বঙ্গবন্ধুর দেওয়া অনুদানের পর আর কোনো সহায়তা মেলেনি মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর!
মোছাঃ নুরজাহান বেগম। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে হারিয়েছেন স্বামীকে। এখন তার বয়স ৭৩ বছর ৷ শরীরে আর আগের মত শক্তি নেই৷ বর্তমানে তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে ভুগছেন (স্ট্রোক রোগী)। এদিকে স্বামীকে মুক্তিযুদ্ধে হারিয়েও তিনি পাচ্ছেন না কোনো মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। বলছিলাম রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ঠাকুরবাড়ী গ্রামের মোছাঃ নুরজাহান বেগমের কথা।
জানা যায়, তার স্বামী মোঃ মোসলেহ উদ্দিন ইস্পাহানী ক্যান্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বর্বর বাহিনী কুমিল্লায় হত্যাকাণ্ড চালালে দেশকে হানাদার মুক্ত করার জন্য ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে প্রাণ হারান। এরপর তৎকালীন সময় ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত রাষ্ট্রীয় পত্রের মাধ্যমে ২০০০/- ( দুই হাজার) টাকা প্রদান করেন তার স্ত্রী নুরজাহান বেগমের কাছে। এরপর পার হয়ে গেছে বহু বছর।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা হালনাগাদ শুরু হয়। এসময় মোঃ মোসলেহ উদ্দিন এর পরিবার বিভিন্ন জায়গায় তার নাম গেজেটভুক্ত করার জন্য চেষ্টা করেন। তবে কোনো লাভ হয়নি গেজেটভুক্ত হয়নি মোসলেহ উদ্দিনের নাম। পাননি শহিদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো স্বীকৃতি।
এদিকে স্বীকৃতি না পাওয়ায় কোনো প্রকার ভাতা পাচ্ছেন না মোসলেহ উদ্দিনের পরিবার। অসুস্থ স্ত্রী এখন দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে পার করছেন মানবেতর জীবন।
মোসলেহ উদ্দিনের স্ত্রী মোছাঃ নুরজাহান বেগম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আমার স্বামী দেশকে স্বাধীন করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তবে আমি বা আমার পরিবার কোনো ভাতা পাই না। আমার এখন বয়স হয়েছে। শরীরে নানা রোগ বাসা বেধেছে। দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে আমি খুবই অসহায় জীবন পার করছি। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার গেজেটে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছি কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আমি আমার স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি চাই।