আবিদ এখন এ.ডি.
প্রথম ছাত্র হিসেবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবিদ আল হাসান বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক বা অ্যাসিসটেন্ট ডিরেক্টর হয়েছেন। কীভাবে? লিখেছেন সায়ন্তনী রাখী
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্র, বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ‘সহকারী পরিচালক (অ্যাসিটেন্ট ডিরেক্টর বা এডি)’ হয়েছেন। নাম তার অিাবিদ। পুরো নাম জি. এম. আবিদ আল হাসান। বাণিজ্য অনুষদের প্রধান বিভাগ ‘অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস’-এ পড়েছেন। ২০১২-’১৩ সেশনে ভর্তি, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থায়। এমবিএ পাশ ভালো ফল নিয়ে, ২০১৭-’১৮ সেশনে।
চাকরিতে যোগের খবরটি জেনেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম পরিচালক ও অফিসার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার একটি উন্মুক্ত পত্রে। জানিয়েছেন, এবার মোট ১শ ৮২ জনকে সহকারী পরিচালক পদে সুপারিশ করা হলো। তাদের ‘এ.ডি. হওয়ায় খুব খুশি আবিদ। বলেছেনও, ‘সরকারের ব্যাংক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রক ব্যাংকটির ‘সহকারী পরিচালক’ পদটি সবসময়, সব ব্যাংকার, সরকারী ভালো অফিসার হতে চাওয়া তরুণ-তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে। আমি তো ব্যাংকিং সেক্টরেই ক্যারিয়ারটি গড়তে চেয়েছি। বৈশ্বিক মহামারি রোগটির আক্রমণে প্রায় দুটি বছর নিয়োগ পরীক্ষাই দিতে পারিনি। বসে না থেকে পড়ালেখা করেছি অবসরে। নিজের চাকরিতে মন দিয়েছিলাম। লক্ষ্য অর্জনে সর্বদা চেষ্টা করি আমি। অবশেষে সাফল্যটি ধরা দিল।’
আগামী দিনের ব্যাংকারদের পরামশ, ‘পরিকল্পনা করেই তো প্রস্তুতি নিতে হবে। পড়তে হবে। পূর্ণাঙ্গ ও ঠিক পরিকল্পনা ছাড়া কোনো কাজেই সাফল্য আসে না। পরিশ্রমের কোনো বিকল্প তো নেই। বাণিজ্য অনুষদের বিভাগগুলো বাংলাদেশে অত্যন্ত ভালো। মানসম্পন্ন ও পেশাদার শিক্ষকরা ছাত্র, ছাত্রীদের তৈরি করছেন। পুরোপুরি পেশানির্ভর পড়ালেখার এই ভুবন। আমাদের চাকরি জীবনের জন্য অতি সহায়ক। তাই নিজের বিষয়ভিত্তিক বইগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে। নিয়মিত চাকরির জন্য ভালোভাবে পড়ার চর্চা করতে হবে। অ্যানালিটিক্যাল বা বিশ্লেষণী ক্ষমতাও থাকতে হবে। প্রশ্নপত্র কিন্তু ইংরেজিতে হয়। ফলে ইংরেজি ভালো জানতে হবে। বন্ধু, পরিবারে ইংরেজিতে কথা বলার চর্চা করতে পারো। ছাত্রজীবনে সাংস্কৃতিক, সেবাধর্মী সংগঠন করা ভালো। তাতে নিজের মেধা ও মনন তৈরি হবে। বিতকানুষ্ঠান ভালো সাহায্য করে। প্রতিদিনের পড়া দিনে শেষ করতে হয়। দিনের অনুশীলন সম্পন্ন করতে হবে। কেননা মেধার এখানে ছড়াছড়ি।’ আগে তিনি উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের ভালো অফিসার ছিলেন।
গর্বিত ছাত্রকে নিয়ে অত্যন্ত খুশি বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলাম, ‘আমার বিভাগের প্রথম ব্যাচের আবিদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের অত্যন্ত সম্মানজনক চাকরি লাভ করেছে। আজকের ও আগামী দিনের সব ছেলে, মেয়েরাই প্রেরণা লাভ করবে। তাকে আমরা সবাই অত্যন্ত আনন্দিত।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া খুশিতে বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে শুরু থেকে সামনের দিকে ভালোভাবে এগিয়ে চলেছে। ছাত্র, ছাত্রীরা শিক্ষাবান্ধব। ফলে আমরা সুফল পাচ্ছি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফল দেখতে পাচ্ছি দেশে ও বিদেশে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে আমাদের সবাই।’ আবিদ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ডুমুরিয়া থানার এক নম্বর ধামালিয়া ইউনিয়নের চেঁচুড়ি গ্রামের ছেলে।
ছবি : আবিদ ও তাদের বিশ্ববিদ্যালয়।
ওএফএস।