শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

পুষ্পাদির চলে যাওয়া

পুষ্পা দিদি। আমি তাকে পুষ্পাদি বলে ডাকি।দিদি আমার থেকে ৫/৬ বছরের বড় ছিল।আমি পড়ি ষষ্ঠ শ্রেনিতে আর সে পড়ত অষ্টম শ্রেণিতে।আমরা দু’জন এক পাড়াতে থাকি এবং একই স্কুলে পড়ি। আমি আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে পুষ্পাদির জন্য তার বাড়িতে এসে অপেক্ষা করি

আমাদের পাড়াটি মুসমান ও হিন্দু মিলে প্রায় দুই আড়াই হাজারের মানুষের বসবাস। অত্যন্ত দরিদ্র অর্ধষিত এলাকা। এর মধ্যে কিছু মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবার ও হিন্দু পরিবার আছে।যে সকল অভিভাবক একটু সচেতন তাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যায়।আর বাকি সব ছেলে মেয়েরা যায়না। ১০/১২ বছর হলে ছেলেরা ক্ষেতের কাজ কর্মে লেগে যায়। আর মেয়েরা বাড়িতে সংসারের কাজে মাকে সাহায্য করার জন্য লেগে যায়। পুষ্পাদির বাবা আর দুই ভাই আমাদের স্থানীয় বাজারে স্বর্নাকার। টাকা পয়সা ভালই রোজগার করে। এজন্য ভায়েদের ইচ্ছা পুষ্প অন্তত মাধ্যমিকটা পাস করুক। পুষ্পাদির বড় ভাই সুমিত বলে,তোরা দু’জন একসাথে স্কুলে যাবি আবার এক সাথে আসবি। তাদের বাড়িতে গেলে নানা রকম পিঠা ,নাড়ু–,মুড়ি খেতে দেয় আমাকে। পূজা এলে আগেই দাওয়াত দিয়ে রাখে। এজন্য প্রহরির মত তার সাথে স্কুলে যাই আসি। গ্রামের দুষ্টু ছেলেরা মাঝে মধ্যে প্রেমের প্রস্তাব দেয় আবার সুযোগ পেয়ে ২/১ একটা চিঠি লেখে বইয়ের মাঝে গুজে দিতে চেষ্টা করে। পুষ্পাদি খুব শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। তাঁর গায়েে রং কালো। কালো হলে কি হবে মুখের গঠন খুব সুন্দর।মাথার চুলগুলো অনেক লম্বা এবং কুচকুচে কালো। সুন্দর একটা ঘ্রাণের ক্রীম মুখে মাখে সে।পুষ্পাদির ক্রীমের ঘ্রাণটা আমারও ভালো লাগে। ঘ্রাণটা আমার নাকে আসলে পুষ্পাদিকে কেমন যেন অন্য রকম লাগে। এত দিন যাবত তার সাথে আসা যাওয়া তারপরও মনে হত সে এক রহস্যময়ি!তার হাতের সাথের আমার হাত স্পর্শ করলে সে ঘ্রাণটা লেগে থাকত অনেকক্ষণ।সে ঘ্রাণটা নিরবে অনুভব করি আমি। স্কুলে যাওয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে আগে গিয়ে উপস্থিত হলে সে বলে,এই অন্তু একটু দাঁড়া আমার হয়ে গেছে।আমাকে দাঁড় করিয়ে সে পাটখড়ির বেড়ার সাথে ছোট্ট আয়নায় মুখ দেখে কৌটা থেকে ক্রীম মুখে মাখে। ইংরেজিতে লেখা-Tibet Snow আমি ইংরেজি উচ্চারণটা করার জন্য চেষ্টা করি,পারিনা। একদিন জানতে চাইলাম পুষ্পাদি তুমি যে ক্রীমটা মুখে দেও তার নাম কি? পুষ্পাদি বলে, কেনরে মুখে মাখার জন্য কিনবি? সে আরও বলে, এ ক্রীম মেয়েরা মুখে দেয়। তয় ছেলেরাও মাখে। এদিকে আয় এই বলে আমার মুখে মেখে দেয়। কী মোহনীয় খুশবু! পুষ্পাদিকে আবার দেখি ভালো করে। আমার চাওয়া দেখে সে বলে,কি দেখছিস ? এর নাম তিব্বত স্নো। আমি সারাদিন মনে রাখার চেষ্টা করি। তিব্বত স্নো।

আমার পরিবার মধ্যবিত্ত।জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করে।গরু আছে গোয়ালে। বড় দুই ভাই বাবার সাথে জমিতে কাজ করে। তাঁরা সামান্য লেখাপড়া করেছে। আমি যত ক্লাস পড়তে পারি আমাকে তাঁরা পড়াবে। এজন্য লেখাপড়া এবং খেলার মাঠ উন্মুক্ত। বিকাল হলে বহর বাজারের ঐকাতন সংসদের মাঠে মিনাল,সিরাজ, আওলাদ ওদের সাথে ফুটবল খেলি। মাঝে মধ্যে বড়দের জন্য মাঠে সুযোগ না পেলে পাইক বাড়ির ফাঁকা জায়গায় খেলি। আামাদের একটা ফুটবল টিম আছে। সুযোগ পেলে বিভিন্ন পাড়ার সাথে টিম খেলি। নিজেরা টাকা তুলে শীল্ড কিনি পুরস্কারের জন্য। সন্ধ্যা হলে বাড়ি ফিরি। বাড়ি ফেরার সময় দেখি পুষ্পাদি পড়তে বসেছে। আমার আরও আগ্রহ বেড়ে যায় পড়ার প্রতি। বাড়ি এসে হাত মুখ ধুয়ে হারিকেন জালিয়ে পড়তে বসি।

একদিন সন্ধ্যায় বাবা বাড়ি ফিরে মায়ের সাথে আলাপ করতে শুনতে পেলাম শহরের অবস্থা বেশি ভালো না। ঢাকা শহর খুব গরম।কয়েক দিন আগে শেখ মুজিব ভাষণ দিয়েছিলেন সেজন্য শহরে মেলিটারি নামছে। শহরে এখন মিছিল মিটিং লেগে আছে। অনেক মানুষ ধরে জেলে আটকে রেখেছে। সামনের দিনগুলোতে কি হবে বুঝতে পারছেনা কেউ!

আমি শুনে তেমন অবাক হইনা। আমাদের গ্রামে কয়েক মাস আগে দুই পক্ষ ক্ষমতার আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য ঝগড়া হয়। এ ঝগড়াতে দুই পক্ষের কিছু লোক জখম হয়েছিল। মজিদ শেখের হাত ভেঙ্গে গিয়েছিল। আমি আর পুষ্পাদি নিয়মিত স্কুলে যাই।ভালোই চলছিল আমাদের স্কুলে আসা যাওয়া। নিয়মিত খেলাধুলা সন্ধ্যায় বই নিয়ে পড়তে বসা। একদিন স্কুলে গিয়ে শুনি দেশে যুদ্ধ লেগেছে। শহর থেকে হাজার হাজার লোক গ্রামে পালিয়ে আসছে।কেউ আসতে পেরেছে আবার কেউ গুলি খেয়ে রাস্তায় পরে মরে আছে। কেউ কোন ভাল খবর দিতে পারছেনা। সবাই যেন একটা গোলক ধাঁধার মধ্যে পড়ে আছে।স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যাও কম। ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা খুব কম। যে সকল স্যারেরা স্কুলে আছেন তারা ক্লাস না নিয়ে লাইব্রেরিতে বসে কথা বলছেন। সব স্যারেদের চোখে মুখে কেমন যেন একটা উৎকণ্ঠার ছাপ। ক্লাসে যাওয়ার জন্য স্যারেরা আগের মত কোন তাড়া দিচ্ছেনা। তাদের ব্যবহার দেখে মনে হল তারা স্কুলের কেউ না। ছাত্র ছাত্রীরা যে যার মত আড্ডা,গল্প করছে। কোন ক্লাস হলনা। স্যারেরা ছুটি দিয়ে দিলেন।বললেন, তোমরা সবাই বাড়ি চলে যাও। আমি আর পুষ্পাদি সেদিনের জন্য বাড়ি ফিরে আসি। আসার মধ্যে রাস্তায় আমার সাথে পুষ্পাদি তেমন কথা বললনা। দিদি কেমন যেন মনমরা হয়ে গেল বাড়ি ফেরার পথে।
বিকেল বেলা জানতে পারি দুই দিন আগে পাকিস্তানিরা শহরে আক্রমন করেছে বহু লোক মেরে ফেলেছে। যাকে যেখানে পায় সেখানে গুলি করে মেরে ফেলছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। শেখ মুজিবকে ধরে কোথায় নিয়ে গেছে বলতে পারেনা কেউ। সবার মধ্যে একটা উৎকণ্ঠার ছাপ। কেউ মন দিয়ে কাজে যায়না। ইচ্ছে হলে যায় আবার কেউ যায় মনু মোল্লার বাড়ি রেডিওর খবর শুনতে। গ্রামের মধ্যে যেন একটা শুনশান নিরবতা বিরাজ করছে। গ্রামের মানুষেদের মধ্যে কোন আনন্দ,উৎসাহ উদ্দীপনা নেই। স্কুলে যাওয়ার জন্য কেউ কিছু বলেনা। মাঝে মধ্যে পুষ্পাদির বাড়ির দিকে গিয়ে দেখি সে নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাকে দেখে আগের মত উৎসাহ নিয়ে ডাক দেয়না,কথা বলেনা। আমিও তার প্রতি একটু অভিমান করি। তাঁকে দিনে ২/১ বার দেখা হলে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখি। দেখি সে আমাকে ডাক দেয় কিনা।না,তাঁর মধ্যে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া হয়না। একবার কি কারণে পুষ্পাদি আমাকে একটা থাপ্পর মেরেছিল । আমি দু’দিন তাঁর সাথে স্কুলে যাইনি।পরের দিন আমার স্কুলে যাওয়া রাস্তা আটকিয়ে হাত ধরে বলে,ভাই আমি এতজোরে থাপ্পর মারতে চাইনি। লেগে গেছে। মাফ করে দে। হাত জোড় করে বলে। আমি তোর পুষ্পাদি না! আমি আর রাগ করে থাকতে পারিনি। তাকে ধরে কেঁদে ফেলেছি। পুষ্পাদি বলে,আর কোনদিন তোকে মারবনা। কিন্তু এখন সে এমন করছে কেন আমার সাথে? আমি তো এমন কিছু করিনি। মন খুব খারাপ লাগে। গ্রামের সব লোকজনই কেমন যেন অন্য রকম হয়ে গেছে। কারও মন বুঝতে পারেনা কেউ।

গ্রামের সবাই বলাবলি করছে দেশে গন্ডগোল লাগছে। গ্রামেও পাকিস্তানি মেলিটারিরাও হামলা করছে। আমি মনে মনে ভাবি গ্রামে মেলিটারিরা আসলে কি হবে এখানে কেউ মিটিং,মিছিল করেনা।
কয়েকদিন ধরে পুষ্পাদির বাড়ির দিকে যাওয়া হয়না। আজ কেন যেন সকাল থেকে তার কথা মনে পড়ছে। আবার ভাবি সে পড়াশোনা করছে কিনা গিয়ে দেখি। সকালে ঘুম থকে ওঠে তাদের বাড়ির দিকে যাই। গিয়ে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পুষ্পাদির মা ঘরের কোণে বসে চুপচাপ কি যেন করছে।আর কাউকে বাড়িতে দেখছিনা। কেমন যেন ঝিম মেরে গেছে বাড়িটা। আরও কয়েক বার ঘুরে বাড়ি চলে আসি। মনে মনে ভাবি,হয়তো কোথাও বেড়াতে গেছে বিকেল হলে চলে আসবে। সারাদিন এদিক ওদিকে ঘুরে দিন কাটে। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে শুনতে পাই পুষ্পাদি আর দুই ভাই রাতে ইন্ডিয়া চলে গেছে। ইন্ডিয়া কেন চলে গেছে আমি বুঝতে পারিনা। ইন্ডিয়া কোথায়? আর কেনইবা গেল আমি জানার জন্য অস্থির কার কাছে জানব ? সাহস হলনা কাউকে জিজ্ঞাসা করার। আবার ভাবি,হয়তো কিছুদিন পর চলে আসবে।

একদিন সব জানতে পারি এবং বুঝতে পারলাম আর কোনদিন আসবে এখানে। পরশু রাতে উত্তর পাড়া প্রাইমারি স্কুলে মেলিটারি এসেছে। উত্তর পাড়া আমাদের গ্রাম থেকে তিন সাড়ে কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাঝে শুধু একটা বড় চক পড়ে। গ্রামের জোয়ান জোয়ান ছেলেদের ধরে গুলি করে মেরে ফেলে। কারণ তাঁরাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে তারা দেশটাকে স্বাধিন করার জন্য অনেক পাকিস্তানি মেলিটারিদের হত্যা করছে। তাদের নাম মুক্তিযোদ্ধা কোন গ্রামে হিন্দু থাকলে তাদের উপর বেশি অত্যাচার করে এবং মেরে ফেলে। যুবতি মেয়েদের ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি ক্যাম্পে। নানাভাবে র্নিযাতন করে।গ্রামের জোয়ান ছেলে মেয়েরা কেউ নিরাপদ না।গ্রাম ছেড়ে সবাই দূরে কোথাও পালাতে লাগল। এই জন্য পুষ্পাদিরা রাতের আঁধারে ইন্ডিয়া চলে গেছে। তার চলে যাওয়ার কথা শোনে আমার চিৎকার করে কান্না পেতে লাগল।কিন্তু পারিনি কাঁদতে। শুধু মাঝে তার জন্য একটা পাথর জমা হয়ে আছে। আরও মনে হতে লাগল,গ্রামের মাটির পথ ধরে সর্ষে ক্ষেতের আল ধরে সে চলে যাচ্ছে খুব সহজে। আর কোন দিন পুষ্পাদির সাথে দেখা হবে না এ কথা ভেবে খুব কষ্ট হচ্ছে।

 

ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় সকল সড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত ভ্যান (পাখিভ্যান) ও  ইজিবাইক চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আগামীকাল রোববারের মধ্যে প্রশাসন তাদের দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সোমবার সকাল থেকে জেলার সকল পথে পরিবহন চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত  এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।  সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈন উদ্দিন লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের আগে জেলায় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক,পাখিভ্যান, থ্রি হুইলার সহ অন্য অবৈধ যানগুলো যেভাবে চলাচল করতো, সেভাবেই তারা চলাচল করুক এই দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। প্রশাসন বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা সেটা রক্ষা করেনি।

কর্মসূচি ঘোষণাকালে বলা হয়, ২৩ ডিসেম্বর সোমবার থেকে টানা দুইদিন পরিবহন চলাচল বন্ধের মধ্যে প্রশাসন যদি বসে সমাধানের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আগামী ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে অভ্যন্তরীণ পথের পাশাপাশি দূরপাল্লার সকল রুটে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান ইমাম বকুল, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম সহ সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতকারীরা একটি মসজিদে আগুন লাগিয়ে ভবনের দেওয়ালে বিদ্বেষমূলক স্লোগান লিখে গেছে। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) জুমার দিন সকালে সালফিতের মারদা গ্রামে বার আল-ওয়ালিদাইন মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদের সামনের দেয়ালে হিব্রু ভাষায় ‘প্রতিশোধ’, ‘আরবদের মৃত্যু হোক’সহ বিভিন্ন স্লোগান লিখে রেখেছেন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা। এ ছাড়া উত্তর পশ্চিম তীরের মারদা গ্রামের মসজিদের প্রবেশপথে কালো পোড়া দাগ দেখা গেছে। তবে আগুন বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নেভানো হয়।

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থল থেকে সাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করছে।

মারদা গ্রাম পরিষদের প্রধান নাসফাত আল-খুফাশ বলেন, শুক্রবার মারদা গ্রাম একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলায় জেগে উঠল। বসতিস্থাপনকারী গোষ্ঠী বীর আল-ওয়ালিদিন মসজিদে আগুন দেয়। বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠীগুলোর এই ধরনের আক্রমণ ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত।

ইসরায়েলি পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেত এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতর বলে মনে করে। দোষীদের কঠোর বিচার নিশ্চিত করতে তারা দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।

এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আক্রমণকে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সংঘটিত অপরাধের ধারাবাহিক সর্বশেষ ঘটনা বলে নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় সহায়তার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৩০ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে ৭ লক্ষাধিক ইসরায়েলি বসবাস করে। ১৯৬৭ সালে এই দুটি অঞ্চল দখল করে নেয় ইসরায়েল। তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এই দখলকৃত ভূমিতে গড়ে ওঠা ইসরায়েলি বসতিগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

Header Ad
Header Ad

গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০

গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় ইসলামি জলসাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পল্টন মোড়ে।

সাবেক ওই আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বলে জানা গেছে। এর আগে তিনি বগুড়া শহর যুবলীগের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, সাঘাটা ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামে একটি ইসলামি মাহফিলের আয়োজনে অতিথি করাকে কেন্দ্র করে উপজেলার পল্টন মোড়ে জামায়াত-বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সাঘাটা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেলিম আহমেদ তুলিপসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হন।

পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাঘাটা উপজেলা ও জেলা বিএনপির সদস্য কামরুজ্জামান সোহাগ বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপিতে যোগদান করা সাবেক যুবলীগ নেতা নাহিদুজ্জামান নিশাদকে একটি ইসলামি মাহফিলে অতিথি করেন জামায়াতের আয়োজকরা। সেখানে উপজেলা বিএনপির প্রকৃত কোনও নেতাকে অতিথির তালিকায় রাখা হয়নি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেলিম আহমেদ তুলিপকে মারপিট ও মাথায় আঘাত করা হয়। পরে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় অভিযোগ দিতে জেলা বিএনপির নেতারা থানায় আসেন বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, একটি ইসলামি মাহফিলকে কেন্দ্র করে মূলত জামায়াত-বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের ৮ থেকে ১০ জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা
জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা
গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০
আশ্বস্ত করছি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: প্রধান উপদেষ্টা
সত্যি কি থাপ্পড় মেরেছিলেন শাহরুখ, ৯ বছর পর মুখ খুললেন হানি সিং
মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর, বগুড়ার শ্রাবণী এখন শ্রাবণ
বাড়ি ফেরার পথে সড়কে ঝরে গেল বাবা-ছেলের প্রাণ
ছাত্রলীগ নেতা মুক্তাদির শিক্ষার্থীদের হাতে আটক, থানায় সোপর্দ
এ দেশে মেজরিটি–মাইনরিটি বলে কিছু নেই: জামায়াতের আমির
আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, সবচেয়ে ছোট দিন আগামীকাল
রাজনীতিবিদকে বিয়ে করতে চান ফারজানা সিঁথি
গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ
পাকিস্তানে জঙ্গি হামলায় ১৬ সেনা নিহত
বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইসমাইল বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার
হামজাকে নিয়ে যা বললেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল
বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি, বহু ধর্মের বিকাশে কাজ করতে চায় কমিশন: ফারুকী
অবৈধ অনুপ্রেবেশের অভিযোগে ত্রিপুরায় শিশুসহ ৬ বাংলাদেশি গ্রেফতার
টাঙ্গাইলে বাস-সিএনজির সংঘর্ষ: নিহত ২
চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি, দুদিনের মধ্যে অভিযান: ডিএমপি কমিশনার