লাফিয়ে বাড়ছে। যুদ্ধের ধর্ম তাই। একবার ভয় ভেঙ্গে গেলে কেবল যুদ্ধের জন্য ভেতরে তাগাদা দিতে থাকে। দিলুর হয়েছে তাই।

দিলু বলে, ‘কেন যে এতদিন যুদ্ধের কথা শুনে ভয় পেতাম আমি নিজেই বুঝতে পারছি না। আজ মনে হচ্ছে এতদিন খামখা ভয় পেয়েছি। মিজানভাই চলেন, আমি আর আপনি ছাগলা পাগলা ব্রিজের রাজাকারদের হত্যা করে আসি।’

‘সত্যি তোমার খুব সাহস বেড়ে গেছে দেখছি?’

‘হ্যা মিজান ভাই। এইভাবে নিজেদের নিজেদের যুদ্ধ না হলে আমার এতো সাহস বাড়তো না। আগের মতই ভিতু থাকতাম। এখন মনে হচ্ছে, সাহসের জন্য মাঝে মাঝে নিজেরা নিজেরা যুদ্ধ করা প্রয়োজন। কি বলেন?’

আমি দিলুর মুখের দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি। বলার মতো কথা খুঁজে পাই না। 

 

Header Ad

হত্যা মামলায় গ্রেফতার ডিসি মশিউর ও এডিসি জুয়েল বরখাস্ত

মশিউর রহমান ও জুয়েল রানা। ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান ও ডিএমপির সাবেক এডিসি জুয়েল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার।

রোববার (২৪ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখার সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেনের সই করা পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডিবির সাবেক ডিসি (সুপারনিউমারারি অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) ও বর্তমানে পুলিশ সুপার হিসেবে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত মশিউর রহমানকে নিউমার্কেট থানার মামলায় গ্রেফতার করে ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেহেতু, মশিউর রহমানকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (২) ধারার বিধান অনুযায়ী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগের এডিসি (সুপারনিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)) জুয়েল রানাকে নিউমার্কেট থানার মামলায় গ্রেফতার করে ১৮ অক্টোবর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সেহেতু, জুয়েল রানাকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (২) ধারার বিধান অনুযায়ী ১৮ অক্টোবর থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন জুয়েল রানাকে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

এর আগে, ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গত ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে ডিবি পুলিশ কাফীকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে।

Header Ad

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু, শনাক্ত আরও ১০৭৯

প্রতীকী ছবি

বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুর তাণ্ডব। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। একই সময় ১ হাজার ৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

রোববার (২৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হলো ৪৫৯ জনের।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেতনতা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।

Header Ad

আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার পান্ত

ঋষভ পান্ত। ছবি: সংগৃহীত

আইপিএলের মেগা নিলামে শুরুতে রেকর্ড গড়ে বিক্রি হয়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। তাকে ২৬.৭৫ কোটি রুপিতে কিনেছিল পাঞ্জাব কিংস। কিন্তু সেই রেকর্ডও টেকেনি বেশিক্ষণ। আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছেন ঋষভ পান্ত। তাকে ২৭ কোচটি রুপিতে দলে ভিড়িয়েছে লখনৌ সুপার জায়ান্টস।

রোববার (২৪ নভেম্বর) সৌদি আরবের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এবারের মেগা নিলাম। আর যেখানে ২৭ কোটি রুপিতে পান্থকে দলে নিয়েছে লখনৌ সুপার জায়ান্ট। সেই সঙ্গে আইপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে দাবি খেলোয়াড় হলেন পান্থ।

২ কোটি রুপি ভিত্তি মূল্যতে নিলামে উঠে ছিলেন পান্থ। শুরুতে তাকে নিয়ে বেঙ্গালুরুর সঙ্গে লড়াই করতে থাকেন লখনৌ। এই দুই দলের লড়াইয়ে লখনৌ বিজয়ী হলেও, দ্বিতীয় ধাপে পান্থকে দলে নিতে মাঠে নামে সানারাইজার্স হায়দরাবাদ। এখানেও শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছে লখনৌ।

কিন্তু তার জন্য দলটিকে খরচ করতে হয়েছে ২৭ কোটি রুপি। যা আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ। সুতরাং আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় এখন পান্থ।

গত আসরের নিলামে মিচেল স্টার্ককে ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে দলে ভিড়িয়ে রেকর্ড গড়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। কিন্তু এবারে ২৬ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে শ্রেয়াস আইয়ারকে দলে নিয়ে সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে পাঞ্জাব কিংস। এর একজন পরেই নিলামে ওঠা পান্থের নাম। সেখানেই জাতীয় দলের সতীর্থকে পিছনে ফেলেছেন তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হত্যা মামলায় গ্রেফতার ডিসি মশিউর ও এডিসি জুয়েল বরখাস্ত
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু, শনাক্ত আরও ১০৭৯
আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার পান্ত
আরও এক মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান
সৌদি আরবে এক সপ্তাহে ২০ হাজার অবৈধ প্রবাসী গ্রেপ্তার
আমাদের নিয়ত সহি, জাতিকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই: সিইসি
৫ বিসিএস থেকে নিয়োগ পাবেন ১৮ হাজার ১৪৯ জন
শপথ নিলেন নতুন সিইসি ও ৪ নির্বাচন কমিশনার
দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে থানায় জিডি করলেন নওশাবা
আইইউটির ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতের ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত
বাংলাদেশ-বেল‌জিয়ামের রাজনৈতিক সংলাপ আজ
রাজধানীতে সিলিন্ডার গ্যাস বিস্ফোরণে শিশুসহ দগ্ধ ৭
জোড়া উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ
সাবেক প্রধান বিচারপতি রুহুল আমিন আর নেই
এশিয়া কাপ খেলতে দেশ ছাড়লো বাংলাদেশ
আমাকে স্যার বলার দরকার নেই, আমি আপনাদের ভাই : উপদেষ্টা নাহিদ
দুই দিনের ব্যবধানে আবারও বাড়ল সোনার দাম
বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস
নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন, সাবধান হন : তারেক রহমান
গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল