বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

পুষ্পাদির চলে যাওয়া

পুষ্পা দিদি। আমি তাকে পুষ্পাদি বলে ডাকি।দিদি আমার থেকে ৫/৬ বছরের বড় ছিল।আমি পড়ি ষষ্ঠ শ্রেনিতে আর সে পড়ত অষ্টম শ্রেণিতে।আমরা দু’জন এক পাড়াতে থাকি এবং একই স্কুলে পড়ি। আমি আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে পুষ্পাদির জন্য তার বাড়িতে এসে অপেক্ষা করি

আমাদের পাড়াটি মুসমান ও হিন্দু মিলে প্রায় দুই আড়াই হাজারের মানুষের বসবাস। অত্যন্ত দরিদ্র অর্ধষিত এলাকা। এর মধ্যে কিছু মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবার ও হিন্দু পরিবার আছে।যে সকল অভিভাবক একটু সচেতন তাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যায়।আর বাকি সব ছেলে মেয়েরা যায়না। ১০/১২ বছর হলে ছেলেরা ক্ষেতের কাজ কর্মে লেগে যায়। আর মেয়েরা বাড়িতে সংসারের কাজে মাকে সাহায্য করার জন্য লেগে যায়। পুষ্পাদির বাবা আর দুই ভাই আমাদের স্থানীয় বাজারে স্বর্নাকার। টাকা পয়সা ভালই রোজগার করে। এজন্য ভায়েদের ইচ্ছা পুষ্প অন্তত মাধ্যমিকটা পাস করুক। পুষ্পাদির বড় ভাই সুমিত বলে,তোরা দু’জন একসাথে স্কুলে যাবি আবার এক সাথে আসবি। তাদের বাড়িতে গেলে নানা রকম পিঠা ,নাড়ু–,মুড়ি খেতে দেয় আমাকে। পূজা এলে আগেই দাওয়াত দিয়ে রাখে। এজন্য প্রহরির মত তার সাথে স্কুলে যাই আসি। গ্রামের দুষ্টু ছেলেরা মাঝে মধ্যে প্রেমের প্রস্তাব দেয় আবার সুযোগ পেয়ে ২/১ একটা চিঠি লেখে বইয়ের মাঝে গুজে দিতে চেষ্টা করে। পুষ্পাদি খুব শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। তাঁর গায়েে রং কালো। কালো হলে কি হবে মুখের গঠন খুব সুন্দর।মাথার চুলগুলো অনেক লম্বা এবং কুচকুচে কালো। সুন্দর একটা ঘ্রাণের ক্রীম মুখে মাখে সে।পুষ্পাদির ক্রীমের ঘ্রাণটা আমারও ভালো লাগে। ঘ্রাণটা আমার নাকে আসলে পুষ্পাদিকে কেমন যেন অন্য রকম লাগে। এত দিন যাবত তার সাথে আসা যাওয়া তারপরও মনে হত সে এক রহস্যময়ি!তার হাতের সাথের আমার হাত স্পর্শ করলে সে ঘ্রাণটা লেগে থাকত অনেকক্ষণ।সে ঘ্রাণটা নিরবে অনুভব করি আমি। স্কুলে যাওয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে আগে গিয়ে উপস্থিত হলে সে বলে,এই অন্তু একটু দাঁড়া আমার হয়ে গেছে।আমাকে দাঁড় করিয়ে সে পাটখড়ির বেড়ার সাথে ছোট্ট আয়নায় মুখ দেখে কৌটা থেকে ক্রীম মুখে মাখে। ইংরেজিতে লেখা-Tibet Snow আমি ইংরেজি উচ্চারণটা করার জন্য চেষ্টা করি,পারিনা। একদিন জানতে চাইলাম পুষ্পাদি তুমি যে ক্রীমটা মুখে দেও তার নাম কি? পুষ্পাদি বলে, কেনরে মুখে মাখার জন্য কিনবি? সে আরও বলে, এ ক্রীম মেয়েরা মুখে দেয়। তয় ছেলেরাও মাখে। এদিকে আয় এই বলে আমার মুখে মেখে দেয়। কী মোহনীয় খুশবু! পুষ্পাদিকে আবার দেখি ভালো করে। আমার চাওয়া দেখে সে বলে,কি দেখছিস ? এর নাম তিব্বত স্নো। আমি সারাদিন মনে রাখার চেষ্টা করি। তিব্বত স্নো।

আমার পরিবার মধ্যবিত্ত।জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করে।গরু আছে গোয়ালে। বড় দুই ভাই বাবার সাথে জমিতে কাজ করে। তাঁরা সামান্য লেখাপড়া করেছে। আমি যত ক্লাস পড়তে পারি আমাকে তাঁরা পড়াবে। এজন্য লেখাপড়া এবং খেলার মাঠ উন্মুক্ত। বিকাল হলে বহর বাজারের ঐকাতন সংসদের মাঠে মিনাল,সিরাজ, আওলাদ ওদের সাথে ফুটবল খেলি। মাঝে মধ্যে বড়দের জন্য মাঠে সুযোগ না পেলে পাইক বাড়ির ফাঁকা জায়গায় খেলি। আামাদের একটা ফুটবল টিম আছে। সুযোগ পেলে বিভিন্ন পাড়ার সাথে টিম খেলি। নিজেরা টাকা তুলে শীল্ড কিনি পুরস্কারের জন্য। সন্ধ্যা হলে বাড়ি ফিরি। বাড়ি ফেরার সময় দেখি পুষ্পাদি পড়তে বসেছে। আমার আরও আগ্রহ বেড়ে যায় পড়ার প্রতি। বাড়ি এসে হাত মুখ ধুয়ে হারিকেন জালিয়ে পড়তে বসি।

একদিন সন্ধ্যায় বাবা বাড়ি ফিরে মায়ের সাথে আলাপ করতে শুনতে পেলাম শহরের অবস্থা বেশি ভালো না। ঢাকা শহর খুব গরম।কয়েক দিন আগে শেখ মুজিব ভাষণ দিয়েছিলেন সেজন্য শহরে মেলিটারি নামছে। শহরে এখন মিছিল মিটিং লেগে আছে। অনেক মানুষ ধরে জেলে আটকে রেখেছে। সামনের দিনগুলোতে কি হবে বুঝতে পারছেনা কেউ!

আমি শুনে তেমন অবাক হইনা। আমাদের গ্রামে কয়েক মাস আগে দুই পক্ষ ক্ষমতার আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য ঝগড়া হয়। এ ঝগড়াতে দুই পক্ষের কিছু লোক জখম হয়েছিল। মজিদ শেখের হাত ভেঙ্গে গিয়েছিল। আমি আর পুষ্পাদি নিয়মিত স্কুলে যাই।ভালোই চলছিল আমাদের স্কুলে আসা যাওয়া। নিয়মিত খেলাধুলা সন্ধ্যায় বই নিয়ে পড়তে বসা। একদিন স্কুলে গিয়ে শুনি দেশে যুদ্ধ লেগেছে। শহর থেকে হাজার হাজার লোক গ্রামে পালিয়ে আসছে।কেউ আসতে পেরেছে আবার কেউ গুলি খেয়ে রাস্তায় পরে মরে আছে। কেউ কোন ভাল খবর দিতে পারছেনা। সবাই যেন একটা গোলক ধাঁধার মধ্যে পড়ে আছে।স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যাও কম। ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা খুব কম। যে সকল স্যারেরা স্কুলে আছেন তারা ক্লাস না নিয়ে লাইব্রেরিতে বসে কথা বলছেন। সব স্যারেদের চোখে মুখে কেমন যেন একটা উৎকণ্ঠার ছাপ। ক্লাসে যাওয়ার জন্য স্যারেরা আগের মত কোন তাড়া দিচ্ছেনা। তাদের ব্যবহার দেখে মনে হল তারা স্কুলের কেউ না। ছাত্র ছাত্রীরা যে যার মত আড্ডা,গল্প করছে। কোন ক্লাস হলনা। স্যারেরা ছুটি দিয়ে দিলেন।বললেন, তোমরা সবাই বাড়ি চলে যাও। আমি আর পুষ্পাদি সেদিনের জন্য বাড়ি ফিরে আসি। আসার মধ্যে রাস্তায় আমার সাথে পুষ্পাদি তেমন কথা বললনা। দিদি কেমন যেন মনমরা হয়ে গেল বাড়ি ফেরার পথে।
বিকেল বেলা জানতে পারি দুই দিন আগে পাকিস্তানিরা শহরে আক্রমন করেছে বহু লোক মেরে ফেলেছে। যাকে যেখানে পায় সেখানে গুলি করে মেরে ফেলছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। শেখ মুজিবকে ধরে কোথায় নিয়ে গেছে বলতে পারেনা কেউ। সবার মধ্যে একটা উৎকণ্ঠার ছাপ। কেউ মন দিয়ে কাজে যায়না। ইচ্ছে হলে যায় আবার কেউ যায় মনু মোল্লার বাড়ি রেডিওর খবর শুনতে। গ্রামের মধ্যে যেন একটা শুনশান নিরবতা বিরাজ করছে। গ্রামের মানুষেদের মধ্যে কোন আনন্দ,উৎসাহ উদ্দীপনা নেই। স্কুলে যাওয়ার জন্য কেউ কিছু বলেনা। মাঝে মধ্যে পুষ্পাদির বাড়ির দিকে গিয়ে দেখি সে নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাকে দেখে আগের মত উৎসাহ নিয়ে ডাক দেয়না,কথা বলেনা। আমিও তার প্রতি একটু অভিমান করি। তাঁকে দিনে ২/১ বার দেখা হলে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখি। দেখি সে আমাকে ডাক দেয় কিনা।না,তাঁর মধ্যে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া হয়না। একবার কি কারণে পুষ্পাদি আমাকে একটা থাপ্পর মেরেছিল । আমি দু’দিন তাঁর সাথে স্কুলে যাইনি।পরের দিন আমার স্কুলে যাওয়া রাস্তা আটকিয়ে হাত ধরে বলে,ভাই আমি এতজোরে থাপ্পর মারতে চাইনি। লেগে গেছে। মাফ করে দে। হাত জোড় করে বলে। আমি তোর পুষ্পাদি না! আমি আর রাগ করে থাকতে পারিনি। তাকে ধরে কেঁদে ফেলেছি। পুষ্পাদি বলে,আর কোনদিন তোকে মারবনা। কিন্তু এখন সে এমন করছে কেন আমার সাথে? আমি তো এমন কিছু করিনি। মন খুব খারাপ লাগে। গ্রামের সব লোকজনই কেমন যেন অন্য রকম হয়ে গেছে। কারও মন বুঝতে পারেনা কেউ।

গ্রামের সবাই বলাবলি করছে দেশে গন্ডগোল লাগছে। গ্রামেও পাকিস্তানি মেলিটারিরাও হামলা করছে। আমি মনে মনে ভাবি গ্রামে মেলিটারিরা আসলে কি হবে এখানে কেউ মিটিং,মিছিল করেনা।
কয়েকদিন ধরে পুষ্পাদির বাড়ির দিকে যাওয়া হয়না। আজ কেন যেন সকাল থেকে তার কথা মনে পড়ছে। আবার ভাবি সে পড়াশোনা করছে কিনা গিয়ে দেখি। সকালে ঘুম থকে ওঠে তাদের বাড়ির দিকে যাই। গিয়ে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পুষ্পাদির মা ঘরের কোণে বসে চুপচাপ কি যেন করছে।আর কাউকে বাড়িতে দেখছিনা। কেমন যেন ঝিম মেরে গেছে বাড়িটা। আরও কয়েক বার ঘুরে বাড়ি চলে আসি। মনে মনে ভাবি,হয়তো কোথাও বেড়াতে গেছে বিকেল হলে চলে আসবে। সারাদিন এদিক ওদিকে ঘুরে দিন কাটে। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে শুনতে পাই পুষ্পাদি আর দুই ভাই রাতে ইন্ডিয়া চলে গেছে। ইন্ডিয়া কেন চলে গেছে আমি বুঝতে পারিনা। ইন্ডিয়া কোথায়? আর কেনইবা গেল আমি জানার জন্য অস্থির কার কাছে জানব ? সাহস হলনা কাউকে জিজ্ঞাসা করার। আবার ভাবি,হয়তো কিছুদিন পর চলে আসবে।

একদিন সব জানতে পারি এবং বুঝতে পারলাম আর কোনদিন আসবে এখানে। পরশু রাতে উত্তর পাড়া প্রাইমারি স্কুলে মেলিটারি এসেছে। উত্তর পাড়া আমাদের গ্রাম থেকে তিন সাড়ে কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাঝে শুধু একটা বড় চক পড়ে। গ্রামের জোয়ান জোয়ান ছেলেদের ধরে গুলি করে মেরে ফেলে। কারণ তাঁরাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে তারা দেশটাকে স্বাধিন করার জন্য অনেক পাকিস্তানি মেলিটারিদের হত্যা করছে। তাদের নাম মুক্তিযোদ্ধা কোন গ্রামে হিন্দু থাকলে তাদের উপর বেশি অত্যাচার করে এবং মেরে ফেলে। যুবতি মেয়েদের ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি ক্যাম্পে। নানাভাবে র্নিযাতন করে।গ্রামের জোয়ান ছেলে মেয়েরা কেউ নিরাপদ না।গ্রাম ছেড়ে সবাই দূরে কোথাও পালাতে লাগল। এই জন্য পুষ্পাদিরা রাতের আঁধারে ইন্ডিয়া চলে গেছে। তার চলে যাওয়ার কথা শোনে আমার চিৎকার করে কান্না পেতে লাগল।কিন্তু পারিনি কাঁদতে। শুধু মাঝে তার জন্য একটা পাথর জমা হয়ে আছে। আরও মনে হতে লাগল,গ্রামের মাটির পথ ধরে সর্ষে ক্ষেতের আল ধরে সে চলে যাচ্ছে খুব সহজে। আর কোন দিন পুষ্পাদির সাথে দেখা হবে না এ কথা ভেবে খুব কষ্ট হচ্ছে।

 

ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মদপানের ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৯ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, ঈদের সন্ধ্যায় তারা মদপান করেন এবং রাতের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী খাঁর ছেলে জাকির হোসেন টিটু (৪০) ও সোহরাব গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬)।

এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের সাইদ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন, মোকামখালী গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইমরান, মিত্র তেতুলিয়ার মর্জিনা খাতুনের ছেলে ইকবাল, কামরুলের ছেলে লিফটন, আজিবার সরদারের ছেলে রবিউল, শহীদ গাজীর ছেলে তুহিন, আনিসের ছেলে নাজমুলসহ আরও কয়েকজন।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইমরানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈদের দিন সন্ধ্যায় আশাশুনির তেতুলিয়া শ্মশানঘাট মাঠে বসে জাকির হোসেন টিটু, নাজমুল গাজীসহ মোট ১১ জন একসঙ্গে মদপান করেন। মদপানের পর তারা বাড়ি ফিরে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন।

এরপর রাত ১২টার দিকে একে একে সবাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকির হোসেন টিটু ও নাজমুল গাজী মারা যান। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে।

আশাশুনি থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফিরোজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।"

নিহতদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯
ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২