রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সেই ছেলেটি

১৯৭১ সাল। চট্টগ্রামের পাহাড়তুলি গ্রামের শিশু রাজ। তার মা রোকশানা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করেন, বাবা রহমত আলি একজন সামান্য দিনমুজুর। তার ছোট বোন রহিমা প্রথম শ্রেনীতে পড়ে। রাজ পড়ে নবম শ্রেনীতে।হঠাৎ একদিন তাদের গ্রামের দিকে কারা যেন গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে আসছিলো। তাদের গুলির প্রথম স্বীকার হলো রাজের বাবা রহমত আলি। মাঠ থেকে ফেরার পথে গুলির আঘাতে নদীর ধারে মুখন থুবড়ে পড়ে গেল। তার মা রোকশানা বেগম এইক খবর পেয়ে ছুটে যাচ্ছিলেন কিন্তু পৌছাতে পারলেন না। একটা গুলি এসে লাগলো তার বুকে।মৃত্যুবরণ করলেন তিনি।

বাবা মাকে হারিয়ে ভেঙ্গে পড়লো রাজা। কিন্তু তার বাবা -মাকে কে বা কারা মারলো কিছুই বুঝতে পারলোনা সে। পরেরদিন তার বাবার বন্ধু আবুল চাচাকে জিজ্ঞেস করলো তার বাবা-মাকে করা বা কেন মারল। চাচা বললেন গ্রামে পাকিস্তানি মিলিটারি এসেছে। তারা আমাদেরকে স্বাধীনতা দিতে চাই তাদের বিরুদ্ধে আমরা মাঠে নেমেছি বলে তারা আমাদের ওপর অত্যাচার করছে।যুদ্ধ করতে হবে, দেশকে দস্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। রাজ অবাক হয়ে বলল যুদ্ধ কি চাচা। আবুল হোসেন বলেন যুদ্ধ হচ্ছে লড়াই। পাকিস্তানিরা আমাদের স্বাধীন হতে দিতে চাই না। তারা আমাদের শোষণ করতে চাই। এই বলে চলে গেলেন আবুল হোসেন। রাজ বাবা মাকে হারিয়ে ভেঙ্গে পড়লেও তার মনে জেগে উঠলো এক নতুন স্বপ্ন।। সে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে হঠাৎ দেখলো গ্রামের লোকজন জিনিসপত্র নিয়ে কোথায় চলে যাচ্ছে। সে তার সামিয়া পিসি কে বললো তারা কোথায় যাচ্ছে। পিসি বলল "গ্রামে মিলিটারি এসেছে সবাইকে অনেক মারধোর করেছে তাই গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তোরা আমার সঙ্গে চল।"সামিয়া পিসির ছেলে মেয়ে নেই। রাজের মা তার বাড়িতে কাজ করতো তখন থেকেই তাদের ভাই -বোনকে তিনি খুব ভালোবাসতেন। রাজ হেসে বলল আমি যাব না। দেশের জন্য যুদ্ধ করবো।

পিসি তার ওপর রেগে বলল শোনো ছেলের কথা এইটুকু ছেলে তুই আবার কিসের যুদ্ধ করবি। গ্রামের সবাই চলে যাচ্ছে আর তুই কি-না যুদ্ধ করবি। চল আমার সাথে কিন্তু রাজ বললো না আমি যাবোনা। রাজ কে কিছুতেই নিয়ে যেতে না পেরে পিসি রহিমা কে নিয়ে চলে গেলো। সেইদিন রাতে রাজ তার বন্ধু রবিন,সিয়াম,রাহাত সবাইকে যুদ্ধ করতে হবে বলে রাজি করলো। রাহাতদের বাড়ির রেডিও দিয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনলো,"এইটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।" সকালে তারা মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার শফিকুদ্দিনের সাথে দেখা করে বলল আমরাও যুদ্ধ করবো।কমান্ডার তাদের মানসিকতা দেখে খুশি হলেন।তাদের কে অস্ত্র দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেন। কিন্তু রাজ যুদ্ধ করবে অস্ত্র চালানো শিখবে এইসব ভেবে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই কমান্ডার পাশের গ্রামে যেখানে অস্ত্র প্রশিক্ষণ চলছিলো তাদেরকে সেখানে পাঠিয়ে দিলেন। রাজ খুব সহজেই অস্ত্র চালানো শিখে গেল। কমান্ডার প্রধান অনেক খুশি হলেন।

১১মে সে ১০জন মুক্তিযোদ্ধার সাথে যুদ্ধে নেমে পড়ে। সেইদিন রাজ অনেক সাহসিকতার পরিচয় দেখায় শফিকুদ্দিন তাকে কিশোরদেরর ক্যাপ্টেন বানালেন।পরের দিন, ১৫ জন একসাথে মিলে বের হলো যুদ্ধে। তারা একটা গোপন স্থান তৈরি করেছিল। যেখানে ওপরে ছিলো কাঠের পাটাতন এবং মাটির নিচে ঘরের মতো গর্ত। তার সামনে ছিলো উঁচু বন। প্রায় এক হাজার সৈন্য নিয়ে পাকিস্তনিরা হাজির হলো রাজ পিছন থেকে গুলি ছুড়তে থাকে। তারা কয়েকজন করে চার দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রচন্ড গুলির আঘাতে অনেকে নিহত হয় কিন্তু তাদের গুপ্ত স্থান বুঝতে না পারায় চারদিকে গুলি ছুড়তে শুরু করলো। পাকিস্তানিদের তুলনায় তারা অনেক কম থাকায় চারদিকের গুলির তোড় সহ্য করতে না পেরে অনেকেই নিরাপদ স্থানের দিকে চলে গেলো।

রাজকেও সবাই যেতে বললো কিন্তু সে যেতে রাজি হলো না। অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ চালিয়ে গেলো। কিন্তু শত শত অস্ত্রকে একটা অস্ত্র দিয়ে দমিয়ে রাখা সম্ভব না। এইটা বুঝেও পিছু সরে যাই নি সে। কিছুক্ষণ পর একটা গ্রেনেড এসে লাগলো তার বুকে। মুখ থুবড়ে পড়লো মাটিতে। কাঠের পাটাতনের মুখ খোলা ছিলো গড়িয়ে পড়লো গর্তে। তার বন্ধুরা তাকে ধরাধরি করে সরিয়ে নিয়ে গেলো। ঝর ঝর করে রক্ত ঝরছিলো। মৃত্যুশয্যায় তার মুখ দিয়ে একটি শব্দ ভেসে আসছিলো বাংলাদেশ, স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন নিয়ে ঝরে গেলো একটা প্রাণ। পৃথিবীর বুক থেকে বিদায় নিলো সেই ছেলেটি।

 নিউ গভঃ ডিগ্রি কলেজ, রাজশাহী

 

ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের আমিনবাজার এলাকায় জাতীয় গ্রিডে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। রাত ৮টার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যুৎ না থাকায় এইসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বিদ্যুৎনির্ভর সব ধরনের কাজকর্মও ব্যাহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালে দেশে বড় ধরনের একটি গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছিল। সেবার ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ সরবরাহ কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ায় সারাদেশ প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল।

Header Ad
Header Ad

আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা

ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন দিবস, উৎসব এবং সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আবারও ছুটি কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। মে মাসে দুই দফায় টানা তিনদিন করে মোট ছয়দিনের ছুটির সুযোগ আসছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন অনুসারে, আগামী ১ মে (বৃহস্পতিবার) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকবে। এরপর ২ ও ৩ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সরকারি কর্মচারীরা টানা তিনদিনের ছুটি উপভোগ করতে পারবেন।

এছাড়া, আগামী ১১ মে (রবিবার) বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি রয়েছে। এর আগে ৯ ও ১০ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আবারও টানা তিনদিন ছুটি মিলবে।

এর আগে গত মার্চ-এপ্রিল মাসে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা নয়দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। সরকার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশে আরও একটি অতিরিক্ত ছুটি যুক্ত করেছিল।

ছুটির বিধিমালা অনুযায়ী, দুই ছুটির মাঝে নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়ার নিয়ম নেই। তবে অর্জিত ছুটি বা পূর্বনির্ধারিত ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী তিনদিনের ঐচ্ছিক ছুটি অনুমোদন নিয়ে ভোগ করার নিয়মও চালু আছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক