বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

স্বাধীনতার এক টুকরো হাসি

মে মাস ১৯৭১। গ্রাম ধীরে ধীরে জনশূন্য হয়ে যাচ্ছে। কালকেও বাড়ির ছোট ছেলেটা চট করে নিখোঁজ। তার দু'দিন আগে দাসবাবুর চাকর। এক মনে বসে ভাবে নিলু সবাই কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে? আর ফিরে আসে না কেন? নিলু কিছু বুঝতে পারে না। জগৎ সংসারে তার আপন কেউ নেই বলে শহরের সবাই তার বড় আপন। কাউকে নিলু ডাকে বাবা,কাউকে মা, ভাইবোন, দিদিমা, জ্যাঠা,চাচা, মামা,খালা,পিসি- আত্মীয়ের অভাব নেই নিলুর। আর নিজের কোনো বাড়িঘর নেই বলে এই শহরের সবগুলো বাড়িঘরই নিলুর নিজের। যখন সে ইচ্ছে বাড়ি যায়। খিদে থাকলে সোজা গিয়ে ঢোকে রান্নাঘরে। ঘুম পেলে যে কোনো বিছানায় ফাঁক-ফোকর দিয়ে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পড়ে। নিলুকে কেউ কখনো ফেরায় না। নিলুর বয়স দশ বছর। নিলু জানে না সে হিন্দু নাকি মুসলমান। যদিও এ নিয়ে কোনো দুঃখ নেই। সুখ আছে। সে অবাধে হিন্দু ও মুসলিম বাড়িতে যায়। মাসি-পিসি খালা-ফুফু ডাকে। পেটপুরে খায়,ঘুমায়। নিলুর কোনো দুঃখ নেই। সবার নিখোঁজের বিষয়টি নিলুকে ভাবায়। মনের মধ্যে একটা গিট লেগে যায়। গিট খুলতে সে পাশের বাড়ির রতনের বাড়ি যায়। নিলু আর রতন সমবয়সী। গিয়েই দেখতে পায় রতনের ঠাকুমা।

ঠাকুমা ও ঠাকুমা সবাই কেন নিখোঁজ? সবাই কোথায় চলে গেছে?

'জানিস না দেশে গন্ডগোল লেগেছে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে কত মিলিটারি এসেছে। মিলিটারিরা সব মানুষকে মেরে ফেলছে। যাকে পাচ্ছে তাকেই ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সব মানুষকে মেরে ফেলবে রে। ইয়া বড় বড় বন্দুক।'

নিলু শুনে খুব ভয় পায়। 'হায় হায়, তাহলে।'

'তাহলে আর কি! আমরা তো এ জন্যই চলে যাচ্ছি।'

'কোথায়?'

'কলকাতা।'

আশেপাশে খেয়াল করে দেখতে পায় নিলু খাট- পালঙ্ক ভারী জিনিসপত্র সবকিছু বাধাই করা। আরো কত কিছু।

নিলু ঠাকুমাকে আবদার করে বসে। ' ঠাকুমা আমাকে নিবেন আপনার সাথে?'

'যা, তোকে কোথায় নেব।'

তারপর ঠাকুমা আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে নিলুর মাথায় হাত রাখেন। 'নিলু দাদারে, মনে খারাপ করিসনে। ওখানে আমাদেরই কোনো ঠাঁই-ঠিকানা নেই। থাকলে তোকে নিয়ে যেতাম। তারপর আবার আঁচলে চোখ মোছেন ঠাকুমা। এই দেখে নিলু সত্যি সত্যি কেঁদে ফেলে।

ঠাকুমা আবারও বললো, শোন দাদা তোর ভয় নাই। তুই খুব ভালো। মিলিটারিরা তোর কিছুই করবে না। দেশ স্বাধীন হলে আবার আমরা ফিরে আসবো।

'দেশ স্বাধীন মানে?'

