রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

স্বাধীনতার এক টুকরো হাসি

মে মাস ১৯৭১। গ্রাম ধীরে ধীরে জনশূন্য হয়ে যাচ্ছে। কালকেও বাড়ির ছোট ছেলেটা চট করে নিখোঁজ। তার দু'দিন আগে দাসবাবুর চাকর। এক মনে বসে ভাবে নিলু সবাই কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে? আর ফিরে আসে না কেন? নিলু কিছু বুঝতে পারে না। জগৎ সংসারে তার আপন কেউ নেই বলে শহরের সবাই তার বড় আপন। কাউকে নিলু ডাকে বাবা,কাউকে মা, ভাইবোন, দিদিমা, জ্যাঠা,চাচা, মামা,খালা,পিসি- আত্মীয়ের অভাব নেই নিলুর। আর নিজের কোনো বাড়িঘর নেই বলে এই শহরের সবগুলো বাড়িঘরই নিলুর নিজের। যখন সে ইচ্ছে বাড়ি যায়। খিদে থাকলে সোজা গিয়ে ঢোকে রান্নাঘরে। ঘুম পেলে যে কোনো বিছানায় ফাঁক-ফোকর দিয়ে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পড়ে। নিলুকে কেউ কখনো ফেরায় না। নিলুর বয়স দশ বছর। নিলু জানে না সে হিন্দু নাকি মুসলমান। যদিও এ নিয়ে কোনো দুঃখ নেই। সুখ আছে। সে অবাধে হিন্দু ও মুসলিম বাড়িতে যায়। মাসি-পিসি খালা-ফুফু ডাকে। পেটপুরে খায়,ঘুমায়। নিলুর কোনো দুঃখ নেই। সবার নিখোঁজের বিষয়টি নিলুকে ভাবায়। মনের মধ্যে একটা গিট লেগে যায়। গিট খুলতে সে পাশের বাড়ির রতনের বাড়ি যায়। নিলু আর রতন সমবয়সী। গিয়েই দেখতে পায় রতনের ঠাকুমা।

ঠাকুমা ও ঠাকুমা সবাই কেন নিখোঁজ? সবাই কোথায় চলে গেছে?

'জানিস না দেশে গন্ডগোল লেগেছে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে কত মিলিটারি এসেছে। মিলিটারিরা সব মানুষকে মেরে ফেলছে। যাকে পাচ্ছে তাকেই ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সব মানুষকে মেরে ফেলবে রে। ইয়া বড় বড় বন্দুক।'

নিলু শুনে খুব ভয় পায়। 'হায় হায়, তাহলে।'

'তাহলে আর কি! আমরা তো এ জন্যই চলে যাচ্ছি।'

'কোথায়?'

'কলকাতা।'

আশেপাশে খেয়াল করে দেখতে পায় নিলু খাট- পালঙ্ক ভারী জিনিসপত্র সবকিছু বাধাই করা। আরো কত কিছু।

নিলু ঠাকুমাকে আবদার করে বসে। ' ঠাকুমা আমাকে নিবেন আপনার সাথে?'

'যা, তোকে কোথায় নেব।'

তারপর ঠাকুমা আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে নিলুর মাথায় হাত রাখেন। 'নিলু দাদারে, মনে খারাপ করিসনে। ওখানে আমাদেরই কোনো ঠাঁই-ঠিকানা নেই। থাকলে তোকে নিয়ে যেতাম। তারপর আবার আঁচলে চোখ মোছেন ঠাকুমা। এই দেখে নিলু সত্যি সত্যি কেঁদে ফেলে।

ঠাকুমা আবারও বললো, শোন দাদা তোর ভয় নাই। তুই খুব ভালো। মিলিটারিরা তোর কিছুই করবে না। দেশ স্বাধীন হলে আবার আমরা ফিরে আসবো।

'দেশ স্বাধীন মানে?'

এবার ঠাকুমা কষ্টের মধ্যেও হাসলেন। 'এই পূর্ব বাংলা, আর পূর্ব বাংলা থাকবে না। হবে বাংলাদেশ।'

তারপর ঠাকুমা রতন সবাই নৌকা করে চলে গেল। নিলু রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে। এবং এক সময় দেখতে পায় জনিদের বাড়িতেও সাজ সাজ রব। সবকিছু বাঁধানো। সবাই কোথায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে?

নিলু অবাক হয়ে জনির মাকে জিজ্ঞেস করে,'খালা,তোমরা কোথায় যাচ্ছো?

জনির মা দুঃখী গলায় বললেন, ' ভারতে নিলু।'

'কেন'?

'ওমা তুই জানিস না,শহরে মিলিটারি এসেছে। সবাই ভয়ে চলে যাচ্ছে।

'তাই নাকি, তারা কবে এসেছে?'

'কাল সন্ধ্যায়। হাই স্কুল এ ক্যাম্প করেছে। যাকে পাবে তাকেই মারবে। তুই চলে যা কোথাও নিলু।

'এবার নিলু রেগে বললো তোমারা যাও। আমি কোথাও যাব না। এখানেই থাকবো।'

জনির মা বললো তুই ভালো ছেলে। দেখবি তোর কিছুই হবে না।

মন খারাপ করে খালপাড়ে একাকী হাটতে থাকে নিলু। আর ভাবে সবাই কেন চলে গেল, গ্রাম শূন্য করে। ওরা কখনো কি ফিরে আসবে?

নিলুর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই সে এখানেই থাকবে। ঠিক তখনি মিলিটারির মধ্যে একজন তার নিশানা ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য খালের ওপার থেকে নিলুকে তাক করে। অটোমেটিক রাইফেল কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিলু দেখে একের পর এক আগুনের মৌমাছি ছুটে আসছে তার দিকে। দুই হাতে বুক চেপে ধরে নিলু। আঙ্গুলের ফাঁকে রক্তের জোয়ার বইছে। ধীরে ধীরে লুটিয়ে পড়ে নিলু। চোখদুটো ভীষণ টানছিল তার। তখুনি দৃশ্যটা দেখতে পায় সে। তার বুকের রক্তে তৈরি হয়েছে বিশাল একটা খাল। সেই খাল বেয়ে হাজার হাজার নৌকা ফিরছে। বাড়ির ছোট ছেলে, দাসবাবুর চাকর, ঠাকুমা, জনির মা সবাই নৌকার ভিতর। যেন আনন্দের উল্লাস। নিলু খুব খুশি। সবাই ফিরে আসছে। তাহলে এই কি স্বাধীনতা! ঠাকুমা বলেছিল।

স্বাধীনতার কথা ভেবে নিলুর ঠোঁটে বাংলাদেশের মানচিত্রের মতো সুন্দর এক টুকরো হাসি ফুটেছিল। কেউ তা দেখে নি

 

ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

 

ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের আমিনবাজার এলাকায় জাতীয় গ্রিডে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। রাত ৮টার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যুৎ না থাকায় এইসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বিদ্যুৎনির্ভর সব ধরনের কাজকর্মও ব্যাহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালে দেশে বড় ধরনের একটি গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছিল। সেবার ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ সরবরাহ কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ায় সারাদেশ প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল।

Header Ad
Header Ad

আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা

ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন দিবস, উৎসব এবং সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আবারও ছুটি কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। মে মাসে দুই দফায় টানা তিনদিন করে মোট ছয়দিনের ছুটির সুযোগ আসছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন অনুসারে, আগামী ১ মে (বৃহস্পতিবার) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকবে। এরপর ২ ও ৩ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সরকারি কর্মচারীরা টানা তিনদিনের ছুটি উপভোগ করতে পারবেন।

এছাড়া, আগামী ১১ মে (রবিবার) বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি রয়েছে। এর আগে ৯ ও ১০ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আবারও টানা তিনদিন ছুটি মিলবে।

এর আগে গত মার্চ-এপ্রিল মাসে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা নয়দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। সরকার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশে আরও একটি অতিরিক্ত ছুটি যুক্ত করেছিল।

ছুটির বিধিমালা অনুযায়ী, দুই ছুটির মাঝে নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়ার নিয়ম নেই। তবে অর্জিত ছুটি বা পূর্বনির্ধারিত ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী তিনদিনের ঐচ্ছিক ছুটি অনুমোদন নিয়ে ভোগ করার নিয়মও চালু আছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক