বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

এই ঘটনার কথা মনে করে জ্যাক বুঝতে পারল, সে তার বাবা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জেনেছে তার ওই শিক্ষকের কাছ থেকে। তবে তার খোঁজ খবর করা কঠিন এখন। অবশ্য তার মায়ের নীরবতা থেকে যা কিছু জানা হয়েছে তার বেশি কিছু আঁচ করা যাবে না শুধু ঘটনার বর্ণনা ছাড়া। বাবা সম্পর্কে জ্যাক ধারণা করতে পারে, তিনি ছিলেন একজন কঠিন মানুষ, তিক্ত অভিজ্ঞতার মানুষ, সারা জীবন কাজ করে গেছেন; হুকুমের গোলাম হয়ে হত্যা করেছেন; যেসব বিষয় এড়াতে পারেননি সেগুলোর কাছে হার মেনেছেন; তবে নিজের বলতেও ছিল কিছু বিষয়; সেখানে অন্য কারো প্রবেশ ঘটেনি। মোটের ওপর একজন হতভাগা মানুষ।

দারিদ্র কেউ চেয়ে নেয় না। তবে হতভাগা মানুষও নিজেকে রক্ষা করতে পারে। মায়ের কাছ থেকে যা কিছু শুনেছে তার থেকে ওই একই মানুষ সম্পর্কে জ্যাকের ধারণা হয়েছে: নয় বছর পরে বিবাহিত, দুই সন্তানের বাবা, জীবনে কিছুটা ভালো অবস্থান অর্জন করেছেন; তারপর তাকে আলজিয়ার্সে ডাকা হলো যুদ্ধে যোগদানের জন্য। অসুস্থ স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণ, স্টেশনে বিদায় এবং তিন দিন পর বেলকোর্টের ছোট অ্যপার্টমেন্টে জুয়াভ রেজিমেন্টের সুদর্শন লাল-নীল ইউনিফর্ম, ঢিলা ট্রাউজার পরে এসেছিলেন; জুলাইয়ের কড়া তাপে মোটা পশমী কাপড়ের নিচে শরীরের ঘাম, হাতে একটা খড়ের হ্যাট। কারণ তার টারবুশের হ্যাট ছিল না, হেলমেটও ছিল না। জাহাজঘাটার ছাউনির নিচের ডিপো থেকে দৌড়ে ফিরে এসেছিলেন স্ত্রী আর সন্তানদের বিদায়ী চুমু দিতে। কারণ যে ফ্রান্সকে তিনি আগে কখনও দেখেননি সেই ফ্রান্সের উদ্দেশে সেই রাতেই রওনা হওয়ার কথা, সমুদ্রপথে যাওয়ার কথা যে সমুদ্রের বুকের ওপর দিয়ে তিনি আগে কোথাও যাননি। তিনি স্ত্রী এবং সন্তানদের গভীর আবেগে চুমু দিলেন এবং একই গতিতে আবার ফিরে চললেন।

তার স্ত্রী ছোট ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তার উদ্দেশে হাত নাড়ালেন। ধূলি আর তাপে দগ্ধ রাস্তায় নামার আগে দৌড়ের ওপরেই স্ত্রীর হাত নাড়ানোর উত্তরে তিনি তার হাতের হ্যাটটা উঁচু করে নাড়াতে লাগলেন। তারপর সিনেমার সামনে, তারপর আরো দূরে, শেষে সকালের ঝকঝকে আলোর ভেতর তিনি মিলিয়ে গেলেন যেখান থেকে আর কখনও ফিরবেন না। বাকিটা জ্যাককে কল্পনা করে নিতে হয়েছে; তবে মা যা বলেছেন শুধু সেটুকুর ওপরে ভরসা করে নয়। কারণ ইতিহাস এবং ভূগোল বলতে কী বুঝায় সে জ্ঞান মায়ের ছিল না। মা জানতেন, তার বসবাস সমুদ্রের কাছাকাছি স্থলভাগে; আরো জানতেন, ফ্রান্স দেশটা ওই সমুদ্রের ওপারে। তিনি সেখানে কখনও যাননি। ফ্রান্স একটা অজানা দেশ যেন রাতের অন্ধকারে ডুবে থাকা দূরের দেশ, সেখানে পৌঁছনো যায় মার্সেই নামক বন্দর দিয়ে; কল্পনায় তিনি দেখতে পেতেন ওই বন্দর আলজিয়ার্স বন্দরের মতোই; লোকমুখে তিনি শুনেছিলেন, সেখানে আছে প্যারিস নামে এক নয়নাভিরাম, সুদর্শনা নগরী। সেই নগরীর একটা জায়গার নাম আলসেস; সেখান থেকেই এসেছিল তার স্বামীর পরিবারের লোকেরা।

