বঙ্গবন্ধুর ওপর গোয়েন্দা অত্যাচারের প্রথম প্রামাণ্যচিত্র ‘ফাইল নম্বর ৬০৬’
পাকিস্তানের গোয়েন্দা বাহিনীর বঙ্গবন্ধুর গোয়েন্দা ফাইলগুলোর প্রথম খন্ড নিয়ে ডকু-ফিকশন ‘ফাইল নম্বর-৬০৬’ বানিয়েছেন চলচ্চিত্রকার প্রকৌশলী শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর পাকিস্তানের গোয়েন্দা বাহিনীর তৈরি ফাইলগুলোর ১৪ খন্ডের সম্পাদিত বইয়ের ‘প্রথম খন্ড ১৯৪৮-১৯৫০ সাল’ নিয়ে বানানো হয়েছে। সিরিজটির নাম ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’।
কুশলী পরিচালকের ক্যামেরায় কাহিনীর শুরু, পাকিস্তানের জন্মের পাঁচ মাসের মাথায় ১৯৪৮ সালের ১৩ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার বর্ধমান হাউজে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের সভায় উপস্থিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আইআই চুন্ডিগড়, আবদুর রব নিশতার, পীরজাদা আব্দুস সাত্তার। একটি পুস্তিকা বিলি করা হলো, শেখ মুজিবুর রহমান ও নাঈমুদ্দিন আহমদ প্রকাশিত, নাম ‘পুর্ব পাকিস্তানে দূর্ভাগা জনসাধারণ কৈফিয়ত দিতে হবে: আমাদের দাবী।’ বইটি নিয়েই পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের খাতায় প্রথম নাম উঠলো শেখ মুজিবের। বয়স মোটে ২৮। তারপর থেকে দিনে, রাতে সর্বক্ষণ তিনি কড়া গোয়েন্দা নজরদারিতে পড়লেন। আইএসআই প্রতিদিনই তার নামে রিপোর্ট পেশ করলো। তার এই ব্যক্তিগত নথি বা পারসোনাল ফাইল ১৯৪৮ থেকে শুরু।
‘ফাইল নম্বর ‘৬০৬’ নিয়ে শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন বলেছেন, ‘আমার তৈরি এই বিশেষ প্রামাণ্যচিত্রটি বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে বড় রাজনীতিবিদদের একজন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গোয়েন্দা নজরদারি ও হয়রানির ভিত্তিতে তৈরি বলে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ এই প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে গোয়েন্দা বাহিনীর সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম, তার সরকারি হয়রানি ইত্যাদি জানতে পারবেন ইতিহাসের সত্য হিসেবে, কোনো বানানো কাহিনীতে নয়। কেকনা ইতিহাসকে আমি বন্দী করেছি সেলুলয়েডে।
আগামী দিনের বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাসের গবেষকদের তথ্য-উপাত্তেরও সমৃদ্ধ উৎস হবে।’ কীভাবে প্রামাণ্যচিত্রটি তৈরি করেছেন এ প্রশ্নের জবাবে চলচ্চিত্রকার তুহিন বলেছেন, “বঙ্গবন্ধুর ওপর আমার একান্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কারণে নিজের চেষ্টা ও সবার সহযোগিতায় এই বিশেষ প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করতে পেরেছি। আমার আশা ও ইচ্ছে আছে, ভবিষ্যতে সরকারী ও বেসরকারী সাহায্য পেলে ‘ফাইল নম্বর ৬০৬’র বাকি ১৩টি খন্ড নিয়েই ডকুমেন্টারি ফিকশন তৈরি করবো ও বাংলাদেশের এবং বিশ্বের আগামী দিনের অন্যতম রাজনৈতিক এবং গোয়েন্দা দলিলগুলোকে মূর্ত করে রাখবো। বিশ্বের সব দেশে পৌছে দেব।”
প্রকৌশলী শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন চুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউট বাংলাদেশ (আইইবি)’র দুবারের এজিএস। তিনি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, কবি, সাহিত্যিক ও প্রকৌশলী। তার ‘ফাইল নম্বর ৬০৬’র পৃষ্ঠপোষক শাহীন আহমেদ। প্রযোজনা করেছে 'নক্ষত্র'।
আগামী ১১ এপ্রিল বিকেল ৪টায় ঢাকার রমনার আইইবি মিলনায়তনে ৪টায় ‘ফাইল নম্বর ৬০৬’র উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে। প্রধান অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
পরিচালক প্রকৌশলী শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন জানিয়েছেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গুরুত্বপূর্ণ স্থান, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ‘ফাইল নম্বর ৬০৬’র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।”
ওএফএস/এএস