এবার ঠাকুমা কষ্টের মধ্যেও হাসলেন। 'এই পূর্ব বাংলা, আর পূর্ব বাংলা থাকবে না। হবে বাংলাদেশ।'

তারপর ঠাকুমা রতন সবাই নৌকা করে চলে গেল। নিলু রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে। এবং এক সময় দেখতে পায় জনিদের বাড়িতেও সাজ সাজ রব। সবকিছু বাঁধানো। সবাই কোথায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে?

নিলু অবাক হয়ে জনির মাকে জিজ্ঞেস করে,'খালা,তোমরা কোথায় যাচ্ছো?

জনির মা দুঃখী গলায় বললেন, ' ভারতে নিলু।'

'কেন'?

'ওমা তুই জানিস না,শহরে মিলিটারি এসেছে। সবাই ভয়ে চলে যাচ্ছে।

'তাই নাকি, তারা কবে এসেছে?'

'কাল সন্ধ্যায়। হাই স্কুল এ ক্যাম্প করেছে। যাকে পাবে তাকেই মারবে। তুই চলে যা কোথাও নিলু।

'এবার নিলু রেগে বললো তোমারা যাও। আমি কোথাও যাব না। এখানেই থাকবো।'

জনির মা বললো তুই ভালো ছেলে। দেখবি তোর কিছুই হবে না।

মন খারাপ করে খালপাড়ে একাকী হাটতে থাকে নিলু। আর ভাবে সবাই কেন চলে গেল, গ্রাম শূন্য করে। ওরা কখনো কি ফিরে আসবে?

নিলুর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই সে এখানেই থাকবে। ঠিক তখনি মিলিটারির মধ্যে একজন তার নিশানা ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য খালের ওপার থেকে নিলুকে তাক করে। অটোমেটিক রাইফেল কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিলু দেখে একের পর এক আগুনের মৌমাছি ছুটে আসছে তার দিকে। দুই হাতে বুক চেপে ধরে নিলু। আঙ্গুলের ফাঁকে রক্তের জোয়ার বইছে। ধীরে ধীরে লুটিয়ে পড়ে নিলু। চোখদুটো ভীষণ টানছিল তার। তখুনি দৃশ্যটা দেখতে পায় সে। তার বুকের রক্তে তৈরি হয়েছে বিশাল একটা খাল। সেই খাল বেয়ে হাজার হাজার নৌকা ফিরছে। বাড়ির ছোট ছেলে, দাসবাবুর চাকর, ঠাকুমা, জনির মা সবাই নৌকার ভিতর। যেন আনন্দের উল্লাস। নিলু খুব খুশি। সবাই ফিরে আসছে। তাহলে এই কি স্বাধীনতা! ঠাকুমা বলেছিল।

স্বাধীনতার কথা ভেবে নিলুর ঠোঁটে বাংলাদেশের মানচিত্রের মতো সুন্দর এক টুকরো হাসি ফুটেছিল। কেউ তা দেখে নি

 

ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

 

ডিএসএস/ 

Header Ad

সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না

জহিরুল ইসলাম খান পান্না (ইনসটে: শেখ হাসিনা)। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপার্সন এবং সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জহিরুল ইসলাম খান পান্না (জেড আই খান পান্না)।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরীর জামিন স্থগিত নিয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জেড আই খান পান্না বলেন, আজ আদালতে নিয়মিত শুনানির সময় কেউ একজন জানতে চান যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিটি) আমি কারও পক্ষে লড়ব কি না। তখন আমি বলেছি, সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষেই লড়ব।

অতীতে আপনি শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন। এখন তার পক্ষে লড়তে চাইছেন। এটি আপনার আগের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না?

উত্তরে জেড আই খান পান্না বলেন, অবশ্যই সাংঘর্ষিক। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের আইনি সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে। মানবিক দিক বিবেচনা করেই আমি শেখ হাসিনার পক্ষে লড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছি। তবে আমি যেকোনো অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে।

Header Ad

নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন

এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অবসরপ্রাপ্ত সচিব জনাব এ এম এম নাসির উদ্দীন-কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহবুদ্দিন।

অন্য একটি প্রজ্ঞাপনে চার কমিশনারের নিয়োগের বিষয়টিও জানানো হয়।

চার কমিশনার হলেন:

১. মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত)

২. আবদুর রহমানেল মাসুদ, জেলা ও দায়রা জজ (অবসরপ্রাপ্ত)

৩. বেগম তাহমিদা আহমেদ, যুগ্ম সচিব (অবসরপ্রাপ্ত)

৪. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত)।

Header Ad

ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের

ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ছবি: সংগৃহীত

আজ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে উরুগুয়ের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল। ম্যাচের আগে স্টেডিয়ামের বাইরে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে ঘিরে ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেস ভিনিসিয়ুসের হাতে একটি স্মারক তুলে দেন, আর পাশে ছিলেন তার বাবা ভিনিসিয়ুস সিনিয়র। এই মুহূর্তটি স্টেডিয়ামের বড় পর্দায়ও প্রদর্শিত হয়, যা দর্শকদের মধ্যে আরও কৌতুহল সৃষ্টি করে, বিশেষত স্মারকটি সম্পর্কে।

পরে ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, ভিনিসিয়ুসের ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছিল এবং এতে জানা যায়, রেয়াল মাদ্রিদে খেলা এই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের অধিবাসী।

মূলত কৃষ্ণাঙ্গ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের শেকড় খুঁজে বের করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। খেলোয়াড়দের কার কোন বংশ, কোথায় ছিলেন পূর্বপুরুষরা, সেটা খুঁজে বের করাই ছিল এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য।

ভিনিসিউস ক্যামেরুনের টিকার গোত্রের অন্তর্গত। এই গোত্রের লোকেরা আঁকাআঁকিতে পারদর্শী, গল্পকার হিসেবেও সুপরিচিত। একসময় এরা যাযাবর জীবন যাপন করত, পরে বর্তমান সুদানের নীল নদ উপত্যকায় বসতি স্থাপন করে। যা স্থানান্তরিত হয়েছিল উত্তর নাইজেরিয়া থেকে পশ্চিম ক্যামেরুনের উচ্চভূমি পর্যন্ত।

সনদ নেয়ার সময় ভিনি বলেন, ক্যামেরুনে শেকড়ের সন্ধান পাওয়া আমার ও আমার পরিবারের জন্য বিশেষ মুহূর্ত। এটা মনে করিয়ে দেয় যে আমাদের শেকড় ও ইতিহাসের মূল্য আছে।

ভিনির বাবা বলেন, আমরা কোথায় থেকে এসেছি, এটা জানা প্রয়োজন ছিল। অনেক ব্রাজিলিয়ান তাদের শেকড় কিংবা ঐতিহ্য সম্পর্কে জানে না। ক্যামেরুনে আমাদের শেকড়, আমি অনেক খুশি।

সিবিএফ সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেস বলেছেন, ভিনি জুনিয়রের এই সংবাদকে উদ্‌যাপন করা মানে সব ব্রাজিলিয়ানের অর্জনকে উদ্‌যাপন। ওর পূর্বপুরুষের আদিনিবাসের খোঁজ পাওয়ার মাধ্যমে আমরা আরেকবার সবাইকে নিয়ে সমাজ গড়ার প্রতি আমাদের আগ্রহ এবং আমাদের অস্তিত্বে ও বৈশ্বিক সাফল্যে আফ্রো-ব্রাজিলিয়ান সংস্কৃতির মৌলিক ভূমিকার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জানালাম।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ, বিশেষ মোনাজাতের মধ্যদিয়ে কর্মসূচি শুরু
সেন্টমার্টিনে যেতে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের
সিটি কলেজ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়াসহ ৯ দাবি ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের
ট্রাইব্যুনাল চাইলে বিচার কাজের অডিও ভিজ্যুয়াল প্রচার করতে পারবে
বিসিবির ঘোষিত পুরস্কারের অর্থ বুঝে পেলেন সাবিনারা