সে অনেক দিন আগের কথা। তারা জার্মান নামক শত্রু-তাড়িত হয়ে আলজিয়ার্সে বসতি স্থাপন করতে এসেছিল। তারপর এল সেই নগরীকে ওই হিংস্র শত্রুদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার সময়। ফ্রান্সের প্রতি শত্রুরা ছিল আসলেই নিষ্ঠুর। এর চেয়ে বড় আর কোনো কারণ ছিল না। ফ্যাসাদপ্রিয় এবং অপ্রশম্য শত্রুদের কবল থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য ফ্রান্সকে সব সময়ই বাধ্য হয়ে লড়ে যেতে হয়েছে। এভাবেই তার জানাশোনার মধ্যে ছিল স্পেনও। তবে স্পেনের অবস্থান সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। মনে হতো খুব দূরে নয়; সেখান থেকেই তার নিজের পরিবারের লোকেরা, মাহুন জাতির লোকেরাও এসেছিল। সে-ও অনেক দিন আগের কথা। তার স্বামীর পরিবারের লোকেরা যে সময়ে আলজেরিয়ায় এসেছিল তার নিজের পরিবারের লোকেরাও সেই একই সময়ে এসেছিল। তার পরিবারের লোকেরা এখানে এসেছিল ক্ষুধার জ্বালায় মরণাপন্ন অবস্থায়; তার পূর্বপুরুষদের বসতি ছিল একটা দ্বীপে-সে কথা তিনি জানতেন না; অবশ্য দ্বীপ কী রকম সে বিষয়েও তার কোনো ধারণা ছিল না।  

অন্য দেশ সম্পর্কে তার ধারণার কথা বলতে গেলে কিছু কিছু দেশের নাম শুনে তার ভালো লাগত। অবশ্য ওই সব দেশের নাম ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারতেন না। কোনো প্রসঙ্গেই তিনি অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি সম্পর্কে কিংবা সার্বিয়া, রাশিয়া এমনকি ইংল্যান্ড সম্পর্কে তেমন কিছু জানতেন না। আর্চডিউক কী রকম পদবী, সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিল না। তিনি কখনও সারায়েভো নামের চার সিলেবল এক সঙ্গে উচ্চারণ করতেও পারেননি। যুদ্ধ সেখানেই, অন্ধকার আতঙ্কবাহী ভারী মেঘের মতো। কিন্তু ওই মেঘের আকাশ আক্রমণ কিছুতেই টিকিয়ে রাখার মতো নয়।

পতঙ্গের আক্রমণ ঠেকানো যায়, কিংবা আলজিয়ার্সের সমতলভূমি আক্রমণকারী সর্বগ্রাসী ঝড়কেও ঠেকানো যায়। কিন্তু যুদ্ধের মেঘ ঠেকানো যায় না। জার্মানরা আবারো ফ্রান্সকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। আর আমাদের ভোগান্তির শুরু হলো বলে। এর পেছনে কোনো কারণই ছিল না। তিনি ফ্রান্সের ইতিহাস জানতেন না; আদৌ ইতিহাস বিষয়টাই ছিল তার জানার বাইরে। তার নিজের ইতিহাস সম্পর্কে সামান্য জানতেন। তার ভালোবাসার মানুষদের ইতিহাস প্রায় জানতেন না বললেই চলে। আর জানতেন যাদের তিনি ভালোবাসেন তারাও তার মতোই ভোগান্তির শিকার হতে যাচ্ছে। তিনি ইতিহাস জানতেন না এবং রাতের মতো পৃথিবীর চলমান ঘটনাবলীর ভেতর তিনি কল্পনা করতেও পারেননি, আরো অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত এসে গেছে। রহস্যময় বিশৃঙ্খলা এসে হাজির হয়েছে এক ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত কনস্টেবলের হাত ধরে। যে খামারের আঙুর তারা তুলতে প্রস্তুত হচ্ছিলেন সেই খামার ছেড়ে তাদের চলে যেতে হবে।

বন স্টেশনে মহল্লার পাদ্রীর সঙ্গে দেখা। পাদ্রী স্টেশনে এসেছিলেন সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে যোগদানের জন্য যাদের বাছাই করা হয়েছে তাদের বিদায় জানাতে। তিনি বলেছিলেন, আমাদের সবাইকে প্রার্থনা করতে হবে। তার কথার উত্তরে মা বলেছিলেন, হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন মসিঁয়ে। তবে আসলে তিনি পাদ্রীর কথা ঠিকমতো শুনতে পাননি; পাদ্রী মহাশয় খুব আস্তে কথা বলেছিলেন। তাছাড়া প্রর্থনার কথাটা তার মাথায়ই আসেনি কখনও। তিনি কারো ব্যাপারে নাক গলাতেন না। আর এখন তো তার স্বামী বহুবর্ণিল ইউনিফর্মে যুদ্ধে গেছেন; ফিরে আসবেন খুব শিঘ্রই, সেরকমই তো সবাই বলছে। জার্মানদের শাস্তি হওয়া উচিত। তবে ততদিনে তার কাজ খুঁজে নিতে হবে। এক প্রতিবেশী নানিকে বলেছিলেন অস্ত্রাগারের কারতুজ ফ্যাক্টরিতে নারীদের নিয়োগ দেওয়া হবে, যাদের স্বামীরা যুদ্ধে গেছেন এবং পরিবারের দায়িত্ব ঘাড়ে আছে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি ভেবেছিলেন, পুরুত্ব আর রং অনুসারে কার্ডবোর্ডের নল তৈরি করার কাজে দিনে দশ ঘণ্টা পরিশ্রম করে সৌভাগ্যের মুখ দেখবেন। জার্মানদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং হেনরি ফিরে না আসা পর্যন্ত ছেলেমেয়েরা প্রয়োজন মাফিক খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে। অবশ্য তিনি রাশিয়ান রণাঙ্গন সম্পর্কে কিছু জানতেন না। রণাঙ্গন বিষয়ে তার জ্ঞানও তেমন ছিল না।

আরো জানতেন না, যুদ্ধ বলকান পর্যন্ত, মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত, এমনকি গোটা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফ্রান্সে সবকিছুই ঘটে যাচ্ছে: কোনো রকম ইঙ্গিত ছাড়াই জার্মানরা প্রবেশ করছে ফ্রান্সে; এমনকি শিশুদেরও হত্যা করছে তারা। ওখানে সবকিছুই ঘটছে আফ্রিকা থেকে আগত সৈনিকদের জীবনেও। তাদের মধ্যে এইচ করমারিকেও যত দ্রুত সম্ভব পাঠানো হয়েছিল মার্নের মতো এক রহস্যময় এলাকায়। লোকজন সেরকমই বলাবলি করত। তাদের জন্য তখন আর হেলমেট যোগাড় করা সম্ভব হয়নি। ওখানকার সূর্য অবশ্য আলজেরিয়ার সূর্যের মতো প্রখর ছিল না যে খুব দ্রুত তাদের রং মুছে দিবে। আরব এবং ফরাসি আলজেরিয়ানরা সুবেশ উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরিহিত, মাথায় তৃণের টুপি, লাল-নীল পোশাকে সবাই যেন বিরাট পশুপালের সদস্য, এগিয়ে চলেছে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। দলের মধ্যেই তাদের হত্যা করা হচ্ছে সেখানকার স্বল্প পরিসর এলাকাটা যেন উর্বর করার জন্য।

সেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে মানুষ আসতে থাকে প্রায় চার বছর ধরে। আগুনবর্ষী সূর্যের নিচে তারা প্রতি ইঞ্চি মাটির জন্য লড়াই করে যাচ্ছে কাদা মাটির মধ্যে হামাগুড়ি দিয়ে। চার পাশে গোলার আর্তনাদ আর  কামানের অগ্নিব্যুহ ব্যর্থ আগ্রাসনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাইরের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য মাটি খুঁড়ে কোনোরকম আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা যায়নি। শুধু আফ্রিকার সৈন্যরা আগুনের নিচে বহুবর্ণিল মোমের পুতুলের মতো গলে শেষ হয়ে গেছে। আর প্রতিদিন আলজেরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় শিশুরা নতুন করে  এতিম হয়েছে। পিতৃহীন পুত্র কন্যারা এখন থেকে পিতার দিক নিদের্শনা ছাড়াই জীবনে বেঁচে থাকার শিক্ষালাভ করবে; থাকবে না উত্তরাধিকারের কোনো কিছুই।

কয়েক সপ্তাহ পার হয়ে গেল। তাদের একমাত্র ওপরের তলার ভেতরের ল্যান্ডিংয়ে, সিঁড়ি আর অন্ধকার টয়লেটের মাঝখানে। সুরকির ভেতর তুর্কী কেতায় কালো ছিদ্র করে রাখায় অবিরত ক্রেসিল দিয়ে পরিষ্কার করা হলো তবু সেখান থেকে দুর্গন্ধ আসত- সেখানে কয়েক সপ্তাহ পরের এক রবিবারের সকালে লুসি করমারি আর তার মা একটা নিচু চেয়ারে বসে সিঁড়ির ওপরের জানালা দিয়ে আসা আলোয় মসুরের ডাল বাছছেন আর শিশুটা ছোট একটা লন্ড্রীর ঝুড়িতে শুয়ে নিজের মুখের লালায় ভিজানো একটা গাজর মুখে দিয়ে চুষছে। তখন গম্ভীর চেহরার এবং পরিপাটি পোশাক পরিহিত এক ভদ্রলোক সিঁড়ির মাথায় উঠে এলেন; হাতে খাম জাতীয় কিছু একটা। লুসি এবং তার মা নিজেদের মাঝখানে একটা পাত্র রেখে সেখান থেকে মসুরের ডাল বাছার কাজ করছিলেন। বিস্মিত হয়ে হাত মুছতে মুছতে তারা উঠে দাঁড়ালেন। তখনই ভদ্রলোক সিঁড়ির শেষ ধাপ ওঠা বাদ থাকতে তাদেরকে ব্যস্ত না হতে বললেন এবং মিসেস করমারির খোঁজ জানতে চাইলেন।

জ্যাকের নানি বললেন, এই তো মিসেস করমারি। আর আমি ওর মা। ভদ্রলোক বললেন, তিনি মেয়র এবং তিনি একটা দুঃখজনক খবর নিয়ে এসেছেন: তার স্বামী মহিমান্বিত ময়দানে মৃত্যুবরণ করেছেন। ফ্রান্স শোকে আচ্ছন্ন এবং একই সময়ে তার জন্য গর্বও বোধ করে। লুসি করমারি তার কথা ভালো করে বুঝতে পারেননি। উঠে দাঁড়িয়ে তিনি ভক্তিসহকারে তার হাত বাড়িয়ে দিলেন ভদ্রলোকের দিকে। নানি মুখের কাছে নিজের শক্ত হাতখানা নিয়ে স্পেনীয় ভাষায় কয়েকবার বলে উঠলেন, হায় আল্লাহ। ভদ্রলোক লুসির হাতখানা নিজের দুহাতের মধ্যে নিয়ে মৃদু চাপ দিলেন এবং খামটি এগিয়ে দিয়ে সান্ত¦নার কথা আওড়ালেন এবং সঙ্গে সঙ্গে পেছনের দিকে ঘুরে সিঁড়ি বেয়ে গম্ভীর চালে নামতে লাগলেন।


     লুসি তার মাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী বললেন উনি?
     হেনরি আর নেই। সে নিহত হয়েছে।

 


চলবে...

 

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত